১৩ বছরে সর্বোচ্চ অবস্থানে যুক্তরাষ্ট্রের মূল্যস্ফীতি

করোনা মহামারী থেকে পুনরুদ্ধারের সঙ্গে সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে বিভিন্ন পণ্যের দাম বাড়ছিল। বর্তমানে এটি ১৩ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। সরবরাহ ঘাটতির কারণে পণ্য ও পরিষেবার দামে এমন উল্লম্ফন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। মার্কিন শ্রম বিভাগের প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। এপি।

প্রতিবেদনে দেখা যায়, চলতি বছরের মে মাসের তুলনায় জুনে ভোক্তামূল্য বেড়েছে দশমিক ৯ শতাংশ। আর গত বছরের তুলনায় জুনে ভোক্তামূল্য বেড়েছে ৫ দশমিক ৪ শতাংশ। গত মাসের এ মূল্যস্ফীতি ২০০৮ সালের পর সর্বোচ্চ।

বিশেষ করে তেল ও গ্যাসের বাজারে অস্থিরতার ফলে গত বছর মূল্যস্ফীতি ৪ দশমিক ৫ শতাংশ বেড়েছিল। এটি ১৯৯১ সালের পর সবচেয়ে বড় বৃদ্ধির ঘটনা।

করোনাভাইরাস মহামারীর পর মার্কিন অর্থনীতির দ্রুত পুনরুদ্ধারের সঙ্গে সঙ্গে মূল্যস্ফীতির এমন উচ্চহার ফেডারেল রিজার্ভে বিতর্ক উসকে দিচ্ছে। পাশাপাশি এ মূল্য বৃদ্ধি কতদিন চলমান থাকবে এ নিয়ে বাইডেন প্রশাসন ও কংগ্রেশনাল রিপাবলিকদের মধ্যেও বিতর্কের সুযোগ তৈরি করছে।

মূল্যস্ফীতির এমন পরিস্থিতি নিয়ে হোয়াইট হাউজ ও ফেডারেল রিজার্ভ উভয়ই একই মতামত দিয়েছে। তারা বলছে, এ পরিস্থিতি সাময়িক সময়ের জন্য। আশা করা যায়, এটি দীর্ঘায়িত হবে না। সরবরাহ চেইনে থাকা প্রতিবন্ধকতাগুলো দূর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পরিস্থিতি আবারও স্বাভাবিক হয়ে উঠবে। তবে ব্যবহৃত গাড়ি, হোটেল কক্ষ ও পোশাকের মূল্য বৃদ্ধির ব্যাপারে অর্থনীতিবিদ ও ওয়াল স্ট্রিটের বিনিয়োগকারীরা একমত পোষণ করেছেন।

পিএনসি ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসের অর্থনীতিবিদ গুশ ফাউচার জানান, মূল্যস্ফীতির এমন উচ্চহার সাম্প্রতিক কয়েক মাসে চোখে পড়ার মতো। তবে উল্লেখ করার মতো ব্যাপার হলো, মূল্যস্ফীতি এখনও নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তবে ব্যবহারযোগ্য গাড়ি, বিমান ভাড়া, কার ভাড়া, হোটেল কক্ষের মূল্য অত্যধিক বেড়েছে। মূলত নভেল করোনাভাইরাস-পরবর্তী সময়ে সবকিছু চালু হওয়ায় এসবের মূল্য বেড়েছে।

বর্তমানে মূল্যবৃদ্ধির এ ঘটনা শ্রমিকদের মজুরি বাড়ার আগেই ঘটে চলেছে। ফলে কয়েক লাখ পরিবারের ওপর অর্থনৈতিক বোঝা আগের তুলনায় আরও কঠিন হয়েছে। এক বছর আগের তুলনায় চলতি বছরের জুনে শ্রমিকদের ঘণ্টাপ্রতি গড় আয় বেড়েছে ৩ দশমিক ৬ শতাংশ। যদিও এটি যথেষ্ট ভালো বৃদ্ধি, তবে বর্তমান মূল্যস্ফীতির তুলনায় এটি খুবই সামান্য।

খাদ্যপণ্যের দাম বাড়ায় সবচেয়ে বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের শ্রমিকরা। জুনে খাদ্যপণ্যের দাম বেড়েছে দশমিক ৮ শতাংশ। গত মাসে গ্যাসের দাম বেড়েছে ২ দশমিক ৫ শতাংশ, যা এক বছর আগের তুলনায় ৪৫ শতাংশ বেশি।

ব্যাংকরেটের প্রধান অর্থনৈতিক বিশ্লেষক জর্জ ম্যাকব্রাইড জানান, পূর্ববর্তী সময়ের তুলনায় পণ্যমূল্য মহামারী সময়ের পর আরও বেশি হারে বাড়তে শুরু করেছে। ২০১৯ সালের জুনের তুলনায় চলতি বছরের জুনে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে ৩ শতাংশ। ২০১৯ ও ২০২১ সালের মে মাসের হিসাব অনুযায়ী বার্ষিক মূল্যস্ফীতির হার ছিল ২ দশমিক ৬ শতাংশ।

শনিবার, ১৭ জুলাই ২০২১ , ২ শ্রাবন ১৪২৮ ৬ জিলহজ ১৪৪২

১৩ বছরে সর্বোচ্চ অবস্থানে যুক্তরাষ্ট্রের মূল্যস্ফীতি

সংবাদ ডেস্ক

image

করোনা মহামারী থেকে পুনরুদ্ধারের সঙ্গে সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে বিভিন্ন পণ্যের দাম বাড়ছিল। বর্তমানে এটি ১৩ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। সরবরাহ ঘাটতির কারণে পণ্য ও পরিষেবার দামে এমন উল্লম্ফন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। মার্কিন শ্রম বিভাগের প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। এপি।

প্রতিবেদনে দেখা যায়, চলতি বছরের মে মাসের তুলনায় জুনে ভোক্তামূল্য বেড়েছে দশমিক ৯ শতাংশ। আর গত বছরের তুলনায় জুনে ভোক্তামূল্য বেড়েছে ৫ দশমিক ৪ শতাংশ। গত মাসের এ মূল্যস্ফীতি ২০০৮ সালের পর সর্বোচ্চ।

বিশেষ করে তেল ও গ্যাসের বাজারে অস্থিরতার ফলে গত বছর মূল্যস্ফীতি ৪ দশমিক ৫ শতাংশ বেড়েছিল। এটি ১৯৯১ সালের পর সবচেয়ে বড় বৃদ্ধির ঘটনা।

করোনাভাইরাস মহামারীর পর মার্কিন অর্থনীতির দ্রুত পুনরুদ্ধারের সঙ্গে সঙ্গে মূল্যস্ফীতির এমন উচ্চহার ফেডারেল রিজার্ভে বিতর্ক উসকে দিচ্ছে। পাশাপাশি এ মূল্য বৃদ্ধি কতদিন চলমান থাকবে এ নিয়ে বাইডেন প্রশাসন ও কংগ্রেশনাল রিপাবলিকদের মধ্যেও বিতর্কের সুযোগ তৈরি করছে।

মূল্যস্ফীতির এমন পরিস্থিতি নিয়ে হোয়াইট হাউজ ও ফেডারেল রিজার্ভ উভয়ই একই মতামত দিয়েছে। তারা বলছে, এ পরিস্থিতি সাময়িক সময়ের জন্য। আশা করা যায়, এটি দীর্ঘায়িত হবে না। সরবরাহ চেইনে থাকা প্রতিবন্ধকতাগুলো দূর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পরিস্থিতি আবারও স্বাভাবিক হয়ে উঠবে। তবে ব্যবহৃত গাড়ি, হোটেল কক্ষ ও পোশাকের মূল্য বৃদ্ধির ব্যাপারে অর্থনীতিবিদ ও ওয়াল স্ট্রিটের বিনিয়োগকারীরা একমত পোষণ করেছেন।

পিএনসি ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসের অর্থনীতিবিদ গুশ ফাউচার জানান, মূল্যস্ফীতির এমন উচ্চহার সাম্প্রতিক কয়েক মাসে চোখে পড়ার মতো। তবে উল্লেখ করার মতো ব্যাপার হলো, মূল্যস্ফীতি এখনও নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তবে ব্যবহারযোগ্য গাড়ি, বিমান ভাড়া, কার ভাড়া, হোটেল কক্ষের মূল্য অত্যধিক বেড়েছে। মূলত নভেল করোনাভাইরাস-পরবর্তী সময়ে সবকিছু চালু হওয়ায় এসবের মূল্য বেড়েছে।

বর্তমানে মূল্যবৃদ্ধির এ ঘটনা শ্রমিকদের মজুরি বাড়ার আগেই ঘটে চলেছে। ফলে কয়েক লাখ পরিবারের ওপর অর্থনৈতিক বোঝা আগের তুলনায় আরও কঠিন হয়েছে। এক বছর আগের তুলনায় চলতি বছরের জুনে শ্রমিকদের ঘণ্টাপ্রতি গড় আয় বেড়েছে ৩ দশমিক ৬ শতাংশ। যদিও এটি যথেষ্ট ভালো বৃদ্ধি, তবে বর্তমান মূল্যস্ফীতির তুলনায় এটি খুবই সামান্য।

খাদ্যপণ্যের দাম বাড়ায় সবচেয়ে বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের শ্রমিকরা। জুনে খাদ্যপণ্যের দাম বেড়েছে দশমিক ৮ শতাংশ। গত মাসে গ্যাসের দাম বেড়েছে ২ দশমিক ৫ শতাংশ, যা এক বছর আগের তুলনায় ৪৫ শতাংশ বেশি।

ব্যাংকরেটের প্রধান অর্থনৈতিক বিশ্লেষক জর্জ ম্যাকব্রাইড জানান, পূর্ববর্তী সময়ের তুলনায় পণ্যমূল্য মহামারী সময়ের পর আরও বেশি হারে বাড়তে শুরু করেছে। ২০১৯ সালের জুনের তুলনায় চলতি বছরের জুনে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে ৩ শতাংশ। ২০১৯ ও ২০২১ সালের মে মাসের হিসাব অনুযায়ী বার্ষিক মূল্যস্ফীতির হার ছিল ২ দশমিক ৬ শতাংশ।