ব্যাংক হিসাব জব্দের জন্য মেয়র তাপসকে দুষলেন সাঈদ খোকন

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাঈদ খোকন ও তার পরিবারের মোট ৮টি অ্যাকাউন্ট জব্দ করার ঘটনায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসকে দুষলেন এই সিটির সাবেক মেয়র সাঈদ খোকন। গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে সাঈদ খোকন ও তার পরিবারের ব্যাংক হিসাব ফ্রিজের নির্দেশ প্রসঙ্গে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

এদিকে সাঈদ খোকনের অভিযোগ সম্পর্কে কোন মন্তব্য করতে অনিচ্ছা প্রকাশ করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।

সংবাদ সম্মেলনে সাঈদ খোকন বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশনের আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালতের আদেশবলে আমার এবং আমার পরিবারের ৮টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করা হয়েছে। ওই অ্যাকাউন্টগুলোতে মোট ৭ কোটি ৬২ লাখ ৭৪ হাজার ৬০৩ টাকা রাখা আছে। দুর্নীতি দমন কমিশন আমাকে এবং আমার পরিবারকে কোন ধরনের নোটিস না করে, কোনরূপ আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে সরাসরি আদালতের মাধ্যমে এই নিষেধাজ্ঞা জারি করে। আমি মনে করি, এমন কর্মকাণ্ডে আমার এবং আমার পরিবারের মৌলিক অধিকার ক্ষুণœ হয়েছে। সিটি করপোরেশনের মেয়র তাপস তার নগর পরিচালনায় সীমাহীন ব্যর্থতা ঢাকতে প্রায়ই আমার প্রতি বিভিন্ন হয়রানিমূলক ও বিদ্বেষমূলক আচরণ করে আসছে। আমি বিশ্বাস করি, দুর্নীতি দমন কমিশনের এমন কর্মকাণ্ড তাপসের প্ররোচনায় সংঘটিত হয়েছে।

সাবেক এই মেয়র বলেন, বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বন্ধ থাকলে আমার এবং আমার পরিবারের প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন দেয়া বন্ধ হয়ে যাবে। আমাদের প্রতিষ্ঠানের

ব্যাংক : পৃষ্ঠা : ২ ক : ১

ব্যাংক : হিসাব

(১২ পৃষ্ঠার পর)

বিভিন্ন বকেয়া পাওনা বন্ধ হয়ে যাবে। সংসার পরিচালনা করা দুরূহ হয়ে পড়বে। আমি দুর্নীতি দমন কমিশনকে অনুরোধ করব, জব্দকৃত অ্যাকাউন্ট সচল করে দিয়ে আমাকে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা পরিচালনার সুযোগ দিন, যেটা আমার ও আমার পরিবারের মৌলিক ও সাংবিধানিক অধিকার। তদন্তে আমাদের কোন আপত্তি নেই। দুর্নীতি দমন কমিশন তদন্ত করতেই পারে। কিন্তু কারো প্ররোচনায় ও দলাদলিতে দুর্নীতি দমন কমিশন লড়বে, একজন নাগরিক হিসেবে আমি এটা প্রত্যাশা করি না। একজন নাগরিক হিসেবে কমিশনের ভূমিকা দেখতে চাই। এই শহরের প্রতিটি নাগরিকের মতো আমিও একজন সাধারণ নাগরিক।

তিনি বলেন, আমার পরিবার প্রায় এক শতাব্দী ধরে এই শহরের সেবা করে আসছে। ঢাকার শেষ সরদার মাজেদ সরকারের মেয়ে আমার মা ফাতেমা হানিফের ব্যাংক অ্যাকাউন্টও ফ্রিজ করে হয়রানি করা হয়েছে। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক ও পরিতাপের বিষয়। আমার আদরের ছোট বোনকে পর্যন্ত রেহাই দেয়া হলো না। আরে ভাই, এই শহরের কী হচ্ছে মানুষ কি তা দেখে না? কী দিয়ে কী করতে চান, শাক দিয়ে মাছ ঢাকতে চান? মানুষ কিন্তু এ ধরনের অপমান কখনোই মেনে নেবে না।

মেয়র তাপসকে উদ্দেশ করে সাঈদ খোকন বলেন, কতটুকু ভোটে আপনি নির্বাচিত হয়েছেন তা এই শহরের মানুষ জানে। যাই হোক, ক্ষমতায় আছেন মানুষের কাজ করুন। আরে ভাই, ঢাকার মরা লাশের ওপর পর্যন্ত ট্যাক্স বসিয়ে দিয়েছেন। আপনি কীভাবে ঢাকাবাসীর কাছ থেকে ভালোবাসা আশা করেন। আপনার ব্যর্থতা ঢাকার জন্য কি আর কোন মানুষ পাননি। বারবার কেন আমার ওপরে? আইনি মোকাবিলা করবো, সঙ্গে ঢাকাবাসীকে নিয়ে আরেকবার সংগ্রাম হবে।

সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সাবেক এই মেয়র বলেন, আমি বলেছি মেয়র তাপস তার ব্যর্থতা ঢাকার জন্য বারবার হয়রানি ও বিদ্বেষমূলক আচরণ করে আসছে। মেয়র তাপসের ব্যর্থতার কথা তুলে ধরে তিনি আরও বলেন, আমি এই শহরে লাশ দাফন ফ্রি করে দিয়েছিলাম। ঢাকা শহরে দাফন-কাফন করতে ১২-১৪ হাজার টাকা লাগে। আজকে আজিমপুর গোরস্তানে গিয়ে দেখেন লাশ নামানোর আগে টিকিট লাগে। ব্যর্থ নয়? তাহলে কী বলব? এই শহরের মোড়ে মোড়ে মানুষ এখন সি্লপ দিয়ে চাঁদা তোলে। এই শহর থেকে আমি লাখ লাখ ব্যানার-ফেস্টুন ফেলে দিয়েছিলাম। আজ সিটি করপোরেশন তার নিজের নামে ব্যানার-ফেস্টুন লাগায়। তাহলে কী বলব? নগর পরিচালনা করতে পারে না, আরও বড় হও বলে। তোমার বড় হওয়াতে আমি বাধা নাকি? যে দায়িত্ব পাইছ মিয়া ওইটা পালন করো। তারপর বড় হওয়ার স্বপ্ন দেখো।

সাবেক মেয়র সাঈদ খোকনের অভিযোগ সম্পর্কে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপসের পক্ষে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আবু নাছের এক সংবাদ বিবৃতিতে জানান, বিষয়টি মহামান্য আদালত ও দুর্নীতি দমন কমিশন সংশ্লিষ্ট। বিচারাধীন কোন বিষয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বর্তমান মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস কোন ধরনের বক্তব্য বা প্রতি উত্তর দিতে অনিচ্ছুক।

বুধবার, ৩০ জুন ২০২১ , ১৬ আষাঢ় ১৪২৮ ১৮ জিলক্বদ ১৪৪২

ব্যাংক হিসাব জব্দের জন্য মেয়র তাপসকে দুষলেন সাঈদ খোকন

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাঈদ খোকন ও তার পরিবারের মোট ৮টি অ্যাকাউন্ট জব্দ করার ঘটনায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসকে দুষলেন এই সিটির সাবেক মেয়র সাঈদ খোকন। গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে সাঈদ খোকন ও তার পরিবারের ব্যাংক হিসাব ফ্রিজের নির্দেশ প্রসঙ্গে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

এদিকে সাঈদ খোকনের অভিযোগ সম্পর্কে কোন মন্তব্য করতে অনিচ্ছা প্রকাশ করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।

সংবাদ সম্মেলনে সাঈদ খোকন বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশনের আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালতের আদেশবলে আমার এবং আমার পরিবারের ৮টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করা হয়েছে। ওই অ্যাকাউন্টগুলোতে মোট ৭ কোটি ৬২ লাখ ৭৪ হাজার ৬০৩ টাকা রাখা আছে। দুর্নীতি দমন কমিশন আমাকে এবং আমার পরিবারকে কোন ধরনের নোটিস না করে, কোনরূপ আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে সরাসরি আদালতের মাধ্যমে এই নিষেধাজ্ঞা জারি করে। আমি মনে করি, এমন কর্মকাণ্ডে আমার এবং আমার পরিবারের মৌলিক অধিকার ক্ষুণœ হয়েছে। সিটি করপোরেশনের মেয়র তাপস তার নগর পরিচালনায় সীমাহীন ব্যর্থতা ঢাকতে প্রায়ই আমার প্রতি বিভিন্ন হয়রানিমূলক ও বিদ্বেষমূলক আচরণ করে আসছে। আমি বিশ্বাস করি, দুর্নীতি দমন কমিশনের এমন কর্মকাণ্ড তাপসের প্ররোচনায় সংঘটিত হয়েছে।

সাবেক এই মেয়র বলেন, বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বন্ধ থাকলে আমার এবং আমার পরিবারের প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন দেয়া বন্ধ হয়ে যাবে। আমাদের প্রতিষ্ঠানের

ব্যাংক : পৃষ্ঠা : ২ ক : ১

ব্যাংক : হিসাব

(১২ পৃষ্ঠার পর)

বিভিন্ন বকেয়া পাওনা বন্ধ হয়ে যাবে। সংসার পরিচালনা করা দুরূহ হয়ে পড়বে। আমি দুর্নীতি দমন কমিশনকে অনুরোধ করব, জব্দকৃত অ্যাকাউন্ট সচল করে দিয়ে আমাকে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা পরিচালনার সুযোগ দিন, যেটা আমার ও আমার পরিবারের মৌলিক ও সাংবিধানিক অধিকার। তদন্তে আমাদের কোন আপত্তি নেই। দুর্নীতি দমন কমিশন তদন্ত করতেই পারে। কিন্তু কারো প্ররোচনায় ও দলাদলিতে দুর্নীতি দমন কমিশন লড়বে, একজন নাগরিক হিসেবে আমি এটা প্রত্যাশা করি না। একজন নাগরিক হিসেবে কমিশনের ভূমিকা দেখতে চাই। এই শহরের প্রতিটি নাগরিকের মতো আমিও একজন সাধারণ নাগরিক।

তিনি বলেন, আমার পরিবার প্রায় এক শতাব্দী ধরে এই শহরের সেবা করে আসছে। ঢাকার শেষ সরদার মাজেদ সরকারের মেয়ে আমার মা ফাতেমা হানিফের ব্যাংক অ্যাকাউন্টও ফ্রিজ করে হয়রানি করা হয়েছে। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক ও পরিতাপের বিষয়। আমার আদরের ছোট বোনকে পর্যন্ত রেহাই দেয়া হলো না। আরে ভাই, এই শহরের কী হচ্ছে মানুষ কি তা দেখে না? কী দিয়ে কী করতে চান, শাক দিয়ে মাছ ঢাকতে চান? মানুষ কিন্তু এ ধরনের অপমান কখনোই মেনে নেবে না।

মেয়র তাপসকে উদ্দেশ করে সাঈদ খোকন বলেন, কতটুকু ভোটে আপনি নির্বাচিত হয়েছেন তা এই শহরের মানুষ জানে। যাই হোক, ক্ষমতায় আছেন মানুষের কাজ করুন। আরে ভাই, ঢাকার মরা লাশের ওপর পর্যন্ত ট্যাক্স বসিয়ে দিয়েছেন। আপনি কীভাবে ঢাকাবাসীর কাছ থেকে ভালোবাসা আশা করেন। আপনার ব্যর্থতা ঢাকার জন্য কি আর কোন মানুষ পাননি। বারবার কেন আমার ওপরে? আইনি মোকাবিলা করবো, সঙ্গে ঢাকাবাসীকে নিয়ে আরেকবার সংগ্রাম হবে।

সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সাবেক এই মেয়র বলেন, আমি বলেছি মেয়র তাপস তার ব্যর্থতা ঢাকার জন্য বারবার হয়রানি ও বিদ্বেষমূলক আচরণ করে আসছে। মেয়র তাপসের ব্যর্থতার কথা তুলে ধরে তিনি আরও বলেন, আমি এই শহরে লাশ দাফন ফ্রি করে দিয়েছিলাম। ঢাকা শহরে দাফন-কাফন করতে ১২-১৪ হাজার টাকা লাগে। আজকে আজিমপুর গোরস্তানে গিয়ে দেখেন লাশ নামানোর আগে টিকিট লাগে। ব্যর্থ নয়? তাহলে কী বলব? এই শহরের মোড়ে মোড়ে মানুষ এখন সি্লপ দিয়ে চাঁদা তোলে। এই শহর থেকে আমি লাখ লাখ ব্যানার-ফেস্টুন ফেলে দিয়েছিলাম। আজ সিটি করপোরেশন তার নিজের নামে ব্যানার-ফেস্টুন লাগায়। তাহলে কী বলব? নগর পরিচালনা করতে পারে না, আরও বড় হও বলে। তোমার বড় হওয়াতে আমি বাধা নাকি? যে দায়িত্ব পাইছ মিয়া ওইটা পালন করো। তারপর বড় হওয়ার স্বপ্ন দেখো।

সাবেক মেয়র সাঈদ খোকনের অভিযোগ সম্পর্কে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপসের পক্ষে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আবু নাছের এক সংবাদ বিবৃতিতে জানান, বিষয়টি মহামান্য আদালত ও দুর্নীতি দমন কমিশন সংশ্লিষ্ট। বিচারাধীন কোন বিষয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বর্তমান মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস কোন ধরনের বক্তব্য বা প্রতি উত্তর দিতে অনিচ্ছুক।