চুনারুঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের অভাবে এগারো বছরেও চালু হয়নি অস্ত্রোপচার কক্ষ!

এক দশকেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ আছে হবিগঞ্জের ৫০ শয্যার চুনারুঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অপারেশন থিয়েটার। কনসালট্যান্ট (সার্জারি), কনসালট্যান্ট (গাইনি) ও অ্যানেসথেশিয়া বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের অভাবে অপারেশন থিয়েটারটি চালু করা যাচ্ছে না। ফলে এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সেবাবঞ্চিত হচ্ছেন উপজেলার মানুষ।

অন্যদিকে দীর্ঘদিন ধরে অব্যবহৃত থাকায় পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে মূল্যবান যন্ত্রপাতি। ২০০৯ সালের জুন মাসে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ৩১ থেকে ৫০ শয্যার কার্যক্রম চালুর জন্য প্রশাসনিক অনুমোদন পায়। প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয় নতুন ভবন। এরপর ২০১৬ সাল থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ৫০ শয্যার কার্যক্রম শুরু হয়। কিন্তু দেয়া হয়নি ৫০ শয্যার জন্য প্রয়োজনীয় জনবল। এটি এখন চলছে ৩১ শয্যার জনবলে। যেখানে ৩১ শয্যার জনবলেই রয়েছে সঙ্কট। এসব সঙ্কট নিয়ে কর্তৃপক্ষ জোড়াতালি দিয়ে কোনমতে মানুষকে সেবা দেয়ার চেষ্টা করছে। অপরদিকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ল্যাব) পদে জনবল না থাকায় হাসপাতালে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে আসা রোগীদের যেতে হচ্ছে বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। এতে গরিব রোগীরা পড়ছেন বিপাকে।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, ৫০ শয্যার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হলেও নেই ৩১ শয্যার জনবল। ৩১ শয্যার জনবলে চিকিৎসক, টেকনিশিয়ান, কর্মচারীসহ বিভিন্ন পদে জনবল সঙ্কটের কারণে বিঘ্নিত হচ্ছে স্বাস্থ্য সেবা। এখানে জুনিয়র কনসালট্যান্ট (শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ), জুনিয়র কনসালট্যান্ট (মেডিসিন), জুনিয়র কনসালট্যান্ট (গাইনি), জুনিয়র কনসালট্যান্ট (সার্জারি) ও জুনিয়র কনসালট্যান্ট (অ্যানেসথেশিয়া) পদগুলো দীর্ঘদিন ধরে শূন্য রয়েছে। এসব পদে চিকিৎসক পদায়ন হলেও কেউ থাকেন না বেশি দিন। নানা কারণ দেখিয়ে তারা বদলি হয়ে চলে যান অন্যত্র। ফলে গুরুত্বপূর্ণ এসব পদ বছরের পর বছর শূন্য আছে। এই কারণে এক দশকেরও বেশি সময় ধরে চালু করা যাচ্ছে না অপারেশন থিয়েটার। এছাড়া মেডিকেল অফিসারের ৩টি পদের মধ্যে ১টি পদ শূন্য, মেডিকেল অফিসার (আয়ুর্বেদিক-হোমিওপ্যাথিক) ১টি পদের ১টিই শূন্য, সিনিয়র স্টাফ নার্স ৫টি পদের ১টি পদ শূন্য, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ল্যাব) ২টি পদের ২টি শূন্য, ফার্মাসিস্ট ২টি পদের ২টি শূন্য, স্বাস্থ্য পরিদর্শক ৩টি পদের ৩টি শূন্য, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শকের ১১টি পদের ৪টি পদ শূন্য, স্বাস্থ্য সহকারী ৫৫ জনের মধ্যে ১৩টি পদ শূন্য। চুনারুঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোজাম্মেল হোসেন বলেন, ‘৩১ শয্যার জনবল সঙ্কট নিয়ে আমাদের ৫০ শয্যার কার্যক্রম চালাতে হচ্ছে। এরমধ্যে চিকিৎসকের গুরুত্বপূর্ণ পদগুলো শূন্য অনেকদিন ধরে।

জনবল ঘাটতির কারণে অপারেশন থিয়েটার চালু করা যাচ্ছে না। ল্যাব টেকনিশিয়ানও নেই। প্রয়োজনীয় জনবল থাকলে মানুষকে ভাল সেবা দেয়া সম্ভব। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে অনেকবার আবেদন জানানো হয়েছে। কিন্তু এখনও কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি।

সোমবার, ১২ জুলাই ২০২১ , ২৮ আষাঢ় ১৪২৮ ১ জিলহজ্জ ১৪৪২

চুনারুঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের অভাবে এগারো বছরেও চালু হয়নি অস্ত্রোপচার কক্ষ!

সংবাদদাতা, চুনারুঘাট (হবিগঞ্জ)

image

চুনারুঘাট (হবিগঞ্জ) : উপজেল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সুসজ্জিত অস্ত্রোপচার কক্ষ। জনবলের অভাবে সেবাবঞ্চিত রোগীরা -সংবাদ

এক দশকেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ আছে হবিগঞ্জের ৫০ শয্যার চুনারুঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অপারেশন থিয়েটার। কনসালট্যান্ট (সার্জারি), কনসালট্যান্ট (গাইনি) ও অ্যানেসথেশিয়া বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের অভাবে অপারেশন থিয়েটারটি চালু করা যাচ্ছে না। ফলে এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সেবাবঞ্চিত হচ্ছেন উপজেলার মানুষ।

অন্যদিকে দীর্ঘদিন ধরে অব্যবহৃত থাকায় পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে মূল্যবান যন্ত্রপাতি। ২০০৯ সালের জুন মাসে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ৩১ থেকে ৫০ শয্যার কার্যক্রম চালুর জন্য প্রশাসনিক অনুমোদন পায়। প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয় নতুন ভবন। এরপর ২০১৬ সাল থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ৫০ শয্যার কার্যক্রম শুরু হয়। কিন্তু দেয়া হয়নি ৫০ শয্যার জন্য প্রয়োজনীয় জনবল। এটি এখন চলছে ৩১ শয্যার জনবলে। যেখানে ৩১ শয্যার জনবলেই রয়েছে সঙ্কট। এসব সঙ্কট নিয়ে কর্তৃপক্ষ জোড়াতালি দিয়ে কোনমতে মানুষকে সেবা দেয়ার চেষ্টা করছে। অপরদিকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ল্যাব) পদে জনবল না থাকায় হাসপাতালে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে আসা রোগীদের যেতে হচ্ছে বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। এতে গরিব রোগীরা পড়ছেন বিপাকে।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, ৫০ শয্যার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হলেও নেই ৩১ শয্যার জনবল। ৩১ শয্যার জনবলে চিকিৎসক, টেকনিশিয়ান, কর্মচারীসহ বিভিন্ন পদে জনবল সঙ্কটের কারণে বিঘ্নিত হচ্ছে স্বাস্থ্য সেবা। এখানে জুনিয়র কনসালট্যান্ট (শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ), জুনিয়র কনসালট্যান্ট (মেডিসিন), জুনিয়র কনসালট্যান্ট (গাইনি), জুনিয়র কনসালট্যান্ট (সার্জারি) ও জুনিয়র কনসালট্যান্ট (অ্যানেসথেশিয়া) পদগুলো দীর্ঘদিন ধরে শূন্য রয়েছে। এসব পদে চিকিৎসক পদায়ন হলেও কেউ থাকেন না বেশি দিন। নানা কারণ দেখিয়ে তারা বদলি হয়ে চলে যান অন্যত্র। ফলে গুরুত্বপূর্ণ এসব পদ বছরের পর বছর শূন্য আছে। এই কারণে এক দশকেরও বেশি সময় ধরে চালু করা যাচ্ছে না অপারেশন থিয়েটার। এছাড়া মেডিকেল অফিসারের ৩টি পদের মধ্যে ১টি পদ শূন্য, মেডিকেল অফিসার (আয়ুর্বেদিক-হোমিওপ্যাথিক) ১টি পদের ১টিই শূন্য, সিনিয়র স্টাফ নার্স ৫টি পদের ১টি পদ শূন্য, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ল্যাব) ২টি পদের ২টি শূন্য, ফার্মাসিস্ট ২টি পদের ২টি শূন্য, স্বাস্থ্য পরিদর্শক ৩টি পদের ৩টি শূন্য, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শকের ১১টি পদের ৪টি পদ শূন্য, স্বাস্থ্য সহকারী ৫৫ জনের মধ্যে ১৩টি পদ শূন্য। চুনারুঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোজাম্মেল হোসেন বলেন, ‘৩১ শয্যার জনবল সঙ্কট নিয়ে আমাদের ৫০ শয্যার কার্যক্রম চালাতে হচ্ছে। এরমধ্যে চিকিৎসকের গুরুত্বপূর্ণ পদগুলো শূন্য অনেকদিন ধরে।

জনবল ঘাটতির কারণে অপারেশন থিয়েটার চালু করা যাচ্ছে না। ল্যাব টেকনিশিয়ানও নেই। প্রয়োজনীয় জনবল থাকলে মানুষকে ভাল সেবা দেয়া সম্ভব। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে অনেকবার আবেদন জানানো হয়েছে। কিন্তু এখনও কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি।