চাহিদা বাড়ায় জ্বরের ওষুধ সংকট : চড়া দামে বিক্রি

সৈয়দপুরে ঘরে ঘরে জ্বরের প্রকোপ

সৈয়দপুর উপজেলায় ঘরে ঘরে জ্বরের প্রার্দুভাব দেখা দিয়েছে। উপজেলায় ঊর্ধ্বমুখী করোনা সংক্রমণের মধ্যে শহর ও গ্রামাঞ্চলে জ্বর, সর্দি, কাশি আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। সেই সঙ্গে অনেকের শরীরে করোনার বিভিন্ন উপসর্গ দেখা যাচ্ছে। ফলে স্থানীয় ওষুধ দোকানগুলোতে প্যারাসিটামল গ্রুপের ট্যাবলেট ও কাশির সিরাপ কেনা হিড়িক পড়েছে।

এ অবস্থায় ওষুধ দোকান থেকে প্যারাসিটামল গ্রুপের ওষুধ উধাও হয়ে গেছে। ওষুধ কোম্পানিগুলো ওই গ্রুপের ওষুধ সরবরাহ না করায় বাজারে ওষুধের তীব্র সঙ্কট বিরাজ করছে। এ সুযোগে অনেক অসাধু ওষুধ ব্যবসায়ী দুই-তিনগুণ বেশি দামে ওষুধ বিক্রি করছে। ফলে জ্বর আক্রান্তরা বাধ্য হয়ে চড়া দামে ওষুধ কিনতে বাধ্য হচ্ছেন।

শহরের বিভিন্ন এলাকার ওষুধ দোকানে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রতিদিনই বিপুলসংখ্যক মানুষ আসছেন, জ্বরের কথা বলে দোকান থেকে ওষুধ নিয়ে যাচ্ছেন। সরবরাহ না থাকায় সব দোকানে ওষুধ মিলছে না। কয়েকজন দোকানি জানান, তাদের কাছে পুরানো মজুদ থেকে অল্প পরিমাণে ওষুধ বিক্রি করছেন। তবে অসাধু অনেক দোকানি দুই-তিন গুণ বেশি দামে ওষুধ বিক্রি করছেন বলে অভিযোগ করেন কেউ কেউ।

শহরের হাতিখানা এলাকার বাসিন্দা খালিদ হোসেন আরমান জ্বর-সর্দি ওষুধ কিনতে গিয়ে দেখেন এক পাতা ৮ টাকার নাপা ট্যাবলেট ২০ টাকায় ও একপাতা ১৫ টাকার নাপা এক্সটেন্ড ট্যাবলেট ৩০-৩৫ টাকা দাম হাঁকা হচ্ছে। ২০ টাকার কাশির সিরাপ বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকায়। তিনি দোকানির কাছে দাম বৃদ্ধির কথা জানতে চাইলে জবাব পান, ওষুধ সাপ্লাই নেই, তাই দাম বেড়ে গেছে।

শহরের শহীদ ডা. জিকরুল হক সড়কের মেসার্স রুমা ফার্মেসির মালিক মো. আসলাম জানান, গত দুই সপ্তাহ ধরে প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধের সরবরাহ নেই। শহরের বেশিরভাগ দোকানে নাপা, নাপা এক্সট্রা, নাপা এক্সটেন্ডসহ কাশির সিরাপের সঙ্কট বিরাজ করছে। এসব ওষুধের চাহিদা কয়েকগুণ বেড়ে গেছে। মানুষ জ্বরের ওষুধই নিচ্ছে বেশি। তিনি সীমিত মজুদ থেকে কোম্পানির দরে অল্প পরিমাণে ওষুধ বিক্রি করছেন, যাতে সবাই ওষুধ পায়। তবে ওষুধের সরবরাহ স্বাভাবিক না হলে ওষুধের সঙ্কট দেখা দেবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

মেসার্স ফরহান ফার্মেসির ওষুধ ব্যবসায়ী মো. ফারহান প্যারাসিটামল গ্রুপের ওষুধের সঙ্কট রয়েছে জানিয়ে বলেন, হঠাৎ জ্বরের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় বেশিরভাগ দোকানের মজুদ শেষ হয়ে গেছে। নতুন করে ওষুধ সরবরাহ না করলে এই সঙ্কট কাটবে না। তিনি বলেন, ওষুধের চাহিদা দিয়েও কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে ওষুধ পাওয়া যাচ্ছে না।

এদিকে জ্বর, সর্দি-কাশি ওষুধের বিপুল চাহিদা তৈরি হওয়ায় শহরের অনেক অসাধু ব্যবসায়ী উচ্চমূল্যে ওষুধ বিক্রি করছে। সব দোকানে ওষুধ না থাকায় বাড়তি দামের সুযোগ নিচ্ছেন কিছু অসাধু দোকানিরা।

শহরের জ্বরের ওষুধ কিনতে আসা ক্রেতাদের অভিযোগে ওষুধের সঙ্কট ও দাম বৃদ্ধির এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

জানতে চাইলে, বাংলাদেশ কেমিস্ট্র অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতি সৈয়দপুর উপজেলা শাখার সভাপতি মিজানুল হক প্যারাসিটামল গ্রুপের ওষুধের সাপ্লাই না থাকার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, সাপ্লাই না থাকার অজুহাতে বাড়তি দামে ওষুধ বিক্রি সমর্থনযোগ্য নয়। করোনাকালে সংগঠনের পক্ষ থেকে ওষুধের বাড়তি দাম না নেয়ার নির্দেশনা আছে। অভিযোগের বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখব। তবে কারও বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।

শুক্রবার, ০২ জুলাই ২০২১ , ১৮ আষাঢ় ১৪২৮ ২০ জিলক্বদ ১৪৪২

চাহিদা বাড়ায় জ্বরের ওষুধ সংকট : চড়া দামে বিক্রি

সৈয়দপুরে ঘরে ঘরে জ্বরের প্রকোপ

প্রতিনিধি, সৈয়দপুর (নীলফামারী)

image

গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) : পথচারীদের মাঝে মাস্ক বিতরণ করেন ব্র্যাকের কর্মী -সংবাদ

সৈয়দপুর উপজেলায় ঘরে ঘরে জ্বরের প্রার্দুভাব দেখা দিয়েছে। উপজেলায় ঊর্ধ্বমুখী করোনা সংক্রমণের মধ্যে শহর ও গ্রামাঞ্চলে জ্বর, সর্দি, কাশি আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। সেই সঙ্গে অনেকের শরীরে করোনার বিভিন্ন উপসর্গ দেখা যাচ্ছে। ফলে স্থানীয় ওষুধ দোকানগুলোতে প্যারাসিটামল গ্রুপের ট্যাবলেট ও কাশির সিরাপ কেনা হিড়িক পড়েছে।

এ অবস্থায় ওষুধ দোকান থেকে প্যারাসিটামল গ্রুপের ওষুধ উধাও হয়ে গেছে। ওষুধ কোম্পানিগুলো ওই গ্রুপের ওষুধ সরবরাহ না করায় বাজারে ওষুধের তীব্র সঙ্কট বিরাজ করছে। এ সুযোগে অনেক অসাধু ওষুধ ব্যবসায়ী দুই-তিনগুণ বেশি দামে ওষুধ বিক্রি করছে। ফলে জ্বর আক্রান্তরা বাধ্য হয়ে চড়া দামে ওষুধ কিনতে বাধ্য হচ্ছেন।

শহরের বিভিন্ন এলাকার ওষুধ দোকানে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রতিদিনই বিপুলসংখ্যক মানুষ আসছেন, জ্বরের কথা বলে দোকান থেকে ওষুধ নিয়ে যাচ্ছেন। সরবরাহ না থাকায় সব দোকানে ওষুধ মিলছে না। কয়েকজন দোকানি জানান, তাদের কাছে পুরানো মজুদ থেকে অল্প পরিমাণে ওষুধ বিক্রি করছেন। তবে অসাধু অনেক দোকানি দুই-তিন গুণ বেশি দামে ওষুধ বিক্রি করছেন বলে অভিযোগ করেন কেউ কেউ।

শহরের হাতিখানা এলাকার বাসিন্দা খালিদ হোসেন আরমান জ্বর-সর্দি ওষুধ কিনতে গিয়ে দেখেন এক পাতা ৮ টাকার নাপা ট্যাবলেট ২০ টাকায় ও একপাতা ১৫ টাকার নাপা এক্সটেন্ড ট্যাবলেট ৩০-৩৫ টাকা দাম হাঁকা হচ্ছে। ২০ টাকার কাশির সিরাপ বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকায়। তিনি দোকানির কাছে দাম বৃদ্ধির কথা জানতে চাইলে জবাব পান, ওষুধ সাপ্লাই নেই, তাই দাম বেড়ে গেছে।

শহরের শহীদ ডা. জিকরুল হক সড়কের মেসার্স রুমা ফার্মেসির মালিক মো. আসলাম জানান, গত দুই সপ্তাহ ধরে প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধের সরবরাহ নেই। শহরের বেশিরভাগ দোকানে নাপা, নাপা এক্সট্রা, নাপা এক্সটেন্ডসহ কাশির সিরাপের সঙ্কট বিরাজ করছে। এসব ওষুধের চাহিদা কয়েকগুণ বেড়ে গেছে। মানুষ জ্বরের ওষুধই নিচ্ছে বেশি। তিনি সীমিত মজুদ থেকে কোম্পানির দরে অল্প পরিমাণে ওষুধ বিক্রি করছেন, যাতে সবাই ওষুধ পায়। তবে ওষুধের সরবরাহ স্বাভাবিক না হলে ওষুধের সঙ্কট দেখা দেবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

মেসার্স ফরহান ফার্মেসির ওষুধ ব্যবসায়ী মো. ফারহান প্যারাসিটামল গ্রুপের ওষুধের সঙ্কট রয়েছে জানিয়ে বলেন, হঠাৎ জ্বরের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় বেশিরভাগ দোকানের মজুদ শেষ হয়ে গেছে। নতুন করে ওষুধ সরবরাহ না করলে এই সঙ্কট কাটবে না। তিনি বলেন, ওষুধের চাহিদা দিয়েও কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে ওষুধ পাওয়া যাচ্ছে না।

এদিকে জ্বর, সর্দি-কাশি ওষুধের বিপুল চাহিদা তৈরি হওয়ায় শহরের অনেক অসাধু ব্যবসায়ী উচ্চমূল্যে ওষুধ বিক্রি করছে। সব দোকানে ওষুধ না থাকায় বাড়তি দামের সুযোগ নিচ্ছেন কিছু অসাধু দোকানিরা।

শহরের জ্বরের ওষুধ কিনতে আসা ক্রেতাদের অভিযোগে ওষুধের সঙ্কট ও দাম বৃদ্ধির এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

জানতে চাইলে, বাংলাদেশ কেমিস্ট্র অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতি সৈয়দপুর উপজেলা শাখার সভাপতি মিজানুল হক প্যারাসিটামল গ্রুপের ওষুধের সাপ্লাই না থাকার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, সাপ্লাই না থাকার অজুহাতে বাড়তি দামে ওষুধ বিক্রি সমর্থনযোগ্য নয়। করোনাকালে সংগঠনের পক্ষ থেকে ওষুধের বাড়তি দাম না নেয়ার নির্দেশনা আছে। অভিযোগের বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখব। তবে কারও বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।