নিয়ন্ত্রণহীন বাজার

বেড়েই চলেছে নিত্যপণ্যের দাম

প্রান্তিক মানুষের বেঁচে থাকা কঠিন হয়ে পড়ছে

দিন দিন করোনা সংক্রমণের হার বেড়ে যাওয়া মানুষ খুবই উদ্বিগ্ন রয়েছে। বন্ধ রয়েছে বহু মানুষের কর্মসংস্থান ও ব্যবসা-বাণিজ্য। এই মহামারীর সময় তিন বেলা খেয়ে বেঁচে থাকার চেষ্টা কঠিন হয়ে পড়েছে প্রান্তিক মানুষের। এই সময় পাল্লা দিয়ে বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম। চাল-ডাল তেল-সবজি থেকে শুরু করে অন্যান্য নিত্যপণ্যের দাম প্রতিনিয়ত বাড়ছে।

দীর্ঘদিন বাড়তি থাকার পর মাসখানেক আগে ব্রয়লার মুরগির দাম কিছুটা কমেছিল। ধারণা করা হচ্ছিল, এবার হয়তো ব্রয়লারে স্বস্তি মিলবে কিন্তু না। ফের বাড়তে শুরু করলো ব্রয়লার মুরগির দাম। রাজধানীর বাজারগুলোতে সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে ২০ টাকা পর্যন্ত।

তবে পাকিস্তানি কক বা সোনালি মুরগি ও লাল লেয়ার মুরগির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। মুরগির পাশাপাশি সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে আলুর দাম। কেজিতে আলুর দাম বেড়েছে পাঁচ টাকা। এর সঙ্গে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের সবজি। রাজধানীর কয়েকটি কাঁচাবাজার ঘুরে এসব তথ্য দেখা গেছে।

গতকাল কারওয়ান বাজারে দেখা যায়, ব্রয়লার মুরগি প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা যা গত সপ্তাহে ছিল ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা। লাল লেয়ার মুরগি আগের মতো কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৩০ থেকে ২৪০ টাকা আর সোনালি মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৩০ টাকা।

মুরগির দামের বিষয়ে ব্যবসায়ীরা দাবি করেন, বাজারে ব্রয়লার মুরগির সরবরাহ কম।

প্রতিবছরই এই সময় ব্রয়লার মুরগির সরবরাহ কম থাকে। এবার মুরগির সরবরাহ কম থাকার পাশাপাশি খাবারের দামও বেশি। এসব কিছু মিলে ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়ে গেছে।

এদিকে আলুর দাম দীর্ঘদিন ধরে স্বাভাবিক ছিল। ১৮ থেকে ২০ টাকা কেজিতে পাওয়া যেত আলু। সেই আলুর দাম একলাফে ২৫ টাকা হয়েছে। আলুর দাম বাড়লেও সপ্তাহের ব্যবধানে অপরিবর্তিত রয়েছে পেঁয়াজের দাম। গত সপ্তাহের মতো পেঁয়াজের কেজি ৪৫ থেকে ৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।

সবজি বাজার ঘুরে দেখা যায়, বাজারে আগের মতো ফুলকপির পিস বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। বেগুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৬০ টাকা। মানভেদে শসার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। পটোলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। ঢেঁড়সের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। এছাড়া বরবটি ৬০ থেকে ৭০ টাকা, গাজর ৮০ থেকে ১০০ টাকা, পাকা টমেটো ৬০ থেকে ৮০ টাকা, ঝিঙে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। এ সবজিগুলোর দাম সপ্তাহের ব্যবধানে অপরিবর্তিত রয়েছে।

অন্যান্য সবজির মধ্যে কাঁচকলা, পেঁপে, কচুর লতি, লাউ, উচ্ছের দামও সপ্তাহের ব্যবধানে অপরিবর্তিত রয়েছে। কাঁচকলার হালি বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। লাউয়ের পিস বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা। এক কেজি কচুর লতি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা। পেঁপের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। উচ্ছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা।

এসব বাজারে প্রতিকেজি শুকনো মরিচ বিক্রি হচ্ছে ২৬০ টাকা, রসুন ৮০ থেকে ১৩০ টাকা, আদার দাম ২০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়। হলুদ ১৬০ টাকা থেকে বেড়ে ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চিনি প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ৭৫ টাকায়। প্যাকেট চিনি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭৮ থেকে ৮০ টাকায়।

এসব বাজারে প্রতিকেজি বিআর-২৮ চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৮ থেকে ৫০ টাকা, মিনিকেট ৬০ থেকে ৬২ টাকা, নাজিরশাইল ৬২ থেকে ৬৫ টাকা, মোটা চাল ৪৫ থেকে ৪৮ টাকা, পোলাওয়ের চাল ৯০ থেকে ১০০ টাকায়।

প্রতিলিটার ভোজ্যতেল বিক্রি হচ্ছে ১৫১ থেকে ১৫৫ টাকায়। আধা লিটারের বোতল বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়।

লাল ডিমের দাম বেড়ে ডজন বিক্রি হচ্ছে ১০৫ থেকে ১১০ টাকা। হাঁসের ডিমের ডজন ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকায়। এছাড়া সোনালি (কক) মুরগির ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়।

এসব বাজারে অপরিবর্তিত আছে গরু ও খাসির মাংস, মসলাসহ অন্য পণ্যের দাম। বাজারে প্রতিকেজি খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা, বকরির মাংস ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা ও গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকায়।

শনিবার, ১৯ জুন ২০২১ , ৫ আষাঢ় ১৪২৮ ৭ জিলকদ ১৪৪২

নিয়ন্ত্রণহীন বাজার

বেড়েই চলেছে নিত্যপণ্যের দাম

প্রান্তিক মানুষের বেঁচে থাকা কঠিন হয়ে পড়ছে

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

image

দিন দিন করোনা সংক্রমণের হার বেড়ে যাওয়া মানুষ খুবই উদ্বিগ্ন রয়েছে। বন্ধ রয়েছে বহু মানুষের কর্মসংস্থান ও ব্যবসা-বাণিজ্য। এই মহামারীর সময় তিন বেলা খেয়ে বেঁচে থাকার চেষ্টা কঠিন হয়ে পড়েছে প্রান্তিক মানুষের। এই সময় পাল্লা দিয়ে বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম। চাল-ডাল তেল-সবজি থেকে শুরু করে অন্যান্য নিত্যপণ্যের দাম প্রতিনিয়ত বাড়ছে।

দীর্ঘদিন বাড়তি থাকার পর মাসখানেক আগে ব্রয়লার মুরগির দাম কিছুটা কমেছিল। ধারণা করা হচ্ছিল, এবার হয়তো ব্রয়লারে স্বস্তি মিলবে কিন্তু না। ফের বাড়তে শুরু করলো ব্রয়লার মুরগির দাম। রাজধানীর বাজারগুলোতে সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে ২০ টাকা পর্যন্ত।

তবে পাকিস্তানি কক বা সোনালি মুরগি ও লাল লেয়ার মুরগির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। মুরগির পাশাপাশি সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে আলুর দাম। কেজিতে আলুর দাম বেড়েছে পাঁচ টাকা। এর সঙ্গে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের সবজি। রাজধানীর কয়েকটি কাঁচাবাজার ঘুরে এসব তথ্য দেখা গেছে।

গতকাল কারওয়ান বাজারে দেখা যায়, ব্রয়লার মুরগি প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা যা গত সপ্তাহে ছিল ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা। লাল লেয়ার মুরগি আগের মতো কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৩০ থেকে ২৪০ টাকা আর সোনালি মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৩০ টাকা।

মুরগির দামের বিষয়ে ব্যবসায়ীরা দাবি করেন, বাজারে ব্রয়লার মুরগির সরবরাহ কম।

প্রতিবছরই এই সময় ব্রয়লার মুরগির সরবরাহ কম থাকে। এবার মুরগির সরবরাহ কম থাকার পাশাপাশি খাবারের দামও বেশি। এসব কিছু মিলে ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়ে গেছে।

এদিকে আলুর দাম দীর্ঘদিন ধরে স্বাভাবিক ছিল। ১৮ থেকে ২০ টাকা কেজিতে পাওয়া যেত আলু। সেই আলুর দাম একলাফে ২৫ টাকা হয়েছে। আলুর দাম বাড়লেও সপ্তাহের ব্যবধানে অপরিবর্তিত রয়েছে পেঁয়াজের দাম। গত সপ্তাহের মতো পেঁয়াজের কেজি ৪৫ থেকে ৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।

সবজি বাজার ঘুরে দেখা যায়, বাজারে আগের মতো ফুলকপির পিস বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। বেগুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৬০ টাকা। মানভেদে শসার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। পটোলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। ঢেঁড়সের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। এছাড়া বরবটি ৬০ থেকে ৭০ টাকা, গাজর ৮০ থেকে ১০০ টাকা, পাকা টমেটো ৬০ থেকে ৮০ টাকা, ঝিঙে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। এ সবজিগুলোর দাম সপ্তাহের ব্যবধানে অপরিবর্তিত রয়েছে।

অন্যান্য সবজির মধ্যে কাঁচকলা, পেঁপে, কচুর লতি, লাউ, উচ্ছের দামও সপ্তাহের ব্যবধানে অপরিবর্তিত রয়েছে। কাঁচকলার হালি বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। লাউয়ের পিস বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা। এক কেজি কচুর লতি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা। পেঁপের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। উচ্ছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা।

এসব বাজারে প্রতিকেজি শুকনো মরিচ বিক্রি হচ্ছে ২৬০ টাকা, রসুন ৮০ থেকে ১৩০ টাকা, আদার দাম ২০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়। হলুদ ১৬০ টাকা থেকে বেড়ে ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চিনি প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ৭৫ টাকায়। প্যাকেট চিনি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭৮ থেকে ৮০ টাকায়।

এসব বাজারে প্রতিকেজি বিআর-২৮ চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৮ থেকে ৫০ টাকা, মিনিকেট ৬০ থেকে ৬২ টাকা, নাজিরশাইল ৬২ থেকে ৬৫ টাকা, মোটা চাল ৪৫ থেকে ৪৮ টাকা, পোলাওয়ের চাল ৯০ থেকে ১০০ টাকায়।

প্রতিলিটার ভোজ্যতেল বিক্রি হচ্ছে ১৫১ থেকে ১৫৫ টাকায়। আধা লিটারের বোতল বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়।

লাল ডিমের দাম বেড়ে ডজন বিক্রি হচ্ছে ১০৫ থেকে ১১০ টাকা। হাঁসের ডিমের ডজন ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকায়। এছাড়া সোনালি (কক) মুরগির ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়।

এসব বাজারে অপরিবর্তিত আছে গরু ও খাসির মাংস, মসলাসহ অন্য পণ্যের দাম। বাজারে প্রতিকেজি খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা, বকরির মাংস ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা ও গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকায়।