দক্ষিণাঞ্চলের সব জেলা সদরের পৌর এলাকায় টিকাদান কার্যক্রম শুরু

বরিশাল মহানগরী বাদে দক্ষিণাঞ্চলের সব জেলা সদরের পৌর এলাকাগুলোতে করোনা প্রতিষেধক ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় পর্যায়ের কার্যক্রম অব্যাহত থাকার মধ্যেই গতকাল থেকে নতুন রেজিস্ট্রেশন ও টিকা প্রদান শুরু হয়েছে। সরকারী নির্দেশনা থাকলেও একইদিন থেকে মহানগরীতে করোনা ভ্যাকসিন প্রদান কার্যক্রম শুরু হয়নি। এ প্রসঙ্গে বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার ও সিভিল সার্জন বিষয়টি সিটি করপোরেশনের এখতিয়ারভুক্ত বলে জানান।

তবে সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, স্বাস্থ্য বিভাগ ভ্যাকসিন প্রদান করবে বলে জানালেও নগর ভবন থেকে ডা. ফয়সালকে এ ব্যাপারে দায়িত্ব প্রদানের কথা জানান হয়েছে। তবে কবে নাগাদ বিসিসি এলাকায় করোনা ভ্যাকসিন প্রদান শুরু হবে সে ব্যাপারে তিনি কিছুই বলতে পারেননি।

গত ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে সারাদেশের মতো দক্ষিণাঞ্চলের ৬টি জেলার ৪২টি উপজেলার ৪৬টি কেন্দ্রে করোনা ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ প্রদান শুরু হয়ে জুনের মধ্যভাগ পর্যন্ত ২ লাখ ৫৩ হাজার মানুষকে তা প্রদান করা হয়। ৮ এপ্রিল থেকে দ্বিতীয় ডোজ ভ্যাকসিন প্রদান শুরু হলেও ২০ জুন পর্যন্ত প্রায় ১ লাখ ৮০ জনের ভ্যাকসিনের অভাবে তা বন্ধ হয়ে যায়। দক্ষিণাঞ্চলে প্রথম ডোজ গ্রহণকারী প্রায় ৭৩ হাজার মানুষ এখনও দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণ করতে পারেননি।

চীনা সিনোভ্যাক’র ভ্যাকসিন পৌঁছার পর গত ১৯ জুন থেকে শুধু ৬টি জেলা সদরের ছয়টি কেন্দ্রে এটির প্রথম ডোজ প্রয়োগ করা শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে মডার্নাসহ প্রায় ৫০ লাখ ভ্যাকসিন দেশে পৌঁছায় ৮ জুলাই থেকে তার রেজিস্ট্রেশনসহ তা প্রয়োগের কথা জানায় স্বাস্থ্য বিভাগ। সে নিরিখে বৃহস্পতিবার থেকে বরিশাল বিভাগীয় সদর বাদে অন্য সব জেলা সদরের পৌর এলাকায় ভ্যাকসিনেশন কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

বিষয়টি নিয়ে বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার সাইফুল ইসলাম বাদলের সঙ্গে আলাপ করা হলে তিনি জানান, বরিশাল মহানগরীতে রেজিস্ট্রেশনসহ ভ্যাকসিন প্রদানের দায়িত্ব সিটি করপোরেশনের। স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও জেনারেল হাসপাতালে দুটি করে মোট ৪টি কেন্দ্রে ভ্যাকসিন প্রদানের সব ব্যবস্থাসহ ভ্যাকসিনেটর ও ভ্যাকসিনের সরবরাহ নিশ্চিত করা হয়েছে। যতদ্রুত সম্ভব নগরীতে ভ্যাকসিন প্রদান কার্যক্রম শুরুর লক্ষ্যে জেলা প্রশাসক, নগর ভবনের প্রতিনিধি ও সিভিল সার্র্জনকে নিয়ে মিটিং করার কথাও জানান বিভাগীয় কমিশনার। তবে ঠিক কবে নাগাদ নগরীতে টিকা প্রদান শুরু হবে তা বলতে না পারলেও সিটি মেয়রের সঙ্গে কথা বলে সব ঠিক করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

এদিকে দেশে নতুন ভ্যাকসিন পৌঁছার পর বরিশাল বিভাগের সব জেলা ও উপজেলা সদরেও তা প্রদানের লক্ষ্যে প্রস্তুতি শুরু করতে বলেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। দু’একদিনের মধ্যে সারাদেশের মতো দক্ষিণাঞ্চলেও করোনা প্রতিষেধক ভ্যাকসিন পৌঁছে যাবে বলে আশা করছেন বরিশাল বিভাগ ও জেলা পর্যায়ের স্বাস্থ্য কর্মকর্তাগণ।

আগামী সপ্তাহ থেকে সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলে ভ্যাকসিন প্রদান কার্যক্রমে নতুন গতি আসবে বলে আশাপ্রকাশ করেছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক ডা. বাসুদেব কুমার দাসসহ বরিশালের সিভিল সার্জনও। তবে বরিশাল নগরীর বিষয়ে তারা কিছু বলতে না চাইলেও সরকারি নির্দেশনার আলোকে সব জায়গাতেই ভ্যাকসিন প্রদানের লক্ষ্যে কার্যক্রম শুরুর কাজ চলছে বলেও জানান স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা।

শনিবার, ১০ জুলাই ২০২১ , ২৬ আষাঢ় ১৪২৮ ২৮ জিলক্বদ ১৪৪২

দক্ষিণাঞ্চলের সব জেলা সদরের পৌর এলাকায় টিকাদান কার্যক্রম শুরু

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক, বরিশাল

image

বরিশাল মহানগরী বাদে দক্ষিণাঞ্চলের সব জেলা সদরের পৌর এলাকাগুলোতে করোনা প্রতিষেধক ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় পর্যায়ের কার্যক্রম অব্যাহত থাকার মধ্যেই গতকাল থেকে নতুন রেজিস্ট্রেশন ও টিকা প্রদান শুরু হয়েছে। সরকারী নির্দেশনা থাকলেও একইদিন থেকে মহানগরীতে করোনা ভ্যাকসিন প্রদান কার্যক্রম শুরু হয়নি। এ প্রসঙ্গে বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার ও সিভিল সার্জন বিষয়টি সিটি করপোরেশনের এখতিয়ারভুক্ত বলে জানান।

তবে সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, স্বাস্থ্য বিভাগ ভ্যাকসিন প্রদান করবে বলে জানালেও নগর ভবন থেকে ডা. ফয়সালকে এ ব্যাপারে দায়িত্ব প্রদানের কথা জানান হয়েছে। তবে কবে নাগাদ বিসিসি এলাকায় করোনা ভ্যাকসিন প্রদান শুরু হবে সে ব্যাপারে তিনি কিছুই বলতে পারেননি।

গত ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে সারাদেশের মতো দক্ষিণাঞ্চলের ৬টি জেলার ৪২টি উপজেলার ৪৬টি কেন্দ্রে করোনা ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ প্রদান শুরু হয়ে জুনের মধ্যভাগ পর্যন্ত ২ লাখ ৫৩ হাজার মানুষকে তা প্রদান করা হয়। ৮ এপ্রিল থেকে দ্বিতীয় ডোজ ভ্যাকসিন প্রদান শুরু হলেও ২০ জুন পর্যন্ত প্রায় ১ লাখ ৮০ জনের ভ্যাকসিনের অভাবে তা বন্ধ হয়ে যায়। দক্ষিণাঞ্চলে প্রথম ডোজ গ্রহণকারী প্রায় ৭৩ হাজার মানুষ এখনও দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণ করতে পারেননি।

চীনা সিনোভ্যাক’র ভ্যাকসিন পৌঁছার পর গত ১৯ জুন থেকে শুধু ৬টি জেলা সদরের ছয়টি কেন্দ্রে এটির প্রথম ডোজ প্রয়োগ করা শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে মডার্নাসহ প্রায় ৫০ লাখ ভ্যাকসিন দেশে পৌঁছায় ৮ জুলাই থেকে তার রেজিস্ট্রেশনসহ তা প্রয়োগের কথা জানায় স্বাস্থ্য বিভাগ। সে নিরিখে বৃহস্পতিবার থেকে বরিশাল বিভাগীয় সদর বাদে অন্য সব জেলা সদরের পৌর এলাকায় ভ্যাকসিনেশন কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

বিষয়টি নিয়ে বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার সাইফুল ইসলাম বাদলের সঙ্গে আলাপ করা হলে তিনি জানান, বরিশাল মহানগরীতে রেজিস্ট্রেশনসহ ভ্যাকসিন প্রদানের দায়িত্ব সিটি করপোরেশনের। স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও জেনারেল হাসপাতালে দুটি করে মোট ৪টি কেন্দ্রে ভ্যাকসিন প্রদানের সব ব্যবস্থাসহ ভ্যাকসিনেটর ও ভ্যাকসিনের সরবরাহ নিশ্চিত করা হয়েছে। যতদ্রুত সম্ভব নগরীতে ভ্যাকসিন প্রদান কার্যক্রম শুরুর লক্ষ্যে জেলা প্রশাসক, নগর ভবনের প্রতিনিধি ও সিভিল সার্র্জনকে নিয়ে মিটিং করার কথাও জানান বিভাগীয় কমিশনার। তবে ঠিক কবে নাগাদ নগরীতে টিকা প্রদান শুরু হবে তা বলতে না পারলেও সিটি মেয়রের সঙ্গে কথা বলে সব ঠিক করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

এদিকে দেশে নতুন ভ্যাকসিন পৌঁছার পর বরিশাল বিভাগের সব জেলা ও উপজেলা সদরেও তা প্রদানের লক্ষ্যে প্রস্তুতি শুরু করতে বলেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। দু’একদিনের মধ্যে সারাদেশের মতো দক্ষিণাঞ্চলেও করোনা প্রতিষেধক ভ্যাকসিন পৌঁছে যাবে বলে আশা করছেন বরিশাল বিভাগ ও জেলা পর্যায়ের স্বাস্থ্য কর্মকর্তাগণ।

আগামী সপ্তাহ থেকে সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলে ভ্যাকসিন প্রদান কার্যক্রমে নতুন গতি আসবে বলে আশাপ্রকাশ করেছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক ডা. বাসুদেব কুমার দাসসহ বরিশালের সিভিল সার্জনও। তবে বরিশাল নগরীর বিষয়ে তারা কিছু বলতে না চাইলেও সরকারি নির্দেশনার আলোকে সব জায়গাতেই ভ্যাকসিন প্রদানের লক্ষ্যে কার্যক্রম শুরুর কাজ চলছে বলেও জানান স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা।