হেফাজতের তা-বে গ্রেপ্তার মুফতি বশিরউল্লাহর স্বীকারোক্তি

হেফাজতের ডাকা হরতালে নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ডে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে সহিংসতার ঘটনায় গ্রেপ্তার মুফতি বশিরউল্লাহ (৫৮) আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। গতকাল বিকেলে নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ বদিউজ্জামানের আদালতে জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়। মুফতি বশিরউল্লাহ নারায়ণগঞ্জ জেলা হেফাজতে ইসলামের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) নারায়ণগঞ্জ জেলা কার্যালয়। গত ২৮ মার্চ মহাসড়কে সহিংসতার ঘটনায় দায়ের করা পুলিশের মামলাটি তদন্ত করছে পিবিআই। গত ২৩ জুন আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুই দিনের রিমান্ডেও নেয় পিবিআই। আসামি জবানবন্দিতে সহিংসতার ঘটনায় কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতাদের সম্পৃক্ত থাকাসহ চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে বলে জানায় পুলিশের তদন্ত সংস্থাটি।

পিবিআই জানায়, গত ২৮ মার্চ বেলা অনুমান সাড়ে ১২টার দিকে এজাহারনামীয় ২৮ জন আসামিসহ অজ্ঞাত ৪০০-৫০০ জন বিএনপি, জামায়াত, শিবির, হেফাজত কর্মীসহ আরও অনেক উশৃঙ্খল হামলাকারী সিদ্ধিরগঞ্জ থানার সাইনবোর্ডের চৌরঙ্গী পেট্রল পাম্প হতে মৌচাক পর্যন্ত মহাসড়ক এলাকায় সহিংসতা চালায়। এ সময় হরতাল ও অবরোধ পালনকালীন উত্তেজিত আসামিরা একে অন্যের সহায়তায় ও প্ররোচনায় বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব বিপন্ন ও জননিরাপত্তা বিঘœ করার উদ্দেশ্যে যানবাহনে অগ্নিসংযোগ এবং ভাঙচুর করে। এ ঘটনায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় মামলা করা হয়। গত ১৫ এপ্রিল মামলাটির তদন্তভার পায় পিবিআই। পিবিআই নারায়ণগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম মামলাটির তদন্তভার দেন পুলিশ পরিদর্শক আরিফুর রহমানকে।

এক বিজ্ঞপ্তিতে পিবিআই বলছে, পুলিশ সুপারের দিকনির্দেশনায় তদন্তকারী কর্মকতা মামলাটি প্রকাশ্য ও গোপনে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় তদন্ত করেন। তদন্তের স্বার্থে গত ২৩ জুন আসামি বশিরউল্লাহকে রিমান্ডে নেয়া হয়। রিমান্ড শেষে আসামি আদালতে নিজ দোষ স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।

পিবিআই আরও জানায়, জবানবন্দিতে সহিংসতার ঘটনায় নিজের জড়িত থাকাসহ হরতালে তা-ব পরিচালনাকারী উল্লেখযোগ্য কেন্দ্রীয় নেতাসহ স্থানীয় অন্যান্য নেতাদের নাম প্রকাশ করে মুফতি বশিরউল্লাহ। তদন্তের স্বার্থে নামসমূহ গোপন রেখে যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। পিবিআইর কাছে তিনি আরও কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রদান করেছেন। যা যাচাই-বাছাই অব্যাহত আছে। সম্পৃক্ত অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে অভিযান চলমান রয়েছে বলে জানায় পিবিআই।

উল্লেখ্য, গত ১৩ এপ্রিল রাতে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার সানারপাড় লন্ডন মার্কেট এলাকার নির্মাণাধীন একটি বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। হেফাজতের ডাকা হরতালে যে এলাকায় ব্যাপক নাশকতা ও সহিংসতা হয়েছে মুফতি বশিরউল্লাহ সে এলাকায় অবস্থিত মাদানীনগর মাদ্রাসার মুহাদ্দিস।

শুক্রবার, ২৫ জুন ২০২১ , ১১ আষাঢ় ১৪২৮ ১৩ জিলকদ ১৪৪২

হেফাজতের তা-বে গ্রেপ্তার মুফতি বশিরউল্লাহর স্বীকারোক্তি

প্রতিনিধি, নারায়ণগঞ্জ

হেফাজতের ডাকা হরতালে নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ডে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে সহিংসতার ঘটনায় গ্রেপ্তার মুফতি বশিরউল্লাহ (৫৮) আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। গতকাল বিকেলে নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ বদিউজ্জামানের আদালতে জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়। মুফতি বশিরউল্লাহ নারায়ণগঞ্জ জেলা হেফাজতে ইসলামের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) নারায়ণগঞ্জ জেলা কার্যালয়। গত ২৮ মার্চ মহাসড়কে সহিংসতার ঘটনায় দায়ের করা পুলিশের মামলাটি তদন্ত করছে পিবিআই। গত ২৩ জুন আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুই দিনের রিমান্ডেও নেয় পিবিআই। আসামি জবানবন্দিতে সহিংসতার ঘটনায় কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতাদের সম্পৃক্ত থাকাসহ চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে বলে জানায় পুলিশের তদন্ত সংস্থাটি।

পিবিআই জানায়, গত ২৮ মার্চ বেলা অনুমান সাড়ে ১২টার দিকে এজাহারনামীয় ২৮ জন আসামিসহ অজ্ঞাত ৪০০-৫০০ জন বিএনপি, জামায়াত, শিবির, হেফাজত কর্মীসহ আরও অনেক উশৃঙ্খল হামলাকারী সিদ্ধিরগঞ্জ থানার সাইনবোর্ডের চৌরঙ্গী পেট্রল পাম্প হতে মৌচাক পর্যন্ত মহাসড়ক এলাকায় সহিংসতা চালায়। এ সময় হরতাল ও অবরোধ পালনকালীন উত্তেজিত আসামিরা একে অন্যের সহায়তায় ও প্ররোচনায় বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব বিপন্ন ও জননিরাপত্তা বিঘœ করার উদ্দেশ্যে যানবাহনে অগ্নিসংযোগ এবং ভাঙচুর করে। এ ঘটনায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় মামলা করা হয়। গত ১৫ এপ্রিল মামলাটির তদন্তভার পায় পিবিআই। পিবিআই নারায়ণগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম মামলাটির তদন্তভার দেন পুলিশ পরিদর্শক আরিফুর রহমানকে।

এক বিজ্ঞপ্তিতে পিবিআই বলছে, পুলিশ সুপারের দিকনির্দেশনায় তদন্তকারী কর্মকতা মামলাটি প্রকাশ্য ও গোপনে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় তদন্ত করেন। তদন্তের স্বার্থে গত ২৩ জুন আসামি বশিরউল্লাহকে রিমান্ডে নেয়া হয়। রিমান্ড শেষে আসামি আদালতে নিজ দোষ স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।

পিবিআই আরও জানায়, জবানবন্দিতে সহিংসতার ঘটনায় নিজের জড়িত থাকাসহ হরতালে তা-ব পরিচালনাকারী উল্লেখযোগ্য কেন্দ্রীয় নেতাসহ স্থানীয় অন্যান্য নেতাদের নাম প্রকাশ করে মুফতি বশিরউল্লাহ। তদন্তের স্বার্থে নামসমূহ গোপন রেখে যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। পিবিআইর কাছে তিনি আরও কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রদান করেছেন। যা যাচাই-বাছাই অব্যাহত আছে। সম্পৃক্ত অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে অভিযান চলমান রয়েছে বলে জানায় পিবিআই।

উল্লেখ্য, গত ১৩ এপ্রিল রাতে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার সানারপাড় লন্ডন মার্কেট এলাকার নির্মাণাধীন একটি বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। হেফাজতের ডাকা হরতালে যে এলাকায় ব্যাপক নাশকতা ও সহিংসতা হয়েছে মুফতি বশিরউল্লাহ সে এলাকায় অবস্থিত মাদানীনগর মাদ্রাসার মুহাদ্দিস।