অনলাইনে অবৈধ চক্রের উচ্চ সুদে ঋণ বিতরণ বন্ধের দাবি

অনলাইন অ্যাপসের মাধ্যমে ঋণ বিতরণকারী একাধিক প্রতিষ্ঠানকে ‘প্রতারক’ আখ্যা দিয়ে সেগুলোর কার্যক্রম অবিলম্বে বন্ধের দাবি জানিয়েছে টেলি কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (টিক্যাব)। গতকাল টিক্যাব আহ্বায়ক মুর্শিদুল হকের সই করা এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এমন দাবি জানায় সংগঠনটি।

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ‘অনলাইনে ঋণ বিতরণের এ কার্যক্রমে বাংলাদেশ ব্যাংকের কোন অনুমোদন নেই, অনুমতি নেই সরকারের অন্য কোন দপ্তরের। তারপরেও দিনের পর দিন বিনা বাধায় প্রতারক চক্রগুলো গ্রাহকদের ঠকিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। প্ল্যাটফর্ম ভেদে ১ থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঋণ দিচ্ছে তারা।’

নিরাপত্তার বিষয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘ঋণ দেয়ার শর্ত হিসেবে গ্রাহকের নাম, ঠিকানা, জন্ম তারিখ, এনআইডি কার্ড, ছবি, পেশাসহ বিভিন্ন ধরনের ব্যক্তিগত তথ্য নেয়া হলেও দেয়া হচ্ছে না ঋণদাতার কোন তথ্য।’

সুদের হার সম্পর্কে বলা হয়, ‘২ হাজার টাকা ঋণ নিলে গ্রাহক পাচ্ছে ১৬৮৫ টাকা। নানা অজুহাতে কেটে নেয়া হচ্ছে ৩১৫ টাকা। বলা হচ্ছে অ্যাপ্লিকেশন ফি বাবদ ১২০ টাকা, ডাটা অ্যানালাইসিস ফি ১৮০ টাকা, মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট ১৫ টাকা এবং সুদ বাবদ ৫ টাকা কেটে রাখা হয়। অর্থাৎ ২০০০ টাকা ঋণের বিপরীতে ৭ দিনের মধ্যে পরিশোধ করতে হচ্ছে ২০০৫ টাকা। তবে, পরিমাণ যত বেশি হয় টাকা কেটে রাখার প্রবণতাও তত বেশি। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ঋণের টাকা পরিশোধ করতে না পারলে প্রতিদিন ১২০ টাকা হারে চক্রবৃদ্ধিতে বাড়ছে সুদ। বিকাশ, নগদসহ বিভিন্ন মোবাইল ব্যাংকিং সার্ভিস ব্যবহার করে এ ঋণ কার্যক্রম চালাচ্ছে তারা।’

উদ্বেগ প্রকাশ করে আরও বলা হয়, ‘বেশিরভাগ প্ল্যাটফর্মেরই কোন অফিসের ঠিকানা নেই, অনেকের থাকলেও সেসব ভুয়া। গ্রাহদের হাজারও অভিযোগ থাকলেও অবৈধভাবে ঋণদানের এসব কার্যক্রমের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে না। যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। আমরা অবিলম্বে এসব প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি। পাশাপাশি গ্রাহকদেরও সচেতন হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।’

অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- ‘র‌্যাপিড ক্যাশ’, ‘টাকাওয়ালা’, ‘স্বাধীন’, ‘ক্যাশ ক্যাশ’, ‘ক্যাশম্যান’সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান।

টিক্যাবের পক্ষ থেকে গ্রাহকের স্বার্থ সুরক্ষায় ৫ দফা দাবি পেশ করা হয়, অবিলম্বে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদনহীন অনলাইনে ঋণ দেয়ার এ ধরনের অবৈধ কার্যক্রম বন্ধ করতে হবে। বিভিন্ন মোবাইল ব্যাংকিং সার্ভিসের মাধ্যমে তারা যাতে ঋণ কার্যক্রম পরিচালনা করতে না পারে সে ব্যবস্থা নিতে হবে।

এসব অ্যাপস ফেইসবুক, ইউটিউব, গুগল এডসেন্স ব্যবহার করে নির্বিঘেœ তাদের প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) মাধ্যমে এ প্রচারণা ও তাদের অ্যাপস বন্ধ করতে হবে। প্রতারক চক্র যাতে হাতিয়ে নেয়া গ্রাহকদের ব্যক্তিগত তথ্যের অপপ্রয়োগ করতে না পারে সে ব্যবস্থা নিতে হবে। উচ্চ সুদে গ্রাহকদের কাছ থেকে হাতিয়ে নেয়া বাড়তি অর্থ গ্রাহকদের ফেরত দিতে হবে এবং অবিলম্বে এই প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে।

রবিবার, ২৭ জুন ২০২১ , ১৩ আষাঢ় ১৪২৮ ১৫ জিলক্বদ ১৪৪২

অনলাইনে অবৈধ চক্রের উচ্চ সুদে ঋণ বিতরণ বন্ধের দাবি

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

অনলাইন অ্যাপসের মাধ্যমে ঋণ বিতরণকারী একাধিক প্রতিষ্ঠানকে ‘প্রতারক’ আখ্যা দিয়ে সেগুলোর কার্যক্রম অবিলম্বে বন্ধের দাবি জানিয়েছে টেলি কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (টিক্যাব)। গতকাল টিক্যাব আহ্বায়ক মুর্শিদুল হকের সই করা এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এমন দাবি জানায় সংগঠনটি।

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ‘অনলাইনে ঋণ বিতরণের এ কার্যক্রমে বাংলাদেশ ব্যাংকের কোন অনুমোদন নেই, অনুমতি নেই সরকারের অন্য কোন দপ্তরের। তারপরেও দিনের পর দিন বিনা বাধায় প্রতারক চক্রগুলো গ্রাহকদের ঠকিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। প্ল্যাটফর্ম ভেদে ১ থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঋণ দিচ্ছে তারা।’

নিরাপত্তার বিষয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘ঋণ দেয়ার শর্ত হিসেবে গ্রাহকের নাম, ঠিকানা, জন্ম তারিখ, এনআইডি কার্ড, ছবি, পেশাসহ বিভিন্ন ধরনের ব্যক্তিগত তথ্য নেয়া হলেও দেয়া হচ্ছে না ঋণদাতার কোন তথ্য।’

সুদের হার সম্পর্কে বলা হয়, ‘২ হাজার টাকা ঋণ নিলে গ্রাহক পাচ্ছে ১৬৮৫ টাকা। নানা অজুহাতে কেটে নেয়া হচ্ছে ৩১৫ টাকা। বলা হচ্ছে অ্যাপ্লিকেশন ফি বাবদ ১২০ টাকা, ডাটা অ্যানালাইসিস ফি ১৮০ টাকা, মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট ১৫ টাকা এবং সুদ বাবদ ৫ টাকা কেটে রাখা হয়। অর্থাৎ ২০০০ টাকা ঋণের বিপরীতে ৭ দিনের মধ্যে পরিশোধ করতে হচ্ছে ২০০৫ টাকা। তবে, পরিমাণ যত বেশি হয় টাকা কেটে রাখার প্রবণতাও তত বেশি। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ঋণের টাকা পরিশোধ করতে না পারলে প্রতিদিন ১২০ টাকা হারে চক্রবৃদ্ধিতে বাড়ছে সুদ। বিকাশ, নগদসহ বিভিন্ন মোবাইল ব্যাংকিং সার্ভিস ব্যবহার করে এ ঋণ কার্যক্রম চালাচ্ছে তারা।’

উদ্বেগ প্রকাশ করে আরও বলা হয়, ‘বেশিরভাগ প্ল্যাটফর্মেরই কোন অফিসের ঠিকানা নেই, অনেকের থাকলেও সেসব ভুয়া। গ্রাহদের হাজারও অভিযোগ থাকলেও অবৈধভাবে ঋণদানের এসব কার্যক্রমের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে না। যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। আমরা অবিলম্বে এসব প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি। পাশাপাশি গ্রাহকদেরও সচেতন হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।’

অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- ‘র‌্যাপিড ক্যাশ’, ‘টাকাওয়ালা’, ‘স্বাধীন’, ‘ক্যাশ ক্যাশ’, ‘ক্যাশম্যান’সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান।

টিক্যাবের পক্ষ থেকে গ্রাহকের স্বার্থ সুরক্ষায় ৫ দফা দাবি পেশ করা হয়, অবিলম্বে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদনহীন অনলাইনে ঋণ দেয়ার এ ধরনের অবৈধ কার্যক্রম বন্ধ করতে হবে। বিভিন্ন মোবাইল ব্যাংকিং সার্ভিসের মাধ্যমে তারা যাতে ঋণ কার্যক্রম পরিচালনা করতে না পারে সে ব্যবস্থা নিতে হবে।

এসব অ্যাপস ফেইসবুক, ইউটিউব, গুগল এডসেন্স ব্যবহার করে নির্বিঘেœ তাদের প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) মাধ্যমে এ প্রচারণা ও তাদের অ্যাপস বন্ধ করতে হবে। প্রতারক চক্র যাতে হাতিয়ে নেয়া গ্রাহকদের ব্যক্তিগত তথ্যের অপপ্রয়োগ করতে না পারে সে ব্যবস্থা নিতে হবে। উচ্চ সুদে গ্রাহকদের কাছ থেকে হাতিয়ে নেয়া বাড়তি অর্থ গ্রাহকদের ফেরত দিতে হবে এবং অবিলম্বে এই প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে।