ফাইজারের টিকা দেয়া শুরু, তবে পরীক্ষামূলক

রাজধানীর তিনটি হাসপাতালে পরীক্ষামূলকভাবে কোভ্যাক্স থেকে পাওয়া ফাইজার-বায়োএনটেকের টিকা দেয়া শুরু হয়েছে। গতকাল সকাল পৌনে ১০টায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের কনভেনশন সেন্টারে টিকাদান কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ। একই সময় শেখ রাসেল জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট পরিচালক ফারুক আহমেদ এবং কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জামিল আহমেদ নিজ নিজ কেন্দ্রে টিকা কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।

টিকাদান চলে বেলা ৩টা পর্যন্ত। তিন হাসপাতলের প্রতিটিতে ১২০ জন করে মোট ৩৬০ জনকে টিকা দেয়া হয়। টিকাগ্রহীতাদের পর্যবেক্ষণ শেষে ৭ থেকে ১০ দিন পর অন্যদের এই টিকা দেয়ার কর্মসূচি শুরুর পরিকল্পনা রয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের। বাংলাদেশে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে তৃতীয় টিকা হিসেবে ফাইজার ব্যবহার করা হচ্ছে।

গতকাল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে প্রথম ফাইজারের টিকা নেন মালিবাগের বাসিন্দা রাহাত চৌধুরী। তিনি জানান, প্রথমে টিকা নেয়ার আগ্রহ না থাকায় নিবন্ধন করেননি। পরিবারের চাপে এপ্রিলে টিকাদান বন্ধ হওয়ার দুইদিন আগে নিবন্ধন করেন।

‘সেদিক থেকে ভাগ্য ভালো বলতে হয়। গত রোববার ফাইজারের টিকা নেয়ার জন্য এসএমএস আসে। আজ (গতকাল) সবার আগে এই টিকা নিলাম, ভালোই লাগছে। ইঞ্জেকশন পুশ করার সময় যে ব্যথা লাগে তাও হয়নি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে আসা জিগাতলার বাসিন্দা হারুনুর রশিদ জানান, অস্বাভাবিক কোন কিছু অনুভব করছি না।’

বেলা সাড়ে ১০টার দিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে টিকাদান কার্যক্রম পরিদর্শনে আসেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা। তিনি জানান, পরীক্ষামূলকভাবে টিকা দেয়ার পর পর্যবেক্ষণ করা হবে। পরবর্তীতে আরও বেশি মানুষের ওপর এই টিকা প্রয়োগ করা হবে।

ডা. ফ্লোরা বলেন, ‘ফাইজারের টিকা দেয়ার ক্ষেত্রে তাপমাত্রা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া টিকার মিশ্রণ ঠিকমতো করাও বড় ব্যাপার। এ কারণে এই টিকা দেয়ার সময় সাবধানতা অবলম্বন করতে হচ্ছে। তবে এখন পর্যন্ত সবকিছু ঠিকমতো চলছে। টিকা দেয়ার জন্য কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত তারা সেভাবেই কাজ করছেন। যারা টিকা নিয়েছেন তারাও কোন সমস্যার কথা জানাননি। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বোঝার মতো সময় এখনও হয়নি। তারপরও যেহেতু এই টিকা আমরা প্রথম দিচ্ছি সে কারণে যেসব হাসপাতালে আইসিইউ আছে, স্পেশাল কেয়ারে নেয়ার ব্যবস্থা আছে সেগুলোকে কেন্দ্র হিসেবে নির্বাচন করেছি।‘ তিনি জানান, ‘এখন পর্যন্ত ফাইজারের টিকার জন্য কোন অগ্রাধিকার তালিকা তৈরি করা হয়নি। তবে যারা বিদেশগামী তাদের ক্ষেত্রে বিষয়টি বিবেচনা করা হতে পারে। আমাদের শ্রমিকদের যাওয়ার ক্ষেত্রে কোন কোন দেশে ফাইজার বা অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা দেয়ার কথা বলে দেয়া হচ্ছে। সে বিষয়গুলো আমাদের চিন্তার মধ্যে আছে, তাদের অগ্রাধিকার দেয়ার বিষয়টি।’

মঙ্গলবার, ২২ জুন ২০২১ , ৮ আষাঢ় ১৪২৮ ১০ জিলকদ ১৪৪২

ফাইজারের টিকা দেয়া শুরু, তবে পরীক্ষামূলক

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

image

বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে গতকাল পরীক্ষামূলক টিকা দেয়া হয় -সংবাদ

রাজধানীর তিনটি হাসপাতালে পরীক্ষামূলকভাবে কোভ্যাক্স থেকে পাওয়া ফাইজার-বায়োএনটেকের টিকা দেয়া শুরু হয়েছে। গতকাল সকাল পৌনে ১০টায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের কনভেনশন সেন্টারে টিকাদান কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ। একই সময় শেখ রাসেল জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট পরিচালক ফারুক আহমেদ এবং কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জামিল আহমেদ নিজ নিজ কেন্দ্রে টিকা কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।

টিকাদান চলে বেলা ৩টা পর্যন্ত। তিন হাসপাতলের প্রতিটিতে ১২০ জন করে মোট ৩৬০ জনকে টিকা দেয়া হয়। টিকাগ্রহীতাদের পর্যবেক্ষণ শেষে ৭ থেকে ১০ দিন পর অন্যদের এই টিকা দেয়ার কর্মসূচি শুরুর পরিকল্পনা রয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের। বাংলাদেশে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে তৃতীয় টিকা হিসেবে ফাইজার ব্যবহার করা হচ্ছে।

গতকাল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে প্রথম ফাইজারের টিকা নেন মালিবাগের বাসিন্দা রাহাত চৌধুরী। তিনি জানান, প্রথমে টিকা নেয়ার আগ্রহ না থাকায় নিবন্ধন করেননি। পরিবারের চাপে এপ্রিলে টিকাদান বন্ধ হওয়ার দুইদিন আগে নিবন্ধন করেন।

‘সেদিক থেকে ভাগ্য ভালো বলতে হয়। গত রোববার ফাইজারের টিকা নেয়ার জন্য এসএমএস আসে। আজ (গতকাল) সবার আগে এই টিকা নিলাম, ভালোই লাগছে। ইঞ্জেকশন পুশ করার সময় যে ব্যথা লাগে তাও হয়নি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে আসা জিগাতলার বাসিন্দা হারুনুর রশিদ জানান, অস্বাভাবিক কোন কিছু অনুভব করছি না।’

বেলা সাড়ে ১০টার দিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে টিকাদান কার্যক্রম পরিদর্শনে আসেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা। তিনি জানান, পরীক্ষামূলকভাবে টিকা দেয়ার পর পর্যবেক্ষণ করা হবে। পরবর্তীতে আরও বেশি মানুষের ওপর এই টিকা প্রয়োগ করা হবে।

ডা. ফ্লোরা বলেন, ‘ফাইজারের টিকা দেয়ার ক্ষেত্রে তাপমাত্রা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া টিকার মিশ্রণ ঠিকমতো করাও বড় ব্যাপার। এ কারণে এই টিকা দেয়ার সময় সাবধানতা অবলম্বন করতে হচ্ছে। তবে এখন পর্যন্ত সবকিছু ঠিকমতো চলছে। টিকা দেয়ার জন্য কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত তারা সেভাবেই কাজ করছেন। যারা টিকা নিয়েছেন তারাও কোন সমস্যার কথা জানাননি। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বোঝার মতো সময় এখনও হয়নি। তারপরও যেহেতু এই টিকা আমরা প্রথম দিচ্ছি সে কারণে যেসব হাসপাতালে আইসিইউ আছে, স্পেশাল কেয়ারে নেয়ার ব্যবস্থা আছে সেগুলোকে কেন্দ্র হিসেবে নির্বাচন করেছি।‘ তিনি জানান, ‘এখন পর্যন্ত ফাইজারের টিকার জন্য কোন অগ্রাধিকার তালিকা তৈরি করা হয়নি। তবে যারা বিদেশগামী তাদের ক্ষেত্রে বিষয়টি বিবেচনা করা হতে পারে। আমাদের শ্রমিকদের যাওয়ার ক্ষেত্রে কোন কোন দেশে ফাইজার বা অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা দেয়ার কথা বলে দেয়া হচ্ছে। সে বিষয়গুলো আমাদের চিন্তার মধ্যে আছে, তাদের অগ্রাধিকার দেয়ার বিষয়টি।’