টার্মিনাল ছাড়া টোলের নামে চাঁদা নেয়া যাবে না

ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধ

টার্মিনাল ছাড়া অন্য কোন জায়গা থেকে সরকার পরিচালিত নির্ধারিত ফি, টোল আদায়ের নামে চাঁদা আদায় করা যাবে না। এছাড়া দেশে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা বন্ধ করে দেয়া হবে। গতকাল দুপুরে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে সড়ক পরিবহন টাস্কফোর্সের সভা শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এ কথা জানান।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সিটি করপোরেশন ও পৌরসভাগুলো নির্ধারিত স্থান ছাড়া সড়কে যত্রতত্র টোল ও ফি আদায় করতে পারবে না। ইজারা দেয়া জায়গায়, স্থানীয় সরকার পরিচালিত নির্ধারিত ফি, টোল, পরিবহনের টার্মিনাল ছাড়া অন্য কোন জায়গা থেকে চাঁদা আদায় করতে পারবে না। নির্ধারিত স্থান থেকে টোল বা রাজস্ব আদায় করতে হবে।

‘সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এজন্য আমরা হাইওয়েতে এখন ক্যামেরা বসাচ্ছি, এ ব্যাপারে টেন্ডারও হয়ে গেছে। এর ফলে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামের রাস্তাটি পুরোপুরি ক্যামেরার নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। তাহলে কীভাবে দুর্ঘটনা হলো, কে গাড়ি থামালো, সবই আমাদের নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। আমাদের পুলিশ বাহিনী ওখানে বসে বসে দেখতে পারবে কে কী করছে।’ মহাসড়কে কোটি কোটি টাকার চাঁদা বাণিজ্য চলে এটিতো দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে। এর সঙ্গে বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনগুলোও জড়িত। সেক্ষেত্রে কীভাবে পুরোপুরি আশা প্রকাশ করছেন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, চাঁদা বাণিজ্যের কথা আমি বলবো না, আমি বলবো একটা টোল আছে, সেটা দিতে হবে। সেটা কোথা থেকে নেবে, কীভাবে এবং কত টাকা নেবে সেটা নির্ধারিত হবে। সেই জায়গা ছাড়া এই টোল কেউ নিতে পারবে না।

‘এছাড়া পরিবহনের যে চাঁদা, যেটা মালিক বা শ্রমিকরা নিয়ে থাকে সমিতি চালানোর জন্য, সেটাও নির্ধারিত রয়েছে। সে চাঁদাও বাস টার্মিনাল বা যেখান থেকে বাস ছাড়েন এর বাইরে কেউ নিতে পারবে না।’ ঢাকাতেও আমরা দেখি বিভিন্ন ঠিকাদারের নামে বিভিন্ন সিগন্যালে রানিং গাড়ি থেকে চাঁদা নেয়া হয়, এটা সবাই জানে- এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এটা আমরা জানিয়ে দিচ্ছি, যে যে সিদ্ধান্ত হয়েছে, নিজ নিজ মন্ত্রণালয় বসে তাদের জানিয়ে দেবে, এসব চাঁদাবাজি কিংবা যত্রতত্র কালেকশন যাতে না করে।

মন্ত্রী বলেন, পরিবহন শ্রমিকদের মালিকপক্ষ থেকে নিয়োগপত্র দিতে হবে। সেটা দেয়ার জন্য মালিক ও শ্রমিকপক্ষ আজ উপস্থিত ছিলেন। তারা দু’পক্ষ নিজেরা বসে এ বিষয়ে শিগগিরই সিদ্ধান্ত নেবেন।

গত ২৩ ডিসেম্বর যে মিটিং হয়েছিল সেখানে আজকের নেয়া কিছু সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল। ছয় মাসে কেন বাস্তবায়ন হয়নি- জানতে চাইলে তিনি বলেন, সড়ক আইনের মধ্যে সুস্পষ্টভাবে আছে, মালিকদের অবশ্যই নিয়োগপত্র দিতে হবে। সেই আইনটি পাস হয়েছিল। সেটি পরিশুদ্ধ করে আবার পার্লামেন্টে আসছে। এটা নিয়ে অনেক জটিলতা আছে। আমরা দীর্ঘ আলাপ করেছি। চালক ও শ্রমিকরা বিভিন্ন সময় জায়গা পাল্টায়। এক মালিক থেকে আরেক মালিকের কাছে চলে যায়। নানান ধরনের কথাবার্তা আসছে। সেজন্য বলে দিয়েছি, দু’পক্ষই বসে এর ফয়সালা করবে।

সারাদেশে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, সভায় ব্যাটারিচালিত রিকশা-ভ্যান বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে ‘সারাদেশে আমরা লক্ষ্য করেছি রিকশা ও ভ্যানে ব্যাটারিচালিত মটর লাগিয়ে রাস্তায় চালানো হচ্ছে। এগুলোতে ব্রেকের সিস্টেমও দুর্বল ও অপ্রতুল। এগুলো যখন হঠাৎ ব্রেক করে তখন প্যাসেঞ্জারসহ উল্টে যায়। হাইওয়েগুলোতেও রিকশা-ভ্যান চলে আসছে। এগুলো বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে আদেশ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে সারাদেশে পাঠানো হবে।

মন্ত্রী বলেন, নসিমন-করিমন ও ইজিবাইকগুলো যাতে বড় রাস্তায় আসতে না পারে এবং শেষ পর্যন্ত চূড়ান্তভাবে বন্ধ করে দেয়ার চিন্তাভাবনা রয়েছে।

গতকাল সভায় সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের কার্যকরি সভাপতি শাজাহান খান, সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি মো. মসিউর রহমান রাঙা, পুলিশ মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ টাস্কফোর্সের অন্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

সোমবার, ২১ জুন ২০২১ , ৭ আষাঢ় ১৪২৮ ৯ জিলকদ ১৪৪২

টার্মিনাল ছাড়া টোলের নামে চাঁদা নেয়া যাবে না

ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধ

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

টার্মিনাল ছাড়া অন্য কোন জায়গা থেকে সরকার পরিচালিত নির্ধারিত ফি, টোল আদায়ের নামে চাঁদা আদায় করা যাবে না। এছাড়া দেশে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা বন্ধ করে দেয়া হবে। গতকাল দুপুরে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে সড়ক পরিবহন টাস্কফোর্সের সভা শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এ কথা জানান।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সিটি করপোরেশন ও পৌরসভাগুলো নির্ধারিত স্থান ছাড়া সড়কে যত্রতত্র টোল ও ফি আদায় করতে পারবে না। ইজারা দেয়া জায়গায়, স্থানীয় সরকার পরিচালিত নির্ধারিত ফি, টোল, পরিবহনের টার্মিনাল ছাড়া অন্য কোন জায়গা থেকে চাঁদা আদায় করতে পারবে না। নির্ধারিত স্থান থেকে টোল বা রাজস্ব আদায় করতে হবে।

‘সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এজন্য আমরা হাইওয়েতে এখন ক্যামেরা বসাচ্ছি, এ ব্যাপারে টেন্ডারও হয়ে গেছে। এর ফলে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামের রাস্তাটি পুরোপুরি ক্যামেরার নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। তাহলে কীভাবে দুর্ঘটনা হলো, কে গাড়ি থামালো, সবই আমাদের নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। আমাদের পুলিশ বাহিনী ওখানে বসে বসে দেখতে পারবে কে কী করছে।’ মহাসড়কে কোটি কোটি টাকার চাঁদা বাণিজ্য চলে এটিতো দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে। এর সঙ্গে বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনগুলোও জড়িত। সেক্ষেত্রে কীভাবে পুরোপুরি আশা প্রকাশ করছেন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, চাঁদা বাণিজ্যের কথা আমি বলবো না, আমি বলবো একটা টোল আছে, সেটা দিতে হবে। সেটা কোথা থেকে নেবে, কীভাবে এবং কত টাকা নেবে সেটা নির্ধারিত হবে। সেই জায়গা ছাড়া এই টোল কেউ নিতে পারবে না।

‘এছাড়া পরিবহনের যে চাঁদা, যেটা মালিক বা শ্রমিকরা নিয়ে থাকে সমিতি চালানোর জন্য, সেটাও নির্ধারিত রয়েছে। সে চাঁদাও বাস টার্মিনাল বা যেখান থেকে বাস ছাড়েন এর বাইরে কেউ নিতে পারবে না।’ ঢাকাতেও আমরা দেখি বিভিন্ন ঠিকাদারের নামে বিভিন্ন সিগন্যালে রানিং গাড়ি থেকে চাঁদা নেয়া হয়, এটা সবাই জানে- এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এটা আমরা জানিয়ে দিচ্ছি, যে যে সিদ্ধান্ত হয়েছে, নিজ নিজ মন্ত্রণালয় বসে তাদের জানিয়ে দেবে, এসব চাঁদাবাজি কিংবা যত্রতত্র কালেকশন যাতে না করে।

মন্ত্রী বলেন, পরিবহন শ্রমিকদের মালিকপক্ষ থেকে নিয়োগপত্র দিতে হবে। সেটা দেয়ার জন্য মালিক ও শ্রমিকপক্ষ আজ উপস্থিত ছিলেন। তারা দু’পক্ষ নিজেরা বসে এ বিষয়ে শিগগিরই সিদ্ধান্ত নেবেন।

গত ২৩ ডিসেম্বর যে মিটিং হয়েছিল সেখানে আজকের নেয়া কিছু সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল। ছয় মাসে কেন বাস্তবায়ন হয়নি- জানতে চাইলে তিনি বলেন, সড়ক আইনের মধ্যে সুস্পষ্টভাবে আছে, মালিকদের অবশ্যই নিয়োগপত্র দিতে হবে। সেই আইনটি পাস হয়েছিল। সেটি পরিশুদ্ধ করে আবার পার্লামেন্টে আসছে। এটা নিয়ে অনেক জটিলতা আছে। আমরা দীর্ঘ আলাপ করেছি। চালক ও শ্রমিকরা বিভিন্ন সময় জায়গা পাল্টায়। এক মালিক থেকে আরেক মালিকের কাছে চলে যায়। নানান ধরনের কথাবার্তা আসছে। সেজন্য বলে দিয়েছি, দু’পক্ষই বসে এর ফয়সালা করবে।

সারাদেশে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, সভায় ব্যাটারিচালিত রিকশা-ভ্যান বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে ‘সারাদেশে আমরা লক্ষ্য করেছি রিকশা ও ভ্যানে ব্যাটারিচালিত মটর লাগিয়ে রাস্তায় চালানো হচ্ছে। এগুলোতে ব্রেকের সিস্টেমও দুর্বল ও অপ্রতুল। এগুলো যখন হঠাৎ ব্রেক করে তখন প্যাসেঞ্জারসহ উল্টে যায়। হাইওয়েগুলোতেও রিকশা-ভ্যান চলে আসছে। এগুলো বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে আদেশ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে সারাদেশে পাঠানো হবে।

মন্ত্রী বলেন, নসিমন-করিমন ও ইজিবাইকগুলো যাতে বড় রাস্তায় আসতে না পারে এবং শেষ পর্যন্ত চূড়ান্তভাবে বন্ধ করে দেয়ার চিন্তাভাবনা রয়েছে।

গতকাল সভায় সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের কার্যকরি সভাপতি শাজাহান খান, সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি মো. মসিউর রহমান রাঙা, পুলিশ মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ টাস্কফোর্সের অন্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।