বন্যা এবং লবণাক্ততা দক্ষিণাঞ্চলের কৃষিতে বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। লবণাক্ততার কারণে যেসব জায়গায় ধান আবাদ করা সম্ভব নয় সেখানে অন্য ফসলের উপযোগী জাত ব্যবহার করার পরামর্শ দিয়েছে সংশ্লিষ্টরা।
এক ইঞ্চি জমিও খালি রাখা যাবে না উল্লেখ করে কৃষকসহ কৃষি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত সচিব) ড. অমিতাভ সরকার বলেন, প্রধান চারটি বিষয়ের ওপর ফসলের উৎপাদন নির্ভর করে। আর সেগুলো হলো আবহাওয়া, পানি, বীজ এবং সার। পানি না হলে ফসলের যেমন সমস্যা, তেমনি অতিরিক্ত হলেও অসুবিধা। তাই ফসল রক্ষায় পানি সেচ এবং নিষ্কাশন জরুরি। আর এজন্য সুষ্ঠু পানি ব্যবস্থাপনার ব্যবস্থা করতে হবে।
অতিসম্প্রতি জলবায়ু সহিষ্ণু ভূ-পৃষ্ঠস্থ পানি ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে পানির যৌক্তির ব্যবহার শীর্ষক সেমিনার নগরীর ব্রি হলরুমে অনুষ্ঠিত হয়। ওই সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত সচিব ড. অমিতাভ সরকার।
স্মলহোল্ডার অ্যাগ্রিকালচারাল কম্পিটিটিভনেস প্রজেক্টের আয়োজনে অনুষ্ঠিত সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন বিএডিসির সদস্য পরিচালক মো. জিয়াউল হক। এছাড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) কর্মকর্তা, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, বিএডিসির প্রধান প্রকৌশলীসহ কৃষি সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা এবং প্রান্তিক কৃষকরা অংশগ্রহণ করেন।
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের গবেষণায় দেখা গেছে, দক্ষিণাঞ্চলে প্রতিবছর মার্চ ও এপ্রিল মাসে লবণ পানির প্রভাব বেশি থাকে। এ সময় বৃহত্তর বরিশালের পিরোজপুর, ঝালকাঠি, ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী জেলা লবণ পানিতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। চলতি বছর যার বিস্তার ঘটেছিল বরিশালের কীর্তনখোলা নদী পর্যন্ত। দেশের মোট চাষযোগ্য জমির ৪০ ভাগ এই উপকূলীয় অঞ্চলে।
প্রতিবছর মার্চ ও এপ্রিল মাসে লবণ পানির প্রভাবে এক সময়ের শস্য ভা-ার বলে পরিচিত দক্ষিণাঞ্চলের মাটি এবং পানি দুইই লবণাক্ত হয়ে পড়ে। লবণাক্ত মাটিতে ফসলও খারাপ হতে পারে। এতে রবি শস্য ছাড়াও ধানের বীজতলা এবং বেড়ে ওঠা ধান নষ্ট হয়।
গবেষণায় দেখা গেছে, নদীর নাব্য কমে যাওয়া এবং সাগরের লবণ পানির উচ্চতা বেড়ে যাওয়ায় এবং যথাসময়ে পরিমাণ মতো বৃষ্টি না হওয়া কারণে সাগরের লবণাক্ত পানি নদী থেকে শাখা নদী হয়ে ঢুকে পরছে কৃষি জমিতে। যতই দিন যাবে ততই এই লবণাক্ততা বাড়তেই থাকবে। তাই প্রয়োজন লবণ সহিষ্ণু ফসল আবাদ করা এবং লবণ পানি এড়ানোর কৌশল আবিষ্কার কিংবা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
রবিবার, ২৭ জুন ২০২১ , ১৩ আষাঢ় ১৪২৮ ১৫ জিলক্বদ ১৪৪২
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক, বরিশাল
বন্যা এবং লবণাক্ততা দক্ষিণাঞ্চলের কৃষিতে বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। লবণাক্ততার কারণে যেসব জায়গায় ধান আবাদ করা সম্ভব নয় সেখানে অন্য ফসলের উপযোগী জাত ব্যবহার করার পরামর্শ দিয়েছে সংশ্লিষ্টরা।
এক ইঞ্চি জমিও খালি রাখা যাবে না উল্লেখ করে কৃষকসহ কৃষি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত সচিব) ড. অমিতাভ সরকার বলেন, প্রধান চারটি বিষয়ের ওপর ফসলের উৎপাদন নির্ভর করে। আর সেগুলো হলো আবহাওয়া, পানি, বীজ এবং সার। পানি না হলে ফসলের যেমন সমস্যা, তেমনি অতিরিক্ত হলেও অসুবিধা। তাই ফসল রক্ষায় পানি সেচ এবং নিষ্কাশন জরুরি। আর এজন্য সুষ্ঠু পানি ব্যবস্থাপনার ব্যবস্থা করতে হবে।
অতিসম্প্রতি জলবায়ু সহিষ্ণু ভূ-পৃষ্ঠস্থ পানি ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে পানির যৌক্তির ব্যবহার শীর্ষক সেমিনার নগরীর ব্রি হলরুমে অনুষ্ঠিত হয়। ওই সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত সচিব ড. অমিতাভ সরকার।
স্মলহোল্ডার অ্যাগ্রিকালচারাল কম্পিটিটিভনেস প্রজেক্টের আয়োজনে অনুষ্ঠিত সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন বিএডিসির সদস্য পরিচালক মো. জিয়াউল হক। এছাড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) কর্মকর্তা, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, বিএডিসির প্রধান প্রকৌশলীসহ কৃষি সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা এবং প্রান্তিক কৃষকরা অংশগ্রহণ করেন।
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের গবেষণায় দেখা গেছে, দক্ষিণাঞ্চলে প্রতিবছর মার্চ ও এপ্রিল মাসে লবণ পানির প্রভাব বেশি থাকে। এ সময় বৃহত্তর বরিশালের পিরোজপুর, ঝালকাঠি, ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী জেলা লবণ পানিতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। চলতি বছর যার বিস্তার ঘটেছিল বরিশালের কীর্তনখোলা নদী পর্যন্ত। দেশের মোট চাষযোগ্য জমির ৪০ ভাগ এই উপকূলীয় অঞ্চলে।
প্রতিবছর মার্চ ও এপ্রিল মাসে লবণ পানির প্রভাবে এক সময়ের শস্য ভা-ার বলে পরিচিত দক্ষিণাঞ্চলের মাটি এবং পানি দুইই লবণাক্ত হয়ে পড়ে। লবণাক্ত মাটিতে ফসলও খারাপ হতে পারে। এতে রবি শস্য ছাড়াও ধানের বীজতলা এবং বেড়ে ওঠা ধান নষ্ট হয়।
গবেষণায় দেখা গেছে, নদীর নাব্য কমে যাওয়া এবং সাগরের লবণ পানির উচ্চতা বেড়ে যাওয়ায় এবং যথাসময়ে পরিমাণ মতো বৃষ্টি না হওয়া কারণে সাগরের লবণাক্ত পানি নদী থেকে শাখা নদী হয়ে ঢুকে পরছে কৃষি জমিতে। যতই দিন যাবে ততই এই লবণাক্ততা বাড়তেই থাকবে। তাই প্রয়োজন লবণ সহিষ্ণু ফসল আবাদ করা এবং লবণ পানি এড়ানোর কৌশল আবিষ্কার কিংবা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা।