নৌপথে ফেরি সংকট, যানবাহনের দীর্ঘ লাইন

যাত্রী দুর্ভোগ চরমে

পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথে ফেরি সংকট ও সাপ্তাহিক ছুটির কারণে যানবাহনের চাপ বৃদ্ধি পাওয়ায় উভয় ঘাটে নদী পারের অপেক্ষায় থাকা যানবাহনের দীর্ঘ জট সৃষ্টি হয়েছে। গতকাল বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে উভয় ঘাটে ৪ শতাধিক পণ্যবাহী ট্রাকসহ ৮ শতাধিক যানবাহন ফেরি পারের অপেক্ষায় রয়েছে। ফেরি সংকটের কারণে এ নৌরুট দিয়ে যানবাহন পারাপার ব্যাহত হয়। উভয় ঘাটে পরিবহন পারাপারের জন্য বিআইডব্লিউটিসি ছোট-বড় মিলিয়ে ১৯টি ফেরি ব্যবহার করে। কিন্তু কিছু ফেরি যান্ত্রিক ত্রুটি থাকায় মাত্র সচল ১৩টি ফেরি দিয়ে যানবাহন পারাপার করতে হিমশিম খাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার হালকা গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি থাকায় ফেরিঘাটে এসে পারের অপেক্ষায় থাকা বাসযাত্রী, যানবাহন চালক ও শ্রমিকদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়। বিশেষ করে নারী ও শিশু যাত্রীদের দুর্ভোগ সীমাহীন ছিল বলে তারা অভিযোগ করেন।

বিআইডব্লিউটিসি আরিচা অফিস সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে ৮টি রো-রো, ৬টি ইউটিলিটি ও ১টি কে-টাইপ ফেরি রয়েছে। ছোট-বড় মিলিয়ে ১৫টির মধ্যে সচল ১৩টি ফেরি দিয়ে যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে। দুটি ফেরির যান্ত্রিক ত্রুটি থাকার কারণে স্থানীয় ভাসমান কারখানা মধুমতিতে মেরামতে রয়েছে। কয়েকজন বাসযাত্রী জানান, পাটুরিয়া ঘাটে এসে ফেরি পারের অপেক্ষায় থেকে তাদের মারাত্মক দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। দীর্ঘ সময় বাসের মধ্যে বসে থেকে তারা ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন। ছোট-ছোট বাচ্চারা কান্নাকাটি করছে। দুপুরের খাবার, পানি ও টয়লেটের সমস্যা হচ্ছে। গুঁড়ি-গুঁড়ি বৃষ্টি থাকায় বাস থেকে নিচে নামতেও সমস্যা হচ্ছে।

ট্রাক চালকরা জানান, এই গুঁড়ি-গুঁড়ি বৃষ্টির মধ্যে ট্রাক নিয়ে ফেরি পারের অপেক্ষায় ঘাটে এসে বসে থেকে তাদের খাওয়া-দাওয়া, গোসল ও টয়লেটসহ নানা দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। দীর্ঘ সময় ধরে তারা ফেরি পারের জন্য অপেক্ষা করছেন। কখন ফেরির নাগাল পাবেন তারা বলতে পারছেন না। ঘাট কর্মকর্তা-কর্মচারী সূত্রে জানা যায়, পাটুরিয়া ঘাটে বাস-ট্রাক মিলিয়ে পাঁচ শতাধিক ও দৌলতদিয়া ঘাটে দুই শতাধিক ট্রাকসহ শতাধিক যাত্রবাহী বাস ফেরি পারের অপেক্ষায় ছিল।

বিআইডব্লিউটিসির পাটুরিয়া ঘাটের ম্যানেজার মহিউদ্দিন রাসেল জানান, ফেরি সংকট ও সাপ্তাহিক ছুটির কারণে বৃহস্পতিবার পাটুরিয়া ঘাটে যানবাহনের চাপ বৃদ্ধি পায়। ছোট-বড় সচল ১৩টি ফেরি দিয়ে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে। ফেরিগুলো পুরনো হওয়ায় ২/৩ ফেরি মাঝেমধ্যেই যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়। ফলে স্থানীয় ভাসমান কারখানা মধুমতিতে ফেরিগুলো সাময়িক মেরামতে রাখতে হয়। দুটি ফেরি বিকল থাকায় স্থানীয় ভাসমান কারখানায় মেরামতে রয়েছে। পাটুরিয়া ঘাটে চার শতাধিক ট্রাকসহ শতাধিক যাত্রীবাহী বাস ফেরি পারের অপেক্ষায় রয়েছে। ফেরি কম হওয়ায় বিপুল সংখ্যক যানবাহন পারাপার করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এদিকে যানবাহনের চাপ বৃদ্ধি পাওয়ায় পাটুরিয়া ঘাট এলাকা ছাপিয়ে যানবাহনের সারি মহাসড়কে লাইনে গড়িয়েছে। দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় অনুরূপ অবস্থা রয়েছে। অতিদ্রুত ফেরির সংখ্যা না বাড়ালে এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও শুক্রবারের ছুটির কারণে পরিবহনের চাপ অব্যাহত থাকলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইওে চলে যাবে বলে অভিজ্ঞ মহল মনে করছেন।

image

পাটুরিয়া ঘাটে ফেরি পারের অপেক্ষায় থাকা বাসের দীর্ঘ লাইন -সংবাদ

আরও খবর
বাড়ি পাচ্ছে ৫৩ হাজার গৃহহীন পরিবার
বাংলাদেশে আরএলএনজি সরবরাহে পেট্রোবাংলার সঙ্গে ভারতীয় কোম্পানির সমঝোতা
বিশ্ব শান্তি সূচকে বাংলাদেশের ৭ ধাপ অগ্রগতি
ক্লাব মদ জুয়া নিয়ে সংসদ উত্তপ্ত
সংসদীয় তিন আসনে বৈধ প্রার্থী ১০ জন
রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে জাতিসংঘকে রোডম্যাপ তৈরির অনুরোধ বাংলাদেশের
পুলিশ ও ইসি কর্মকর্তাসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
চালের দাম বাড়ার কোন কারণ নেই : বাণিজ্যমন্ত্রী
এমপি পদ ফিরে পাচ্ছেন না পাপুল
সীমান্ত জেলাগুলোর সঙ্গে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ, সংক্রমণ ঝুঁকিতে বরিশাল
ছাত্রদলের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ লাঠিচার্জ, গুলি

শুক্রবার, ১৮ জুন ২০২১ , ৪ আষাড় ১৪২৮ ৬ জিলকদ ১৪৪২

নৌপথে ফেরি সংকট, যানবাহনের দীর্ঘ লাইন

যাত্রী দুর্ভোগ চরমে

রফিকুল ইসলাম, শিবালয় (মানিকগঞ্জ)

image

পাটুরিয়া ঘাটে ফেরি পারের অপেক্ষায় থাকা বাসের দীর্ঘ লাইন -সংবাদ

পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথে ফেরি সংকট ও সাপ্তাহিক ছুটির কারণে যানবাহনের চাপ বৃদ্ধি পাওয়ায় উভয় ঘাটে নদী পারের অপেক্ষায় থাকা যানবাহনের দীর্ঘ জট সৃষ্টি হয়েছে। গতকাল বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে উভয় ঘাটে ৪ শতাধিক পণ্যবাহী ট্রাকসহ ৮ শতাধিক যানবাহন ফেরি পারের অপেক্ষায় রয়েছে। ফেরি সংকটের কারণে এ নৌরুট দিয়ে যানবাহন পারাপার ব্যাহত হয়। উভয় ঘাটে পরিবহন পারাপারের জন্য বিআইডব্লিউটিসি ছোট-বড় মিলিয়ে ১৯টি ফেরি ব্যবহার করে। কিন্তু কিছু ফেরি যান্ত্রিক ত্রুটি থাকায় মাত্র সচল ১৩টি ফেরি দিয়ে যানবাহন পারাপার করতে হিমশিম খাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার হালকা গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি থাকায় ফেরিঘাটে এসে পারের অপেক্ষায় থাকা বাসযাত্রী, যানবাহন চালক ও শ্রমিকদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়। বিশেষ করে নারী ও শিশু যাত্রীদের দুর্ভোগ সীমাহীন ছিল বলে তারা অভিযোগ করেন।

বিআইডব্লিউটিসি আরিচা অফিস সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে ৮টি রো-রো, ৬টি ইউটিলিটি ও ১টি কে-টাইপ ফেরি রয়েছে। ছোট-বড় মিলিয়ে ১৫টির মধ্যে সচল ১৩টি ফেরি দিয়ে যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে। দুটি ফেরির যান্ত্রিক ত্রুটি থাকার কারণে স্থানীয় ভাসমান কারখানা মধুমতিতে মেরামতে রয়েছে। কয়েকজন বাসযাত্রী জানান, পাটুরিয়া ঘাটে এসে ফেরি পারের অপেক্ষায় থেকে তাদের মারাত্মক দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। দীর্ঘ সময় বাসের মধ্যে বসে থেকে তারা ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন। ছোট-ছোট বাচ্চারা কান্নাকাটি করছে। দুপুরের খাবার, পানি ও টয়লেটের সমস্যা হচ্ছে। গুঁড়ি-গুঁড়ি বৃষ্টি থাকায় বাস থেকে নিচে নামতেও সমস্যা হচ্ছে।

ট্রাক চালকরা জানান, এই গুঁড়ি-গুঁড়ি বৃষ্টির মধ্যে ট্রাক নিয়ে ফেরি পারের অপেক্ষায় ঘাটে এসে বসে থেকে তাদের খাওয়া-দাওয়া, গোসল ও টয়লেটসহ নানা দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। দীর্ঘ সময় ধরে তারা ফেরি পারের জন্য অপেক্ষা করছেন। কখন ফেরির নাগাল পাবেন তারা বলতে পারছেন না। ঘাট কর্মকর্তা-কর্মচারী সূত্রে জানা যায়, পাটুরিয়া ঘাটে বাস-ট্রাক মিলিয়ে পাঁচ শতাধিক ও দৌলতদিয়া ঘাটে দুই শতাধিক ট্রাকসহ শতাধিক যাত্রবাহী বাস ফেরি পারের অপেক্ষায় ছিল।

বিআইডব্লিউটিসির পাটুরিয়া ঘাটের ম্যানেজার মহিউদ্দিন রাসেল জানান, ফেরি সংকট ও সাপ্তাহিক ছুটির কারণে বৃহস্পতিবার পাটুরিয়া ঘাটে যানবাহনের চাপ বৃদ্ধি পায়। ছোট-বড় সচল ১৩টি ফেরি দিয়ে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে। ফেরিগুলো পুরনো হওয়ায় ২/৩ ফেরি মাঝেমধ্যেই যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়। ফলে স্থানীয় ভাসমান কারখানা মধুমতিতে ফেরিগুলো সাময়িক মেরামতে রাখতে হয়। দুটি ফেরি বিকল থাকায় স্থানীয় ভাসমান কারখানায় মেরামতে রয়েছে। পাটুরিয়া ঘাটে চার শতাধিক ট্রাকসহ শতাধিক যাত্রীবাহী বাস ফেরি পারের অপেক্ষায় রয়েছে। ফেরি কম হওয়ায় বিপুল সংখ্যক যানবাহন পারাপার করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এদিকে যানবাহনের চাপ বৃদ্ধি পাওয়ায় পাটুরিয়া ঘাট এলাকা ছাপিয়ে যানবাহনের সারি মহাসড়কে লাইনে গড়িয়েছে। দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় অনুরূপ অবস্থা রয়েছে। অতিদ্রুত ফেরির সংখ্যা না বাড়ালে এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও শুক্রবারের ছুটির কারণে পরিবহনের চাপ অব্যাহত থাকলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইওে চলে যাবে বলে অভিজ্ঞ মহল মনে করছেন।