শেরপুর পৌরসভার বর্জ্যে ভরাট করতোয়া : হুমকিতে পরিবেশ

বগুড়ার শেরপুর পৌরশহরের পূর্ব পাশে করতোয়া নদী। শহরের অন্তত দুই কিলোমিটার অংশজুড়ে প্রবাহিত নদীর দুটি স্থানে প্রতিদিনই পৌরশহরের বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। এতে একদিকে নদী যেমন ভরাট হচ্ছে, তেমনি দূষিত হচ্ছে আশপাশের পরিবেশ।

শহরের বারোদুয়ারি হাটের ছাগলপট্টি ও ধুনট রোড সেতুর নিচে প্রতিদিন বর্জ্য ফেলেন পৌরসভার পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা। স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দীর্ঘদিন যাবত এ দুটি স্থানে শহরের বিভিন্ন স্থান থেকে সংগ্রহ করা বর্জ্য ফেলা হয়। নদী রক্ষায় কখনও উদ্যোগ নিতে দেখা যায়নি পৌর কর্তৃপক্ষকে। পৌরসভার উপ-সহকারী প্রকৌশলী হুমায়ুন কবির জানিয়েছেন, প্রতিদিন শহরের ময়লা-আবর্জনা হয় ৮ থেকে ১০ টন। বর্তমানে পৌরসভায় নির্দিষ্ট কোন ভাগাড় নেই। পৌরসভা ভবনের পেছনের একটি পুকুরে সবচেয়ে বেশি ময়লা ফেলা হয়। বুধবার বারোদুয়ারি হাট এলাকায় গেলে পৌরসভার পরিচ্ছন্নতাকর্মী জয়নাল আবেদীন বলেন, শহরের ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বিভিন্ন মোড়ে ফেলা ময়লা-আবর্জনা তিনি ছোট ট্রলিতে সংগ্রহ করে নদীতে ফেলে দেন। দীর্ঘদিন ধরে তিনি এ কাজ করছেন। বিষয়টি পৌরসভার সুপারভাইজারও জানেন। সুপারভাইজার রেজাউল করিম বলেন, সেতুর নিচে ময়লা ফেলার কথা তিনি জানতেন না। এখন বন্ধের উদ্যোগ নেবেন।

বারোদুয়ারি হাটের আমজাদ হোসেন ও হাফিজুর রহমান বলেন, একটু বাতাস হলে নদীতে ফেলা ময়লা থেকে আশপাশে দুর্গন্ধ ছড়ায়। ধুনট রোড সেতু এলাকায় গেলে কয়েকজন ব্যবসায়ী বলেন, এই স্থানে ময়লা না ফেলতে তারা পৌরসভায় জানিয়েছিলেন। কিন্তু কোন সমাধান হয়নি। পথচারী নজরুল ইসলাম ও সামছুর রহমান বলেন, নদীর দূষণ রোধ দূরে থাক, পৌরবাসীর এমন সমস্যা সমাধানেও কেউ এগিয়ে আসেনি। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন পরিবেশ প্রতিরক্ষা সংস্থার সভাপতি সাগর রায় বলেন, পৌর কর্তৃপক্ষ বর্জ্য ফেলায় নদী ভরাট হচ্ছে। কিছুদিন পর ভরাট অংশ অন্য কেউ দখলে নেবেন।

শেরপুর নাগরিক স্বার্থ সংরক্ষণ কমিটির সভাপতি মুনসী সাইফুল বারী ডাবলু বলেন দীর্ঘদিন যাবত নদীতে পৌরসভার বর্জ্য ফেলে পরিবেশ দূষণ করা হচ্ছে। এতে পরিবেশের যেমন ক্ষতি হচ্ছে আবার নদীর মাছ নষ্ট হচ্ছে। দীর্ঘদিন যাবত পৌরসভার বর্জ্য ফেলা হলেও পৌর কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে দেখা যায়নি।

এ ব্যাপারে পৌর মেয়র জানে আলম গণমাধ্যমকে বলেন, বর্জ্য ফেলার বিকল্প ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। এজন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে জানানো হয়েছে।

শুক্রবার, ২৫ জুন ২০২১ , ১১ আষাঢ় ১৪২৮ ১৩ জিলকদ ১৪৪২

শেরপুর পৌরসভার বর্জ্যে ভরাট করতোয়া : হুমকিতে পরিবেশ

প্রতিনিধি, শেরপুর (বগুড়া)

image

শেরপুর (বগুড়া) : করতোয়া নদীতে বর্জ্য ফেলছেন পৌরসভার পরিচ্ছন্নতাকর্মী -সংবাদ

বগুড়ার শেরপুর পৌরশহরের পূর্ব পাশে করতোয়া নদী। শহরের অন্তত দুই কিলোমিটার অংশজুড়ে প্রবাহিত নদীর দুটি স্থানে প্রতিদিনই পৌরশহরের বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। এতে একদিকে নদী যেমন ভরাট হচ্ছে, তেমনি দূষিত হচ্ছে আশপাশের পরিবেশ।

শহরের বারোদুয়ারি হাটের ছাগলপট্টি ও ধুনট রোড সেতুর নিচে প্রতিদিন বর্জ্য ফেলেন পৌরসভার পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা। স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দীর্ঘদিন যাবত এ দুটি স্থানে শহরের বিভিন্ন স্থান থেকে সংগ্রহ করা বর্জ্য ফেলা হয়। নদী রক্ষায় কখনও উদ্যোগ নিতে দেখা যায়নি পৌর কর্তৃপক্ষকে। পৌরসভার উপ-সহকারী প্রকৌশলী হুমায়ুন কবির জানিয়েছেন, প্রতিদিন শহরের ময়লা-আবর্জনা হয় ৮ থেকে ১০ টন। বর্তমানে পৌরসভায় নির্দিষ্ট কোন ভাগাড় নেই। পৌরসভা ভবনের পেছনের একটি পুকুরে সবচেয়ে বেশি ময়লা ফেলা হয়। বুধবার বারোদুয়ারি হাট এলাকায় গেলে পৌরসভার পরিচ্ছন্নতাকর্মী জয়নাল আবেদীন বলেন, শহরের ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বিভিন্ন মোড়ে ফেলা ময়লা-আবর্জনা তিনি ছোট ট্রলিতে সংগ্রহ করে নদীতে ফেলে দেন। দীর্ঘদিন ধরে তিনি এ কাজ করছেন। বিষয়টি পৌরসভার সুপারভাইজারও জানেন। সুপারভাইজার রেজাউল করিম বলেন, সেতুর নিচে ময়লা ফেলার কথা তিনি জানতেন না। এখন বন্ধের উদ্যোগ নেবেন।

বারোদুয়ারি হাটের আমজাদ হোসেন ও হাফিজুর রহমান বলেন, একটু বাতাস হলে নদীতে ফেলা ময়লা থেকে আশপাশে দুর্গন্ধ ছড়ায়। ধুনট রোড সেতু এলাকায় গেলে কয়েকজন ব্যবসায়ী বলেন, এই স্থানে ময়লা না ফেলতে তারা পৌরসভায় জানিয়েছিলেন। কিন্তু কোন সমাধান হয়নি। পথচারী নজরুল ইসলাম ও সামছুর রহমান বলেন, নদীর দূষণ রোধ দূরে থাক, পৌরবাসীর এমন সমস্যা সমাধানেও কেউ এগিয়ে আসেনি। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন পরিবেশ প্রতিরক্ষা সংস্থার সভাপতি সাগর রায় বলেন, পৌর কর্তৃপক্ষ বর্জ্য ফেলায় নদী ভরাট হচ্ছে। কিছুদিন পর ভরাট অংশ অন্য কেউ দখলে নেবেন।

শেরপুর নাগরিক স্বার্থ সংরক্ষণ কমিটির সভাপতি মুনসী সাইফুল বারী ডাবলু বলেন দীর্ঘদিন যাবত নদীতে পৌরসভার বর্জ্য ফেলে পরিবেশ দূষণ করা হচ্ছে। এতে পরিবেশের যেমন ক্ষতি হচ্ছে আবার নদীর মাছ নষ্ট হচ্ছে। দীর্ঘদিন যাবত পৌরসভার বর্জ্য ফেলা হলেও পৌর কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে দেখা যায়নি।

এ ব্যাপারে পৌর মেয়র জানে আলম গণমাধ্যমকে বলেন, বর্জ্য ফেলার বিকল্প ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। এজন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে জানানো হয়েছে।