গাজায় ফের ইসরায়েলি বিমান হামলা

ইসরায়েলের নতুন সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর ফের প্যালেস্টাইনের গাজা উপত্যকায় বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল সেনাবাহিনী। গাজা সিটি ও দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খান ইউনিসে এ হামলা চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শী ও ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর কর্মকর্তারা। আল-জাজিরা

তবে এ হামলায় এখন পর্যন্ত হতাহতের কোন খবর পাওয়া যায়নি। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, ইসরায়েল এবং তার নাগরিকদের সুরক্ষায় সেনাবাহিনী সবসময় তৎপর আছে। অন্যদিকে হামাস জানিয়েছে, প্যালেস্টাইনের জনগণ যে কোন মূল্যে তাদের অধিকার রক্ষা করবে।

ইনসেনডিয়ারি বেলুনকে অনেকে বেলুন বোমা বলে উল্লেখ করে থাকেন। হাইড্রোজেন বা হিলিয়াম জাতীয় হালকা গ্যাসে ভর্তি এ বেলুনগুলোতে বিশেষভাবে যুক্ত করা থাকে বিস্ফোরক উপাদান অথবা মলটভ ককটেল।

বিশেষ এই বিস্ফোরক বেলুন ব্যাপক অগ্নিকা- ঘটাতে সক্ষম। ১৮৪৯ সালে প্রথম ভেনিসের বিরুদ্ধে এই অস্ত্রের প্রয়োগ করেছিল অস্ট্রিয়া। গাজা ভূখ-ে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে হামাস এই অস্ত্র ব্যবহার করছে ২০১৮ সাল থেকে।

এক বিবৃতিতে ইসরায়েল জানিয়েছে, গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খান ইউনিস থেকে দক্ষিণ ইসরায়েলের গ্রামীণ এলাকা ও কৃষিক্ষেত্রগুলোকে লক্ষ্য করে বেশ কিছু বেলুন বোমা উড়িয়েছে হামাস। এর জেরে গাজার প্রধান শহর গাজা সিটি ও খান ইউনুসে হামাসের ঘাঁটি এলাকাগুলোতে বিমান হামলা চালিয়েছে বিমানবাহিনী।

ফায়ার সার্ভিসের বরাত দিয়ে ইসরায়েল সেনাবাহিনী বলেন, গাজা থেকে বেলুন পাঠানো হয়েছে, যেগুলো থেকে গাজা সীমান্তের কাছে ইসরায়েলি সম্প্রদায়ের উন্মুক্ত ক্ষেতগুলোতে অন্তত ২০টি অগ্নিকা-ের সূত্রপাত হয়। নাশকতা ও উসকানিমূলক কর্মকা-ের অভিযোগে গাজা সিটি ও খান ইউনিসে শত্রুপক্ষের ঘাঁটিতে অভিযান চালানো হয়েছে। গাজার ধারাবাহিক সন্ত্রাসী কার্যক্রম থেকে ইসরায়েল ও তার নাগরিকদের রক্ষা করতে সেনাবাহিনী সবসময়ই প্রস্তুত আছে।

এদিকে, হামাসের এক মুখপাত্র সোমবার রাতের হামলার সত্যতা নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, হামাস ও প্যালেস্টাইনের জনগণ তাদের সংগ্রাম অব্যাহত রাখবে। তিনি বলেন, ফিলিস্তিনের জনগণ তাদের অধিকার ও পবিত্র এলাকা (জেরুজালেম) রক্ষায় তীব্র লড়াই ও প্রতিরোধ গড়ে তুলবে।

বিমান হামলা চালানোর কয়েক ঘণ্টা আগে, কয়েক হাজার ইসরায়েলি পতাকা হাতে শোভাযাত্রা করে জেরুজালেমের পুরাতন শহরের দামেস্ক গেট দিয়ে প্রবেশ করে এবং ইহুদিদের কাছে পবিত্র হিসেবে বিবেচিত পশ্চিম দেয়াল স্পর্শ করে। তাদের এই কর্মসূচিতে ক্ষোভ ও নিন্দার ঝড় ওঠে প্যালেস্টাইনের মধ্যে। জেরুজালেমে রাত নামার পর শোভাযাত্রা শুরু হয়, কিন্তু হামাসের পক্ষ থেকে কোন রকেট ছোড়া হয়নি।

১০ মে, ইসরায়েলি বাহিনীর পূর্ব জেরুজালেম দখল করার বার্ষিকীতে এই শোভাযাত্রাটি হওয়ার কথা ছিল। ইসরায়েলিরা এ দিনটিকে ‘জেরুজালেম দিবস’ হিসেবে পালন করে আসছে।

এর আগে গত ২১ মে টানা ১১ দিনের সংঘাতের প্রায় ২৫৬ ফিলিস্তিনি নিহত হয়। এর মধ্যে ৬৬ জনই শিশু। অপরদিকে দুই হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছে। এছাড়া ইসরায়েলের ১২ জন নিহত হয়েছে। তবে হতাহতদের মধ্যে বেশিরভাগই সাধারণ নাগরিক।

বৃহস্পতিবার, ১৭ জুন ২০২১ , ৩ আষাড় ১৪২৮ ৫ জিলকদ ১৪৪২

গাজায় ফের ইসরায়েলি বিমান হামলা

ইসরায়েলের নতুন সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর ফের প্যালেস্টাইনের গাজা উপত্যকায় বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল সেনাবাহিনী। গাজা সিটি ও দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খান ইউনিসে এ হামলা চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শী ও ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর কর্মকর্তারা। আল-জাজিরা

তবে এ হামলায় এখন পর্যন্ত হতাহতের কোন খবর পাওয়া যায়নি। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, ইসরায়েল এবং তার নাগরিকদের সুরক্ষায় সেনাবাহিনী সবসময় তৎপর আছে। অন্যদিকে হামাস জানিয়েছে, প্যালেস্টাইনের জনগণ যে কোন মূল্যে তাদের অধিকার রক্ষা করবে।

ইনসেনডিয়ারি বেলুনকে অনেকে বেলুন বোমা বলে উল্লেখ করে থাকেন। হাইড্রোজেন বা হিলিয়াম জাতীয় হালকা গ্যাসে ভর্তি এ বেলুনগুলোতে বিশেষভাবে যুক্ত করা থাকে বিস্ফোরক উপাদান অথবা মলটভ ককটেল।

বিশেষ এই বিস্ফোরক বেলুন ব্যাপক অগ্নিকা- ঘটাতে সক্ষম। ১৮৪৯ সালে প্রথম ভেনিসের বিরুদ্ধে এই অস্ত্রের প্রয়োগ করেছিল অস্ট্রিয়া। গাজা ভূখ-ে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে হামাস এই অস্ত্র ব্যবহার করছে ২০১৮ সাল থেকে।

এক বিবৃতিতে ইসরায়েল জানিয়েছে, গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খান ইউনিস থেকে দক্ষিণ ইসরায়েলের গ্রামীণ এলাকা ও কৃষিক্ষেত্রগুলোকে লক্ষ্য করে বেশ কিছু বেলুন বোমা উড়িয়েছে হামাস। এর জেরে গাজার প্রধান শহর গাজা সিটি ও খান ইউনুসে হামাসের ঘাঁটি এলাকাগুলোতে বিমান হামলা চালিয়েছে বিমানবাহিনী।

ফায়ার সার্ভিসের বরাত দিয়ে ইসরায়েল সেনাবাহিনী বলেন, গাজা থেকে বেলুন পাঠানো হয়েছে, যেগুলো থেকে গাজা সীমান্তের কাছে ইসরায়েলি সম্প্রদায়ের উন্মুক্ত ক্ষেতগুলোতে অন্তত ২০টি অগ্নিকা-ের সূত্রপাত হয়। নাশকতা ও উসকানিমূলক কর্মকা-ের অভিযোগে গাজা সিটি ও খান ইউনিসে শত্রুপক্ষের ঘাঁটিতে অভিযান চালানো হয়েছে। গাজার ধারাবাহিক সন্ত্রাসী কার্যক্রম থেকে ইসরায়েল ও তার নাগরিকদের রক্ষা করতে সেনাবাহিনী সবসময়ই প্রস্তুত আছে।

এদিকে, হামাসের এক মুখপাত্র সোমবার রাতের হামলার সত্যতা নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, হামাস ও প্যালেস্টাইনের জনগণ তাদের সংগ্রাম অব্যাহত রাখবে। তিনি বলেন, ফিলিস্তিনের জনগণ তাদের অধিকার ও পবিত্র এলাকা (জেরুজালেম) রক্ষায় তীব্র লড়াই ও প্রতিরোধ গড়ে তুলবে।

বিমান হামলা চালানোর কয়েক ঘণ্টা আগে, কয়েক হাজার ইসরায়েলি পতাকা হাতে শোভাযাত্রা করে জেরুজালেমের পুরাতন শহরের দামেস্ক গেট দিয়ে প্রবেশ করে এবং ইহুদিদের কাছে পবিত্র হিসেবে বিবেচিত পশ্চিম দেয়াল স্পর্শ করে। তাদের এই কর্মসূচিতে ক্ষোভ ও নিন্দার ঝড় ওঠে প্যালেস্টাইনের মধ্যে। জেরুজালেমে রাত নামার পর শোভাযাত্রা শুরু হয়, কিন্তু হামাসের পক্ষ থেকে কোন রকেট ছোড়া হয়নি।

১০ মে, ইসরায়েলি বাহিনীর পূর্ব জেরুজালেম দখল করার বার্ষিকীতে এই শোভাযাত্রাটি হওয়ার কথা ছিল। ইসরায়েলিরা এ দিনটিকে ‘জেরুজালেম দিবস’ হিসেবে পালন করে আসছে।

এর আগে গত ২১ মে টানা ১১ দিনের সংঘাতের প্রায় ২৫৬ ফিলিস্তিনি নিহত হয়। এর মধ্যে ৬৬ জনই শিশু। অপরদিকে দুই হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছে। এছাড়া ইসরায়েলের ১২ জন নিহত হয়েছে। তবে হতাহতদের মধ্যে বেশিরভাগই সাধারণ নাগরিক।