দু’পক্ষের দ্বন্দ্বে জলাবদ্ধ ৬শ’ বিঘা জমির পাট-পটল-মরিচ বিনষ্ট

নওগাঁর বদলগাছীতে পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হওয়ায় বৃষ্টির পানি জমে প্রায় ৬শ বিঘা জমির পাট, পটল, মরিচ ও ধান ক্ষেত নষ্ট হয়েছে। অসময়ে এই ক্ষতির মুখে পড়ে কৃষকরা হতাশ হয়ে পড়েছে। জলাবদ্ধতার সমস্যাটি সৃষ্টি হয়েছে উপজেলার বিলাশবাড়ী ইউনিয়নের ভগবানপুর মাঠে। পানি নিষ্কাশনের পথ বের করা নিয়ে গ্রামের মধ্যে দুটি গ্রুপের সৃষ্টি হয়েছে। যে কোন সময় সংঘাত সৃষ্টির আশঙ্কায় উদ্বিগ্ন এলাকাবাসী।

জানা যায়, নওগাঁ জেলাটি পলি এলাকা হওয়ায় এই উপজেলাটি সবজি চাষের বিখ্যাত এলাকা হিসাবে পরিচিত। এই উপজেলার ভগবানপুর, কাশিমালা, মহেশপুর এলাকার লোকজন পাট, পটল, বেগুন, মরিচ চাষ করেন প্রচুর। ভগবানপুর মাঠে ৫-৬ শত বিঘা জমির জলাবদ্ধতার কারণে চাষাবাদ ব্যাহত হয়ে পড়েছে। অতি বৃষ্টির কারণে প্রায় ১৫০শ’ বিঘা জমির পাট, পটল ও মরিচ ক্ষেত শুকিয়ে যাচ্ছে। আবার অনেক কৃষক জমির চর্তুদিকে বাঁধ দিয়ে পানি সেচ দিয়ে পটল ক্ষেত রক্ষা করছে। সরেজমিনে তথ্য সংগ্রহকালে দেখা যায়, ওই গ্রামের রশিদুল, ময়েন ও হাকিম জানান, পাট মরে যাচ্ছে তাই তারাও পাট কেটে ফেলেছে পাটের ফলন খুব ভালো হবেনা। তাই আর্থিকভাবে তারা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ফরহাদ জানায়, জলাবদ্ধতার কারণে তার ১ বিঘা ৫ কাঠা জমির পটল ক্ষেত নষ্ট হয়েছে। এরমধ্যে সেচ দিয়ে ৮ কাঠা মাটির পটল রক্ষা করেছে। অধিকাংশ জমির পটল ও মরিচের গাছ শুকিয়ে উঠেছে। জলাবদ্ধতার স্থানটি উপজেলা চেয়ারম্যান সামসুল আলম খান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আলপনা ইয়াসমিন পরিদর্শন করেছে বলে স্থানীয় লোকজন জানায়। স্থানীয়ভাবে পানি নিষ্কাশনের পথ বের করা নিয়ে গ্রামে দুটি গ্রুপের সৃষ্টি হয়েছে। আর এ কারণে গ্রামে মসজিদ পর্যন্ত আলাদা হয়ে গেছে। গ্রামবাসী জানায়, গত পহেলা জুলাই কলিপাড়ার দিকে রাস্তা কেটে পাইপ দিয়ে সাময়িকভাবে পানি নিষ্কাশনের পথ বের করলে মাঠের পূর্ব দিকে পাট ও পটল ক্ষেত হুমকির মুখে পড়ে। এ নিয়ে অল্পের জন্য সংঘর্ষ থেকে রক্ষা পায় গ্রামবাসী। ভগবানপুর গ্রামের আমজাদ মাস্টারসহ অর্ধশতাধিক গ্রামবাসী জানায়, মাঠের পানি কলিপাড়ার ভেতরের ১টি পুকুরের ওপর দিয়ে নেমে যেত। ১৫ বছর পূর্বে সাবেক মেম্বার এবাদুল হক পুকুরের মুখ বন্ধ করে দিলে মাঠে এই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। জলাবদ্ধতার সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে ভগবানপুর গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আহসানুল কবির ও মাসুদ হোসাইন শাহীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর সম্প্রতি একটি লিখিত অভিযোগ করলে সেটে তদন্তের জন্য দায়িত্ব দেন উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তাকে। দায়িত্ব পেয়ে যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা ইবনে সাব্বির আহম্মেদ গত রোববার সকালে জলাবদ্ধতার স্থানটি পরিদর্শন করেন। এ বিষয়ে যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা জানান, পানি নিষ্কাশনের জন্য একটি পাকা ড্রেন প্রয়োজন এবং ড্রেনের মাঝে মাঝে দু একটি কালভার্ট লাগবে তাহলে এই এলাকার কৃষকরা আর ক্ষতিগ্রস্ত হবে না।

মঙ্গলবার, ১৩ জুলাই ২০২১ , ২৯ আষাঢ় ১৪২৮ ২ জিলহজ্জ ১৪৪২

দু’পক্ষের দ্বন্দ্বে জলাবদ্ধ ৬শ’ বিঘা জমির পাট-পটল-মরিচ বিনষ্ট

প্রতিনিধি, বদলগাছী (নওগাঁ)

image

বদলগাছী (নওগাঁ) : জল নিকাশি বন্ধে জলাবদ্ধ পাটক্ষেত পচন আতঙ্কে পাট কেটে ফেলছেন কৃষক -সংবাদ

নওগাঁর বদলগাছীতে পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হওয়ায় বৃষ্টির পানি জমে প্রায় ৬শ বিঘা জমির পাট, পটল, মরিচ ও ধান ক্ষেত নষ্ট হয়েছে। অসময়ে এই ক্ষতির মুখে পড়ে কৃষকরা হতাশ হয়ে পড়েছে। জলাবদ্ধতার সমস্যাটি সৃষ্টি হয়েছে উপজেলার বিলাশবাড়ী ইউনিয়নের ভগবানপুর মাঠে। পানি নিষ্কাশনের পথ বের করা নিয়ে গ্রামের মধ্যে দুটি গ্রুপের সৃষ্টি হয়েছে। যে কোন সময় সংঘাত সৃষ্টির আশঙ্কায় উদ্বিগ্ন এলাকাবাসী।

জানা যায়, নওগাঁ জেলাটি পলি এলাকা হওয়ায় এই উপজেলাটি সবজি চাষের বিখ্যাত এলাকা হিসাবে পরিচিত। এই উপজেলার ভগবানপুর, কাশিমালা, মহেশপুর এলাকার লোকজন পাট, পটল, বেগুন, মরিচ চাষ করেন প্রচুর। ভগবানপুর মাঠে ৫-৬ শত বিঘা জমির জলাবদ্ধতার কারণে চাষাবাদ ব্যাহত হয়ে পড়েছে। অতি বৃষ্টির কারণে প্রায় ১৫০শ’ বিঘা জমির পাট, পটল ও মরিচ ক্ষেত শুকিয়ে যাচ্ছে। আবার অনেক কৃষক জমির চর্তুদিকে বাঁধ দিয়ে পানি সেচ দিয়ে পটল ক্ষেত রক্ষা করছে। সরেজমিনে তথ্য সংগ্রহকালে দেখা যায়, ওই গ্রামের রশিদুল, ময়েন ও হাকিম জানান, পাট মরে যাচ্ছে তাই তারাও পাট কেটে ফেলেছে পাটের ফলন খুব ভালো হবেনা। তাই আর্থিকভাবে তারা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ফরহাদ জানায়, জলাবদ্ধতার কারণে তার ১ বিঘা ৫ কাঠা জমির পটল ক্ষেত নষ্ট হয়েছে। এরমধ্যে সেচ দিয়ে ৮ কাঠা মাটির পটল রক্ষা করেছে। অধিকাংশ জমির পটল ও মরিচের গাছ শুকিয়ে উঠেছে। জলাবদ্ধতার স্থানটি উপজেলা চেয়ারম্যান সামসুল আলম খান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আলপনা ইয়াসমিন পরিদর্শন করেছে বলে স্থানীয় লোকজন জানায়। স্থানীয়ভাবে পানি নিষ্কাশনের পথ বের করা নিয়ে গ্রামে দুটি গ্রুপের সৃষ্টি হয়েছে। আর এ কারণে গ্রামে মসজিদ পর্যন্ত আলাদা হয়ে গেছে। গ্রামবাসী জানায়, গত পহেলা জুলাই কলিপাড়ার দিকে রাস্তা কেটে পাইপ দিয়ে সাময়িকভাবে পানি নিষ্কাশনের পথ বের করলে মাঠের পূর্ব দিকে পাট ও পটল ক্ষেত হুমকির মুখে পড়ে। এ নিয়ে অল্পের জন্য সংঘর্ষ থেকে রক্ষা পায় গ্রামবাসী। ভগবানপুর গ্রামের আমজাদ মাস্টারসহ অর্ধশতাধিক গ্রামবাসী জানায়, মাঠের পানি কলিপাড়ার ভেতরের ১টি পুকুরের ওপর দিয়ে নেমে যেত। ১৫ বছর পূর্বে সাবেক মেম্বার এবাদুল হক পুকুরের মুখ বন্ধ করে দিলে মাঠে এই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। জলাবদ্ধতার সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে ভগবানপুর গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আহসানুল কবির ও মাসুদ হোসাইন শাহীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর সম্প্রতি একটি লিখিত অভিযোগ করলে সেটে তদন্তের জন্য দায়িত্ব দেন উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তাকে। দায়িত্ব পেয়ে যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা ইবনে সাব্বির আহম্মেদ গত রোববার সকালে জলাবদ্ধতার স্থানটি পরিদর্শন করেন। এ বিষয়ে যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা জানান, পানি নিষ্কাশনের জন্য একটি পাকা ড্রেন প্রয়োজন এবং ড্রেনের মাঝে মাঝে দু একটি কালভার্ট লাগবে তাহলে এই এলাকার কৃষকরা আর ক্ষতিগ্রস্ত হবে না।