সুন্দরবনের বিস্তৃতি প্রসঙ্গে

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সুন্দরবনের আয়তন বাড়ছে। বাঘের সংখ্যা বেড়েছে। বনে কার্বনের মজুদ বাড়ার কথাও তিনি বলেছেন। গত বুধবার জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তরে সংরক্ষিত আসনের আওয়ামী লীগ সংসদ সদস্য সুলতানা নাদিরার প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ক্যামেরা ট্র্যাপিংয়ের মাধ্যমে করা বাঘশুমারি অনুযায়ী, ২০১৫ সালে সুন্দরবনে বাঘ ছিল ১০৬টি এবং ২০১৮ সালে এর সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১১৪টি। ২০০৯ সালে সুন্দরবন কার্বন মজুদের পরিমাণ ছিল ১০৬ মিলিয়ন টন, সেটা ২০১৯ সালে ১৩৯ মিলিয়ন টন হয়েছে।

বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ অরণ্য নানান কারণেই সংকুচিত হয়ে পড়েছে বলে এর আগে বিভিন্ন গবেষণায় জানা গেছে। ১৭৭৬ সালে বাংলাদেশ অংশে সুন্দরবনের আয়তন ছিল ১১ হাজার ২৫৮ বর্গকিলোমিটার। পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ট্রাস্টি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড জিওগ্রাফিক্যাল ইনফরমেশন সার্ভিসেস (সিইজিআইএস) ২০১৬ সালে করা এক গবেষণায় দেখেছে, গত ২৪০ বছরে বনের আয়তন কমে হয়েছে ৬ হাজার বর্গকিলোমিটারেরও কম।

বনের যেমন আয়তন কমেছে, তেমন কমেছে বাঘের সংখ্যা। ২০১০ সালে বন বিভাগ ও ওয়াইল্ড লাইফ ট্রাস্ট অব বাংলাদেশের করা এক যৌথ জরিপে বলা হয়েছিল, সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা ৪০০ থেকে ৪৫০ আর ২০১৮তে সংখ্যাটি হয়েছে ১১৪। ২০১৭ সালে সুন্দরবনের অভয়ারণ্য এলাকা তিন লাখ ১৭ হাজার ৯০০ হেক্টরে উন্নীত করা হয়েছে। এর আগে অভয়ারণ্যের আয়তন ছিল এক লাখ ৩৯ হাজার ৭০০ হেক্টর। দ্বিগুণেরও বেশি আয়তন বাড়িয়ে বাঘের সংখ্যায় লক্ষ্যযোগ্য পরিবর্তন ঘটানো যায়নি। বাঘ বাড়াতে হলে এখনও অনেক কাজ করতে হবে।

বনের আয়তন বাড়ানোর জন্য সরকার কৃত্রিম ম্যানগ্রোভ তৈরি করছে। সুন্দরবনের বিস্তৃতি ঘটলে পরিবেশ ও প্রাণবৈচিত্র্য উপকৃত হবে কিন্তু বনের চারপাশে শিল্প কারখানা স্থাপন বন্ধ করা না গেলে বন ও প্রাণবৈচিত্র্য রক্ষা করা কঠিন হবে। যে কোন কাজে সুন্দরবন রক্ষার বিষয়টি অগ্রগণ্য করতে হবে। বন রক্ষা পেলে এর জীববৈচিত্র্য আপনা থেকেই রক্ষা পাবে।

শুক্রবার, ১৮ জুন ২০২১ , ৪ আষাড় ১৪২৮ ৬ জিলকদ ১৪৪২

সুন্দরবনের বিস্তৃতি প্রসঙ্গে

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সুন্দরবনের আয়তন বাড়ছে। বাঘের সংখ্যা বেড়েছে। বনে কার্বনের মজুদ বাড়ার কথাও তিনি বলেছেন। গত বুধবার জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তরে সংরক্ষিত আসনের আওয়ামী লীগ সংসদ সদস্য সুলতানা নাদিরার প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ক্যামেরা ট্র্যাপিংয়ের মাধ্যমে করা বাঘশুমারি অনুযায়ী, ২০১৫ সালে সুন্দরবনে বাঘ ছিল ১০৬টি এবং ২০১৮ সালে এর সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১১৪টি। ২০০৯ সালে সুন্দরবন কার্বন মজুদের পরিমাণ ছিল ১০৬ মিলিয়ন টন, সেটা ২০১৯ সালে ১৩৯ মিলিয়ন টন হয়েছে।

বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ অরণ্য নানান কারণেই সংকুচিত হয়ে পড়েছে বলে এর আগে বিভিন্ন গবেষণায় জানা গেছে। ১৭৭৬ সালে বাংলাদেশ অংশে সুন্দরবনের আয়তন ছিল ১১ হাজার ২৫৮ বর্গকিলোমিটার। পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ট্রাস্টি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড জিওগ্রাফিক্যাল ইনফরমেশন সার্ভিসেস (সিইজিআইএস) ২০১৬ সালে করা এক গবেষণায় দেখেছে, গত ২৪০ বছরে বনের আয়তন কমে হয়েছে ৬ হাজার বর্গকিলোমিটারেরও কম।

বনের যেমন আয়তন কমেছে, তেমন কমেছে বাঘের সংখ্যা। ২০১০ সালে বন বিভাগ ও ওয়াইল্ড লাইফ ট্রাস্ট অব বাংলাদেশের করা এক যৌথ জরিপে বলা হয়েছিল, সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা ৪০০ থেকে ৪৫০ আর ২০১৮তে সংখ্যাটি হয়েছে ১১৪। ২০১৭ সালে সুন্দরবনের অভয়ারণ্য এলাকা তিন লাখ ১৭ হাজার ৯০০ হেক্টরে উন্নীত করা হয়েছে। এর আগে অভয়ারণ্যের আয়তন ছিল এক লাখ ৩৯ হাজার ৭০০ হেক্টর। দ্বিগুণেরও বেশি আয়তন বাড়িয়ে বাঘের সংখ্যায় লক্ষ্যযোগ্য পরিবর্তন ঘটানো যায়নি। বাঘ বাড়াতে হলে এখনও অনেক কাজ করতে হবে।

বনের আয়তন বাড়ানোর জন্য সরকার কৃত্রিম ম্যানগ্রোভ তৈরি করছে। সুন্দরবনের বিস্তৃতি ঘটলে পরিবেশ ও প্রাণবৈচিত্র্য উপকৃত হবে কিন্তু বনের চারপাশে শিল্প কারখানা স্থাপন বন্ধ করা না গেলে বন ও প্রাণবৈচিত্র্য রক্ষা করা কঠিন হবে। যে কোন কাজে সুন্দরবন রক্ষার বিষয়টি অগ্রগণ্য করতে হবে। বন রক্ষা পেলে এর জীববৈচিত্র্য আপনা থেকেই রক্ষা পাবে।