নিম্নমানের ইটে ওয়াশ প্রকল্পের কাজ বন্ধ করে দিলেন প্রকৌশলী

বগুড়ার শেরপুরে কোটি টাকা ব্যয়ে আটটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নির্মিত হচ্ছে ওয়াশ ব্লক। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের অধীন ওইসব ওয়াশ ব্লক নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে। এমনকি ওয়ার্ক অর্ডারের (কার্যাদেশ) শর্ত ভেঙ্গে তিন নম্বর ইট দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে ষোল লাখ টাকার ওয়াশ ব্লক। তবে স্থানীয় এলাকাবাসীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের কর্তারা সরেজমিন পরির্দশন করে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় টুনিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ওয়াশ ব্লক নির্মাণ কাজ বন্ধ দেন। সেইসঙ্গে নিম্নমানের ইটসহ নির্মাণ সামগ্রী দ্রুত অপসারণ করে উন্নতমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহারের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এই উপজেলায় দুইটি প্রকল্পের মাধ্যমে এক কোটি টাকা ব্যয়ে মোট আটটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একটি করে ওয়াশ ব্লক নির্মাণ করা হচ্ছে। এর মধ্যে চতুর্থ প্রাথমিক বিদ্যালয় উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় দলিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বেওড়াপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়, বাংড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় ও চৌবাড়িয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নির্মিত হচ্ছে ওয়াশ ব্লক। আর গর্ভামেন্ট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রকল্পের আওতায় মালিহাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ছাতিয়ানী, দড়িহাসড়া ও টুনিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ওয়াশ ব্লক নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে।

কিন্তু এসব ওয়াশ ব্লক নির্মাণে নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহার করছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে। তবে সবচেয়ে বেশি নিম্নমানের কাজ হচ্ছে টুনিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ওয়াশ ব্লক নির্মাণ কাজে। ষোল লাখ টাকায় ওই ওয়াশ ব্লক নির্মাণ কাজটি করছেন মেসার্স ফাতেমা ট্রেডার্স নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ওয়ার্ক অর্ডারের শর্ত ভেঙ্গে তিন নম্বর ইট দিয়ে কাজ করা হচ্ছে। এছাড়া সিমেন্ট কম দেয়াসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ইটগুলো সব তিন নম্বর। এছাড়া কিছু কিছু ইটের মান খুবই খারাপ। এরপরও ওইসব নিম্নমানের ইট দিয়েই তৈরি করা হচ্ছে বিদ্যালয়ের ওয়াশ ব্লক। ইতোমধ্যে চারপাশে ইটের দেয়াল পঞ্চাশ ভাগ কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, মাসখানেক আগে থেকে এই ওয়াশ ব্লক নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়। প্রথমে পিলার বা কলম তৈরি করা হয়। কার্যাদেশ অনুযায়ী রড, খোয়া, সিমেন্ট দেয়া না হলেও সেটি ধরা সম্ভব হয়নি। কিন্তু তিন নম্বর ইট এনে কাজ শুরু করার পর তাদের গোমর ফাঁস হয়ে যায়। তাই ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের এসব অনিয়ম সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তাদের নিকট অভিযোগ আকারে জানানো হয়েছে বলেও দাবি তাদের।

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স ফাতেমা ট্রেডার্সের স্বত্তাধিকারী সোলায়মান আলী বলেন, যথাযথ নিয়ম মেনেই ওয়াশ ব্লক নির্মাণ কাজ করছেন তিনি। এছাড়া ইটগুলোর মান খারাপ হওয়ায় তা পরিবর্তন করে ভালো মানের ইট এনে কাজ সম্পন্ন করা হবে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী সাহাবুল ইসলাম ইটগুলো নিম্নমানের বলে স্বীকার করে বলেন, ইটগুলো নিম্নমান হওয়ায় ওইসব ইট দিয়ে কাজ করার কোনো সুযোগ নেই। তাই ঠিকাদারকে কাজ বন্ধ রাখতে বলা হয়। ওইসব ইট ফেরত দিয়ে এক নম্বর উন্নমানের ইট এনে কাজ করবেন বলে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার অঙ্গীকার করেছেন জানান তিনি।

image

শেরপুর (বগুড়া) : নিম্নমানের ইটে কাজ করায় ওয়াশ ব্লকের কাজ বন্ধ করে দেন প্রকৌশলী -সংবাদ

আরও খবর
ট্যাংক স্থাপন হলেও নিবন্ধন সংকটে অক্সিজেন বঞ্চিত রোগী
পাঁচ জেলায় করোনায় মৃত্যু ১৮ শনাক্ত ২৯৩
রাজশাহীতে ৩০ স্থানে বসছে করোনা প্রতিরোধক বুথ
করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত রেস্তোরাঁ মালিক-শ্রমিকদের সহায়তা প্রদান
রাজশাহীতে প্রতিদিন লাগছে ৮ হাজার লিটার অক্সিজেন
পদ্মায় চীনা প্রকৌশলী ৪ দিন ধরে নিখোঁজ
গোয়ালন্দে বিদ্যুতে গৃহবধূর মৃত্যু
জাজিরায় প্রতিবন্ধী ধর্ষিত গ্রেপ্তার ১
দুপচাঁচিয়ায় ডুবে শিশুর মৃত্যু
ডাক্তারসহ জনবল সংকটে সেবাবঞ্চিত রোগীরা
আলীয়াবাদ-রেজতপুর সেতু যেন মরণ ফাঁদ
বাড়িতে ঠাঁই না পেয়ে স্ত্রীসহ আমবাগানে করোনা রোগী

রবিবার, ২৭ জুন ২০২১ , ১৩ আষাঢ় ১৪২৮ ১৫ জিলক্বদ ১৪৪২

নিম্নমানের ইটে ওয়াশ প্রকল্পের কাজ বন্ধ করে দিলেন প্রকৌশলী

প্রতিনিধি, শেরপুর (বগুড়া)

image

শেরপুর (বগুড়া) : নিম্নমানের ইটে কাজ করায় ওয়াশ ব্লকের কাজ বন্ধ করে দেন প্রকৌশলী -সংবাদ

বগুড়ার শেরপুরে কোটি টাকা ব্যয়ে আটটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নির্মিত হচ্ছে ওয়াশ ব্লক। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের অধীন ওইসব ওয়াশ ব্লক নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে। এমনকি ওয়ার্ক অর্ডারের (কার্যাদেশ) শর্ত ভেঙ্গে তিন নম্বর ইট দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে ষোল লাখ টাকার ওয়াশ ব্লক। তবে স্থানীয় এলাকাবাসীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের কর্তারা সরেজমিন পরির্দশন করে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় টুনিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ওয়াশ ব্লক নির্মাণ কাজ বন্ধ দেন। সেইসঙ্গে নিম্নমানের ইটসহ নির্মাণ সামগ্রী দ্রুত অপসারণ করে উন্নতমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহারের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এই উপজেলায় দুইটি প্রকল্পের মাধ্যমে এক কোটি টাকা ব্যয়ে মোট আটটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একটি করে ওয়াশ ব্লক নির্মাণ করা হচ্ছে। এর মধ্যে চতুর্থ প্রাথমিক বিদ্যালয় উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় দলিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বেওড়াপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়, বাংড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় ও চৌবাড়িয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নির্মিত হচ্ছে ওয়াশ ব্লক। আর গর্ভামেন্ট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রকল্পের আওতায় মালিহাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ছাতিয়ানী, দড়িহাসড়া ও টুনিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ওয়াশ ব্লক নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে।

কিন্তু এসব ওয়াশ ব্লক নির্মাণে নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহার করছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে। তবে সবচেয়ে বেশি নিম্নমানের কাজ হচ্ছে টুনিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ওয়াশ ব্লক নির্মাণ কাজে। ষোল লাখ টাকায় ওই ওয়াশ ব্লক নির্মাণ কাজটি করছেন মেসার্স ফাতেমা ট্রেডার্স নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ওয়ার্ক অর্ডারের শর্ত ভেঙ্গে তিন নম্বর ইট দিয়ে কাজ করা হচ্ছে। এছাড়া সিমেন্ট কম দেয়াসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ইটগুলো সব তিন নম্বর। এছাড়া কিছু কিছু ইটের মান খুবই খারাপ। এরপরও ওইসব নিম্নমানের ইট দিয়েই তৈরি করা হচ্ছে বিদ্যালয়ের ওয়াশ ব্লক। ইতোমধ্যে চারপাশে ইটের দেয়াল পঞ্চাশ ভাগ কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, মাসখানেক আগে থেকে এই ওয়াশ ব্লক নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়। প্রথমে পিলার বা কলম তৈরি করা হয়। কার্যাদেশ অনুযায়ী রড, খোয়া, সিমেন্ট দেয়া না হলেও সেটি ধরা সম্ভব হয়নি। কিন্তু তিন নম্বর ইট এনে কাজ শুরু করার পর তাদের গোমর ফাঁস হয়ে যায়। তাই ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের এসব অনিয়ম সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তাদের নিকট অভিযোগ আকারে জানানো হয়েছে বলেও দাবি তাদের।

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স ফাতেমা ট্রেডার্সের স্বত্তাধিকারী সোলায়মান আলী বলেন, যথাযথ নিয়ম মেনেই ওয়াশ ব্লক নির্মাণ কাজ করছেন তিনি। এছাড়া ইটগুলোর মান খারাপ হওয়ায় তা পরিবর্তন করে ভালো মানের ইট এনে কাজ সম্পন্ন করা হবে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী সাহাবুল ইসলাম ইটগুলো নিম্নমানের বলে স্বীকার করে বলেন, ইটগুলো নিম্নমান হওয়ায় ওইসব ইট দিয়ে কাজ করার কোনো সুযোগ নেই। তাই ঠিকাদারকে কাজ বন্ধ রাখতে বলা হয়। ওইসব ইট ফেরত দিয়ে এক নম্বর উন্নমানের ইট এনে কাজ করবেন বলে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার অঙ্গীকার করেছেন জানান তিনি।