সুদ মওকুফ ও প্রণোদনা চান বাস মালিকরা

দূরপাল্লার বাস বন্ধ প্রায় চার মাস

করোনা সংক্রমণ রোধে সরকারের দফায় দফায় লকডাউনে কয়েক মাস ধরে দূরপাল্লাসহ প্রায় সব ধরনের বাস বন্ধ রয়েছে। এতে আগের নেয়া ব্যাংক ঋণের সুদ পরিশোধ করতে হিমসিম খাচ্ছেন তারা। এই অবস্থায় ব্যাংক ঋণ নয়, সুদ মওকুফ ও প্রণোদনা চেয়েছেন বাস মালিকরা।

তারা বলছেন, অস্বতিত্ব টিকিয়ে রাখতে আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যাংক ঋণের সুদ মওকুফ ও পাঁচ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ যেন দেয়া হয় তাদের।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ বলেন, ‘দেশে বাস ট্রাক মিলে প্রায় চার লাখের মতো গাড়ি রয়েছে। আর মালিক রয়েছেন প্রায় দুই লাখের মতো। লকডাউনের প্রায় পুরো সময়ে পরিবহন ব্যবস্থা বন্ধ থাকায় এই বিপুল সংখ্যক মানুষ চরম আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। একদিকে আয় নেই, দিতে হচ্ছে ব্যাংক ঋণের কিস্তি, শ্রমিকদের চাহিদা পূরণ, এসব মিলে পরিবহন মালিকরা এখন দিশেহারা।’

তার দাবি, তাদের চেয়েও ‘অসহায়’ হয়ে যাওয়া শ্রমিকদের দিকটাও ভাবতে হচ্ছে মালিকদের। কারণ তাদের জীবন জীবিকা যুক্ত পরিবহনের সঙ্গে। তারা আর্থিক অভাবে পড়লে যাচ্ছেন মালিকদের কাছেই। এক্ষেত্রেও যে যেভাবে পারছেন শ্রমিকদের সহায়তা করছেন বলে তিনি উল্লেখ করেন।

এমন পরিস্থিতি বিবেচনায় তিনি পরিবহন মালিকদের জন্য সরকারকে ৫ হাজার কোটি টাকার একটি প্য্যাকেজ ঘোষণার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসলে, নতুন আয় শুরু হলে সরকারের সেই অর্থ আবার ফেরত দিতে পারবেন তারা। আমরা এখন সবচেয়ে সমস্যায় পড়েছি ব্যাংক ঋণের সুদ ও আসল পরিশোধে। আয় না থাকায় দায় শোধ করতে পারছি না। তাই আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত অন্তত এসব ব্যাংক ঋণের সুদ মওকুফ করা হোক।’

বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত পরিবহন খাতে মোট ঋণ দেয়া হয়েছে ৪ হাজার ৬৬ কোটি টাকা। অন্যদিকে কোভিডে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য সরকার ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় পরিবহন খাতের জন্য আলাদা কোন বরাদ্দ নেই।

তবে গত মে মাসে মহামারীতে ক্ষতিগ্রস্ত বাস মালিকদের স্বল্প সুদে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ দিতে ১০০ কোটি টাকার একটি পুনঃঅর্থায়ন তহবিল (রিফাইন্যান্স স্কিম) গঠনের নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ।

বৃহস্পতিবার, ১৫ জুলাই ২০২১ , ৩১ আষাঢ় ১৪২৮ ৪ জিলহজ ১৪৪২

সুদ মওকুফ ও প্রণোদনা চান বাস মালিকরা

দূরপাল্লার বাস বন্ধ প্রায় চার মাস

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

image

করোনা সংক্রমণ রোধে সরকারের দফায় দফায় লকডাউনে কয়েক মাস ধরে দূরপাল্লাসহ প্রায় সব ধরনের বাস বন্ধ রয়েছে। এতে আগের নেয়া ব্যাংক ঋণের সুদ পরিশোধ করতে হিমসিম খাচ্ছেন তারা। এই অবস্থায় ব্যাংক ঋণ নয়, সুদ মওকুফ ও প্রণোদনা চেয়েছেন বাস মালিকরা।

তারা বলছেন, অস্বতিত্ব টিকিয়ে রাখতে আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যাংক ঋণের সুদ মওকুফ ও পাঁচ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ যেন দেয়া হয় তাদের।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ বলেন, ‘দেশে বাস ট্রাক মিলে প্রায় চার লাখের মতো গাড়ি রয়েছে। আর মালিক রয়েছেন প্রায় দুই লাখের মতো। লকডাউনের প্রায় পুরো সময়ে পরিবহন ব্যবস্থা বন্ধ থাকায় এই বিপুল সংখ্যক মানুষ চরম আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। একদিকে আয় নেই, দিতে হচ্ছে ব্যাংক ঋণের কিস্তি, শ্রমিকদের চাহিদা পূরণ, এসব মিলে পরিবহন মালিকরা এখন দিশেহারা।’

তার দাবি, তাদের চেয়েও ‘অসহায়’ হয়ে যাওয়া শ্রমিকদের দিকটাও ভাবতে হচ্ছে মালিকদের। কারণ তাদের জীবন জীবিকা যুক্ত পরিবহনের সঙ্গে। তারা আর্থিক অভাবে পড়লে যাচ্ছেন মালিকদের কাছেই। এক্ষেত্রেও যে যেভাবে পারছেন শ্রমিকদের সহায়তা করছেন বলে তিনি উল্লেখ করেন।

এমন পরিস্থিতি বিবেচনায় তিনি পরিবহন মালিকদের জন্য সরকারকে ৫ হাজার কোটি টাকার একটি প্য্যাকেজ ঘোষণার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসলে, নতুন আয় শুরু হলে সরকারের সেই অর্থ আবার ফেরত দিতে পারবেন তারা। আমরা এখন সবচেয়ে সমস্যায় পড়েছি ব্যাংক ঋণের সুদ ও আসল পরিশোধে। আয় না থাকায় দায় শোধ করতে পারছি না। তাই আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত অন্তত এসব ব্যাংক ঋণের সুদ মওকুফ করা হোক।’

বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত পরিবহন খাতে মোট ঋণ দেয়া হয়েছে ৪ হাজার ৬৬ কোটি টাকা। অন্যদিকে কোভিডে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য সরকার ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় পরিবহন খাতের জন্য আলাদা কোন বরাদ্দ নেই।

তবে গত মে মাসে মহামারীতে ক্ষতিগ্রস্ত বাস মালিকদের স্বল্প সুদে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ দিতে ১০০ কোটি টাকার একটি পুনঃঅর্থায়ন তহবিল (রিফাইন্যান্স স্কিম) গঠনের নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ।