মুক্তি পেলেন অন্যের সাজা খাটা শিমু আক্তার

প্রায় তিন বছর ধরে অন্যের সাজা খাটার পর অবশেষে উচ্চ আদালতের নির্দেশে মুক্তি মিলেছে মিনু আক্তার নামে এক নারীর। কুলসুম আক্তার নামে হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদ-প্রাপ্ত এক আসামির জায়গায় সাজা খাটছিলেন তিনি। গতকাল বিকেল ৪টার দিকে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে তিনি মুক্তি পান। এরআগে গত ৭ জুন বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মহিউদ্দিনের ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ তাকে মুক্তির আদেশ দেন বলে মিনুর আইনজীবী অ্যাডভোকেট গোলাম মাওলা মুরাদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে গত ১৮ মার্চ কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মো. শফিকুল ইসলাম খান নারী ওয়ার্ড পরিদর্শনে গেলে মিনু জানান, তিনি কোন মামলার আসামি নন। মূলত অন্যের হয়ে আদালতে এসে ফেঁসে গেছেন। পরে ঘটনাটি আদালতের নজরে আনেন তিনি।

আদালতে দেয়া জবানবন্দিতে মিনু আক্তার দাবি করেন, তিন বছর আগে রমজান মাসে ভোগ্যপণ্য দেয়ার নাম করেই কুলসুমা আক্তার তাকে আদালতে নিয়ে আসেন। তার শেখানো মতো আদালতের ডাকে সাড়া দিতে গিয়ে কারাবাস করতে হচ্ছে তাকে। এরপর ৩১ মার্চ এ ঘটনা উচ্চ আদালতের নজরে আনেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। তখন স্পেশাল মেসেঞ্জারের মাধ্যমে (বিশেষ বাহক) পরে মিনুর ঘটনার নথি পাঠানো হয় হাইকোর্টে। মূলত কারাগারের একটি বালাম বই দেখতে গিয়ে মিনুর সাজা খাটার বিষয়টি উঠে আসে। তাতে দেখা যায়, একজনের পরিবর্তে যাবজ্জীবন সাজা খাটছেন ওই নারী। পরে আদালতে জেলখানার ছবিসংবলিত রেজিস্ট্রার খাতা উপস্থাপন করা হয়। এরপরই বিষয়টি নিয়ে আদেশ দেন আদালত।

আদালত সূত্র জানায়, মোবাইলে কথা বলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে নগরের রহমতগঞ্জের একটি বাসায় ২০০৬ সালের জুলাইয়ে গলা টিপে হত্যা করা হয় গার্মেন্টসকর্মী কোহিনূর আক্তারকে। এরপর রহমতগঞ্জে একটি গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখা হয় সেই লাশ। কোহিনুর আত্মহত্যা করেছেন বলে দাবি করেন গার্মেন্টসকর্মী কুলসুম আক্তার। এরপর থানায় অপমৃত্যু মামলা হয়। পুলিশ দুই বছর তদন্ত শেষে কেহিনুরকে হত্যা করা হয়েছে বলে রিপোর্ট দিলে সেটি হত্যা মামলায় রূপান্তর করা হয়। গত ২০১৭ সালের নভেম্বরে তৎকালীন অতিরিক্ত চতুর্থ মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. নুরুল ইসলাম পারভীন ওই মামলায় আসামি কুলসুম আক্তার কুলসুমীকে যাবজ্জীবন কারাদ-সহ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ১ বছরের কারাদ-ের আদেশ দেন।

সাজার পরোয়ানামূলে আদালতে আত্মসমর্পণ করে কুলসুম আক্তারের বদলি মিনু গত ২০১৮ সালের ১২ জুন কারাগারে যান। নামের মিল না থাকলেও মিনুকে কুলসুম আক্তার বলে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখা হয়েছে তিন বছর হলো।

আরও খবর
সংক্রমণ বেড়েই চলেছে
দাম প্রকাশ করায় চীন থেকে টিকা পেতে দেরি হচ্ছে
‘ত্রাণ চাই না বাঁধ চাই’, গলায় প্ল্যাকার্ড ঝুলিয়ে সংসদে
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ লাখ শিক্ষার্থী প্রমোশন পেলেন তবে শর্তসাপেক্ষে 
সিলেটে এক পরিবারের ৩ জনকে জবাই করে হত্যা
পরীমনিকে যেভাবে দেখা গেল বোট ক্লাবের সিসি ক্যামেরায়
অমির রিক্রুটিং এজেন্সিতে অভিযান, শতাধিক পাসপোর্ট জব্দ, গ্রেপ্তার ২
অল কমিউনিটি ক্লাবে ভাঙচুরের অভিযোগ পরীমনির বিরুদ্ধে
বিভিন্ন ব্যাংকের ৩০০ কোটি টাকা লোপাটের ৫৪ মামলা, ১০টির বিচার শেষ
মামুনুলসহ ৪৩ জনের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের মামলা
প্রতারক চক্র রাজা-বাদশাহ গ্রুপ ১৬ সদস্য গ্রেপ্তার

বৃহস্পতিবার, ১৭ জুন ২০২১ , ৩ আষাড় ১৪২৮ ৫ জিলকদ ১৪৪২

মুক্তি পেলেন অন্যের সাজা খাটা শিমু আক্তার

চট্টগ্রাম ব্যুরো

প্রায় তিন বছর ধরে অন্যের সাজা খাটার পর অবশেষে উচ্চ আদালতের নির্দেশে মুক্তি মিলেছে মিনু আক্তার নামে এক নারীর। কুলসুম আক্তার নামে হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদ-প্রাপ্ত এক আসামির জায়গায় সাজা খাটছিলেন তিনি। গতকাল বিকেল ৪টার দিকে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে তিনি মুক্তি পান। এরআগে গত ৭ জুন বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মহিউদ্দিনের ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ তাকে মুক্তির আদেশ দেন বলে মিনুর আইনজীবী অ্যাডভোকেট গোলাম মাওলা মুরাদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে গত ১৮ মার্চ কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মো. শফিকুল ইসলাম খান নারী ওয়ার্ড পরিদর্শনে গেলে মিনু জানান, তিনি কোন মামলার আসামি নন। মূলত অন্যের হয়ে আদালতে এসে ফেঁসে গেছেন। পরে ঘটনাটি আদালতের নজরে আনেন তিনি।

আদালতে দেয়া জবানবন্দিতে মিনু আক্তার দাবি করেন, তিন বছর আগে রমজান মাসে ভোগ্যপণ্য দেয়ার নাম করেই কুলসুমা আক্তার তাকে আদালতে নিয়ে আসেন। তার শেখানো মতো আদালতের ডাকে সাড়া দিতে গিয়ে কারাবাস করতে হচ্ছে তাকে। এরপর ৩১ মার্চ এ ঘটনা উচ্চ আদালতের নজরে আনেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। তখন স্পেশাল মেসেঞ্জারের মাধ্যমে (বিশেষ বাহক) পরে মিনুর ঘটনার নথি পাঠানো হয় হাইকোর্টে। মূলত কারাগারের একটি বালাম বই দেখতে গিয়ে মিনুর সাজা খাটার বিষয়টি উঠে আসে। তাতে দেখা যায়, একজনের পরিবর্তে যাবজ্জীবন সাজা খাটছেন ওই নারী। পরে আদালতে জেলখানার ছবিসংবলিত রেজিস্ট্রার খাতা উপস্থাপন করা হয়। এরপরই বিষয়টি নিয়ে আদেশ দেন আদালত।

আদালত সূত্র জানায়, মোবাইলে কথা বলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে নগরের রহমতগঞ্জের একটি বাসায় ২০০৬ সালের জুলাইয়ে গলা টিপে হত্যা করা হয় গার্মেন্টসকর্মী কোহিনূর আক্তারকে। এরপর রহমতগঞ্জে একটি গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখা হয় সেই লাশ। কোহিনুর আত্মহত্যা করেছেন বলে দাবি করেন গার্মেন্টসকর্মী কুলসুম আক্তার। এরপর থানায় অপমৃত্যু মামলা হয়। পুলিশ দুই বছর তদন্ত শেষে কেহিনুরকে হত্যা করা হয়েছে বলে রিপোর্ট দিলে সেটি হত্যা মামলায় রূপান্তর করা হয়। গত ২০১৭ সালের নভেম্বরে তৎকালীন অতিরিক্ত চতুর্থ মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. নুরুল ইসলাম পারভীন ওই মামলায় আসামি কুলসুম আক্তার কুলসুমীকে যাবজ্জীবন কারাদ-সহ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ১ বছরের কারাদ-ের আদেশ দেন।

সাজার পরোয়ানামূলে আদালতে আত্মসমর্পণ করে কুলসুম আক্তারের বদলি মিনু গত ২০১৮ সালের ১২ জুন কারাগারে যান। নামের মিল না থাকলেও মিনুকে কুলসুম আক্তার বলে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখা হয়েছে তিন বছর হলো।