বেড়েই চলেছে সংক্রমণ ও মৃত্যু

৫২ দিনে সর্বোচ্চ শনাক্ত, মৃত্যু ৮২

সপ্তাহের ব্যবধানে করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতির চরম অবনতি। সীমান্তবর্তী জেলাগুলো টালমাটাল অবস্থা। সবশেষ দেশে আগের দিনের তুলনায় মৃত্যু ও শনাক্তের সংখ্যা বেড়েছে। আগের দিন ৬৭ জন মারা গেলেও গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ৮২ জনের। খুলনায় সর্বোচ্চ মৃত্যু ৩২ জনের গত ৫২ দিনের মধ্যে এটি সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড। এর আগে গত ২৯ এপ্রিল সর্বোচ্চ ৮৮ জন মারা যায়। রাজধানীর হাসপাতালগুলোতেও বাড়তে শুরু করেছে রোগীর চাপ। এমন অবস্থায় গত সপ্তাহে আইসিডিডিআর’বি জানায়, ঢাকাতেও এই ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ বাড়ছে হু হু করে। ঘনবসতি হওয়ায় মহাঝুঁকিতে রাজধানী।

ঢিলেঢালা লকডাউন-মানুষের উদাসীনতায় জেলায় বাড়ছে সংক্রমণ বলে জানান জনস্বাস্থ্যবিদরা। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, বাড়তি চাপ সামলাতে প্রস্তুতি নিয়ে রাখলেও শয্যা অনুপাতে রোগীর সংখ্যা বেশি হলে তা মোকাবিলায় বেগ পেতে হতে পারে।

অন্যদিকে, ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টের প্রভাবে, গত দুই মাস ধরে নাস্তানাবুদ সীমান্ত অঞ্চল। রাজশাহীর পরে খুলনা বিভাগেও হাসপাতালে শুধুই হাহাকার। বিভাগভিত্তিক তথ্য বলছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৩২ জন মারা গেছেন খুলনা বিভাগে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২১ জন করে মারা গেছেন ঢাকা বিভাগে। এছাড়া চট্টগ্রামে ৯ জন, রাজশাহীতে ১২ জন, বরিশালে ১ জন, সিলেটে ২ জন , রংপুরে ১ জন ও ময়মনসিংহে ৪ জন মারা গেছেন। শনাক্ত হওয়া নতুন রোগীদের মধ্যে দুই হাজারই ঢাকা ও রাজশাহী বিভাগের বাসিন্দা।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলেন, ঢাকায় এখন ভারতীয় ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের সামাজিক সংক্রমণের সময়কাল চলছে। ঢাকায় যারা এখনও ভ্যাকসিন পায়নি, যারা এখনও করোনা আক্রান্ত হননি তারা এই ভ্যারিয়েন্টে সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ঢাকায় সংক্রমণ কম হলেও, ঢাকার আশপাশের জেলাগুলো এই ভ্যারিয়েন্টের প্রভাব পড়বে, সেখানে সংক্রমণ বাড়বে। আর সেখানকার রোগীদের ঢাকায় নিয়ে আসা হবে, তখন এখানে চাপ বেড়ে যাবে।

সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞরা জানান, সংক্রমণটা ঢাকার দিকে বাড়তে থাকবে। আমরা যে ভয়টা করেছিলাম ঈদের সময়, ঢাকার সংক্রমণ জেলাতে ছড়িয়ে পড়বে। কিন্তু দেখা গেছে যে,নতুন এ ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের কারণে অন্যান্য ভ্যারিয়েন্টকে রিপলিস করে ফেলেছে এটা। ?সুতরাং এবার ঘটনাটা ঘটেছে উল্টো। এবার জেলা শহর থেকে ঢাকায় ঢুকছে। তাই এখানে সংক্রমণটা বাড়তে থাকবে।

গত সপ্তাহের তুলনায় করোনা ও উপসর্গে মৃত্যু বেড়েছে ৪৬ শতাংশ। ঈদুল ফিতরের পর মে মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে সংক্রমণের হার লাগামহীন। শুধু হাসপাতাল নয়, বাড়ছে আইসিইউ ইউনিটেও রোগীর চাপ। এছাড়া স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের হিসাবে উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ জেলার সংখ্যা গতকাল পর্যন্ত ৫৪, যা ৩ জুন পর্যন্ত ৩৬ ছিল।

সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) সংজ্ঞা অনুযায়ী, একটি জেলাকে উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে তখনই বিবেচনা করা হবে যখন সেখানে সংক্রমণের হার ১০ শতাংশ বা তার চেয়ে বেশি হবে।

সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞরা জানান, ‘যেহেতু দেশব্যাপী সংক্রমণের হার ১৫ শতাংশের চেয়ে বেশি, সেক্ষেত্রে সারাদেশে লকডাউন দেয়ার কোন বিকল্প নেই। একইসঙ্গে লকডাউনটিকে ফলপ্রসূ করার জন্য প্রচুর পরিমাণে পরীক্ষার ব্যবস্থা করা উচিত। কিন্তু সরকার কখনওই সে রকম কিছু করেনি।’

‘সরকার লকডাউনের ব্যাপারে যা বলেছে, তা কার্যকর করে দেখায়নি। সরকারি উদ্যোগগুলো মূলত লোক দেখানো। ফলস্বরূপ, মানুষ এখন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ব্যাপারে চরম অনীহা প্রকাশ করছেন’।

লকডাউনের জন্য প্রস্তাবিত জেলাগুলো ছিল নওগাঁ, রাজশাহী, নাটোর, কুষ্টিয়া, যশোর, খুলনা ও সাতক্ষীরা এবং তাদের বেশিরভাগই গত ১০ দিন ধরে এ ধরনের বিধি-নিষেধের আওতায় রয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, দেশজুড়ে সংক্রমণের হার বিবেচনায় উদ্বেগে ফেলছে ঢাকা। তবে পূর্ব অভিজ্ঞতা থেকে হাসপাতালগুলো প্রস্তুতি নিলেও সংক্রমণের মাত্রা ছাড়িয়ে গেলে তা মোকাবিলায় সহজ হবে না।

গতকাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দেশে এখন পর্যন্ত করোনায় মারা গেছেন ১৩ হাজার ৫৪৮ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা শনাক্ত হয়েছেন ৩ হাজার ৬৪১ জন। দেশে এ পর্যন্ত শনাক্ত রোগীর মোট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮ লাখ ৫১ হাজার ৬৬৮ জনে। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ৫০৯ জন, এখন পর্যন্ত সুস্থ ৭ লাখ ৮২ হাজার ৬৫৫।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ২২ হাজার ২৬২টি, অ্যান্টিজেন টেস্টসহ নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ২২ হাজার ২৩১টি। এখন পর্যন্ত ৬৩ লাখ ২৭ হাজার ৭৩৪টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আরও জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ১৬ দশমিক ৩৮ শতাংশ। এখন পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৪৬ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় প্রতি ১০০ জনে সুস্থ হয়েছেন ৯২ দশমিক ১২ জন। মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৫৯ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃতদের মধ্যে ৫৫ জন পুরুষ এবং নারী ২৭ জন। এখন পর্যন্ত পুরুষ ৯ হাজার ৭১২ জন এবং নারী ৩ হাজার ৮৩৬ জন মারা গেছেন। বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত ২৪ ঘণ্টার মৃতদের মধ্যে ৬০ ঊর্ধ্ব ৩৮ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছর বয়সী ২১ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছর বয়সী ১১ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছর বয়সী ৯ জন, ২১ থেকে ৩০ বছর বয়সী ২ জন এবং ১১ থেকে ২০ বছর বয়সী একজন। ঢাকা ও চট্টগ্রাম জেলায় দৈনিক শনাক্ত রোগী আগের দিনের চেয়ে কমলেও অন্য জেলাগুলোতে বেড়েছে।

বিভাগওয়ারি হিসাবে ঢাকায় দৈনিক শনাক্তের সংখ্যা ১৪১১ জন থেকে কমে ১০৪৫ জন এবং চট্টগ্রাম বিভাগে ৪০১ জন থেকে কমে ২৯৩ জন হয়েছে। কিন্তু রাজশাহীতে ৩৪৫ জন থেকে বেড়ে ১০২৩, খুলনা বিভাগে ৬২৫ জন থেকে বেড়ে ৭৬৩ জন হয়েছে। ঢাকা ও রাজশাহী বিভাগ মিলিয়ে গত একদিনে ২০৬৮ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছে, যা সারাদেশে মোট শনাক্তের ৫৭ শতাংশ।

যশোরে হাসপাতালে রোগীর চাপ সামাল দিতে নতুন ওয়ার্ড

যশোর ঃ জেলায় নতুন করে ৭৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। মারা গেছেন আরও ৬ জন। শনাক্তের হার ৩৮ শতাংশ। ইতোমধ্যে যশোর জেনারেল হাসপাতালের ৮০ শয্যার করোনা ডেডিকেটেড ইউনিট পূর্ণ হয়ে গেছে। বর্তমানে সেখানে ৮৭ জন ভর্তি রয়েছেন। রোগীর চাপ সামাল দিতে নতুন ওয়ার্ড খোলার পাশাপাশি বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় চিকিৎসা কার্যক্রম বাড়ানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিভিল সার্জন।

স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য মতে, জুন মাসের শুরু থেকেই যশোরে সংক্রমণের হার উর্ধ্বমুখী। যশোরের সিভিল সার্জন ডা. শেখ আবু শাহীন জানিয়েছেন, করোনা রোগীদের স্বাস্থ্যসেবা বৃদ্ধি করতে নতুন করে ৪৫ শয্যার আরেকটি ওয়ার্ড প্রস্তুত করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। সেই সঙ্গে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা সাজেদা ফাউন্ডেশনের অর্থায়ন ও অবকাঠামোগত সুবিধা নিয়েও চিকিৎসা কার্যক্রমের পরিধি বাড়ানো হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

সাতক্ষীরায় সংক্রমণ হার ৫০ এর নিচে নামছে না

সাতক্ষীরা : জেলায় আরও ১৪ জনের করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ সময় নমুনা পরীক্ষা করা হয় ২৮ জনের। শনাক্তের হার ৫০ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে করোনায় মারা গেলেন ৬০ জন। এ পর্যন্ত জেলায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ২৮৫৪ জন। মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, সদর হাসপাতাল ও ৬টি ক্লিনিকে ৩৬১ জন ভর্তি ছিলেন। এর মধ্যে পজেটিভ ৩৮ জন।

জনবল সংকটে ধুঁকতে থাকা সামেক হাসপাতালে ৩৯ জন নার্স নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তবে এখনো ২০ জন চিকিৎসক ও ৫০ জন ওয়ার্ডবয় নিয়োগের দাবি সামেক কর্তৃপক্ষের। করোনা রোগী যেভাবে বাড়ছে, জনবল সংকটের কারণে চিকিৎসা সেবা ভেঙে পড়ার আশঙ্কা স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের।

সিভিল সার্জন ডা. হুসাইন শাফায়াত বলেন, সামেক হাসপাতালে ২শ’ বেডে ২শ’ ০৯ জন রোগী ভর্তি আছেন। আইসিইউ রয়েছে ৮টি।

এদিকে, একেবারেই ঢিলে-ঢালাভাবে পালিত হয়েছে তৃতীয় সপ্তাহের লকডাউনের দ্বিতীয় দিন। গত ১৫ দিনে সংক্রমণের হার ৫০ এর নিচে না আসায় হাসপাতালগুলোতে বাড়ছে বাড়তি চাপ। এ অবস্থা চলতে থাকলে করোনা রোগীর ব্যাপক চাপে হিমশিম খাবে স্বাস্থ্য বিভাগ।

সিভিল সার্জন ডা. হুসাইন শাফায়াত বলেন, সামেক হাসপাতালে ৩৮টি হাইফ্লো ন্যাজেল ক্যানোলা রয়েছে। তবে রোগী বাড়লে ব্যাপক চাপ সহ্য করা কঠিন হবে।

কুষ্টিয়ায় ৭ জনের মৃত্যু, আক্রান্ত ১৬৪

কুষ্টিয়া ঃ জেলায় নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে ১৬৪ জন। ৫৪৯টি নমুনা পরীক্ষার পর এই সংখ্যক রোগী শনাক্ত হয়। কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে আরও ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে গত দুই দিনে করোনায় মারা গেলেন ১৫ জন।

জেলায় নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে আক্রান্তের হার প্রায় ২৮ শতাংশ। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়ালো ৬৩৩৯ জন। কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে করোনা ওয়ার্ডে ১০০টি শয্যার বিপরিতে ১১৫ জন রোগী ভর্তি রয়েছে। রোগীর চাপ ঠেকাতে ২৫০ শয্যার কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালকে করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতাল করার জন্য ঢাকায় প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. তাপস কুমার সরকার। এলাকায় কঠোর বিধিনিষেধ চলছে। এদিকে জেনারেল হাসপাতালে কয়েকজন চিকিৎসকের করোনা পজিটিভ হওয়ায় ডাক্তার সংকট দেখা দিয়েছে। অতিরিক্ত রোগীর চাপে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ হিমশিম খাচ্ছে।

ঝিনাইদহে শনাক্তের হার ৫৪ দশমিক ৮৭

ঝিনাইদহ ঃ জেলায় ৯০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। সদর হাসপাতালে মারা গেছে ৪ জন। মহেশপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে করোনা উপসর্গে একজন মারা গেছে।

ঝিনাইদহের সিভিল সার্জন ডা. সেলিনা বেগম জানান, ঝিনাইদহ ও কুষ্টিয়া ল্যাব থেকে ১শ’ ৬৪ জনের নমুনা পরীক্ষার ফলাফল এসেছে। এদের মধ্যে ৯০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ৫৪ দশমিক ৮৭ ভাগ। এ নিয়ে জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ৩ হাজার ৩শ’ ৯৬ জনে। ২৪ ঘণ্টায় ৪ জনের মৃত্যুতে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়ালো ৬৬ জনে।

ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হারুন অর রশিদ জানান, ৫০ বেড়ের করোনা ওয়ার্ডে ৫১ জন রোগ ভর্তি আছে। স্থান সংকুলান না ৫০ বেডের একটি নতুন করোনা ওয়ার্ড খোলা হয়েছে। সদর হাসপাতালে করোনা পরীক্ষার জন্য ভিড় লেগে গেছে। মানুষ লাইনে দাঁড়িয়ে নমুনা দিচ্ছে।

কুড়িগ্রামে চীনা ভ্যাকসিন দেয়া শুরু

কুড়িগ্রাম : জেলায় চীনা ভ্যাকসিন দেয়া শুরু হয়েছে। জেলায় রেজিস্ট্রেশন আছে প্রায় ১০ হাজার জনের। টিকা কার্যক্রম সম্পর্কে প্রচার-প্রচারণা না থাকায় গত দু’দিনে মাত্র ১৮ জন ভ্যাকসিন নিয়েছে।

সিভিল সার্জন ডা. হাবিবুর রহমান জানান, জেলার জন্য ৮ হাজার ৪শ’ ভ্যাকসিন আমরা পেয়েছি। এসব টিকা নতুন ব্যক্তিদের দেয়া হবে। যাতে একই কোম্পানির ভ্যাকসিনের ডোজ তারা দ্বিতীয়বার পান। এজন্য ৪ হাজার ২০০ জনকে প্রথম ডোজ দেয়া হবে। এখন টিকা দেয়ার বুথ জেলা সদরে কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল। ফলে অন্য ৮টি উপজেলার মানুষকে জেলা সদরেই আসতে হবে টিকা গ্রহণ করতে চাইলে আমরা প্রচার-প্রচারণার জন্য বিশেষ উদ্যোগ নিচ্ছি যাতে টিকা কার্যক্রম সফল করা যায়।

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নজরুল ইসলাম জানান, কুড়িগ্রাম সদরে টিকা গ্রহণের জন্য এক হাজার ৪০০ জন অপেক্ষমান তালিকায় আছে। আর জেলায় মোট রেজিস্ট্রেশন করে অপেক্ষমান তালিকায় আছে প্রায় ১০ হাজার জন।

সোমবার, ২১ জুন ২০২১ , ৭ আষাঢ় ১৪২৮ ৯ জিলকদ ১৪৪২

বেড়েই চলেছে সংক্রমণ ও মৃত্যু

৫২ দিনে সর্বোচ্চ শনাক্ত, মৃত্যু ৮২

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

সপ্তাহের ব্যবধানে করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতির চরম অবনতি। সীমান্তবর্তী জেলাগুলো টালমাটাল অবস্থা। সবশেষ দেশে আগের দিনের তুলনায় মৃত্যু ও শনাক্তের সংখ্যা বেড়েছে। আগের দিন ৬৭ জন মারা গেলেও গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ৮২ জনের। খুলনায় সর্বোচ্চ মৃত্যু ৩২ জনের গত ৫২ দিনের মধ্যে এটি সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড। এর আগে গত ২৯ এপ্রিল সর্বোচ্চ ৮৮ জন মারা যায়। রাজধানীর হাসপাতালগুলোতেও বাড়তে শুরু করেছে রোগীর চাপ। এমন অবস্থায় গত সপ্তাহে আইসিডিডিআর’বি জানায়, ঢাকাতেও এই ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ বাড়ছে হু হু করে। ঘনবসতি হওয়ায় মহাঝুঁকিতে রাজধানী।

ঢিলেঢালা লকডাউন-মানুষের উদাসীনতায় জেলায় বাড়ছে সংক্রমণ বলে জানান জনস্বাস্থ্যবিদরা। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, বাড়তি চাপ সামলাতে প্রস্তুতি নিয়ে রাখলেও শয্যা অনুপাতে রোগীর সংখ্যা বেশি হলে তা মোকাবিলায় বেগ পেতে হতে পারে।

অন্যদিকে, ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টের প্রভাবে, গত দুই মাস ধরে নাস্তানাবুদ সীমান্ত অঞ্চল। রাজশাহীর পরে খুলনা বিভাগেও হাসপাতালে শুধুই হাহাকার। বিভাগভিত্তিক তথ্য বলছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৩২ জন মারা গেছেন খুলনা বিভাগে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২১ জন করে মারা গেছেন ঢাকা বিভাগে। এছাড়া চট্টগ্রামে ৯ জন, রাজশাহীতে ১২ জন, বরিশালে ১ জন, সিলেটে ২ জন , রংপুরে ১ জন ও ময়মনসিংহে ৪ জন মারা গেছেন। শনাক্ত হওয়া নতুন রোগীদের মধ্যে দুই হাজারই ঢাকা ও রাজশাহী বিভাগের বাসিন্দা।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলেন, ঢাকায় এখন ভারতীয় ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের সামাজিক সংক্রমণের সময়কাল চলছে। ঢাকায় যারা এখনও ভ্যাকসিন পায়নি, যারা এখনও করোনা আক্রান্ত হননি তারা এই ভ্যারিয়েন্টে সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ঢাকায় সংক্রমণ কম হলেও, ঢাকার আশপাশের জেলাগুলো এই ভ্যারিয়েন্টের প্রভাব পড়বে, সেখানে সংক্রমণ বাড়বে। আর সেখানকার রোগীদের ঢাকায় নিয়ে আসা হবে, তখন এখানে চাপ বেড়ে যাবে।

সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞরা জানান, সংক্রমণটা ঢাকার দিকে বাড়তে থাকবে। আমরা যে ভয়টা করেছিলাম ঈদের সময়, ঢাকার সংক্রমণ জেলাতে ছড়িয়ে পড়বে। কিন্তু দেখা গেছে যে,নতুন এ ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের কারণে অন্যান্য ভ্যারিয়েন্টকে রিপলিস করে ফেলেছে এটা। ?সুতরাং এবার ঘটনাটা ঘটেছে উল্টো। এবার জেলা শহর থেকে ঢাকায় ঢুকছে। তাই এখানে সংক্রমণটা বাড়তে থাকবে।

গত সপ্তাহের তুলনায় করোনা ও উপসর্গে মৃত্যু বেড়েছে ৪৬ শতাংশ। ঈদুল ফিতরের পর মে মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে সংক্রমণের হার লাগামহীন। শুধু হাসপাতাল নয়, বাড়ছে আইসিইউ ইউনিটেও রোগীর চাপ। এছাড়া স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের হিসাবে উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ জেলার সংখ্যা গতকাল পর্যন্ত ৫৪, যা ৩ জুন পর্যন্ত ৩৬ ছিল।

সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) সংজ্ঞা অনুযায়ী, একটি জেলাকে উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে তখনই বিবেচনা করা হবে যখন সেখানে সংক্রমণের হার ১০ শতাংশ বা তার চেয়ে বেশি হবে।

সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞরা জানান, ‘যেহেতু দেশব্যাপী সংক্রমণের হার ১৫ শতাংশের চেয়ে বেশি, সেক্ষেত্রে সারাদেশে লকডাউন দেয়ার কোন বিকল্প নেই। একইসঙ্গে লকডাউনটিকে ফলপ্রসূ করার জন্য প্রচুর পরিমাণে পরীক্ষার ব্যবস্থা করা উচিত। কিন্তু সরকার কখনওই সে রকম কিছু করেনি।’

‘সরকার লকডাউনের ব্যাপারে যা বলেছে, তা কার্যকর করে দেখায়নি। সরকারি উদ্যোগগুলো মূলত লোক দেখানো। ফলস্বরূপ, মানুষ এখন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ব্যাপারে চরম অনীহা প্রকাশ করছেন’।

লকডাউনের জন্য প্রস্তাবিত জেলাগুলো ছিল নওগাঁ, রাজশাহী, নাটোর, কুষ্টিয়া, যশোর, খুলনা ও সাতক্ষীরা এবং তাদের বেশিরভাগই গত ১০ দিন ধরে এ ধরনের বিধি-নিষেধের আওতায় রয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, দেশজুড়ে সংক্রমণের হার বিবেচনায় উদ্বেগে ফেলছে ঢাকা। তবে পূর্ব অভিজ্ঞতা থেকে হাসপাতালগুলো প্রস্তুতি নিলেও সংক্রমণের মাত্রা ছাড়িয়ে গেলে তা মোকাবিলায় সহজ হবে না।

গতকাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দেশে এখন পর্যন্ত করোনায় মারা গেছেন ১৩ হাজার ৫৪৮ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা শনাক্ত হয়েছেন ৩ হাজার ৬৪১ জন। দেশে এ পর্যন্ত শনাক্ত রোগীর মোট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮ লাখ ৫১ হাজার ৬৬৮ জনে। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ৫০৯ জন, এখন পর্যন্ত সুস্থ ৭ লাখ ৮২ হাজার ৬৫৫।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ২২ হাজার ২৬২টি, অ্যান্টিজেন টেস্টসহ নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ২২ হাজার ২৩১টি। এখন পর্যন্ত ৬৩ লাখ ২৭ হাজার ৭৩৪টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আরও জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ১৬ দশমিক ৩৮ শতাংশ। এখন পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৪৬ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় প্রতি ১০০ জনে সুস্থ হয়েছেন ৯২ দশমিক ১২ জন। মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৫৯ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃতদের মধ্যে ৫৫ জন পুরুষ এবং নারী ২৭ জন। এখন পর্যন্ত পুরুষ ৯ হাজার ৭১২ জন এবং নারী ৩ হাজার ৮৩৬ জন মারা গেছেন। বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত ২৪ ঘণ্টার মৃতদের মধ্যে ৬০ ঊর্ধ্ব ৩৮ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছর বয়সী ২১ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছর বয়সী ১১ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছর বয়সী ৯ জন, ২১ থেকে ৩০ বছর বয়সী ২ জন এবং ১১ থেকে ২০ বছর বয়সী একজন। ঢাকা ও চট্টগ্রাম জেলায় দৈনিক শনাক্ত রোগী আগের দিনের চেয়ে কমলেও অন্য জেলাগুলোতে বেড়েছে।

বিভাগওয়ারি হিসাবে ঢাকায় দৈনিক শনাক্তের সংখ্যা ১৪১১ জন থেকে কমে ১০৪৫ জন এবং চট্টগ্রাম বিভাগে ৪০১ জন থেকে কমে ২৯৩ জন হয়েছে। কিন্তু রাজশাহীতে ৩৪৫ জন থেকে বেড়ে ১০২৩, খুলনা বিভাগে ৬২৫ জন থেকে বেড়ে ৭৬৩ জন হয়েছে। ঢাকা ও রাজশাহী বিভাগ মিলিয়ে গত একদিনে ২০৬৮ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছে, যা সারাদেশে মোট শনাক্তের ৫৭ শতাংশ।

যশোরে হাসপাতালে রোগীর চাপ সামাল দিতে নতুন ওয়ার্ড

যশোর ঃ জেলায় নতুন করে ৭৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। মারা গেছেন আরও ৬ জন। শনাক্তের হার ৩৮ শতাংশ। ইতোমধ্যে যশোর জেনারেল হাসপাতালের ৮০ শয্যার করোনা ডেডিকেটেড ইউনিট পূর্ণ হয়ে গেছে। বর্তমানে সেখানে ৮৭ জন ভর্তি রয়েছেন। রোগীর চাপ সামাল দিতে নতুন ওয়ার্ড খোলার পাশাপাশি বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় চিকিৎসা কার্যক্রম বাড়ানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিভিল সার্জন।

স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য মতে, জুন মাসের শুরু থেকেই যশোরে সংক্রমণের হার উর্ধ্বমুখী। যশোরের সিভিল সার্জন ডা. শেখ আবু শাহীন জানিয়েছেন, করোনা রোগীদের স্বাস্থ্যসেবা বৃদ্ধি করতে নতুন করে ৪৫ শয্যার আরেকটি ওয়ার্ড প্রস্তুত করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। সেই সঙ্গে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা সাজেদা ফাউন্ডেশনের অর্থায়ন ও অবকাঠামোগত সুবিধা নিয়েও চিকিৎসা কার্যক্রমের পরিধি বাড়ানো হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

সাতক্ষীরায় সংক্রমণ হার ৫০ এর নিচে নামছে না

সাতক্ষীরা : জেলায় আরও ১৪ জনের করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ সময় নমুনা পরীক্ষা করা হয় ২৮ জনের। শনাক্তের হার ৫০ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে করোনায় মারা গেলেন ৬০ জন। এ পর্যন্ত জেলায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ২৮৫৪ জন। মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, সদর হাসপাতাল ও ৬টি ক্লিনিকে ৩৬১ জন ভর্তি ছিলেন। এর মধ্যে পজেটিভ ৩৮ জন।

জনবল সংকটে ধুঁকতে থাকা সামেক হাসপাতালে ৩৯ জন নার্স নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তবে এখনো ২০ জন চিকিৎসক ও ৫০ জন ওয়ার্ডবয় নিয়োগের দাবি সামেক কর্তৃপক্ষের। করোনা রোগী যেভাবে বাড়ছে, জনবল সংকটের কারণে চিকিৎসা সেবা ভেঙে পড়ার আশঙ্কা স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের।

সিভিল সার্জন ডা. হুসাইন শাফায়াত বলেন, সামেক হাসপাতালে ২শ’ বেডে ২শ’ ০৯ জন রোগী ভর্তি আছেন। আইসিইউ রয়েছে ৮টি।

এদিকে, একেবারেই ঢিলে-ঢালাভাবে পালিত হয়েছে তৃতীয় সপ্তাহের লকডাউনের দ্বিতীয় দিন। গত ১৫ দিনে সংক্রমণের হার ৫০ এর নিচে না আসায় হাসপাতালগুলোতে বাড়ছে বাড়তি চাপ। এ অবস্থা চলতে থাকলে করোনা রোগীর ব্যাপক চাপে হিমশিম খাবে স্বাস্থ্য বিভাগ।

সিভিল সার্জন ডা. হুসাইন শাফায়াত বলেন, সামেক হাসপাতালে ৩৮টি হাইফ্লো ন্যাজেল ক্যানোলা রয়েছে। তবে রোগী বাড়লে ব্যাপক চাপ সহ্য করা কঠিন হবে।

কুষ্টিয়ায় ৭ জনের মৃত্যু, আক্রান্ত ১৬৪

কুষ্টিয়া ঃ জেলায় নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে ১৬৪ জন। ৫৪৯টি নমুনা পরীক্ষার পর এই সংখ্যক রোগী শনাক্ত হয়। কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে আরও ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে গত দুই দিনে করোনায় মারা গেলেন ১৫ জন।

জেলায় নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে আক্রান্তের হার প্রায় ২৮ শতাংশ। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়ালো ৬৩৩৯ জন। কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে করোনা ওয়ার্ডে ১০০টি শয্যার বিপরিতে ১১৫ জন রোগী ভর্তি রয়েছে। রোগীর চাপ ঠেকাতে ২৫০ শয্যার কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালকে করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতাল করার জন্য ঢাকায় প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. তাপস কুমার সরকার। এলাকায় কঠোর বিধিনিষেধ চলছে। এদিকে জেনারেল হাসপাতালে কয়েকজন চিকিৎসকের করোনা পজিটিভ হওয়ায় ডাক্তার সংকট দেখা দিয়েছে। অতিরিক্ত রোগীর চাপে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ হিমশিম খাচ্ছে।

ঝিনাইদহে শনাক্তের হার ৫৪ দশমিক ৮৭

ঝিনাইদহ ঃ জেলায় ৯০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। সদর হাসপাতালে মারা গেছে ৪ জন। মহেশপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে করোনা উপসর্গে একজন মারা গেছে।

ঝিনাইদহের সিভিল সার্জন ডা. সেলিনা বেগম জানান, ঝিনাইদহ ও কুষ্টিয়া ল্যাব থেকে ১শ’ ৬৪ জনের নমুনা পরীক্ষার ফলাফল এসেছে। এদের মধ্যে ৯০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ৫৪ দশমিক ৮৭ ভাগ। এ নিয়ে জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ৩ হাজার ৩শ’ ৯৬ জনে। ২৪ ঘণ্টায় ৪ জনের মৃত্যুতে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়ালো ৬৬ জনে।

ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হারুন অর রশিদ জানান, ৫০ বেড়ের করোনা ওয়ার্ডে ৫১ জন রোগ ভর্তি আছে। স্থান সংকুলান না ৫০ বেডের একটি নতুন করোনা ওয়ার্ড খোলা হয়েছে। সদর হাসপাতালে করোনা পরীক্ষার জন্য ভিড় লেগে গেছে। মানুষ লাইনে দাঁড়িয়ে নমুনা দিচ্ছে।

কুড়িগ্রামে চীনা ভ্যাকসিন দেয়া শুরু

কুড়িগ্রাম : জেলায় চীনা ভ্যাকসিন দেয়া শুরু হয়েছে। জেলায় রেজিস্ট্রেশন আছে প্রায় ১০ হাজার জনের। টিকা কার্যক্রম সম্পর্কে প্রচার-প্রচারণা না থাকায় গত দু’দিনে মাত্র ১৮ জন ভ্যাকসিন নিয়েছে।

সিভিল সার্জন ডা. হাবিবুর রহমান জানান, জেলার জন্য ৮ হাজার ৪শ’ ভ্যাকসিন আমরা পেয়েছি। এসব টিকা নতুন ব্যক্তিদের দেয়া হবে। যাতে একই কোম্পানির ভ্যাকসিনের ডোজ তারা দ্বিতীয়বার পান। এজন্য ৪ হাজার ২০০ জনকে প্রথম ডোজ দেয়া হবে। এখন টিকা দেয়ার বুথ জেলা সদরে কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল। ফলে অন্য ৮টি উপজেলার মানুষকে জেলা সদরেই আসতে হবে টিকা গ্রহণ করতে চাইলে আমরা প্রচার-প্রচারণার জন্য বিশেষ উদ্যোগ নিচ্ছি যাতে টিকা কার্যক্রম সফল করা যায়।

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নজরুল ইসলাম জানান, কুড়িগ্রাম সদরে টিকা গ্রহণের জন্য এক হাজার ৪০০ জন অপেক্ষমান তালিকায় আছে। আর জেলায় মোট রেজিস্ট্রেশন করে অপেক্ষমান তালিকায় আছে প্রায় ১০ হাজার জন।