ঠিকাদারের অবহেলায় অক্সিজেন সিলিন্ডার স্থাপনে বিলম্ব সেবাবঞ্চিত রোগীরা

সারাবিশ্ব করোনাভাইরাসের সংক্রমণে আতঙ্কিত। বটিয়াঘাটা উপজেলায় ১২৪১টি নমুনা পরীক্ষা করে ৩০৮ জন শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং আইসোলেশনে আছে ৯৯ জন। এই ভাইরাস সংক্রামিত রোগীর জন্য প্রতিটি জেলা উপজেলা শহরে অক্সিজেন সিলিন্ডার ব্যাংক ও হাইফ্লোজাল ক্যানোলা সরবরাহ এবং ইলেক্ট্রনিক পেসেন্ট বেড তৈরির জন্য ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়। বটিয়াঘাটা উপজেলায়ও ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়।

এই কাজের দায়িত্ব পায় খুলনার বায়ো মেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং প্রতিষ্ঠান। সাড়ে ৩৩ লাখ টাকা ব্যয়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের জন্য নির্মিত এই কাজ শেষ হবার কথা ২০২১ সালের ২০ জুনের মধ্যে কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এখনও পর্যন্ত ওই কাজ শেষ করতে পারেনি। অথচ একই সময় টেন্ডার হওয়া খুলনা জেলার অন্যান্য উপজেলা শতভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বটিয়াঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে অক্সিজেন সিলিন্ডার ব্যাংকের কাজ ২০ জুনের মধ্যে শেষ না হওয়ায় এলাকা বাসি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতি বলে মন্তব্য করেন।

জাপান ইন্টান্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) ও বাংলাদেশ সরকারের (স্থানীয় সরকার বিভাগ) যৌথ উদ্যোগে বটিয়াঘাটা উপজেলার পরিচালন ও উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় সাড়ে ৩৩ লাখ টাকা ব্যয়ে উক্ত কাজটি চলছে। বর্তমান সময়ে করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য এই ব্যাংক তৈরি হচ্ছে।

করোনা রোগীদের জন্য এখানে থাকবে সেন্টাল অক্সিজেন সিস্টেম, অক্সিজেন সিলিন্ডার ব্যাংক, অটোমেটিক চেন্জএ্যাবল ম্যানিফোল্ড ম্যাসিন, হাইফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা, মনিটর এবং অত্যাধুনিক ইলেক্ট্রনিক পেসেন্ট বেড স্থাপন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ব্যক্তি জানান, শুধু ঠিকাদারের গাফিলতির কারণে আমাদের অক্সিজেন সিলিন্ডার ব্যাংকের কাজ সম্পূর্ণ শেষ হয়নি অথচ আশপাশের সব উপজেলার হাসপাতালে এই কার্যক্রম শেষ হয়েছে। সরকার দিয়েছে করোনা রোগী সেবা করার জন্য অথচ বটিয়াঘাটার মানুষ এখনও সকল সেবা পাচ্ছেনা শুধু ঠিকাদারের গাফিলতির কারণে।

এ বিষয়ে বায়ো মেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং প্রতিষ্ঠানের ঠিকাদারের কাছে জানতে চাইলে বলেন, আমরা ওয়ার্ক অর্ডার একটু দেরিতে পাওয়ার জন্য সঠিক সময়ে কাজটি সম্পূর্ণ শেষ করতে পারেনি, তবে যেটুকু কাজ হয়েছে তা দিয়ে রোগী চিকিৎসার কাজ তো চলছে। তবে অল্প সময়ের মধ্যে কাজটা শেষ হবে বলে, আশা করছ। বটিয়াঘাটা উপজেলায় দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিচালন ও উন্নয়ন প্রকল্প (জাইকা) কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান বলেন, সঠিক সময়ের মধ্যে কাজটা শেষ না হওয়ায় এই উপজেলার করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের সেবা পেতে শহরে ছুটতে হচ্ছে। তাই আশা করছি দ্রুত কাজটা শেষ হোক, উপজেলাবাসী সেবা পাক এবং আমার সংস্থার প্রকল্পের উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন হোক।

সার্বিক বিষয়ে বটিয়াঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা ডা. মিজানুর রহমান বলেন, বর্তমান সময়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স দরকার অক্সিজেন সিলিন্ডার, ইলেক্ট্রনিক পেসেন্ট বেড ও হাইফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা সরবরাহ, যে কারণে সরকার থেকে ঠিকাদারের মাধ্যমে এগুলো হচ্ছে এবং ২০ জুনের মধ্যে আমাদের কাছে হস্তান্তর করার কথা অথচ অন্য উপজেলায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হস্তান্তর করলেও আমরা এখনও পর্যন্ত শতভাগ পাইনি কাজ বুঝে পাইনি। করোনা রোগীদের জন্য ২০টা পেসেন্ট বেড প্রস্তুত করার কথা থাকলেও রেডি পেয়েছি ৮টি। যে কারণে করোনা আক্রান্ত রোগীদের আমরা সঠিকভাবে সেবা দিতে পারছি না।

সোমবার, ১২ জুলাই ২০২১ , ২৮ আষাঢ় ১৪২৮ ১ জিলহজ্জ ১৪৪২

ঠিকাদারের অবহেলায় অক্সিজেন সিলিন্ডার স্থাপনে বিলম্ব সেবাবঞ্চিত রোগীরা

প্রতিনিধি, বটিয়াঘাটা (খুলনা)

সারাবিশ্ব করোনাভাইরাসের সংক্রমণে আতঙ্কিত। বটিয়াঘাটা উপজেলায় ১২৪১টি নমুনা পরীক্ষা করে ৩০৮ জন শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং আইসোলেশনে আছে ৯৯ জন। এই ভাইরাস সংক্রামিত রোগীর জন্য প্রতিটি জেলা উপজেলা শহরে অক্সিজেন সিলিন্ডার ব্যাংক ও হাইফ্লোজাল ক্যানোলা সরবরাহ এবং ইলেক্ট্রনিক পেসেন্ট বেড তৈরির জন্য ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়। বটিয়াঘাটা উপজেলায়ও ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়।

এই কাজের দায়িত্ব পায় খুলনার বায়ো মেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং প্রতিষ্ঠান। সাড়ে ৩৩ লাখ টাকা ব্যয়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের জন্য নির্মিত এই কাজ শেষ হবার কথা ২০২১ সালের ২০ জুনের মধ্যে কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এখনও পর্যন্ত ওই কাজ শেষ করতে পারেনি। অথচ একই সময় টেন্ডার হওয়া খুলনা জেলার অন্যান্য উপজেলা শতভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বটিয়াঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে অক্সিজেন সিলিন্ডার ব্যাংকের কাজ ২০ জুনের মধ্যে শেষ না হওয়ায় এলাকা বাসি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতি বলে মন্তব্য করেন।

জাপান ইন্টান্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) ও বাংলাদেশ সরকারের (স্থানীয় সরকার বিভাগ) যৌথ উদ্যোগে বটিয়াঘাটা উপজেলার পরিচালন ও উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় সাড়ে ৩৩ লাখ টাকা ব্যয়ে উক্ত কাজটি চলছে। বর্তমান সময়ে করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য এই ব্যাংক তৈরি হচ্ছে।

করোনা রোগীদের জন্য এখানে থাকবে সেন্টাল অক্সিজেন সিস্টেম, অক্সিজেন সিলিন্ডার ব্যাংক, অটোমেটিক চেন্জএ্যাবল ম্যানিফোল্ড ম্যাসিন, হাইফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা, মনিটর এবং অত্যাধুনিক ইলেক্ট্রনিক পেসেন্ট বেড স্থাপন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ব্যক্তি জানান, শুধু ঠিকাদারের গাফিলতির কারণে আমাদের অক্সিজেন সিলিন্ডার ব্যাংকের কাজ সম্পূর্ণ শেষ হয়নি অথচ আশপাশের সব উপজেলার হাসপাতালে এই কার্যক্রম শেষ হয়েছে। সরকার দিয়েছে করোনা রোগী সেবা করার জন্য অথচ বটিয়াঘাটার মানুষ এখনও সকল সেবা পাচ্ছেনা শুধু ঠিকাদারের গাফিলতির কারণে।

এ বিষয়ে বায়ো মেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং প্রতিষ্ঠানের ঠিকাদারের কাছে জানতে চাইলে বলেন, আমরা ওয়ার্ক অর্ডার একটু দেরিতে পাওয়ার জন্য সঠিক সময়ে কাজটি সম্পূর্ণ শেষ করতে পারেনি, তবে যেটুকু কাজ হয়েছে তা দিয়ে রোগী চিকিৎসার কাজ তো চলছে। তবে অল্প সময়ের মধ্যে কাজটা শেষ হবে বলে, আশা করছ। বটিয়াঘাটা উপজেলায় দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিচালন ও উন্নয়ন প্রকল্প (জাইকা) কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান বলেন, সঠিক সময়ের মধ্যে কাজটা শেষ না হওয়ায় এই উপজেলার করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের সেবা পেতে শহরে ছুটতে হচ্ছে। তাই আশা করছি দ্রুত কাজটা শেষ হোক, উপজেলাবাসী সেবা পাক এবং আমার সংস্থার প্রকল্পের উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন হোক।

সার্বিক বিষয়ে বটিয়াঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা ডা. মিজানুর রহমান বলেন, বর্তমান সময়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স দরকার অক্সিজেন সিলিন্ডার, ইলেক্ট্রনিক পেসেন্ট বেড ও হাইফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা সরবরাহ, যে কারণে সরকার থেকে ঠিকাদারের মাধ্যমে এগুলো হচ্ছে এবং ২০ জুনের মধ্যে আমাদের কাছে হস্তান্তর করার কথা অথচ অন্য উপজেলায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হস্তান্তর করলেও আমরা এখনও পর্যন্ত শতভাগ পাইনি কাজ বুঝে পাইনি। করোনা রোগীদের জন্য ২০টা পেসেন্ট বেড প্রস্তুত করার কথা থাকলেও রেডি পেয়েছি ৮টি। যে কারণে করোনা আক্রান্ত রোগীদের আমরা সঠিকভাবে সেবা দিতে পারছি না।