প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরে নিবাসীদের মাঝে খাবার পরিবেশন ডিসির

কুমিল্লায় প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরের নিবাসীদের মাঝে খাসি, পায়েস ও পোলাও পরিবেশন করেছেন জেলা প্রশাসক (ডিসি)। ঈদের দিন তিনি জেলার আদর্শ সদর উপজেলার গাবতলী এলাকায় আশ্রয়ণ প্রকল্পে ঘুরে তাদের খোঁজ-খবর নেন এবং নিজ হাতে তাদের প্লেটে খাবার পরিবেশন করে ঈদের খুশি ভাগাভাগি করেন। ডিসিকে কাছে পেয়ে বয়োবৃদ্ধসহ নানা বয়সের নিবাসীরা আনন্দে মেতে উঠেন এবং অন্যরকম এক ঈদ আনন্দে অনেকের চোখের কোণ বেয়ে পানি পড়ছিল।

সেখানে গিয়ে কথা হয় ষাট বছর বয়সী আবদুল খালেকের সঙ্গে। তিনি বলেন, গরিব মানুষ হিসেবে কত জাগায় কষ্টে রাইত কাটাইছি হিসাব নাই। আমার বউ মারা গেছে, সে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া এতো সুন্দর ঘর দেইখ্যা যাইতে পারে নাই। ঘর পাইলেও ঈদের দিন কি করবো চিন্তায় আছিলাম। যারা কোরবানি দিছে তাদের বাড়ি ঘুরে গোস্ত আনবো ভাবছিলাম। কিন্তু স্যারেরা খাসির গোস্ত, পায়েস ও পোলাও খাবার নিয়া হাজির হন।

এই প্রথমবারের মতো সবাইকে নিয়া প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ঘরে ঈদ করছি। এর চেয়ে আনন্দ আর কি হইতে পারে। ফারুক (৪০) নামে আরেকজন বলেন, ভিক্ষা কইরা সংসার চালাইতাম। গোমতী নদীর পাড়ে বানাশুয়া এলাকায় মাসে ৫শ টাকা ভাড়া দিয়া বৌ-পোলাপাইন নিয়া থাকতাম। এখন থাকার একটা ঘর পাইছি, ঈদের খাবার পাইছি, এতে অনেক খুশি।

ঘর পাওয়া ৭০ বছরের বৃদ্ধা রমুজা বলেন, ৩৫ বছর আগে আমার স্বামী মারা গেছে। ঘর-দুয়ার ছিল না। অহন ঘর পাইছি, ঈদের দিনে খাবারও পাইছি। ৭০ বছরের বৃদ্ধ ফজর আলী বলেন, কৃষি শ্রমিকের কাজ করি। নিজের ঘর ছিল না, একটা খুপড়ি ঘর ভাড়া নিয়া জীবন কাটাইছি। এবার প্রধানমন্ত্রী ঘর দিছে, এখানে ঈদ করছি।

স্যারেরা ঈদের দিন ভালা খাওন দিছে, আমরা খুব খুশি। এবার ঈদের দিন এভাবেই জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান জেলার আদর্শ সদর উপজেলার আমড়াতলী ইউনিয়নের গাবতলী গ্রামের আশ্রয়ণ প্রকল্পে ছুটে গিয়ে সেখানকার ১৯টি পরিবারকে নিয়ে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করেন। তিনি সেখানে রান্না করা খাসি, পায়েস ও পোলাও নিজ হাতে পরম মমতায় তাদের প্লেটে পরিবেশন করেন। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে ছিলেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. সায়েদুল আরেফিন, আদর্শ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকিয়া আফরিন, সহকারী কমিশনার-ভূমি একেএম ফয়সালসহ প্রশাসনের পদস্থ কর্মকর্তারা। এ সময় সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের নিবাসীরা জেলা প্রশাসককে কাছে পেয়ে সবাই ঈদ আনন্দে মেতে উঠেন, এতে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করে।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান বলেন, জেলায় ঘর পাওয়া ৫০৯টি পরিবারের মাঝে স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার প্রদানসহ তাদের খাবার সরবরাহের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আদর্শ সদর ও ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার কয়েকটি আশ্রয়ণ প্রকল্প ঘুরে দেখেছি, নিবাসীদের সঙ্গে এবার ঈদের আনন্দ উপভোগ করেছি। এমন আনন্দ জীবনে আর কখনও অনুভব করিনি।

শনিবার, ২৪ জুলাই ২০২১ , ৮ শ্রাবন ১৪২৮ ১২ জিলহজ ১৪৪২

প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরে নিবাসীদের মাঝে খাবার পরিবেশন ডিসির

image

কুমিল্লায় প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরের নিবাসীদের মাঝে খাসি, পায়েস ও পোলাও পরিবেশন করেছেন জেলা প্রশাসক (ডিসি)। ঈদের দিন তিনি জেলার আদর্শ সদর উপজেলার গাবতলী এলাকায় আশ্রয়ণ প্রকল্পে ঘুরে তাদের খোঁজ-খবর নেন এবং নিজ হাতে তাদের প্লেটে খাবার পরিবেশন করে ঈদের খুশি ভাগাভাগি করেন। ডিসিকে কাছে পেয়ে বয়োবৃদ্ধসহ নানা বয়সের নিবাসীরা আনন্দে মেতে উঠেন এবং অন্যরকম এক ঈদ আনন্দে অনেকের চোখের কোণ বেয়ে পানি পড়ছিল।

সেখানে গিয়ে কথা হয় ষাট বছর বয়সী আবদুল খালেকের সঙ্গে। তিনি বলেন, গরিব মানুষ হিসেবে কত জাগায় কষ্টে রাইত কাটাইছি হিসাব নাই। আমার বউ মারা গেছে, সে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া এতো সুন্দর ঘর দেইখ্যা যাইতে পারে নাই। ঘর পাইলেও ঈদের দিন কি করবো চিন্তায় আছিলাম। যারা কোরবানি দিছে তাদের বাড়ি ঘুরে গোস্ত আনবো ভাবছিলাম। কিন্তু স্যারেরা খাসির গোস্ত, পায়েস ও পোলাও খাবার নিয়া হাজির হন।

এই প্রথমবারের মতো সবাইকে নিয়া প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ঘরে ঈদ করছি। এর চেয়ে আনন্দ আর কি হইতে পারে। ফারুক (৪০) নামে আরেকজন বলেন, ভিক্ষা কইরা সংসার চালাইতাম। গোমতী নদীর পাড়ে বানাশুয়া এলাকায় মাসে ৫শ টাকা ভাড়া দিয়া বৌ-পোলাপাইন নিয়া থাকতাম। এখন থাকার একটা ঘর পাইছি, ঈদের খাবার পাইছি, এতে অনেক খুশি।

ঘর পাওয়া ৭০ বছরের বৃদ্ধা রমুজা বলেন, ৩৫ বছর আগে আমার স্বামী মারা গেছে। ঘর-দুয়ার ছিল না। অহন ঘর পাইছি, ঈদের দিনে খাবারও পাইছি। ৭০ বছরের বৃদ্ধ ফজর আলী বলেন, কৃষি শ্রমিকের কাজ করি। নিজের ঘর ছিল না, একটা খুপড়ি ঘর ভাড়া নিয়া জীবন কাটাইছি। এবার প্রধানমন্ত্রী ঘর দিছে, এখানে ঈদ করছি।

স্যারেরা ঈদের দিন ভালা খাওন দিছে, আমরা খুব খুশি। এবার ঈদের দিন এভাবেই জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান জেলার আদর্শ সদর উপজেলার আমড়াতলী ইউনিয়নের গাবতলী গ্রামের আশ্রয়ণ প্রকল্পে ছুটে গিয়ে সেখানকার ১৯টি পরিবারকে নিয়ে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করেন। তিনি সেখানে রান্না করা খাসি, পায়েস ও পোলাও নিজ হাতে পরম মমতায় তাদের প্লেটে পরিবেশন করেন। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে ছিলেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. সায়েদুল আরেফিন, আদর্শ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকিয়া আফরিন, সহকারী কমিশনার-ভূমি একেএম ফয়সালসহ প্রশাসনের পদস্থ কর্মকর্তারা। এ সময় সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের নিবাসীরা জেলা প্রশাসককে কাছে পেয়ে সবাই ঈদ আনন্দে মেতে উঠেন, এতে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করে।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান বলেন, জেলায় ঘর পাওয়া ৫০৯টি পরিবারের মাঝে স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার প্রদানসহ তাদের খাবার সরবরাহের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আদর্শ সদর ও ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার কয়েকটি আশ্রয়ণ প্রকল্প ঘুরে দেখেছি, নিবাসীদের সঙ্গে এবার ঈদের আনন্দ উপভোগ করেছি। এমন আনন্দ জীবনে আর কখনও অনুভব করিনি।