পানিতে ডুবে শিশুমৃত্যু রোধে সচেতনতা বাড়াতে হবে

সম্প্রতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক জরিপে দেখা গেছে, বাংলাদেশে প্রতিদিন গড়ে ৫০ জন পানিতে ডুবে মারা যায়। এদের মধ্যে ৩২ জনই ৫ বছরের কম বয়সী শিশু। দেশে ৫ বছরের কম বয়সী শিশুমৃত্যুর দ্বিতীয় প্রধান কারণ হলো পানিতে ডুবে মৃত্যু। এক তথ্য অনুযায়ী, দেশে আত্মহত্যা এবং সড়ক দুর্ঘটনার পরে পানিতে ডুবে মৃত্যুর হার সবচেয়ে বেশি। পানিতে ডুবে শিশুমৃত্যুর এ হারকে অবহেলা করার কোন সুযোগ নেই। সাধারণত শহরের তুলনায় গ্রামেই পানিতে ডুবে শিশুমৃত্যুর ঘটনা বেশি ঘটে। কারণ গ্রামগুলোতে অধিকাংশ বাড়ির ১০-২০ মিটার দূরত্বে পুকুর বা জলাশয় থাকে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, একটু সচেতন হলেই পানিতে ডুবে শিশুমৃত্যুর হার ৭০ শতাংশ রোধ করা সম্ভব। আর সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে এ হার শূন্যে নামিয়ে আনা যায়। অধিকাংশ শিশুর মৃত্যু হয় নদী, পুকুর, জলাশয়, নালা বা খালে পড়ে। এক্ষেত্রে সদ্য হাঁটতে শেখা শিশুরাই থাকে সবচেয়ে ঝুঁকিতে। সাধারণত শিশুদের ৯ মাস বয়সে পৌঁছালে এ ঝুঁকি বেড়ে যায়। পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু সবচেয়ে বেশি ঘটে এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বরর মধ্যে।

পানিতে ডুবে যাওয়া যেসব শিশুকে দ্রুত উদ্ধার করা সম্ভব হয় তাদের অনেকে প্রাথমিক চিকিৎসার অভাবে মারা যায়। পানিতে ডুবে যাওয়া শিশুকে উদ্ধার করার পর মাথায় তুলে চারদিকে ঘোরানোর ঘটনাও ঘটে। অথচ কৃত্রিমভাবে শ্বাস দেয়া, নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে হৃৎপিন্ড বরাবর চাপ দেয়াসহ কিছু প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হলে অনেকেরই প্রাণ রক্ষা করা সম্ভব হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, মাত্র দু’দিনের প্রশিক্ষণে সাত বছরের শিশুকেও এসব বিষয় শেখানো সম্ভব। যেসব এলাকায় পানিতে ডুবে শিশুমৃত্যুর হার বেশি সেসব এলাকায় এ বিষয়ে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে প্রশিক্ষণ দেয়া যেতে পারে।

৫ বছরের কম বয়সী শিশুদের যেন সঠিক তত্ত্বাবধানে রাখা হয় সেজন্য অভিভাবকদের সচেতন করে তুলতে হবে। এজন্য সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন করা জরুরি। সাঁতার শেখানো গেলে ৯৬ শতাংশ মৃত্যু প্রতিরোধ করা যায় বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। ওয়ার্ডভিত্তিক সাঁতার শেখানোর উদ্যোগ নেয়া যেতে পারে বলে আমরা মনে করি। এই কার্যক্রমে স্বেচ্ছাসেবী প্রশিক্ষকদের দিয়ে শিশুদের সাঁতার শেখানোর চিন্তা করা যেতে পারে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা এতে সমন্বয়কের ভূমিকা পালন করতে পারেন।

শুক্রবার, ২৫ জুন ২০২১ , ১১ আষাঢ় ১৪২৮ ১৩ জিলকদ ১৪৪২

পানিতে ডুবে শিশুমৃত্যু রোধে সচেতনতা বাড়াতে হবে

সম্প্রতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক জরিপে দেখা গেছে, বাংলাদেশে প্রতিদিন গড়ে ৫০ জন পানিতে ডুবে মারা যায়। এদের মধ্যে ৩২ জনই ৫ বছরের কম বয়সী শিশু। দেশে ৫ বছরের কম বয়সী শিশুমৃত্যুর দ্বিতীয় প্রধান কারণ হলো পানিতে ডুবে মৃত্যু। এক তথ্য অনুযায়ী, দেশে আত্মহত্যা এবং সড়ক দুর্ঘটনার পরে পানিতে ডুবে মৃত্যুর হার সবচেয়ে বেশি। পানিতে ডুবে শিশুমৃত্যুর এ হারকে অবহেলা করার কোন সুযোগ নেই। সাধারণত শহরের তুলনায় গ্রামেই পানিতে ডুবে শিশুমৃত্যুর ঘটনা বেশি ঘটে। কারণ গ্রামগুলোতে অধিকাংশ বাড়ির ১০-২০ মিটার দূরত্বে পুকুর বা জলাশয় থাকে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, একটু সচেতন হলেই পানিতে ডুবে শিশুমৃত্যুর হার ৭০ শতাংশ রোধ করা সম্ভব। আর সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে এ হার শূন্যে নামিয়ে আনা যায়। অধিকাংশ শিশুর মৃত্যু হয় নদী, পুকুর, জলাশয়, নালা বা খালে পড়ে। এক্ষেত্রে সদ্য হাঁটতে শেখা শিশুরাই থাকে সবচেয়ে ঝুঁকিতে। সাধারণত শিশুদের ৯ মাস বয়সে পৌঁছালে এ ঝুঁকি বেড়ে যায়। পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু সবচেয়ে বেশি ঘটে এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বরর মধ্যে।

পানিতে ডুবে যাওয়া যেসব শিশুকে দ্রুত উদ্ধার করা সম্ভব হয় তাদের অনেকে প্রাথমিক চিকিৎসার অভাবে মারা যায়। পানিতে ডুবে যাওয়া শিশুকে উদ্ধার করার পর মাথায় তুলে চারদিকে ঘোরানোর ঘটনাও ঘটে। অথচ কৃত্রিমভাবে শ্বাস দেয়া, নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে হৃৎপিন্ড বরাবর চাপ দেয়াসহ কিছু প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হলে অনেকেরই প্রাণ রক্ষা করা সম্ভব হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, মাত্র দু’দিনের প্রশিক্ষণে সাত বছরের শিশুকেও এসব বিষয় শেখানো সম্ভব। যেসব এলাকায় পানিতে ডুবে শিশুমৃত্যুর হার বেশি সেসব এলাকায় এ বিষয়ে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে প্রশিক্ষণ দেয়া যেতে পারে।

৫ বছরের কম বয়সী শিশুদের যেন সঠিক তত্ত্বাবধানে রাখা হয় সেজন্য অভিভাবকদের সচেতন করে তুলতে হবে। এজন্য সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন করা জরুরি। সাঁতার শেখানো গেলে ৯৬ শতাংশ মৃত্যু প্রতিরোধ করা যায় বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। ওয়ার্ডভিত্তিক সাঁতার শেখানোর উদ্যোগ নেয়া যেতে পারে বলে আমরা মনে করি। এই কার্যক্রমে স্বেচ্ছাসেবী প্রশিক্ষকদের দিয়ে শিশুদের সাঁতার শেখানোর চিন্তা করা যেতে পারে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা এতে সমন্বয়কের ভূমিকা পালন করতে পারেন।