পাকুল্যা-লাউহাটী ৩ কিমি. সড়ক খানাখন্দে ভরা : দুর্ভোগ চরমে

টাঙ্গাইলের মির্জাপুর ও দেলদুয়ার উপজেলার সংযোগ স্থাপনকারী জনগুরুত্বপুর্ণ পাকুল্যা-লাউহাটী আঞ্চলিক সড়ক। অসংখ্য খানাখন্দ দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় সড়কটি দিয়ে চলাচলকারী জন-যান প্রতিনিয়ত চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছে। যে কোন সময় বড় ধরনের দুঘটনার আশঙ্কা রয়েছে বলে এলাকাবাসী মনে করছে।

উপজেলা প্রকৌশল অফিস ও স্থানীয় সূত্র জানায়, মির্জাপুর থেকে ঢাকা ও আশপাশের কয়েকটি জেলার সরাসরি যোগাযোগের জন্য ২০০৪ সালের মার্চে ১৩ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের মির্জাপুরের পাকুল্যা থেকে লাউহাটী পর্যন্ত পাকা ওই আঞ্চলিক সড়কটি চালু হয়। সড়কটি বঙ্গবন্ধুসেতু-ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের মির্জাপুর উপজেলার পাকুল্যার সাথে যুক্ত। সম্প্রতি সড়কটিতে অসংখ্য খানাখন্দের কারণে যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। প্রায় পাঁচ বছর আগে সড়কটির পাকুল্যা থেকে ভাবখন্ড পর্যন্ত ৬ কিলোমিটার সড়ক সংস্কার হলেও মির্জাপুর অংশের বাকি সাড়ে তিন কিলোমিটার সড়ক অবহেলিত রয়ে গেছে। ১৩ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে মির্জাপর অংশের পরিমান হচ্ছে ৯ কিলোমিটার ৬৫০ মিটার। দেলদুয়ার অংশের সংস্খার হলেও মির্জাপুর অংশের সংস্কার না হওয়ায় ভোগান্তিতে পড়ছে চলাচলকারী জনযান।

সড়কটি দিয়ে পাশের দেলদুয়ার, নাগরপুর, মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া ও ঢাকার ধামরাই উপজেলা হয়ে রাজধানীসহ দেশের দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলার লোকজন যাতায়াত করে। স্থানীয়রা জানায়, কয়েক বছর ধরে সড়কটির বিভিন্ন স্থানে খানাখন্দ তৈরি হতে থাকে। ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি ওজনের যানবাহন নিয়মিত চলাচলের কারণে সড়কটির অবস্থা আরও খারাপ হয়ে যাচ্ছে। আর আশপাশের মাঝালিয়া, গুনটিয়া, চুকুরিয়া, বানাইল থেকে মাটি কেটে ভারী ড্রাম ট্রাকে করে বিভিন্ন এলাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। এ কারনে সড়কের ওপর চাপ বেশি পড়ে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, রাস্তাটির পাকুল্যা, গুনটিয়া, চুকুরিয়া, কাওয়ালীপাড়া, কুরালিয়াপাড়া, পল্টন ও দেওড়া এলাকার অধিকাংশ স্থানেই খোয়া-পাথর উঠে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। অবাধে চলছে মাটিবোঝাই ট্রাক। সড়কের কোনো কোনো জায়গায় এক পাশ দিয়ে গাড়ি চলছে। বাকি অংশের ইট আর খোয়া উঠে গর্ত তৈরি হয়েছে। বৃষ্টি হলে গর্তে পানি জমে পুকুরের মত তৈরি হয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থায় চলাচল করা আরও কঠিন হয়ে পড়ে। ওই সড়কের সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক মো. সুজন মিয়া বলেন, দেওড়া ও পাকুল্যা এলাকায় সড়কটিতে বড় গর্তে মাঝেমধ্যেই ট্রাক আটকে থাকে। এ কারণে যানবাহন ঠিকমতো চলতে পারে না। কাওয়ালীপাড়া এলাকায় প্রায় আট ফুট জায়গাজুড়ে বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। খানাখন্দের কারণে ২৫ মিনিটের ওই রাস্তা পাড়ি দিতে দেড় থেকে দুই ঘণ্টা সময় লাগছে। দেওড়া গ্রামের বীর মুক্তিযুদ্ধা সানোয়ার হোসেন বলেন, সড়কটি জনগুরুত্বপুর্ণ হলেও দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় চলাচলকারী জনযানের ভোগান্তীর শেষ নেই।

ভাবখন্ড গ্রামের সমেজ উদ্দিন বলেন, সড়কের বিভিন্ন জায়গায় বড় বড় গর্ত হয়ে পানি জমে রয়েছে। ঝুকি নিয়ে চলছে যানবাহন। যেকোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

মির্জাপুর উপজেলা প্রকৌশলী মো. আরিফুর রহমান বলেন, সড়কটির মির্জাপুর অংশের ৯ কিলোমিটার ৬৫০ মিটার রাস্তা সংস্কারের জন্য প্রায় ১০ কোটি টাকার টেন্ডার হয়েছে। এখন কার্যাদেশ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। খুব শিগগিরই সড়কটির সংস্কার কাজ শুরু হবে বলে তিনি বরেন।

সোমবার, ২১ জুন ২০২১ , ৭ আষাঢ় ১৪২৮ ৯ জিলকদ ১৪৪২

পাকুল্যা-লাউহাটী ৩ কিমি. সড়ক খানাখন্দে ভরা : দুর্ভোগ চরমে

শামসুল ইসলাম শহীদ, মির্জাপুর (টাঙ্গাইল)

image

মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) : দেওড়া এলাকায় ইট-খোয়া ওঠে যাওয়ায় সৃষ্টি হয়েছে অসংখ্য গর্ত -সংবাদ

টাঙ্গাইলের মির্জাপুর ও দেলদুয়ার উপজেলার সংযোগ স্থাপনকারী জনগুরুত্বপুর্ণ পাকুল্যা-লাউহাটী আঞ্চলিক সড়ক। অসংখ্য খানাখন্দ দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় সড়কটি দিয়ে চলাচলকারী জন-যান প্রতিনিয়ত চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছে। যে কোন সময় বড় ধরনের দুঘটনার আশঙ্কা রয়েছে বলে এলাকাবাসী মনে করছে।

উপজেলা প্রকৌশল অফিস ও স্থানীয় সূত্র জানায়, মির্জাপুর থেকে ঢাকা ও আশপাশের কয়েকটি জেলার সরাসরি যোগাযোগের জন্য ২০০৪ সালের মার্চে ১৩ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের মির্জাপুরের পাকুল্যা থেকে লাউহাটী পর্যন্ত পাকা ওই আঞ্চলিক সড়কটি চালু হয়। সড়কটি বঙ্গবন্ধুসেতু-ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের মির্জাপুর উপজেলার পাকুল্যার সাথে যুক্ত। সম্প্রতি সড়কটিতে অসংখ্য খানাখন্দের কারণে যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। প্রায় পাঁচ বছর আগে সড়কটির পাকুল্যা থেকে ভাবখন্ড পর্যন্ত ৬ কিলোমিটার সড়ক সংস্কার হলেও মির্জাপুর অংশের বাকি সাড়ে তিন কিলোমিটার সড়ক অবহেলিত রয়ে গেছে। ১৩ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে মির্জাপর অংশের পরিমান হচ্ছে ৯ কিলোমিটার ৬৫০ মিটার। দেলদুয়ার অংশের সংস্খার হলেও মির্জাপুর অংশের সংস্কার না হওয়ায় ভোগান্তিতে পড়ছে চলাচলকারী জনযান।

সড়কটি দিয়ে পাশের দেলদুয়ার, নাগরপুর, মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া ও ঢাকার ধামরাই উপজেলা হয়ে রাজধানীসহ দেশের দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলার লোকজন যাতায়াত করে। স্থানীয়রা জানায়, কয়েক বছর ধরে সড়কটির বিভিন্ন স্থানে খানাখন্দ তৈরি হতে থাকে। ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি ওজনের যানবাহন নিয়মিত চলাচলের কারণে সড়কটির অবস্থা আরও খারাপ হয়ে যাচ্ছে। আর আশপাশের মাঝালিয়া, গুনটিয়া, চুকুরিয়া, বানাইল থেকে মাটি কেটে ভারী ড্রাম ট্রাকে করে বিভিন্ন এলাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। এ কারনে সড়কের ওপর চাপ বেশি পড়ে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, রাস্তাটির পাকুল্যা, গুনটিয়া, চুকুরিয়া, কাওয়ালীপাড়া, কুরালিয়াপাড়া, পল্টন ও দেওড়া এলাকার অধিকাংশ স্থানেই খোয়া-পাথর উঠে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। অবাধে চলছে মাটিবোঝাই ট্রাক। সড়কের কোনো কোনো জায়গায় এক পাশ দিয়ে গাড়ি চলছে। বাকি অংশের ইট আর খোয়া উঠে গর্ত তৈরি হয়েছে। বৃষ্টি হলে গর্তে পানি জমে পুকুরের মত তৈরি হয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থায় চলাচল করা আরও কঠিন হয়ে পড়ে। ওই সড়কের সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক মো. সুজন মিয়া বলেন, দেওড়া ও পাকুল্যা এলাকায় সড়কটিতে বড় গর্তে মাঝেমধ্যেই ট্রাক আটকে থাকে। এ কারণে যানবাহন ঠিকমতো চলতে পারে না। কাওয়ালীপাড়া এলাকায় প্রায় আট ফুট জায়গাজুড়ে বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। খানাখন্দের কারণে ২৫ মিনিটের ওই রাস্তা পাড়ি দিতে দেড় থেকে দুই ঘণ্টা সময় লাগছে। দেওড়া গ্রামের বীর মুক্তিযুদ্ধা সানোয়ার হোসেন বলেন, সড়কটি জনগুরুত্বপুর্ণ হলেও দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় চলাচলকারী জনযানের ভোগান্তীর শেষ নেই।

ভাবখন্ড গ্রামের সমেজ উদ্দিন বলেন, সড়কের বিভিন্ন জায়গায় বড় বড় গর্ত হয়ে পানি জমে রয়েছে। ঝুকি নিয়ে চলছে যানবাহন। যেকোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

মির্জাপুর উপজেলা প্রকৌশলী মো. আরিফুর রহমান বলেন, সড়কটির মির্জাপুর অংশের ৯ কিলোমিটার ৬৫০ মিটার রাস্তা সংস্কারের জন্য প্রায় ১০ কোটি টাকার টেন্ডার হয়েছে। এখন কার্যাদেশ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। খুব শিগগিরই সড়কটির সংস্কার কাজ শুরু হবে বলে তিনি বরেন।