পাহাড় ধসের ঝুঁকিতে মানুষ, স্থায়ী পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করুন

বর্ষার অবিরাম বৃষ্টিতে প্রতিবছরই কমবেশি পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটে। পাহাড়ে গড়ে ওঠা বসতি সেই ধসের কবলে পড়লে ঘটে হতাহতের ঘটনা। গত এক যুগে পাহাড় ধসের ঘটনায় দেশে প্রাণ হারিয়েছে হাজারখানেক মানুষ। ২০০৭ সালের ১১ জুন প্রবল বর্ষণে চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থানে পাহাড় ধসে ১২৭ জন মারা গিয়েছিল।

বর্ষা সবে শুরু হয়েছে। পাহাড় ধসের কারণে যেন জানমালের ক্ষয়ক্ষতি না হয় সেজন্য চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন বেশ কিছু স্থাপনা উচ্ছেদ করেছে। পাহাড়ের বসতি থেকে বাসিন্দাদের সরে যাওয়ার জন্য মাইকিং করা হচ্ছে। তবে সেখানে এখনও ৮৩৫ পরিবার বসবাস করছে। এসব পরিবারের হাজারও মানুষ এখনও পাহাড় ধসের ঝুঁকিতে রয়েছে। কেবল চট্টগ্রামেই নয়, পার্ব্যতাঞ্চলের অন্যান্য এলাকার মানুষও পাহাড় ধসের ঝুঁকিতে আছে।

পাহাড়ে যারা বসবাস করে তাদের সিংহভাগই নিম্ন আয়ের দরিদ্র মানুষ। প্রশ্ন হচ্ছে পাহাড়ের বসতি ছাড়লে তাদের আশ্রয় মিলবে কোথায়। নিরাপদ বাসস্থানের ব্যবস্থা করার সঙ্গতি তাদের নেই। পুনর্বাসনের ব্যবস্থা না করে কেবল মাইকিং করলে বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিয়ে তাদের উচ্ছেদ করলে সমস্যার সমাধন হবে না। সমস্যার টেকসই সমাধান করতে হলে সবার আগে স্থায়ী পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। সাময়িকভাবে সেখানকার বাসিন্দাদের সরানো হলেও তারা আবার সেখানে ফিরে যাবে।

বৃষ্টির সময় পাহাড়ের বাসিন্দারা যেন আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেয় সেটা কঠোরভাবে নিশ্চিত করতে হবে। এজন্য প্রয়োজনীয় সব প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে হবে।

ধস থেকে মানুষকে রক্ষা করতে হলে আগে পাহাড় রক্ষা করতে হবে। নির্বিচারে পাহাড় কাটা, গাছ কেটে বন উজাড় করার বিরুদ্ধে নিতে হবে কঠোর অবস্থান। পাহাড় ধস বন্ধে বিভিন্ন সময় যেসব সুপারিশ করা হয়েছে সেগুলোকে ‘কাগজ-বন্দী’ করে না রেখে বাস্তবায়ন করতে হবে। পাহাড় কেটে যারা অবৈধ বসতি গড়ে তোলে তাদের বড় একটি অংশই রাজনৈতিক প্রভাবশালী ব্যক্তি। তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করা জরুরি। এজন্য রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকতে হবে।

শুক্রবার, ২৫ জুন ২০২১ , ১১ আষাঢ় ১৪২৮ ১৩ জিলকদ ১৪৪২

পাহাড় ধসের ঝুঁকিতে মানুষ, স্থায়ী পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করুন

বর্ষার অবিরাম বৃষ্টিতে প্রতিবছরই কমবেশি পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটে। পাহাড়ে গড়ে ওঠা বসতি সেই ধসের কবলে পড়লে ঘটে হতাহতের ঘটনা। গত এক যুগে পাহাড় ধসের ঘটনায় দেশে প্রাণ হারিয়েছে হাজারখানেক মানুষ। ২০০৭ সালের ১১ জুন প্রবল বর্ষণে চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থানে পাহাড় ধসে ১২৭ জন মারা গিয়েছিল।

বর্ষা সবে শুরু হয়েছে। পাহাড় ধসের কারণে যেন জানমালের ক্ষয়ক্ষতি না হয় সেজন্য চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন বেশ কিছু স্থাপনা উচ্ছেদ করেছে। পাহাড়ের বসতি থেকে বাসিন্দাদের সরে যাওয়ার জন্য মাইকিং করা হচ্ছে। তবে সেখানে এখনও ৮৩৫ পরিবার বসবাস করছে। এসব পরিবারের হাজারও মানুষ এখনও পাহাড় ধসের ঝুঁকিতে রয়েছে। কেবল চট্টগ্রামেই নয়, পার্ব্যতাঞ্চলের অন্যান্য এলাকার মানুষও পাহাড় ধসের ঝুঁকিতে আছে।

পাহাড়ে যারা বসবাস করে তাদের সিংহভাগই নিম্ন আয়ের দরিদ্র মানুষ। প্রশ্ন হচ্ছে পাহাড়ের বসতি ছাড়লে তাদের আশ্রয় মিলবে কোথায়। নিরাপদ বাসস্থানের ব্যবস্থা করার সঙ্গতি তাদের নেই। পুনর্বাসনের ব্যবস্থা না করে কেবল মাইকিং করলে বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিয়ে তাদের উচ্ছেদ করলে সমস্যার সমাধন হবে না। সমস্যার টেকসই সমাধান করতে হলে সবার আগে স্থায়ী পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। সাময়িকভাবে সেখানকার বাসিন্দাদের সরানো হলেও তারা আবার সেখানে ফিরে যাবে।

বৃষ্টির সময় পাহাড়ের বাসিন্দারা যেন আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেয় সেটা কঠোরভাবে নিশ্চিত করতে হবে। এজন্য প্রয়োজনীয় সব প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে হবে।

ধস থেকে মানুষকে রক্ষা করতে হলে আগে পাহাড় রক্ষা করতে হবে। নির্বিচারে পাহাড় কাটা, গাছ কেটে বন উজাড় করার বিরুদ্ধে নিতে হবে কঠোর অবস্থান। পাহাড় ধস বন্ধে বিভিন্ন সময় যেসব সুপারিশ করা হয়েছে সেগুলোকে ‘কাগজ-বন্দী’ করে না রেখে বাস্তবায়ন করতে হবে। পাহাড় কেটে যারা অবৈধ বসতি গড়ে তোলে তাদের বড় একটি অংশই রাজনৈতিক প্রভাবশালী ব্যক্তি। তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করা জরুরি। এজন্য রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকতে হবে।