মামুনুলসহ ৪৩ জনের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের মামলা

হেফাজত ইসলামের সাবেক যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকসহ ৪৩ জনের বিরুদ্ধে ২০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলা করেছে রাজধানীর ভাটারার ‘আল মাদ্রাসাতু মুঈনুল ইসলাম’ মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। ছাত্র-শিক্ষকদের খাবার হিসেবে চাল, ডাল এবং ভবন নির্মাণে রড-সিমেন্টসহ মাদ্রাসার বিভিন্ন খরচ দেখিয়ে ওই অর্থ আত্মসাতের পাশাপাশি চাঁদাবাজি এবং মাদ্রাসায় অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগ হয়েছে মামলায়। মাদ্রাসার পক্ষে মাওলানা আবদুর রাজ্জাক কাসেমী মঙ্গলবার ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে মামলাটি দায়ের করেন। বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে ঢাকার মহানগর হাকিম মোরশেদ আল মামুন ভূঁইয়া পিবিআইকে অভিযোগ তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। আদালতে বাদীর আইনজীবী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মোশের্দুজ্জামান ও আতিকুল ইসলাম জোয়ারদার। আদালতের সমন জারিকারক মো. মুহিত বলেন, মামলায় দ-বিধির ১৪৩/৩৮৪/ ৩৮৫/৪৪৭/৪৪৮/৪০৩ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে আসামিদের বিরুদ্ধে।

মামুনুল হক ছাড়া অন্য আসামিরা হলেনÑ মাওলানা আতাউল্লাহ, মাহফুজুল হক, মুফতি সেলিম উল্লাহ, মাওলানা শাহরিয়ার মাহমুদ, মুফতি মামুনুর রশিদ, মাওলানা হানজালা, হানজালা বিন জোবায়ের, হাজি জসীম উদ্দিন ঢালি, হাজি আফতাব উদ্দিন, মামুন ঢালি, ফারুক হোসেন, মাওলানা ফখরুল ইসলাম, ফজলুর রহমান, ফেরদৌস ঢালি, হাফিজুর রহমান সুমন, আল আমিন, আব্দুর রহমান, রফিকুল ইসলাম, মাওলানা মাহমুদুল হাসান ও মাওলানা বিন ইয়ামিন। এছাড়া মো. ওসমান, হাফিজুর রহমান, সুলাইমান, মাওলানা তালহা, মাওলানা গোলাম মুকতাদির, মাওলানা মুঈনুদ্দিন, মাওলানা নুর আলম, মাওলানা আলী, মাওলানা ইউসুফ, মাওলানা ফয়সাল, মাওলানা তারেক, বায়েজিদ, মো. হুমাইন আহামদ, মো. ইয়াসিন, মাওলানা আব্দুর রাজ্জাক, হাফেজ মো. আবু সায়েম, মাওলানা আব্দুর আজিজ, মাওলানা মো. আলী, মুফতি জসীম উদ্দিন, মাওলানা জাকির হোসেন, মাওলানা আনোয়ার হোসেন ও মাওলানা আনিসুর রহমানের নাম রয়েছে মামলার আসামির তালিকায়।

আরজিতে বলা হয়েছে, আল মাদ্রাসাতু মুঈনুল ইসলামের প্রতিষ্ঠাতা মুফতি আতাউর রহমানের মৃত্যুর আগে বিভিন্ন সময় ছাত্র-শিক্ষকের খাবার হিসেবে চাল, ডাল এবং ভবন নির্মাণে রড-সিমেন্টসহ মাদ্রাসায় বিভিন্ন ধরনের খরচ দেখিয়ে আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ২০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন। ২০২০ সালের ৯ অক্টোবর তাবলিগ জামাতের দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধের মধ্যে মাদ্রাসাতু মুঈনুল ইসলামের টিনশেড অফিসের ভেতর আলমারিতে রাখা ক্যাশ টাকা, রশিদ বই, খরচের ভাউচার, ক্যাশ বই, খতিয়ান বই ও স্টক বইসহ মূল্যবান দলিলপত্র লুট করারও অভিযোগ আনা হয়েছে আসামিদের বিরুদ্ধে।

আর্জিতে বলা হয়,আসামিরা উপস্থিত থেকে এবং তাদের নেতৃত্বে আনুমানিক প্রায় আড়াইশর মতো হেফাজতকর্মী ও উচ্ছৃঙ্খল ছাত্র-শিক্ষক, যাদের বিভিন্ন মাদ্রাসা থেকে ভুল বুঝিয়ে ‘সাদ সাহেব ও তার অনুসারীদের মালামাল হল গণিমতের মাল’ এই মর্মে প্রলোভন দেখিয়ে মাদ্রাসা পরিচালনার বিষয়ে আদালতের স্পষ্ট নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বেআইনি জনতাবদ্ধ করে এবং লুটপাট চালায়। পরবর্তীতে ২০২০ সালের ১৩ অক্টোবর শিক্ষকদের সঙ্গে অভিভাবকদের মতবিনিময় সভার আহ্বান করলে আসামিরা কয়েকশ’ উচ্ছৃঙ্খল ছাত্র ও সন্ত্রাসী একত্রিত হয়ে ঘিরে ফেলে এবং আগতদের মোবাইল, টাকা-পয়সা ছিনিয়ে নিয়ে তাদের লোহার রড, দা, লাঠি, বাঁশ ইত্যাদি দিয়ে আঘাত করে মারাত্মক জখম করে। ভাস্কর্যবিরোধী ও মোদিবিরোধী আন্দোলনসহ নানা কারণে আলোচনায় থাকা হেফাজতে ইসলামের বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হককে গত ১৮ এপ্রিল রাজধানীর মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার বিরুদ্ধে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় ডজনখানেক মামলা হয়েছে এর আগে।

আরও খবর
সংক্রমণ বেড়েই চলেছে
দাম প্রকাশ করায় চীন থেকে টিকা পেতে দেরি হচ্ছে
‘ত্রাণ চাই না বাঁধ চাই’, গলায় প্ল্যাকার্ড ঝুলিয়ে সংসদে
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ লাখ শিক্ষার্থী প্রমোশন পেলেন তবে শর্তসাপেক্ষে 
মুক্তি পেলেন অন্যের সাজা খাটা শিমু আক্তার
সিলেটে এক পরিবারের ৩ জনকে জবাই করে হত্যা
পরীমনিকে যেভাবে দেখা গেল বোট ক্লাবের সিসি ক্যামেরায়
অমির রিক্রুটিং এজেন্সিতে অভিযান, শতাধিক পাসপোর্ট জব্দ, গ্রেপ্তার ২
অল কমিউনিটি ক্লাবে ভাঙচুরের অভিযোগ পরীমনির বিরুদ্ধে
বিভিন্ন ব্যাংকের ৩০০ কোটি টাকা লোপাটের ৫৪ মামলা, ১০টির বিচার শেষ
প্রতারক চক্র রাজা-বাদশাহ গ্রুপ ১৬ সদস্য গ্রেপ্তার

বৃহস্পতিবার, ১৭ জুন ২০২১ , ৩ আষাড় ১৪২৮ ৫ জিলকদ ১৪৪২

মামুনুলসহ ৪৩ জনের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের মামলা

আদালত বার্তা পরিবেশক

হেফাজত ইসলামের সাবেক যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকসহ ৪৩ জনের বিরুদ্ধে ২০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলা করেছে রাজধানীর ভাটারার ‘আল মাদ্রাসাতু মুঈনুল ইসলাম’ মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। ছাত্র-শিক্ষকদের খাবার হিসেবে চাল, ডাল এবং ভবন নির্মাণে রড-সিমেন্টসহ মাদ্রাসার বিভিন্ন খরচ দেখিয়ে ওই অর্থ আত্মসাতের পাশাপাশি চাঁদাবাজি এবং মাদ্রাসায় অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগ হয়েছে মামলায়। মাদ্রাসার পক্ষে মাওলানা আবদুর রাজ্জাক কাসেমী মঙ্গলবার ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে মামলাটি দায়ের করেন। বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে ঢাকার মহানগর হাকিম মোরশেদ আল মামুন ভূঁইয়া পিবিআইকে অভিযোগ তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। আদালতে বাদীর আইনজীবী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মোশের্দুজ্জামান ও আতিকুল ইসলাম জোয়ারদার। আদালতের সমন জারিকারক মো. মুহিত বলেন, মামলায় দ-বিধির ১৪৩/৩৮৪/ ৩৮৫/৪৪৭/৪৪৮/৪০৩ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে আসামিদের বিরুদ্ধে।

মামুনুল হক ছাড়া অন্য আসামিরা হলেনÑ মাওলানা আতাউল্লাহ, মাহফুজুল হক, মুফতি সেলিম উল্লাহ, মাওলানা শাহরিয়ার মাহমুদ, মুফতি মামুনুর রশিদ, মাওলানা হানজালা, হানজালা বিন জোবায়ের, হাজি জসীম উদ্দিন ঢালি, হাজি আফতাব উদ্দিন, মামুন ঢালি, ফারুক হোসেন, মাওলানা ফখরুল ইসলাম, ফজলুর রহমান, ফেরদৌস ঢালি, হাফিজুর রহমান সুমন, আল আমিন, আব্দুর রহমান, রফিকুল ইসলাম, মাওলানা মাহমুদুল হাসান ও মাওলানা বিন ইয়ামিন। এছাড়া মো. ওসমান, হাফিজুর রহমান, সুলাইমান, মাওলানা তালহা, মাওলানা গোলাম মুকতাদির, মাওলানা মুঈনুদ্দিন, মাওলানা নুর আলম, মাওলানা আলী, মাওলানা ইউসুফ, মাওলানা ফয়সাল, মাওলানা তারেক, বায়েজিদ, মো. হুমাইন আহামদ, মো. ইয়াসিন, মাওলানা আব্দুর রাজ্জাক, হাফেজ মো. আবু সায়েম, মাওলানা আব্দুর আজিজ, মাওলানা মো. আলী, মুফতি জসীম উদ্দিন, মাওলানা জাকির হোসেন, মাওলানা আনোয়ার হোসেন ও মাওলানা আনিসুর রহমানের নাম রয়েছে মামলার আসামির তালিকায়।

আরজিতে বলা হয়েছে, আল মাদ্রাসাতু মুঈনুল ইসলামের প্রতিষ্ঠাতা মুফতি আতাউর রহমানের মৃত্যুর আগে বিভিন্ন সময় ছাত্র-শিক্ষকের খাবার হিসেবে চাল, ডাল এবং ভবন নির্মাণে রড-সিমেন্টসহ মাদ্রাসায় বিভিন্ন ধরনের খরচ দেখিয়ে আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ২০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন। ২০২০ সালের ৯ অক্টোবর তাবলিগ জামাতের দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধের মধ্যে মাদ্রাসাতু মুঈনুল ইসলামের টিনশেড অফিসের ভেতর আলমারিতে রাখা ক্যাশ টাকা, রশিদ বই, খরচের ভাউচার, ক্যাশ বই, খতিয়ান বই ও স্টক বইসহ মূল্যবান দলিলপত্র লুট করারও অভিযোগ আনা হয়েছে আসামিদের বিরুদ্ধে।

আর্জিতে বলা হয়,আসামিরা উপস্থিত থেকে এবং তাদের নেতৃত্বে আনুমানিক প্রায় আড়াইশর মতো হেফাজতকর্মী ও উচ্ছৃঙ্খল ছাত্র-শিক্ষক, যাদের বিভিন্ন মাদ্রাসা থেকে ভুল বুঝিয়ে ‘সাদ সাহেব ও তার অনুসারীদের মালামাল হল গণিমতের মাল’ এই মর্মে প্রলোভন দেখিয়ে মাদ্রাসা পরিচালনার বিষয়ে আদালতের স্পষ্ট নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বেআইনি জনতাবদ্ধ করে এবং লুটপাট চালায়। পরবর্তীতে ২০২০ সালের ১৩ অক্টোবর শিক্ষকদের সঙ্গে অভিভাবকদের মতবিনিময় সভার আহ্বান করলে আসামিরা কয়েকশ’ উচ্ছৃঙ্খল ছাত্র ও সন্ত্রাসী একত্রিত হয়ে ঘিরে ফেলে এবং আগতদের মোবাইল, টাকা-পয়সা ছিনিয়ে নিয়ে তাদের লোহার রড, দা, লাঠি, বাঁশ ইত্যাদি দিয়ে আঘাত করে মারাত্মক জখম করে। ভাস্কর্যবিরোধী ও মোদিবিরোধী আন্দোলনসহ নানা কারণে আলোচনায় থাকা হেফাজতে ইসলামের বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হককে গত ১৮ এপ্রিল রাজধানীর মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার বিরুদ্ধে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় ডজনখানেক মামলা হয়েছে এর আগে।