পাবনায় সেই ঠিকাদারের অপকর্ম নিয়ে মুখ খুলছেন ভুক্তভোগীরা

ফুটপথে হকারি করা ফারুক হাজীর দাপটে পাবনার সরকারি কর্মকর্তারা থাকেন তটস্থ। তার আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স বাতিলসহ কিভাবে লাইসেন্স ইস্যু করা হয়েছে সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

পাবনায় গণপূর্ত ভবনে অস্ত্র নিয়ে মহড়ায় নেতৃত্ব দেয়া হাজী ফারুক হোসেন জোরপূর্বক ঠিকাদারি কাজ দখলে নিতে স্থানীয় সরকার বিভাগের এক প্রকৌশলীকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে।

গত ২৩ মে জেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটলেও স্থানীয় আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতাদের হস্তক্ষেপে বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা হয়। গণপূর্ত বিভাগে অস্ত্রের মহড়ার বিষয়টি নিয়ে দেশজুড়ে সমালোচনা সৃষ্টি হলে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক হাজী ফারুকের নানা অনিয়ম অপকর্ম নিয়ে মুখ খুলতে শুরু করেছেন ভুক্তভোগীরা।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) পাবনার সহকারী প্রকৌশলী ও দর প্রস্তাব মূল্যায়ন কমিটির সভাপতি আবদুল খালেক, হাজী ফারুক কর্তৃক লাঞ্ছিত হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, সম্প্রতি স্থানীয় সরকার বিভাগের অধীনে পাবনার ফরিদপুর উপজেলায় প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকায় একটি রাস্তা নির্মাণে দরপত্র আহ্বান করা হয়। ২৩ মে দুপুরে হঠাৎ হাজী ফারুক হোসেন আমার কক্ষে এসে কাজটি তাকে দেয়ার দাবি করেন। নিয়ম অনুযায়ী আবেদন, দরপ্রস্তাব ও কাগজপত্র ঠিক থাকলে কাজ পাবেন। যোগ্যতা না থাকলে বাতিল হবে জানালে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে অশ্রাব্য ভাষায় গালাগাল করে আমাকে মারতে উদ্যত হন। অফিসের সহকর্মীরা তাকে এসে নিবৃত্ত করলেও তিনি আমাকে দেখে নেবেন বলে হুমকি দেন।

এ বিষয়ে কেন আইনগত ব্যবস্থা নেননি জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঘটনা অবহিত করে নির্বাহী প্রকৌশলী ও প্রধান কার্যালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিত জানিয়েছি। আমি মামলার প্রস্তুতি নিয়েছিলাম কিন্তু প্রভাবশালী দু’জন জনপ্রতিনিধি বিষয়টি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ নিয়ে আমাদের অফিসে আসেন। নির্বাহী প্রকৌশলী মোকলেসুর রহমান তাদের উপস্থিতিতে বিষয়টি মীমাংসা করে নেন।

তিনি বলেন, আমি নিয়ম-নীতির বাইরে কোন কাজ করি না। সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেব দায়িত্ব পালনে এমন অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোটেও প্রত্যাশিত নয়, বিব্রতকরও বটে।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) পাবনার নির্বাহী প্রকৌশলী মোখলেসুর রহমানের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটি একটি মীমাংসিত বিষয়। এ নিয়ে কথা বলার কিছু নেই, সব বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া যায় না। সাক্ষাতে বিস্তারিত জানাব। সমঝোতা বৈঠকে উপস্থিত জনপ্রতিনিধি নেতাদের নাম জানতে চাইলে তিনি তা বলতে রাজি হননি।

স্থানীয় সরকার বিভাগের একটি সূত্র জানায়, ঠিকাদারি কাজ নিয়ন্ত্রণ ও অনিয়ম, নিম্নমানের কাজ করে বিধি বহির্ভূতভাবে বিল আদায় করতে সরকারি কর্মকর্তাদের ভয়ভীতি প্রদর্শন, লাঞ্ছিত ও মারধরের অভিযোগ এটিই প্রথম নয়। এর আগেও কর্মকর্তাদের অকথ্য ভাষায় গালাগাল ও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেছেন তিনি। তার দাপটে সরকারি সব দপ্তরের কর্মকর্তা কর্মচারী ও সাধারণ ঠিকাদাররা অতিষ্ঠ। মান সম্মানের ভয়ে কেউ আইনের আশ্রয় নেয়া তো দূরের কথা, তার বিরুদ্ধে মুখ খোলারই সাহস করেন না।

এর আগে গতবছর ১৯ অক্টোবর হাজী ফারুক জেলা হিসাবরক্ষণ অফিসে ঢুকে সুপারিনটেনডেন্ট মুশফিকুর রহমানকে লাঞ্ছিত করলে তিনি জীবনের নিরপত্তা চেয়ে পাবনা সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন।

মো. মুশফিকুর রহমান জানান, জেলা ফিন্যান্স ও অ্যাকাউন্টস অফিস থেকে সব সরকারি কর্মকর্তার বেতন ও উন্নয়ন কাজের বিলের অর্থ দেয়া হয়। নাইস কন্ট্রাসটাকশনের মালিক ও ফারুক হোসেন তার একটি ঠিকাদারি কাজের জামানাতের ৫টি চালান হারিয়ে ফেলে পরে ডুপ্লিকেট চালান তৈরি করে বিল দাখিল করেন। বিষয়টি আইনসম্মত না হওয়ায় হারিয়ে যাওয়া জামানাতের চালানের অনুকূলে থানায় সাধারণ ডায়েরিসহ বিল দাখিলের পরামর্শ দেয়া হয়। এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওইদিন বিকেলে ম্যানেজার আসাদকে সঙ্গে নিয়ে হিসাবরক্ষণ অফিসে এসে অশ্রাব্য ভাষায় গালাগাল করে মারতে উদ্যোত হন। এ সময় অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ছুটে এসে তাকে থামাতে গেলে তিনি আমাকে হত্যার হুমকি দেন। পরে দলীয় নেতাদের সঙ্গে নিয়ে তিনি আমার কাছে ক্ষমা চান।

গোয়েন্দা পুলিশের একটি সূত্র জানায়, নাইস কনস্ট্রাকশনের মালিক ও আওয়ামী লীগ নেতা ফারুক হোসেন এক সময় হকারি করতেন, বিভিন্ন ঠিকাদারের সাইট ম্যানেজার হিসেবেও কাজ করেছেন। পরে তিনি বিদেশে চলে যান। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর দেশে ফিরে পাউবো, এলজিইডিসহ বিভিন্ন দপ্তরে দরপত্র ছিনতাই করে, সাধারণ ঠিকাদারদের টেন্ডারে অংশগ্রহণে বাধা দিয়ে সিন্ডিকেট করে কাজ কেড়ে নিতে শুরু করেন। স্থানীয় প্রভাবশালী এক নেতার ছত্রছায়ায় একপর্যায়ে টেন্ডার সমঝোতা কমিটির হর্তাকর্তা বনে যান। পরিচিতি পান ‘নিগো’ ফারুক হিসেবে। ধীরে ধীরে এলজিইডির উন্নয়ন কাজে আধিপত্য বিস্তার করে কখনও নি¤œমানের কাজ করে, কখনও কাজ না করেই বিল তুলে নিয়ে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। গত ১২ বছরে ফারুক তার নাইস কনস্ট্রাকশনের অধীনে কয়েক কোটি টাকার ঠিকাদারি মেশিনারিজ, ব্যক্তিগত দুটি পাজেরো জিপ, কার, মোটরসাইকেলসহ অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছেন। সম্প্রতি জেলা প্রশাসকের বাসভবনের সামনে সাবেক মন্ত্রী মেজর (অব.) মনজুর কাদেরের বিলাসবহুল বাড়ি ক্রয় করে জেলার একজন বড় সরকারি কর্মকর্তাকে ভাড়া দিয়েছেন।

এ বিষয়ে হাজী ফারুক বলেন, প্রকৌশলী আবদুল খালেকের সঙ্গে আমার কাজ নিয়ে কোন ঝামেলা হয়নি। সামান্য কথা কাটাকাটি হয়েছিল। আমি ক্ষমা চেয়ে নিয়েছি। তবে ইতিপূর্বে বিভিন্ন কর্মকর্তাদের লাঞ্ছিতের বিষয়ে তিনি কোন সদুত্তর দেননি।

অল্প সময়ে সম্পদের মালিক হওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, অন্যায়ভাবে সম্পদশালী হইনি। পৈতৃক সূত্রে কিছু সম্পদ ছিল। ঠিকাদারি ব্যবসায় ভালো করায় সম্পদ বেড়েছে।

শুক্রবার, ১৮ জুন ২০২১ , ৪ আষাড় ১৪২৮ ৬ জিলকদ ১৪৪২

পাবনায় সেই ঠিকাদারের অপকর্ম নিয়ে মুখ খুলছেন ভুক্তভোগীরা

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক, পাবনা

image

পাবনা : সম্প্রতি কেনা ফারুক হোসেনের বিলাসবহুল বাসভবন -সংবাদ

ফুটপথে হকারি করা ফারুক হাজীর দাপটে পাবনার সরকারি কর্মকর্তারা থাকেন তটস্থ। তার আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স বাতিলসহ কিভাবে লাইসেন্স ইস্যু করা হয়েছে সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

পাবনায় গণপূর্ত ভবনে অস্ত্র নিয়ে মহড়ায় নেতৃত্ব দেয়া হাজী ফারুক হোসেন জোরপূর্বক ঠিকাদারি কাজ দখলে নিতে স্থানীয় সরকার বিভাগের এক প্রকৌশলীকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে।

গত ২৩ মে জেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটলেও স্থানীয় আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতাদের হস্তক্ষেপে বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা হয়। গণপূর্ত বিভাগে অস্ত্রের মহড়ার বিষয়টি নিয়ে দেশজুড়ে সমালোচনা সৃষ্টি হলে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক হাজী ফারুকের নানা অনিয়ম অপকর্ম নিয়ে মুখ খুলতে শুরু করেছেন ভুক্তভোগীরা।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) পাবনার সহকারী প্রকৌশলী ও দর প্রস্তাব মূল্যায়ন কমিটির সভাপতি আবদুল খালেক, হাজী ফারুক কর্তৃক লাঞ্ছিত হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, সম্প্রতি স্থানীয় সরকার বিভাগের অধীনে পাবনার ফরিদপুর উপজেলায় প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকায় একটি রাস্তা নির্মাণে দরপত্র আহ্বান করা হয়। ২৩ মে দুপুরে হঠাৎ হাজী ফারুক হোসেন আমার কক্ষে এসে কাজটি তাকে দেয়ার দাবি করেন। নিয়ম অনুযায়ী আবেদন, দরপ্রস্তাব ও কাগজপত্র ঠিক থাকলে কাজ পাবেন। যোগ্যতা না থাকলে বাতিল হবে জানালে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে অশ্রাব্য ভাষায় গালাগাল করে আমাকে মারতে উদ্যত হন। অফিসের সহকর্মীরা তাকে এসে নিবৃত্ত করলেও তিনি আমাকে দেখে নেবেন বলে হুমকি দেন।

এ বিষয়ে কেন আইনগত ব্যবস্থা নেননি জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঘটনা অবহিত করে নির্বাহী প্রকৌশলী ও প্রধান কার্যালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিত জানিয়েছি। আমি মামলার প্রস্তুতি নিয়েছিলাম কিন্তু প্রভাবশালী দু’জন জনপ্রতিনিধি বিষয়টি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ নিয়ে আমাদের অফিসে আসেন। নির্বাহী প্রকৌশলী মোকলেসুর রহমান তাদের উপস্থিতিতে বিষয়টি মীমাংসা করে নেন।

তিনি বলেন, আমি নিয়ম-নীতির বাইরে কোন কাজ করি না। সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেব দায়িত্ব পালনে এমন অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোটেও প্রত্যাশিত নয়, বিব্রতকরও বটে।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) পাবনার নির্বাহী প্রকৌশলী মোখলেসুর রহমানের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটি একটি মীমাংসিত বিষয়। এ নিয়ে কথা বলার কিছু নেই, সব বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া যায় না। সাক্ষাতে বিস্তারিত জানাব। সমঝোতা বৈঠকে উপস্থিত জনপ্রতিনিধি নেতাদের নাম জানতে চাইলে তিনি তা বলতে রাজি হননি।

স্থানীয় সরকার বিভাগের একটি সূত্র জানায়, ঠিকাদারি কাজ নিয়ন্ত্রণ ও অনিয়ম, নিম্নমানের কাজ করে বিধি বহির্ভূতভাবে বিল আদায় করতে সরকারি কর্মকর্তাদের ভয়ভীতি প্রদর্শন, লাঞ্ছিত ও মারধরের অভিযোগ এটিই প্রথম নয়। এর আগেও কর্মকর্তাদের অকথ্য ভাষায় গালাগাল ও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেছেন তিনি। তার দাপটে সরকারি সব দপ্তরের কর্মকর্তা কর্মচারী ও সাধারণ ঠিকাদাররা অতিষ্ঠ। মান সম্মানের ভয়ে কেউ আইনের আশ্রয় নেয়া তো দূরের কথা, তার বিরুদ্ধে মুখ খোলারই সাহস করেন না।

এর আগে গতবছর ১৯ অক্টোবর হাজী ফারুক জেলা হিসাবরক্ষণ অফিসে ঢুকে সুপারিনটেনডেন্ট মুশফিকুর রহমানকে লাঞ্ছিত করলে তিনি জীবনের নিরপত্তা চেয়ে পাবনা সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন।

মো. মুশফিকুর রহমান জানান, জেলা ফিন্যান্স ও অ্যাকাউন্টস অফিস থেকে সব সরকারি কর্মকর্তার বেতন ও উন্নয়ন কাজের বিলের অর্থ দেয়া হয়। নাইস কন্ট্রাসটাকশনের মালিক ও ফারুক হোসেন তার একটি ঠিকাদারি কাজের জামানাতের ৫টি চালান হারিয়ে ফেলে পরে ডুপ্লিকেট চালান তৈরি করে বিল দাখিল করেন। বিষয়টি আইনসম্মত না হওয়ায় হারিয়ে যাওয়া জামানাতের চালানের অনুকূলে থানায় সাধারণ ডায়েরিসহ বিল দাখিলের পরামর্শ দেয়া হয়। এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওইদিন বিকেলে ম্যানেজার আসাদকে সঙ্গে নিয়ে হিসাবরক্ষণ অফিসে এসে অশ্রাব্য ভাষায় গালাগাল করে মারতে উদ্যোত হন। এ সময় অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ছুটে এসে তাকে থামাতে গেলে তিনি আমাকে হত্যার হুমকি দেন। পরে দলীয় নেতাদের সঙ্গে নিয়ে তিনি আমার কাছে ক্ষমা চান।

গোয়েন্দা পুলিশের একটি সূত্র জানায়, নাইস কনস্ট্রাকশনের মালিক ও আওয়ামী লীগ নেতা ফারুক হোসেন এক সময় হকারি করতেন, বিভিন্ন ঠিকাদারের সাইট ম্যানেজার হিসেবেও কাজ করেছেন। পরে তিনি বিদেশে চলে যান। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর দেশে ফিরে পাউবো, এলজিইডিসহ বিভিন্ন দপ্তরে দরপত্র ছিনতাই করে, সাধারণ ঠিকাদারদের টেন্ডারে অংশগ্রহণে বাধা দিয়ে সিন্ডিকেট করে কাজ কেড়ে নিতে শুরু করেন। স্থানীয় প্রভাবশালী এক নেতার ছত্রছায়ায় একপর্যায়ে টেন্ডার সমঝোতা কমিটির হর্তাকর্তা বনে যান। পরিচিতি পান ‘নিগো’ ফারুক হিসেবে। ধীরে ধীরে এলজিইডির উন্নয়ন কাজে আধিপত্য বিস্তার করে কখনও নি¤œমানের কাজ করে, কখনও কাজ না করেই বিল তুলে নিয়ে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। গত ১২ বছরে ফারুক তার নাইস কনস্ট্রাকশনের অধীনে কয়েক কোটি টাকার ঠিকাদারি মেশিনারিজ, ব্যক্তিগত দুটি পাজেরো জিপ, কার, মোটরসাইকেলসহ অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছেন। সম্প্রতি জেলা প্রশাসকের বাসভবনের সামনে সাবেক মন্ত্রী মেজর (অব.) মনজুর কাদেরের বিলাসবহুল বাড়ি ক্রয় করে জেলার একজন বড় সরকারি কর্মকর্তাকে ভাড়া দিয়েছেন।

এ বিষয়ে হাজী ফারুক বলেন, প্রকৌশলী আবদুল খালেকের সঙ্গে আমার কাজ নিয়ে কোন ঝামেলা হয়নি। সামান্য কথা কাটাকাটি হয়েছিল। আমি ক্ষমা চেয়ে নিয়েছি। তবে ইতিপূর্বে বিভিন্ন কর্মকর্তাদের লাঞ্ছিতের বিষয়ে তিনি কোন সদুত্তর দেননি।

অল্প সময়ে সম্পদের মালিক হওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, অন্যায়ভাবে সম্পদশালী হইনি। পৈতৃক সূত্রে কিছু সম্পদ ছিল। ঠিকাদারি ব্যবসায় ভালো করায় সম্পদ বেড়েছে।