৭৬-এ জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়

দু’দিনব্যাপী হীরকজয়ন্তী পূর্তি উৎসব

আজ জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায় ৭৫ পেরিয়ে ৭৬-এ পা রাখছেন। এমনটাই জানালেন জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায় নিজে। তবে জন্মদিনকে ঘিরে তার নিজের কোন বিশেষ আয়োজন নেই। তবে দেশ বরেণ্য এই আবৃত্তি ও অভিনয়শিল্পীর ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে দু’দিনব্যাপী নানা আয়োজন করেছে ‘বাংলাদেশ আবৃত্তিশিল্পী সংসদ ও জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায় হীরকজয়ন্তী উদ্যাপন পরিষদ’, এমনটাই জানালেন বাংলাদেশ আবৃত্তিশিল্পী সংসদ’এর সদস্য সচিব রূপা চক্রবর্ত্তী। এ উপলক্ষে ২৮ ও ২৯ জুলাই দু’দিনের কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে। করোনা মহামারী বিবেচনায় আয়োজনটি অনলাইনে উক্ত দু’দিন বাংলাদেশ আবৃত্তিশিল্পী সংসদের ফেসবুক পেইজ ও ইউটিউব চ্যানেলে সরাসরি সম্প্রচারিত হবে। প্রথম দিন ২৮ জুলাই বিকাল ৫টায় রয়েছে উদ্বোধনী আয়োজন। এসময় জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়কে শুভেচ্ছা জানাবেন দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিশিষ্টজনেরা। এদিন রাত ৮টায় জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়ের লেখা থেকে আবৃত্তি করবেন দেশের বিশিষ্ট আবৃত্তিশিল্পীরা। অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় দিন ২৯ জুলাই বিকেল ৫টায় রয়েছে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের বাংলাভাষী জনপ্রিয় ও নন্দিত আবৃত্তিশিল্পীদের পরিবেশনায় জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়ের কবিতা আবৃত্তি।

জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘আমি আমার বাবা কালিকানন্দ চট্টোপাধ্যায় ও মা স্নেহলতা দেবীর যৌথ ভালোবাসার ফসল। আর মানুষের ভালোবাসাই আমাকে আজ এতোদূর নিয়ে এসেছে। একজন শিল্পী হিসেবে আমি এখনও অতৃপ্ত। অর্থাৎ আমার মাঝে অতৃপ্তি রয়ে গেছে, নেটা আবৃত্তিতেও, অভিনয়েও। আমি আজীবন একজন শিক্ষার্থী। জন্মদিনে সবার কাছে আশীর্বাদ চাই যেন সুস্থ থাকি ভালো থাকি।’

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠকালীন শুরু হয় একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধ। ফলে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে পাঠ স্থগিত রেখে দুইভাই একসঙ্গে সংযুক্ত হন মুক্তিযুদ্ধে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর ১৯৭০-এর দশকে ঢাকা এবং বাংলাদেশের বিভিন্ন শহরে একাধিক একক আবৃত্তির অনুষ্ঠান করে জনপ্রিয়তা পান তিনি। আবৃত্তিকার হিসেবে তিনি শিল্পকলা পদক, গোলাম মুস্তফা পদক, নরেন বিশ্বাস পদকসহ অনেক সম্মাননা অর্জন করেছেন। এরই পাশাপাশি ১৯৭০-এর দশক থেকেই টিভি নাটকে অভিনয় করছেন জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়। গুরু আলমগীর কবিরের সান্নিধ্যে এসে চলচ্চিত্রের প্রেমে পড়েন, অভিনয়ের প্রতি নিমগ্ন সাধনায় ব্রতী হন। আশির দশকের মাঝামাঝি মোরশেদুল ইসলামের স্বল্পদৈর্ঘ্য ছবি সূচনা-তে একটি চরিত্রে অভিনয়ের মধ্যে দিয়ে সিনেমায় তার প্রথম আত্মপ্রকাশ। জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায় ১৯৭৭ সালে বাংলাদেশে প্রথম দর্শনীর বিনিময়ে একক আবৃত্তি অনুষ্ঠান করেন এবং বাংলাদেশে বৃন্দ আবৃত্তির (কয়্যার) সূচনা করেন বলে জানিয়েছেন তিনি। বহুমাত্রিক গুণের অধিকারী এই শিল্পী বেশ কিছুদিন ধরে লেখালেখিও করছেন। দার ৫টি কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে এবং ৪টি বই প্রকাশের অপেক্ষায়। ব্যক্তিগত জীবনে জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায় দুই পুত্র ইন্দ্রনীল চট্টোপাধ্যায় এবং কৃষ্ণেন্দু চট্টোপাধ্যায়ের জনক। তাঁর স্ত্রী আবৃত্তিকার ও সংগীতশিল্পী মৈত্রেয়ী চট্টোপাধ্যায়।

বুধবার, ২৮ জুলাই ২০২১ , ১২ শ্রাবন ১৪২৮ ১৬ জিলহজ ১৪৪২

৭৬-এ জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়

দু’দিনব্যাপী হীরকজয়ন্তী পূর্তি উৎসব

বিনোদন প্রতিবেদক

image

আজ জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায় ৭৫ পেরিয়ে ৭৬-এ পা রাখছেন। এমনটাই জানালেন জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায় নিজে। তবে জন্মদিনকে ঘিরে তার নিজের কোন বিশেষ আয়োজন নেই। তবে দেশ বরেণ্য এই আবৃত্তি ও অভিনয়শিল্পীর ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে দু’দিনব্যাপী নানা আয়োজন করেছে ‘বাংলাদেশ আবৃত্তিশিল্পী সংসদ ও জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায় হীরকজয়ন্তী উদ্যাপন পরিষদ’, এমনটাই জানালেন বাংলাদেশ আবৃত্তিশিল্পী সংসদ’এর সদস্য সচিব রূপা চক্রবর্ত্তী। এ উপলক্ষে ২৮ ও ২৯ জুলাই দু’দিনের কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে। করোনা মহামারী বিবেচনায় আয়োজনটি অনলাইনে উক্ত দু’দিন বাংলাদেশ আবৃত্তিশিল্পী সংসদের ফেসবুক পেইজ ও ইউটিউব চ্যানেলে সরাসরি সম্প্রচারিত হবে। প্রথম দিন ২৮ জুলাই বিকাল ৫টায় রয়েছে উদ্বোধনী আয়োজন। এসময় জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়কে শুভেচ্ছা জানাবেন দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিশিষ্টজনেরা। এদিন রাত ৮টায় জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়ের লেখা থেকে আবৃত্তি করবেন দেশের বিশিষ্ট আবৃত্তিশিল্পীরা। অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় দিন ২৯ জুলাই বিকেল ৫টায় রয়েছে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের বাংলাভাষী জনপ্রিয় ও নন্দিত আবৃত্তিশিল্পীদের পরিবেশনায় জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়ের কবিতা আবৃত্তি।

জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘আমি আমার বাবা কালিকানন্দ চট্টোপাধ্যায় ও মা স্নেহলতা দেবীর যৌথ ভালোবাসার ফসল। আর মানুষের ভালোবাসাই আমাকে আজ এতোদূর নিয়ে এসেছে। একজন শিল্পী হিসেবে আমি এখনও অতৃপ্ত। অর্থাৎ আমার মাঝে অতৃপ্তি রয়ে গেছে, নেটা আবৃত্তিতেও, অভিনয়েও। আমি আজীবন একজন শিক্ষার্থী। জন্মদিনে সবার কাছে আশীর্বাদ চাই যেন সুস্থ থাকি ভালো থাকি।’

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠকালীন শুরু হয় একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধ। ফলে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে পাঠ স্থগিত রেখে দুইভাই একসঙ্গে সংযুক্ত হন মুক্তিযুদ্ধে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর ১৯৭০-এর দশকে ঢাকা এবং বাংলাদেশের বিভিন্ন শহরে একাধিক একক আবৃত্তির অনুষ্ঠান করে জনপ্রিয়তা পান তিনি। আবৃত্তিকার হিসেবে তিনি শিল্পকলা পদক, গোলাম মুস্তফা পদক, নরেন বিশ্বাস পদকসহ অনেক সম্মাননা অর্জন করেছেন। এরই পাশাপাশি ১৯৭০-এর দশক থেকেই টিভি নাটকে অভিনয় করছেন জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়। গুরু আলমগীর কবিরের সান্নিধ্যে এসে চলচ্চিত্রের প্রেমে পড়েন, অভিনয়ের প্রতি নিমগ্ন সাধনায় ব্রতী হন। আশির দশকের মাঝামাঝি মোরশেদুল ইসলামের স্বল্পদৈর্ঘ্য ছবি সূচনা-তে একটি চরিত্রে অভিনয়ের মধ্যে দিয়ে সিনেমায় তার প্রথম আত্মপ্রকাশ। জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায় ১৯৭৭ সালে বাংলাদেশে প্রথম দর্শনীর বিনিময়ে একক আবৃত্তি অনুষ্ঠান করেন এবং বাংলাদেশে বৃন্দ আবৃত্তির (কয়্যার) সূচনা করেন বলে জানিয়েছেন তিনি। বহুমাত্রিক গুণের অধিকারী এই শিল্পী বেশ কিছুদিন ধরে লেখালেখিও করছেন। দার ৫টি কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে এবং ৪টি বই প্রকাশের অপেক্ষায়। ব্যক্তিগত জীবনে জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায় দুই পুত্র ইন্দ্রনীল চট্টোপাধ্যায় এবং কৃষ্ণেন্দু চট্টোপাধ্যায়ের জনক। তাঁর স্ত্রী আবৃত্তিকার ও সংগীতশিল্পী মৈত্রেয়ী চট্টোপাধ্যায়।