জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থেই উত্তরবঙ্গকে পৃথক রাজ্য অথবা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করা দরকার। করোনা আবহ কাটলেই এই দাবি জানিয়ে দেশের প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলবেন আলিপুরদুয়ারের বিজেপি সংসদ সদস্য জন বারলা। গতকাল এক সাংবাদিক বৈঠকে এমনটাই জানালেন সংসদ সদস্য। পৃথক রাজ্যের দাবিকে তার দল সমর্থন করুক বা না করুক সে নিয়ে কোন মন্তব্য না করলেও সংসদ সদস্য এদিন সাফ জানান, উত্তরবঙ্গকে পৃথক রাজ্য বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করার দাবি এখানকার মানুষের কাছ থেকেই উঠে এসেছে।
রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে জন বারলা বলেন, ‘এখানে কেন্দ্রের পাঠানো উন্নয়নের টাকা কোথায় গিয়েছে? উত্তরবঙ্গের মানুষ উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত কেন? আসাম সীমানা থেকে নেপাল সীমান্ত পর্যন্ত জাতীয় সড়কের ধারে বিভিন্ন এলাকার দখল নিয়েছে বাংলাদেশি রোহিঙ্গারা। ওদের ভোটার, রেশন কার্ড সবকিছুই হয়ে যাচ্ছে। এতে জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। অথচ এখানকার মানুষরাই রেশন কার্ড পাচ্ছে না।’
সংসদ সদস্য বলেন, ‘এখানে বিধানসভা ভোটের পর বিজেপির হাজার হাজার কর্মী আজও ঘরছাড়া হয়ে রয়েছেন। তাদের ঘরে ফিরতে গেলে শাসকদলের নেতাদের মোটা টাকা জরিমানা দিতে হচ্ছে। এ আমরা কোন রাজ্যে বাস করছি। এখানে আইনের শাসন বলে কিছু নেই। জেলা প্রশাসন, পুলিশ, রাজ্য সরকার কেউই আমাদের জনপ্রতিনিধিদের কথা শুনছে না। তাই এখানকার লাঞ্ছিত, বঞ্চিত মানুষের স্বার্থে কেন্দ্রের হস্তক্ষেপ দাবির কথা প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরব।’
আলিপুরদুয়ারের বিজেপি বিধায়কের মন্তব্য হাতিয়ার করে বাংলাকে ভাগের চক্রান্তে সরব তৃণমূল কংগ্রেস। উত্তরবঙ্গের একাধিক জেলায় বিজেপির বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছে তৃণমূল। তৃণমূল নেত্রী মৌসম নুর জানিয়েছেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন, বিজেপির এই প্রক্রিয়া কখনও সফল করতে দেবেন না তিনি। উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গ দুটোই পশ্চিমবঙ্গের অংশ। বিশেষ করে উত্তরবঙ্গ পশ্চিমবঙ্গের অবিচ্ছেদ্য অংশ। উত্তরবঙ্গকে আলাদা রাজ্য করার যারা মদদ দেয়ার চেষ্টা করবে মানুষ তাদের ক্ষমা করবে না, কেননা এ ব্যাপারে বাংলার মানুষ মুখ্যমন্ত্রীর পাশে রয়েছেন।’ অন্যদিকে মালদা বিজেপি জেলা সভাপতি গোবিন্দচন্দ্র ম-ল জানিয়েছেন, ‘এই অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।’
শুধু বাংলা ভাগের চক্রান্তই নয়, তৃণমূলের অভিযোগ উত্তরবঙ্গকে অশান্ত করে তোলার চেষ্টা করা হচ্ছে। কোচবিহারের তৃণমূল কংগ্রেস জেলা সভাপতি পার্থপ্রতিম রায় বলেন, ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তিকে পিছন থেকে মদত দেয়ার চেষ্টা করছে বিজেপি।’ অন্যদিকে দক্ষিণ দিনাজপুরের বিজেপি সভাপতি বিনয় কুমার বর্মন জানিয়েছেন, ‘এটা সম্পূর্ণভাবে কেন্দ্রীয় সরকারের নির্ভরশীল। কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্ত আমাদের মেনে নিতে হবে।’ সব মিলিয়ে আলিপুর দুয়ারের বিজেপি সংসদের সদস্যের মন্তব্য ঘিরে যে বিতর্ক তৈরি হয়েছে তা থামার কোন লক্ষণ নেই।
রবিবার, ২০ জুন ২০২১ , ৬ আষাঢ় ১৪২৮ ৮ জিলকদ ১৪৪২
দীপক মুখার্জী, কলকাতা
জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থেই উত্তরবঙ্গকে পৃথক রাজ্য অথবা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করা দরকার। করোনা আবহ কাটলেই এই দাবি জানিয়ে দেশের প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলবেন আলিপুরদুয়ারের বিজেপি সংসদ সদস্য জন বারলা। গতকাল এক সাংবাদিক বৈঠকে এমনটাই জানালেন সংসদ সদস্য। পৃথক রাজ্যের দাবিকে তার দল সমর্থন করুক বা না করুক সে নিয়ে কোন মন্তব্য না করলেও সংসদ সদস্য এদিন সাফ জানান, উত্তরবঙ্গকে পৃথক রাজ্য বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করার দাবি এখানকার মানুষের কাছ থেকেই উঠে এসেছে।
রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে জন বারলা বলেন, ‘এখানে কেন্দ্রের পাঠানো উন্নয়নের টাকা কোথায় গিয়েছে? উত্তরবঙ্গের মানুষ উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত কেন? আসাম সীমানা থেকে নেপাল সীমান্ত পর্যন্ত জাতীয় সড়কের ধারে বিভিন্ন এলাকার দখল নিয়েছে বাংলাদেশি রোহিঙ্গারা। ওদের ভোটার, রেশন কার্ড সবকিছুই হয়ে যাচ্ছে। এতে জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। অথচ এখানকার মানুষরাই রেশন কার্ড পাচ্ছে না।’
সংসদ সদস্য বলেন, ‘এখানে বিধানসভা ভোটের পর বিজেপির হাজার হাজার কর্মী আজও ঘরছাড়া হয়ে রয়েছেন। তাদের ঘরে ফিরতে গেলে শাসকদলের নেতাদের মোটা টাকা জরিমানা দিতে হচ্ছে। এ আমরা কোন রাজ্যে বাস করছি। এখানে আইনের শাসন বলে কিছু নেই। জেলা প্রশাসন, পুলিশ, রাজ্য সরকার কেউই আমাদের জনপ্রতিনিধিদের কথা শুনছে না। তাই এখানকার লাঞ্ছিত, বঞ্চিত মানুষের স্বার্থে কেন্দ্রের হস্তক্ষেপ দাবির কথা প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরব।’
আলিপুরদুয়ারের বিজেপি বিধায়কের মন্তব্য হাতিয়ার করে বাংলাকে ভাগের চক্রান্তে সরব তৃণমূল কংগ্রেস। উত্তরবঙ্গের একাধিক জেলায় বিজেপির বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছে তৃণমূল। তৃণমূল নেত্রী মৌসম নুর জানিয়েছেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন, বিজেপির এই প্রক্রিয়া কখনও সফল করতে দেবেন না তিনি। উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গ দুটোই পশ্চিমবঙ্গের অংশ। বিশেষ করে উত্তরবঙ্গ পশ্চিমবঙ্গের অবিচ্ছেদ্য অংশ। উত্তরবঙ্গকে আলাদা রাজ্য করার যারা মদদ দেয়ার চেষ্টা করবে মানুষ তাদের ক্ষমা করবে না, কেননা এ ব্যাপারে বাংলার মানুষ মুখ্যমন্ত্রীর পাশে রয়েছেন।’ অন্যদিকে মালদা বিজেপি জেলা সভাপতি গোবিন্দচন্দ্র ম-ল জানিয়েছেন, ‘এই অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।’
শুধু বাংলা ভাগের চক্রান্তই নয়, তৃণমূলের অভিযোগ উত্তরবঙ্গকে অশান্ত করে তোলার চেষ্টা করা হচ্ছে। কোচবিহারের তৃণমূল কংগ্রেস জেলা সভাপতি পার্থপ্রতিম রায় বলেন, ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তিকে পিছন থেকে মদত দেয়ার চেষ্টা করছে বিজেপি।’ অন্যদিকে দক্ষিণ দিনাজপুরের বিজেপি সভাপতি বিনয় কুমার বর্মন জানিয়েছেন, ‘এটা সম্পূর্ণভাবে কেন্দ্রীয় সরকারের নির্ভরশীল। কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্ত আমাদের মেনে নিতে হবে।’ সব মিলিয়ে আলিপুর দুয়ারের বিজেপি সংসদের সদস্যের মন্তব্য ঘিরে যে বিতর্ক তৈরি হয়েছে তা থামার কোন লক্ষণ নেই।