হিন্দু সম্পত্তি দখলের অপচেষ্টা

সামসুজ্জামান

‘সংবাদ’ পত্রিকায় প্রকাশিত দুটি সংবাদ যে কোন বিবেকবান মানুষকে উদ্বিগ্ন করে তুলবে। গত ১০ জুন প্রকাশিত সংবাদে বলা হয়েছে- ‘গভীর রাতে হিন্দুদের বাড়ি অবরুদ্ধ করে হুমকি’। ঘটনাটি চাঁদপুরের ১৪নং ওয়ার্ডের বাবুরহাটের। রাতের আঁধারে সনাতন ধর্মাবলম্বীর কয়েকটি বাড়িঘর অবরুদ্ধ করে একদল সন্ত্রাসী দেখে নেয়ার হুমকি দিয়েছে। অবশ্য এলাকার লোকজন এসে পড়ায় সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে কয়েকটি দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করেছে।

১১ জুন প্রকাশিত অপর এক খবরে দেখা যায়- ভোলা জেলা শহরের পৌর ৪নং চরনোয়াবাদ এলাকায় শত বছরের পৈতৃক বাড়ি ও সম্পত্তি থেকে সুবোল চন্দ্র মালের পরিবারকে উচ্ছেদের জন্য মনিয়া হয়ে উঠেছে একদল ভূমিদস্যু। এলাকার কুখ্যাত ভূমিদস্যু সাহাবুদ্দিনের নেতৃত্বে এ ঘটনা ঘটেছে। সাহাবুদ্দিন তার লোকজন দিয়ে জোরপূর্বক বাড়ির মধ্যে পিলার গেড়েছেন। সুবোল চন্দ্রের পিতামহের সঙ্গে জমিজমা সংক্রান্ত কোন বিরোধও ছিল না।

সাতক্ষীরায় সরকারদলীয় ক্যাডাররা একটি হিন্দুপল্লীতে হানা দিয়েছিল। যশোরের মণিরামপুরের মালোপাড়ার তা-বের দৃশ্য আমাদের মন থেকে এখনও মুছে যায়নি। সেখানে অবস্থা এতটাই ভয়াভহ রূপধারণ করেছিল যে, খোদ প্রধানমন্ত্রী সরেজমিন সেখানে এসেছিলেন এবং একটি পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপন করে দিয়ে যান। এসব সন্ত্রাসীর এমন কাজ নেই যা তারা করেনি। বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয়া, লুটতরাজ, ধর্ষণ সবকিছুই করেছে সন্ত্রাসীরা। মণিরামপুর মালোপাড়ার তা-ব প্রধানমন্ত্রী স্বচক্ষে দেখে বিস্ময় প্রকাশ করেছিলেন।

একটি মহল এমন ধরনের ঘটনা ঘটিয়ে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং ভাবমূর্তি নস্যাতের চেষ্টা করছে। তারা ঘোলাপানিতে মাছ শিকারের অপেক্ষায় আছে। আমরা দেখেছি কক্সবাজারের রামুতে কীভাবে হামলা চালানো হয়েছিল। যে ক্ষত আজও শুকায়নি। বাগেরহাটের নাথপাড়ার ঘটনা এখনও আমাদের পীড়া দেয়। সেখান থেকে কিছু সনাতন ধর্মাবলম্বী পরিবার অসহায়ের মতো জমিজমা কমদামে বিক্রিও করে ভারতে চলে যায়।

অভিযোগ আছে, প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় এসব ঘটে থাকে। কিন্তু প্রশ্ন হলো প্রশাসন কেন কঠোর হাতে এসব ঘটনা দমন করছে না। বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পরও কেন পাকিস্তানি সাম্প্রদায়িকতার বীজ এখনও রয়েছে দেশে? সরকার কি ইচ্ছা করলে পারে না এসব কা- বন্ধ করতে?

মঙ্গলবার, ২২ জুন ২০২১ , ৮ আষাঢ় ১৪২৮ ১০ জিলকদ ১৪৪২

হিন্দু সম্পত্তি দখলের অপচেষ্টা

সামসুজ্জামান

‘সংবাদ’ পত্রিকায় প্রকাশিত দুটি সংবাদ যে কোন বিবেকবান মানুষকে উদ্বিগ্ন করে তুলবে। গত ১০ জুন প্রকাশিত সংবাদে বলা হয়েছে- ‘গভীর রাতে হিন্দুদের বাড়ি অবরুদ্ধ করে হুমকি’। ঘটনাটি চাঁদপুরের ১৪নং ওয়ার্ডের বাবুরহাটের। রাতের আঁধারে সনাতন ধর্মাবলম্বীর কয়েকটি বাড়িঘর অবরুদ্ধ করে একদল সন্ত্রাসী দেখে নেয়ার হুমকি দিয়েছে। অবশ্য এলাকার লোকজন এসে পড়ায় সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে কয়েকটি দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করেছে।

১১ জুন প্রকাশিত অপর এক খবরে দেখা যায়- ভোলা জেলা শহরের পৌর ৪নং চরনোয়াবাদ এলাকায় শত বছরের পৈতৃক বাড়ি ও সম্পত্তি থেকে সুবোল চন্দ্র মালের পরিবারকে উচ্ছেদের জন্য মনিয়া হয়ে উঠেছে একদল ভূমিদস্যু। এলাকার কুখ্যাত ভূমিদস্যু সাহাবুদ্দিনের নেতৃত্বে এ ঘটনা ঘটেছে। সাহাবুদ্দিন তার লোকজন দিয়ে জোরপূর্বক বাড়ির মধ্যে পিলার গেড়েছেন। সুবোল চন্দ্রের পিতামহের সঙ্গে জমিজমা সংক্রান্ত কোন বিরোধও ছিল না।

সাতক্ষীরায় সরকারদলীয় ক্যাডাররা একটি হিন্দুপল্লীতে হানা দিয়েছিল। যশোরের মণিরামপুরের মালোপাড়ার তা-বের দৃশ্য আমাদের মন থেকে এখনও মুছে যায়নি। সেখানে অবস্থা এতটাই ভয়াভহ রূপধারণ করেছিল যে, খোদ প্রধানমন্ত্রী সরেজমিন সেখানে এসেছিলেন এবং একটি পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপন করে দিয়ে যান। এসব সন্ত্রাসীর এমন কাজ নেই যা তারা করেনি। বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয়া, লুটতরাজ, ধর্ষণ সবকিছুই করেছে সন্ত্রাসীরা। মণিরামপুর মালোপাড়ার তা-ব প্রধানমন্ত্রী স্বচক্ষে দেখে বিস্ময় প্রকাশ করেছিলেন।

একটি মহল এমন ধরনের ঘটনা ঘটিয়ে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং ভাবমূর্তি নস্যাতের চেষ্টা করছে। তারা ঘোলাপানিতে মাছ শিকারের অপেক্ষায় আছে। আমরা দেখেছি কক্সবাজারের রামুতে কীভাবে হামলা চালানো হয়েছিল। যে ক্ষত আজও শুকায়নি। বাগেরহাটের নাথপাড়ার ঘটনা এখনও আমাদের পীড়া দেয়। সেখান থেকে কিছু সনাতন ধর্মাবলম্বী পরিবার অসহায়ের মতো জমিজমা কমদামে বিক্রিও করে ভারতে চলে যায়।

অভিযোগ আছে, প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় এসব ঘটে থাকে। কিন্তু প্রশ্ন হলো প্রশাসন কেন কঠোর হাতে এসব ঘটনা দমন করছে না। বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পরও কেন পাকিস্তানি সাম্প্রদায়িকতার বীজ এখনও রয়েছে দেশে? সরকার কি ইচ্ছা করলে পারে না এসব কা- বন্ধ করতে?