মোরেলগঞ্জে লকডাউনে বিপাকে আশ্রয়ণের শ্রমজীবীরা

সরকারি খাদ্য সহায়তার দাবি

প্রাণঘাতী করোনা প্রতিরোধে সচেতনতায় চলছে লকডাউন। টানা এক সপ্তাহ লকডাউনে বিপাকে পড়েছে মোরেলগঞ্জের হোগলাপাশা আশ্রয়ণ কেন্দ্রে শ্রমজীবী খেটে খাওয়া মানুষ।

কর্মহীন হয়ে পড়া উপজেলার ১৬টি ইউনিয়নসহ পৌর শহরে দিনমজুর শ্রমজীবী পরিবারগুলো পড়েছে দুশ্চিন্তায়। এক বেলা কাজ না করলে অন্য বেলা খাবার জোটে না। সরকারিভাবে খাদ্য সহায়তার দাবি জানিয়েছেন আশ্রয়ণের বাসিন্দাসহ উপজেলার শ্রমজীবী মানুষেরা।

সরেজমিনে উপজেলার হোগলাপাশা ইউনিয়নের হোগলাপাশা আশ্রয়ণ কেন্দ্র। বলেশ^র নদীর তীর ঘেষা এ আশ্রয়ণ কেন্দ্রটি ২০০০ সালে ৪ একর জমির ওপর নির্মিত হয়। এখানে বসবাসকৃত ৬টি ইউনিটের ১০টি পরিবার করে মোট ৬০টি পরিবার বসবাস করছেন। রয়েছে এ আশ্রয়ণের বাসিন্দাদের নানাবিধ সমস্যা। আশ্রয়ণ কেন্দ্রটি নির্মাণের পরবর্তীতে হয়নি কোন সংস্কার। প্রতিটি ঘরের কক্ষ থেকে বৃষ্টি হলেই পানি পড়ে। মরিচা পড়ে ছিদ্র হয়ে পড়েছে প্রতিটি কক্ষের চালা।

ঘরের খুটি পলেস্তরা খসে খসে পড়ছে। পলিথিন টাঙ্গিয়ে থাকছেন ছেলে মেয়েদের নিয়ে আশ্রয়ণের বাসিন্দারা। নেই সুপেয় পানির ব্যবস্থা। ৬টি টিউবওয়েল অকেজো অবস্থা পড়ে রয়েছে। প্রকৃতিক দুর্যোগ বন্যা জলোচ্ছ্বাস এলে ২ কিলোমিটারের মধ্যে নেই সাইক্লোন সেল্টার। আশপাশে নেই কোন পাকা ভবন। এর মধ্যেই তাদের থাকতে হয়। অন্যদিকে নদীর ভাঙ্গনের মুখে তাদের বসতবাড়ি। ঘরে নেই খাবার। কিভাবে চলবে তাদের সংসার। দুশ্চিন্তার ছাপ চোখে মুখে। লকডাউনে রিক্সা-ভ্যান চালাতে পারছেন না কর্মহীন হয়ে পড়ে নিজ গৃহে অবস্থান করছেন।

কথা হয়, আশ্রয়ণের বাসিন্দা রিক্স চালক কবির হাওলাদার (৪৮), পরিবারের দুই ছেলে ১ মেয়ে স্ত্রী নিয়ে খুবই কষ্টে দিনযাপন করছেন। সোহেল শেখ (৩৮), মজিদ পাইক (৬০), মমতাজ বেগম(৪৫), আবু সৈয়দ পাইক (৪০), হাজেরা বিবি (৩৮), সহ একাধিকরা বলেন, রিক্সা-ভ্যান চালিয়ে অন্যের বাড়িতে ঝিঁ-এর কাজ করে ছেলে মেয়েদের নিয়ে কোন মতে দু’মুটো খেয়ে পড়ে দিন যেত। লকডাউনে তাও বন্ধ হয়ে গেছে। কিভাবে সংসার চলবে সংবাদ কর্মীদের সামনে এ রকম অনেক প্রশ্ন তুলেন। আশ্রয়ণের বাসিন্দাদের প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবি লকডাউনে খাদ্যসহায়তা, আশ্রয়ণের সংস্কার, নদী ভাঙ্গন রোধে স্থায়ী ভেরিবাঁধ দিয়ে তাদের বসবাস করার উপযোগী করে দেয়ার জোর দবি জানান।

এ সম্পর্কে হোগলাপাশা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইউপি চেয়ারম্যান মো. রেজাউল ইসলাম নান্না বলেন, হোগলাপাশা আশ্রয়ণ কেন্দ্রটিতে ৬০টি পরিবার বসবাসকৃত ঘরগুলো জরুরীভাবে সংস্কারের প্রয়োজন। ইতোপূর্বে এ অশ্রয়ণের নানাবিধ সমস্যার বিষয়য়ে জেলা প্রশাসকসহ, নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করা হয়েছে। তিনি আশ্রয়ণ বাসীদের সমস্যা লাঘবে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, লকডাউনে কর্মহীন হয়ে পড়া শ্রমজীবী মানুষের করোনার সহায়তার বরাদ্দ ইতোমধ্যে এসে পৌঁছেছে। বিতরণ নির্দেশনার অপেক্ষা। আশ্রয়ণ প্রকল্পগুলো জরাজীর্ণ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয়েছে। বরাদ্দ হলে সব আশ্রয়ণের কাজ শুরু করা হবে।

বুধবার, ০৭ জুলাই ২০২১ , ২৩ আষাঢ় ১৪২৮ ২৫ জিলক্বদ ১৪৪২

মোরেলগঞ্জে লকডাউনে বিপাকে আশ্রয়ণের শ্রমজীবীরা

সরকারি খাদ্য সহায়তার দাবি

প্রতিনিধি, মোরেলগঞ্জ (বাগেরহাট)

image

প্রাণঘাতী করোনা প্রতিরোধে সচেতনতায় চলছে লকডাউন। টানা এক সপ্তাহ লকডাউনে বিপাকে পড়েছে মোরেলগঞ্জের হোগলাপাশা আশ্রয়ণ কেন্দ্রে শ্রমজীবী খেটে খাওয়া মানুষ।

কর্মহীন হয়ে পড়া উপজেলার ১৬টি ইউনিয়নসহ পৌর শহরে দিনমজুর শ্রমজীবী পরিবারগুলো পড়েছে দুশ্চিন্তায়। এক বেলা কাজ না করলে অন্য বেলা খাবার জোটে না। সরকারিভাবে খাদ্য সহায়তার দাবি জানিয়েছেন আশ্রয়ণের বাসিন্দাসহ উপজেলার শ্রমজীবী মানুষেরা।

সরেজমিনে উপজেলার হোগলাপাশা ইউনিয়নের হোগলাপাশা আশ্রয়ণ কেন্দ্র। বলেশ^র নদীর তীর ঘেষা এ আশ্রয়ণ কেন্দ্রটি ২০০০ সালে ৪ একর জমির ওপর নির্মিত হয়। এখানে বসবাসকৃত ৬টি ইউনিটের ১০টি পরিবার করে মোট ৬০টি পরিবার বসবাস করছেন। রয়েছে এ আশ্রয়ণের বাসিন্দাদের নানাবিধ সমস্যা। আশ্রয়ণ কেন্দ্রটি নির্মাণের পরবর্তীতে হয়নি কোন সংস্কার। প্রতিটি ঘরের কক্ষ থেকে বৃষ্টি হলেই পানি পড়ে। মরিচা পড়ে ছিদ্র হয়ে পড়েছে প্রতিটি কক্ষের চালা।

ঘরের খুটি পলেস্তরা খসে খসে পড়ছে। পলিথিন টাঙ্গিয়ে থাকছেন ছেলে মেয়েদের নিয়ে আশ্রয়ণের বাসিন্দারা। নেই সুপেয় পানির ব্যবস্থা। ৬টি টিউবওয়েল অকেজো অবস্থা পড়ে রয়েছে। প্রকৃতিক দুর্যোগ বন্যা জলোচ্ছ্বাস এলে ২ কিলোমিটারের মধ্যে নেই সাইক্লোন সেল্টার। আশপাশে নেই কোন পাকা ভবন। এর মধ্যেই তাদের থাকতে হয়। অন্যদিকে নদীর ভাঙ্গনের মুখে তাদের বসতবাড়ি। ঘরে নেই খাবার। কিভাবে চলবে তাদের সংসার। দুশ্চিন্তার ছাপ চোখে মুখে। লকডাউনে রিক্সা-ভ্যান চালাতে পারছেন না কর্মহীন হয়ে পড়ে নিজ গৃহে অবস্থান করছেন।

কথা হয়, আশ্রয়ণের বাসিন্দা রিক্স চালক কবির হাওলাদার (৪৮), পরিবারের দুই ছেলে ১ মেয়ে স্ত্রী নিয়ে খুবই কষ্টে দিনযাপন করছেন। সোহেল শেখ (৩৮), মজিদ পাইক (৬০), মমতাজ বেগম(৪৫), আবু সৈয়দ পাইক (৪০), হাজেরা বিবি (৩৮), সহ একাধিকরা বলেন, রিক্সা-ভ্যান চালিয়ে অন্যের বাড়িতে ঝিঁ-এর কাজ করে ছেলে মেয়েদের নিয়ে কোন মতে দু’মুটো খেয়ে পড়ে দিন যেত। লকডাউনে তাও বন্ধ হয়ে গেছে। কিভাবে সংসার চলবে সংবাদ কর্মীদের সামনে এ রকম অনেক প্রশ্ন তুলেন। আশ্রয়ণের বাসিন্দাদের প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবি লকডাউনে খাদ্যসহায়তা, আশ্রয়ণের সংস্কার, নদী ভাঙ্গন রোধে স্থায়ী ভেরিবাঁধ দিয়ে তাদের বসবাস করার উপযোগী করে দেয়ার জোর দবি জানান।

এ সম্পর্কে হোগলাপাশা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইউপি চেয়ারম্যান মো. রেজাউল ইসলাম নান্না বলেন, হোগলাপাশা আশ্রয়ণ কেন্দ্রটিতে ৬০টি পরিবার বসবাসকৃত ঘরগুলো জরুরীভাবে সংস্কারের প্রয়োজন। ইতোপূর্বে এ অশ্রয়ণের নানাবিধ সমস্যার বিষয়য়ে জেলা প্রশাসকসহ, নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করা হয়েছে। তিনি আশ্রয়ণ বাসীদের সমস্যা লাঘবে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, লকডাউনে কর্মহীন হয়ে পড়া শ্রমজীবী মানুষের করোনার সহায়তার বরাদ্দ ইতোমধ্যে এসে পৌঁছেছে। বিতরণ নির্দেশনার অপেক্ষা। আশ্রয়ণ প্রকল্পগুলো জরাজীর্ণ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয়েছে। বরাদ্দ হলে সব আশ্রয়ণের কাজ শুরু করা হবে।