করোনা আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা না নিয়ে মাগুরায় বাড়িতেই মারা যাচ্ছেন অনেক করোনা রোগী। করোনার উপসর্গ দেখা দিলেও হাসপাতালে না গিয়ে বাড়িতে বসে নিজে বা গ্রাম্য ডাক্তারের কাছে চিকিৎসা নিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় জেলায় তিন জনের মৃত্যুর তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন সিভিল সার্জন ডা. শহিদুল্লাহ দেওয়ান।
সিভিল সার্জন অফিস থেকে জানা গেছে, দেশের মধ্যে খুলনা বিভাগে করোনা পরিস্থিতি খারাপ হলেও দশ জেলার মধ্যে মাগুরায় শনাক্ত ও মৃত্যুর হার অপেক্ষাকৃত কম ছিল। সম্প্রতি মাগুরার পরিস্থিতি খারাপ হতে শুরু করেছে। গত সপ্তাহে জেলায় মোট ৭ জন করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। এদের ৪ জন মাগুরা ২৫০ শয্যার সদর হাসপাতাল ও বাকি তিনজনের বাড়িতে মৃত্যু হয়েছে। বাড়িতে মারা যাওয়া ব্যক্তিরা হলেন মহম্মদপুর উপজেলার সদর ইউনিয়নের ধোয়াইল গ্রামের, গোলাম রব্বানী, বিনোদপুরের খালিয়া গ্রামের নূরুল হক মোল্যা ও একই গ্রামের হালিমা বেগম। নমুনা পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত হওয়ার পরও এসব রোগীরা হাসপাতালে না গিয়ে বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। পরিস্থতি জটিল হওয়ার পর তারা বাড়িতেই মারা যান বলে সিভিল সার্জনের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে উল্লেখ করেছেন।
চিকিৎসকেরা বলছেন করোনার উপসর্গ নিয়ে পরীক্ষা না করিয়ে অনেকেই স্বাভাবিক চলাফেরা করছেন। ঘরে বাইরে সবার সঙ্গে উঠাবসা-মেলামেশা করছেন। কেউ কেউ শনাক্তের পর হাসপাতালে না এসে নিজে নিজে মনগড়া ওষুধ খেয়ে বিপদ ডেকে আনছে। অনেকে আবার করোনায় মারা যাওয়ার পরও আক্রান্তের কথা গোগন করছেন। স্বাভাবিক নিয়মে মৃতদেহের জানাজা- গোসল- দাফন সম্পন্ন করায় সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার ঝুকি রয়েছে। মহম্মদপুর উপজেলার বিনোদপুর ইউনিয়নের খালিয়া গ্রামের করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া হালিমা বেগমের (৬০) দুইজন স্বজন নাম প্রকাশ না করে এই প্রতিবেদককে জানান, সর্দি কাশি ও জ্বর নিয়ে বাড়িতেই প্রায় দশদিন ধরে চিকিৎসা নেওয়ার পর গুরুতর অসস্থ হয়ে পড়েন। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পথেই তিনি মারা যান। মহম্মদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মকসেদুল মোমিন জানান, সাধারণ সর্দি কাশি জ্বর ভেবে কিছু মানুষ করোনার উপসর্গ অবহেলা বা হালকাভাবে নিচ্ছেন। করোনা শনাক্তের পর হাসপাতালে এসে চিকিৎসা নিলে রোগ নিরাময় সম্ভব।
মাগুরার সিভিল সার্জন ডা. শহিদুল্লাহ দেওয়ান বলেন, ভয় ও গুজবের জন্য করোনা আক্রান্ত ব্যক্তি হাসপাতালে না এসে নিজের বিপদ নিজেই ডেকে আনছেন। করোনা মানেই মৃত্যু নয়। রোগীর নানা অবস্থা বিবেচনা করে হাসপাতালেই সঠিক চিকিৎসা সম্ভব। আমরা এ বিষযে মানুষকে সচেতন করছি।
উল্লেখ্য, মাগুরায় এ পর্যন্ত ১১ হাজার ৪ নমুনা পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত হয়েছেন ২ হাজার ২০৮ জন। মোট সুস্থ ১ হাজার ৪২৯ জন। মোট মৃত্যু হয়েছে ৪৪ জনের।
শনিবার, ১৭ জুলাই ২০২১ , ২ শ্রাবন ১৪২৮ ৬ জিলহজ ১৪৪২
রূপক আইচ, মাগুরা
করোনা আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা না নিয়ে মাগুরায় বাড়িতেই মারা যাচ্ছেন অনেক করোনা রোগী। করোনার উপসর্গ দেখা দিলেও হাসপাতালে না গিয়ে বাড়িতে বসে নিজে বা গ্রাম্য ডাক্তারের কাছে চিকিৎসা নিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় জেলায় তিন জনের মৃত্যুর তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন সিভিল সার্জন ডা. শহিদুল্লাহ দেওয়ান।
সিভিল সার্জন অফিস থেকে জানা গেছে, দেশের মধ্যে খুলনা বিভাগে করোনা পরিস্থিতি খারাপ হলেও দশ জেলার মধ্যে মাগুরায় শনাক্ত ও মৃত্যুর হার অপেক্ষাকৃত কম ছিল। সম্প্রতি মাগুরার পরিস্থিতি খারাপ হতে শুরু করেছে। গত সপ্তাহে জেলায় মোট ৭ জন করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। এদের ৪ জন মাগুরা ২৫০ শয্যার সদর হাসপাতাল ও বাকি তিনজনের বাড়িতে মৃত্যু হয়েছে। বাড়িতে মারা যাওয়া ব্যক্তিরা হলেন মহম্মদপুর উপজেলার সদর ইউনিয়নের ধোয়াইল গ্রামের, গোলাম রব্বানী, বিনোদপুরের খালিয়া গ্রামের নূরুল হক মোল্যা ও একই গ্রামের হালিমা বেগম। নমুনা পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত হওয়ার পরও এসব রোগীরা হাসপাতালে না গিয়ে বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। পরিস্থতি জটিল হওয়ার পর তারা বাড়িতেই মারা যান বলে সিভিল সার্জনের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে উল্লেখ করেছেন।
চিকিৎসকেরা বলছেন করোনার উপসর্গ নিয়ে পরীক্ষা না করিয়ে অনেকেই স্বাভাবিক চলাফেরা করছেন। ঘরে বাইরে সবার সঙ্গে উঠাবসা-মেলামেশা করছেন। কেউ কেউ শনাক্তের পর হাসপাতালে না এসে নিজে নিজে মনগড়া ওষুধ খেয়ে বিপদ ডেকে আনছে। অনেকে আবার করোনায় মারা যাওয়ার পরও আক্রান্তের কথা গোগন করছেন। স্বাভাবিক নিয়মে মৃতদেহের জানাজা- গোসল- দাফন সম্পন্ন করায় সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার ঝুকি রয়েছে। মহম্মদপুর উপজেলার বিনোদপুর ইউনিয়নের খালিয়া গ্রামের করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া হালিমা বেগমের (৬০) দুইজন স্বজন নাম প্রকাশ না করে এই প্রতিবেদককে জানান, সর্দি কাশি ও জ্বর নিয়ে বাড়িতেই প্রায় দশদিন ধরে চিকিৎসা নেওয়ার পর গুরুতর অসস্থ হয়ে পড়েন। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পথেই তিনি মারা যান। মহম্মদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মকসেদুল মোমিন জানান, সাধারণ সর্দি কাশি জ্বর ভেবে কিছু মানুষ করোনার উপসর্গ অবহেলা বা হালকাভাবে নিচ্ছেন। করোনা শনাক্তের পর হাসপাতালে এসে চিকিৎসা নিলে রোগ নিরাময় সম্ভব।
মাগুরার সিভিল সার্জন ডা. শহিদুল্লাহ দেওয়ান বলেন, ভয় ও গুজবের জন্য করোনা আক্রান্ত ব্যক্তি হাসপাতালে না এসে নিজের বিপদ নিজেই ডেকে আনছেন। করোনা মানেই মৃত্যু নয়। রোগীর নানা অবস্থা বিবেচনা করে হাসপাতালেই সঠিক চিকিৎসা সম্ভব। আমরা এ বিষযে মানুষকে সচেতন করছি।
উল্লেখ্য, মাগুরায় এ পর্যন্ত ১১ হাজার ৪ নমুনা পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত হয়েছেন ২ হাজার ২০৮ জন। মোট সুস্থ ১ হাজার ৪২৯ জন। মোট মৃত্যু হয়েছে ৪৪ জনের।