লক্ষ্যমাত্রার ১০৩ শতাংশ ঋণ বিতরণ করেছে বিএইচবিএফসি

সরকারি পর্যায়ে গৃহঋণ প্রদানকারী একমাত্র আর্থিক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশন (বিএইচবিএফসি) ২০২০-২০২১ অর্থবছরে অধিকাংশ ক্ষেত্রে এ যাবতকালের সর্বোচ্চ ব্যবসায়িক সাফল্য অর্জন করেছে। প্রতিষ্ঠানটি চলতি অর্থবছরে মোট ৫৫০ কোটি টাকার ঋণ মঞ্জুরি ও ৫০০ কোটি টাকার ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা স্থির করা হয়। বছরান্তে মঞ্জুরি ও বিরতণকৃত ঋণের পরিমাণ যথাক্রমে ৬১৬ দশমিক ১৮ ও ৫১৩ দশমিক ৮৬ কোটি টাকা।

লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ঋণ মঞ্জুরির পরিমাণ শতকরা ১১২ দশমিক ০৩ শতাংশ এবং বিতরণ হয়েছে শতকরা ১০২ দশমিক ৭৭ শতাংশ। বিগত ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে ঋণ মঞ্জুরি ও ঋণ বিতরণ অপেক্ষা এ অর্থবছরে ঋণ মঞ্জুরি ও বিতরণের পরিমাণ যথাক্রমে (৬১৬.১৮-৪৫৫.৩১) = ১৬০.৮৭ ও (৫১৩.৮৬-৪২১.৯৫) = ৯১.৯১ কোটি টাকা বেশি।

সদ্য সমাপ্ত এ অর্থবছরে প্রতিষ্ঠানটি অর্জন-নির্দেশক অধিকাংশ সূচকে বিগত যে কোন বছর অপেক্ষা বেশি সাফল্য অর্জনে সক্ষম হয়েছে। ঋণ মঞ্জুরি, ঋণ বিতরণ, শ্রেণীকৃত ও সাধারণ খেলাপিসহ সামগ্রিক ঋণ আদায়, মামলা নিষ্পত্তি ও অডিট আপত্তি নিষ্পত্তি এবং ঋণের সমুদয় পাওনা পরিশোধকারী সম্মানিত গ্রহীতাদের বন্ধকীকৃত দলিলপত্র ফেরত প্রদানের ক্ষেত্রে বাৎসরিক লক্ষ্যমাত্রা থেকে অধিক অর্জন সম্ভব হয়েছে। বছরজুড়ে করোনা মহামারীজনিত বিরূপ আর্থ-সামাজিক অবস্থার মধ্যেও অধিকাংশ সূচকে লক্ষ্যমাত্রার অতিরিক্ত অর্জন প্রতিষ্ঠানটির দেশের সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারিদের অদম্য আন্তরিক পরিশ্রমের ফসল মর্মে উল্লেখ করে বিএইচবিএফসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আফজাল করিম এ অর্জনের জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন।

বিএইচবিএফসি দেশে ৬১টি শাখা, ১৪টি রিজিওনাল ও ১০টি জোনাল অফিসের মাধ্যমে গৃহ নির্মাণ, ফ্ল্যাট ও হাউজিং ইক্যুপমেন্ট ক্রয়ে সরল সুদে ঋণ দিয়ে থাকে।

গত ২০২০-২০২১ অর্থবছরে শ্রেণীকৃত ও অশ্রেণীকৃত খেলাপি ঋণ হতে যথাক্রমে ১৪৩.৩০ ও ৪৭৭.৬১ কোটি টাকা আদায়-লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আদায় হয়েছে যথাক্রমে ৪০.০০ ও ৫০৯.০০ কোটি টাকা। বিগত ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে সর্বমোট ঋণ আদায়ের পরিমাণ ছিল ৪৮৪.৮৫ কোটি টাকা। সদ্য সমাপ্ত অর্থবছরে সর্বমোট ঋণ আদায় পূর্ববর্তী বছর অপেক্ষা (৫৪৯.০০-৪৮৪.৮৫) = ৬৪.১৫ কোটি টাকা বেশি। ঋণ মঞ্জুরি, ঋণ বিতরণ ও ঋণ আদায়ে ২০২০-২০২১ অর্থবছরের এ অর্জন প্রতিষ্ঠানটির জন্য এ যাবতকালের সর্বোচ্চ মর্মে নিশ্চিত হওয়া গেছে। অর্থবছরের শেষ ৪ মাসে বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সুদৃঢ় নেতৃত্ব ও দিকনির্দেশনার ফলে প্রায় প্রতিটি সূচকে লক্ষ্যমাত্রার অধিক অর্জন সম্ভব হয়েছে বলে প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা-কর্মচারিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে। খেলাপি গ্রাহকদের বিরুদ্ধে আদালতে পরিচালিত মামলা নিষ্পত্তি এবং সরকারি বাণিজ্যিক অডিট আপত্তি নিষ্পত্তির ক্ষেত্রেও সদ্য সমাপ্ত অর্থবছরে সফলতা বিগত অর্থবছর অপেক্ষা বেশি। পূর্ববর্তী বছর ১০টি বাণিজ্যিক অডিট আপত্তি নিষ্পত্তি করা সম্ভব হয়েছিল।

পক্ষান্তরে এ বছর নিষ্পত্তিকৃত এ আপত্তির সংখ্যা ৪২টি যা পূর্ববর্তী বছরের তিন গুণেরও অধিক। করোনাজনিত অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতে আদালতের কার্যক্রম সীমিত থাকার মধ্যেও পূর্ববর্তী বছর অপেক্ষা এ বছর মামলা নিষ্পত্তিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩৪.০৭ শতাংশ। করপোরেশনের ঋণের সমুদয় পাওনা পরিশোধকারী সম্মানিত গ্রাহকদের ঋণের দায়মুক্তি সনদসহ তাদের বন্ধকীকৃত দলিলপত্র ফেরত প্রদানের সংখ্যাও এ অর্থবছরে পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় অধিক।

উল্লেখ্য, প্রতিষ্ঠানে করোনাকালীন খরচ সংকোচনের বিপরীতে সার্বিক আদায় ও আয় বেশি হওয়ায় ২০২০-২০২১ অর্থবছরে প্রতিষ্ঠানটি নিট ১৭৩ দশমিক ৫৪ কোটি টাকার (কর-পূর্ব) মুনাফা (সাময়িক) অর্জনে সক্ষম হবে মর্মে আশা করা যায়। জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণার পাশাপাশি বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আফজাল করিমের যোগদান পরবর্তীতে গত ১৬ মার্চ হতে ২৩ জুন ’২১ পর্যন্ত ১০০ দিনের বিশেষ কর্মসূচিসহ নানাবিধ ব্যবস্থা গ্রহণ ও লক্ষ্য অর্জনে কঠোর মনিটরিং ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করায় শ্রেণীকৃত ঋণের পরিমাণ হ্রাসসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য এ অর্জন সম্ভব হয়েছে।

শুক্রবার, ০২ জুলাই ২০২১ , ১৮ আষাঢ় ১৪২৮ ২০ জিলক্বদ ১৪৪২

লক্ষ্যমাত্রার ১০৩ শতাংশ ঋণ বিতরণ করেছে বিএইচবিএফসি

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

সরকারি পর্যায়ে গৃহঋণ প্রদানকারী একমাত্র আর্থিক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশন (বিএইচবিএফসি) ২০২০-২০২১ অর্থবছরে অধিকাংশ ক্ষেত্রে এ যাবতকালের সর্বোচ্চ ব্যবসায়িক সাফল্য অর্জন করেছে। প্রতিষ্ঠানটি চলতি অর্থবছরে মোট ৫৫০ কোটি টাকার ঋণ মঞ্জুরি ও ৫০০ কোটি টাকার ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা স্থির করা হয়। বছরান্তে মঞ্জুরি ও বিরতণকৃত ঋণের পরিমাণ যথাক্রমে ৬১৬ দশমিক ১৮ ও ৫১৩ দশমিক ৮৬ কোটি টাকা।

লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ঋণ মঞ্জুরির পরিমাণ শতকরা ১১২ দশমিক ০৩ শতাংশ এবং বিতরণ হয়েছে শতকরা ১০২ দশমিক ৭৭ শতাংশ। বিগত ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে ঋণ মঞ্জুরি ও ঋণ বিতরণ অপেক্ষা এ অর্থবছরে ঋণ মঞ্জুরি ও বিতরণের পরিমাণ যথাক্রমে (৬১৬.১৮-৪৫৫.৩১) = ১৬০.৮৭ ও (৫১৩.৮৬-৪২১.৯৫) = ৯১.৯১ কোটি টাকা বেশি।

সদ্য সমাপ্ত এ অর্থবছরে প্রতিষ্ঠানটি অর্জন-নির্দেশক অধিকাংশ সূচকে বিগত যে কোন বছর অপেক্ষা বেশি সাফল্য অর্জনে সক্ষম হয়েছে। ঋণ মঞ্জুরি, ঋণ বিতরণ, শ্রেণীকৃত ও সাধারণ খেলাপিসহ সামগ্রিক ঋণ আদায়, মামলা নিষ্পত্তি ও অডিট আপত্তি নিষ্পত্তি এবং ঋণের সমুদয় পাওনা পরিশোধকারী সম্মানিত গ্রহীতাদের বন্ধকীকৃত দলিলপত্র ফেরত প্রদানের ক্ষেত্রে বাৎসরিক লক্ষ্যমাত্রা থেকে অধিক অর্জন সম্ভব হয়েছে। বছরজুড়ে করোনা মহামারীজনিত বিরূপ আর্থ-সামাজিক অবস্থার মধ্যেও অধিকাংশ সূচকে লক্ষ্যমাত্রার অতিরিক্ত অর্জন প্রতিষ্ঠানটির দেশের সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারিদের অদম্য আন্তরিক পরিশ্রমের ফসল মর্মে উল্লেখ করে বিএইচবিএফসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আফজাল করিম এ অর্জনের জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন।

বিএইচবিএফসি দেশে ৬১টি শাখা, ১৪টি রিজিওনাল ও ১০টি জোনাল অফিসের মাধ্যমে গৃহ নির্মাণ, ফ্ল্যাট ও হাউজিং ইক্যুপমেন্ট ক্রয়ে সরল সুদে ঋণ দিয়ে থাকে।

গত ২০২০-২০২১ অর্থবছরে শ্রেণীকৃত ও অশ্রেণীকৃত খেলাপি ঋণ হতে যথাক্রমে ১৪৩.৩০ ও ৪৭৭.৬১ কোটি টাকা আদায়-লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আদায় হয়েছে যথাক্রমে ৪০.০০ ও ৫০৯.০০ কোটি টাকা। বিগত ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে সর্বমোট ঋণ আদায়ের পরিমাণ ছিল ৪৮৪.৮৫ কোটি টাকা। সদ্য সমাপ্ত অর্থবছরে সর্বমোট ঋণ আদায় পূর্ববর্তী বছর অপেক্ষা (৫৪৯.০০-৪৮৪.৮৫) = ৬৪.১৫ কোটি টাকা বেশি। ঋণ মঞ্জুরি, ঋণ বিতরণ ও ঋণ আদায়ে ২০২০-২০২১ অর্থবছরের এ অর্জন প্রতিষ্ঠানটির জন্য এ যাবতকালের সর্বোচ্চ মর্মে নিশ্চিত হওয়া গেছে। অর্থবছরের শেষ ৪ মাসে বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সুদৃঢ় নেতৃত্ব ও দিকনির্দেশনার ফলে প্রায় প্রতিটি সূচকে লক্ষ্যমাত্রার অধিক অর্জন সম্ভব হয়েছে বলে প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা-কর্মচারিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে। খেলাপি গ্রাহকদের বিরুদ্ধে আদালতে পরিচালিত মামলা নিষ্পত্তি এবং সরকারি বাণিজ্যিক অডিট আপত্তি নিষ্পত্তির ক্ষেত্রেও সদ্য সমাপ্ত অর্থবছরে সফলতা বিগত অর্থবছর অপেক্ষা বেশি। পূর্ববর্তী বছর ১০টি বাণিজ্যিক অডিট আপত্তি নিষ্পত্তি করা সম্ভব হয়েছিল।

পক্ষান্তরে এ বছর নিষ্পত্তিকৃত এ আপত্তির সংখ্যা ৪২টি যা পূর্ববর্তী বছরের তিন গুণেরও অধিক। করোনাজনিত অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতে আদালতের কার্যক্রম সীমিত থাকার মধ্যেও পূর্ববর্তী বছর অপেক্ষা এ বছর মামলা নিষ্পত্তিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩৪.০৭ শতাংশ। করপোরেশনের ঋণের সমুদয় পাওনা পরিশোধকারী সম্মানিত গ্রাহকদের ঋণের দায়মুক্তি সনদসহ তাদের বন্ধকীকৃত দলিলপত্র ফেরত প্রদানের সংখ্যাও এ অর্থবছরে পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় অধিক।

উল্লেখ্য, প্রতিষ্ঠানে করোনাকালীন খরচ সংকোচনের বিপরীতে সার্বিক আদায় ও আয় বেশি হওয়ায় ২০২০-২০২১ অর্থবছরে প্রতিষ্ঠানটি নিট ১৭৩ দশমিক ৫৪ কোটি টাকার (কর-পূর্ব) মুনাফা (সাময়িক) অর্জনে সক্ষম হবে মর্মে আশা করা যায়। জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণার পাশাপাশি বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আফজাল করিমের যোগদান পরবর্তীতে গত ১৬ মার্চ হতে ২৩ জুন ’২১ পর্যন্ত ১০০ দিনের বিশেষ কর্মসূচিসহ নানাবিধ ব্যবস্থা গ্রহণ ও লক্ষ্য অর্জনে কঠোর মনিটরিং ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করায় শ্রেণীকৃত ঋণের পরিমাণ হ্রাসসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য এ অর্জন সম্ভব হয়েছে।