নতুন গরিবদের চিহ্নিত করে সাহায্য করা হবে : অর্থমন্ত্রী

করোনাভাইরাসের পরিস্থিতিতে যারা গরিব হয়েছেন তাদের চিহ্নিত করে সাহায্য করা হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। গতকাল অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে ভার্চুয়ালি ১৯তম অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত ও ২৩তম সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে অনলাইন ব্রিফিংয়ে অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের এ কথা জানান।

বিবিএসের একটি জরিপে দেখা গেছে, ৬ কোটির বেশি মানুষ দরিদ্র হয়েছে। এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এ ব্যাপারে কমেন্টস করার প্রয়োজন নেই। আমরা গরিবদের সাহায্য করে থাকি। তাদের ক্যাশ ট্রান্সফার করা হয়ে থাকে। আমার বিশ্বাস যারা গরিব, তাদের আমরা আইডেন্টিফাই করতে পারব। আইডেন্টিফাইড যারা তাদের তো ডেফিনেটলি সাহায্য করা হবে। তবে এই ৬ কোটি দরিদ্রের সংখ্যাটি আমার কাছে এখনও আসেনি।’

আগামীকাল থেকে সর্বাত্মক লকডাউন আসছে, গরিবদের জন্য বিশেষ কোন পরিকল্পনা আছে কিনা, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়টির জন্য আমাদের আলাদা একটি কমিটি আছে। প্রধানমন্ত্রী এটি দেখাশোনা করেন। আমার বিশ্বাস যে বিষয়গুলো বলছেন, অবশ্যই এগুলো আমরা দেখব।’

পরিকল্পনামন্ত্রী একটি ওয়েবিনারে বলেছেন, ‘বাজেট পলিশিং করা দরকার, এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এটি আপনারা যেমন বুঝেননি, আমিও তেমনি বুঝিনি। পরিকল্পনামন্ত্রীকে এটি জিজ্ঞেস করতে হবে, তিনি কি মিন করেছেন। বাজেটের ব্যাপারে তার যে মতামত, সেগুলো তো আমরা আগেই পেয়েছি। এখন তিনি আবার নতুন করে কি ভাবছেন আমি জানি না। বাজেট আমাদের সামনেই আছে, বাজেট সবার জন্য উন্মুক্ত। সবাই বাজেটের বিষয়গুলো বিবেচনা করছেন এবং পর্যালোচনাও করছেন। পরিকল্পনামন্ত্রী কিসের ভিত্তিতে এ মন্তব্য করেছেন আমি জানি না। এটা না জানা পর্যন্ত কোন মন্তব্য করা ঠিক না।’

পোশাক রপ্তানিকারকদের প্রণোদনার টাকা পরিশোধের সময় বাড়ানোর আবেদন বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি, সিদ্ধান্ত হলে আপনাদের জানানো হবে। সবাই এটি নিয়ে কাজ করছে। দেখা যাক কি করা যায় শেষ পর্যন্ত।’ ভূমধ্যসাগর থেকে অবৈধভাবে বিদেশগামী বাংলাদেশিদের উদ্ধার করা হয়, দেশে ব্যাপক উন্নতির পরও তারা কেন যাচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘শুধু বাংলাদেশের মানুষ না, সেখানে আমরা দেখি এভাবে অন্যান্য দেশের মানুষও যাত্রা করছে। দেখেশুনে কেন তারা এই ঝুঁকি নিচ্ছে, সেটা আমার নিজেরও জানতে ইচ্ছা হয়।’ চলতি অর্থবছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে ৭০ শতাংশ অর্থছাড় করা হয়েছে, পরে সেটিকে ৮৫ ভাগ পর্যন্ত করা হয়েছে। আগামী অর্থবছরেও বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়নে এই নীতি অব্যাহত থাকবে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এখনকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক না। আমরা সেজন্য যা প্রয়োজন, তাই দিচ্ছি। আমাদের থেকে টাকা নিয়ে অপচয় করবেন সেই অপরচুনিটি যদি আমরা বন্ধ করি, সেজন্য আমাদের ফুল মার্কস দেয়া দরকার। আমরা এই অপচয় রোধ করতে এই কাজটি করেছি।’

এছাড়া তিনি বলেন, ‘একটি বিষয়ে আপনারা কনসার্ন, আমি নিজেও কনসার্ন। তা হলো আমাদের ভ্যাকসিনেশন, এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজন। যত দ্রুত সম্ভব এটা আমাদের করতে হবে এবং তা করা হচ্ছে। আপনারা শীঘ্রই তার রেজাল্ট পাবেন। আমরা সবসময় ভালোটাই প্রত্যাশা করি। এখন আমাদের সেটাই প্রত্যাশা। আমাদের চলতি অর্থবছর যে ধরনের প্রজেকশন ছিল, সেগুলো কিন্তু আমরা এচিভ করতে পেরেছি। এটা অবিশ্বাস্য মনে হবে। সবচেয়ে কঠিন খাত হলো রেভিনিউ জেনারেশন, সেটা আমাদের ১৭ শতাংশ গ্রোথ হয়েছে। ফরেন এক্সচেঞ্জ রিজার্ভের গ্রোথ আছে। যারা এক সময় বলেছিলেন রেমিট্যান্স আসবে না, বেচাকেনা করে মানুষ দেশে চলে এসেছে বলে রেমিট্যান্স পাঠানোর মতো কেউ থাকবে না। কিন্তু সেগুলো সব সত্যি হয়নি। সত্যি হয়েছে এদেশের মানুষ যারা বিদেশে আছেন প্রবাসী ভাই-বোনরা, তারা দেশকে ভালোবাসেন। দেশের জন্য দায়বদ্ধতায় তারা বিশ্বাস করেন। সেই দায়বদ্ধতার কারণে তারা সবকিছু মেনে নিয়ে রেমিট্যান্স প্রবাহ অব্যাহত রেখেছেন।’

অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, ‘এক বছরে ২৫ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স, যা সবসময়ের চেয়ে সর্বোচ্চ। এমনটা আর কখনও হবে কিনা জানি না। আমাদের লোকজন বলেছিল আসবে না, শুধু না না না। আমরা ‘না না’ তে বিশ্বাস করি না। আল্লাহ আমাদের প্রতি সদয় ছিলেন। এবারও আমরা আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করব, তিনি আমাদের সুস্থ রাখবেন এবং আমাদের জীবন সুন্দর হবে।’

রবিবার, ২৭ জুন ২০২১ , ১৩ আষাঢ় ১৪২৮ ১৫ জিলক্বদ ১৪৪২

নতুন গরিবদের চিহ্নিত করে সাহায্য করা হবে : অর্থমন্ত্রী

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

image

করোনাভাইরাসের পরিস্থিতিতে যারা গরিব হয়েছেন তাদের চিহ্নিত করে সাহায্য করা হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। গতকাল অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে ভার্চুয়ালি ১৯তম অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত ও ২৩তম সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে অনলাইন ব্রিফিংয়ে অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের এ কথা জানান।

বিবিএসের একটি জরিপে দেখা গেছে, ৬ কোটির বেশি মানুষ দরিদ্র হয়েছে। এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এ ব্যাপারে কমেন্টস করার প্রয়োজন নেই। আমরা গরিবদের সাহায্য করে থাকি। তাদের ক্যাশ ট্রান্সফার করা হয়ে থাকে। আমার বিশ্বাস যারা গরিব, তাদের আমরা আইডেন্টিফাই করতে পারব। আইডেন্টিফাইড যারা তাদের তো ডেফিনেটলি সাহায্য করা হবে। তবে এই ৬ কোটি দরিদ্রের সংখ্যাটি আমার কাছে এখনও আসেনি।’

আগামীকাল থেকে সর্বাত্মক লকডাউন আসছে, গরিবদের জন্য বিশেষ কোন পরিকল্পনা আছে কিনা, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়টির জন্য আমাদের আলাদা একটি কমিটি আছে। প্রধানমন্ত্রী এটি দেখাশোনা করেন। আমার বিশ্বাস যে বিষয়গুলো বলছেন, অবশ্যই এগুলো আমরা দেখব।’

পরিকল্পনামন্ত্রী একটি ওয়েবিনারে বলেছেন, ‘বাজেট পলিশিং করা দরকার, এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এটি আপনারা যেমন বুঝেননি, আমিও তেমনি বুঝিনি। পরিকল্পনামন্ত্রীকে এটি জিজ্ঞেস করতে হবে, তিনি কি মিন করেছেন। বাজেটের ব্যাপারে তার যে মতামত, সেগুলো তো আমরা আগেই পেয়েছি। এখন তিনি আবার নতুন করে কি ভাবছেন আমি জানি না। বাজেট আমাদের সামনেই আছে, বাজেট সবার জন্য উন্মুক্ত। সবাই বাজেটের বিষয়গুলো বিবেচনা করছেন এবং পর্যালোচনাও করছেন। পরিকল্পনামন্ত্রী কিসের ভিত্তিতে এ মন্তব্য করেছেন আমি জানি না। এটা না জানা পর্যন্ত কোন মন্তব্য করা ঠিক না।’

পোশাক রপ্তানিকারকদের প্রণোদনার টাকা পরিশোধের সময় বাড়ানোর আবেদন বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি, সিদ্ধান্ত হলে আপনাদের জানানো হবে। সবাই এটি নিয়ে কাজ করছে। দেখা যাক কি করা যায় শেষ পর্যন্ত।’ ভূমধ্যসাগর থেকে অবৈধভাবে বিদেশগামী বাংলাদেশিদের উদ্ধার করা হয়, দেশে ব্যাপক উন্নতির পরও তারা কেন যাচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘শুধু বাংলাদেশের মানুষ না, সেখানে আমরা দেখি এভাবে অন্যান্য দেশের মানুষও যাত্রা করছে। দেখেশুনে কেন তারা এই ঝুঁকি নিচ্ছে, সেটা আমার নিজেরও জানতে ইচ্ছা হয়।’ চলতি অর্থবছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে ৭০ শতাংশ অর্থছাড় করা হয়েছে, পরে সেটিকে ৮৫ ভাগ পর্যন্ত করা হয়েছে। আগামী অর্থবছরেও বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়নে এই নীতি অব্যাহত থাকবে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এখনকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক না। আমরা সেজন্য যা প্রয়োজন, তাই দিচ্ছি। আমাদের থেকে টাকা নিয়ে অপচয় করবেন সেই অপরচুনিটি যদি আমরা বন্ধ করি, সেজন্য আমাদের ফুল মার্কস দেয়া দরকার। আমরা এই অপচয় রোধ করতে এই কাজটি করেছি।’

এছাড়া তিনি বলেন, ‘একটি বিষয়ে আপনারা কনসার্ন, আমি নিজেও কনসার্ন। তা হলো আমাদের ভ্যাকসিনেশন, এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজন। যত দ্রুত সম্ভব এটা আমাদের করতে হবে এবং তা করা হচ্ছে। আপনারা শীঘ্রই তার রেজাল্ট পাবেন। আমরা সবসময় ভালোটাই প্রত্যাশা করি। এখন আমাদের সেটাই প্রত্যাশা। আমাদের চলতি অর্থবছর যে ধরনের প্রজেকশন ছিল, সেগুলো কিন্তু আমরা এচিভ করতে পেরেছি। এটা অবিশ্বাস্য মনে হবে। সবচেয়ে কঠিন খাত হলো রেভিনিউ জেনারেশন, সেটা আমাদের ১৭ শতাংশ গ্রোথ হয়েছে। ফরেন এক্সচেঞ্জ রিজার্ভের গ্রোথ আছে। যারা এক সময় বলেছিলেন রেমিট্যান্স আসবে না, বেচাকেনা করে মানুষ দেশে চলে এসেছে বলে রেমিট্যান্স পাঠানোর মতো কেউ থাকবে না। কিন্তু সেগুলো সব সত্যি হয়নি। সত্যি হয়েছে এদেশের মানুষ যারা বিদেশে আছেন প্রবাসী ভাই-বোনরা, তারা দেশকে ভালোবাসেন। দেশের জন্য দায়বদ্ধতায় তারা বিশ্বাস করেন। সেই দায়বদ্ধতার কারণে তারা সবকিছু মেনে নিয়ে রেমিট্যান্স প্রবাহ অব্যাহত রেখেছেন।’

অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, ‘এক বছরে ২৫ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স, যা সবসময়ের চেয়ে সর্বোচ্চ। এমনটা আর কখনও হবে কিনা জানি না। আমাদের লোকজন বলেছিল আসবে না, শুধু না না না। আমরা ‘না না’ তে বিশ্বাস করি না। আল্লাহ আমাদের প্রতি সদয় ছিলেন। এবারও আমরা আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করব, তিনি আমাদের সুস্থ রাখবেন এবং আমাদের জীবন সুন্দর হবে।’