‘ঘটনা সত্য’ নাটকের বক্তব্য উদ্ভট ক্ষুব্ধ সারা দেশের মানুষ

চ্যানেল আইয়ে প্রচারিত ‘ঘটনা সত্য’ নামে একটি ঈদের নাটকে স্পেশাল বাচ্চার জন্মের কারন হিসেবে পিতা-মাতার পাপকে দায়ী করে দেখানো হয়েছে। যা খুবই নিন্দনীয়। এরকম উদ্ভট ম্যাসেজ সমাজের মানুষের মনে রক্ত ক্ষরণ হচ্ছে। অপমান করা হয়েছে স্পেশাল বাচ্চাদের বাবা-মাদের। এই নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়াতে চলছে তীব্র সমালোচনা। সিএমভির প্রযোজনায় মঈনুল সানুর চিত্রনাট্যে নাটকটি পরিচালনা করেছেন রুবেল হাসান; নাটকে প্রধান দুই চরিত্রে অভিনয় করেছেন আফরান নিশো ও মেহজাবীন চৌধুরী। চ্যানেল আইয়ের ঈদ আয়োজনে প্রচারের পর নাটকটি সিএমবির ইউটিউবে প্রকাশ করা হয়েছে। প্রতিবন্ধী শিশুর জন্ম নিয়ে এই অবৈজ্ঞানিক বার্তা দেয়ার অভিযোগে বিভিন্ন সংগঠন, অভিভাবক ও দর্শকদের প্রতিবাদের মধ্যে তোপের মুখে রোববার দুঃখপ্রকাশ করে ইউটিউব থেকে নাটকটি সরিয়ে নিয়েছে সিএমভি।

নাটকে বিলকিছ নামে একজন গৃহপরিচারিকার চরিত্রে মেহজাবীন চৌধুরী ও মুকুল নামে একজন গাড়ি চালকের চরিত্রে অভিনয় করেছেন আফরান নিশো। বিয়ের পর তাদের সংসারে একটি বিশেষ শিশুর জন্ম হয়। নাটকের শেষভাগে সেই সন্তানের জন্মের কারণ হিসেবে তাদের অতীত জীবনের পাপকে দায়ী করে বার্তা দেয়া হয়। বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যে ক্ষমা চেয়েছেন আফরান নিশো, মেহজাবীন চৌধুরী, রুবেল হাসান ও সিএমভি।

‘ঘটনা সত্য’ নাটকে বিশেষ শিশুদের নিয়ে ‘আপত্তিকর বার্তা’ ছড়িয়ে ‘দায়িত্বহীনতার পরিচয়’ দিয়েছে বলে উল্লেখ্য করেছে ছোটপর্দার ১৪ সংগঠনের মোর্চা ফেডারেশন অব টেলিভিশন প্রফেশনালস অর্গানাইজেশন (এফটিপিও)। তারা বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্টদের সতর্ক করবে বলে জানিয়েছে।

অপর দিকে, অভিনয়শিল্পী সংঘ এক বিবৃতিতে বলে, ‘সম্প্রতি ঈদের এ নাটকটির শেষ দৃশ্যের ধারা বর্ণনা নিয়ে যে তীব্র সমালোচনা হচ্ছে তা আমরাও সমর্থন করি। বিশেষ শিশুর জন্মের জন্য পিতা-মাতার অনৈতিক কর্মকা- দায়ী- এটা অযৌক্তিক, অবৈজ্ঞানিক ও সামাজিক রীতিবিরুদ্ধ। বিষয়টি নিয়ে আমরা অভিনয়শিল্পীদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলাম। তারা জানিয়েছেন, এ ধরনের সংলাপ নিজেরা উচ্চারণ করেননি। ভয়েস ওভারের মাধ্যমে এটি ব্যবহার করা হয়েছে। যা পা-ুলিপিতে ছিল না’। তবে অভিনয় শিল্পী সংঘ এর এই বিবৃতিতে সন্তুষ্ট নন অনেকেই। সবার প্রশ্ন - প্রতিটা নাটকেরইতো একটা মূল বক্তব্য থাকে; সেই বক্তব্য না জেনেই তারা এই নাটকে অভিনয় করেছেন?

বিষয়টি নিয়ে অভিনয় শিল্পী সংঘ এর সভাপতি অভিনেতা শহীদুজ্জামান সেলিমের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ‘এর আগে তাদের সঙ্গে ম্যাসেঞ্জারে কথা হয়েছিল, তারা যা বলেছিল তাই জানানো হয়েছে অভিনয় শিল্পী সংঘের পক্ষ থেকে। তবে আজকে(২৭-০৭-২০২১) আফরান নিশো, মেহজাবীন চৌধুরীসহ নাটক সংশ্লিষ্ট সবাইকে ডাকা হয়েছে। আরো অনেকের উপস্থিতিতে এসব বিষয়ে বিস্তারিত কথা হবে তাদের সঙ্গে।’

বিষয়টি নিয়ে এফটিপিওর চেয়ারম্যান অভিনেতা-নাট্যকার-পরিচালক মামুনুর রশীদ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এটি খুব দায়িত্বহীন কাজ হয়েছে। নাট্যকাররা না জেনে-শুনেই স্বাস্থ্য সম্পর্কিত, মেডিকেলের বিষয়টিকে যে এভাবে তুলে ধরেছে তা ঘোরতর অন্যায়।’

বুধবার, ২৮ জুলাই ২০২১ , ১২ শ্রাবন ১৪২৮ ১৬ জিলহজ ১৪৪২

‘ঘটনা সত্য’ নাটকের বক্তব্য উদ্ভট ক্ষুব্ধ সারা দেশের মানুষ

বিনোদন প্রতিবেদক

image

চ্যানেল আইয়ে প্রচারিত ‘ঘটনা সত্য’ নামে একটি ঈদের নাটকে স্পেশাল বাচ্চার জন্মের কারন হিসেবে পিতা-মাতার পাপকে দায়ী করে দেখানো হয়েছে। যা খুবই নিন্দনীয়। এরকম উদ্ভট ম্যাসেজ সমাজের মানুষের মনে রক্ত ক্ষরণ হচ্ছে। অপমান করা হয়েছে স্পেশাল বাচ্চাদের বাবা-মাদের। এই নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়াতে চলছে তীব্র সমালোচনা। সিএমভির প্রযোজনায় মঈনুল সানুর চিত্রনাট্যে নাটকটি পরিচালনা করেছেন রুবেল হাসান; নাটকে প্রধান দুই চরিত্রে অভিনয় করেছেন আফরান নিশো ও মেহজাবীন চৌধুরী। চ্যানেল আইয়ের ঈদ আয়োজনে প্রচারের পর নাটকটি সিএমবির ইউটিউবে প্রকাশ করা হয়েছে। প্রতিবন্ধী শিশুর জন্ম নিয়ে এই অবৈজ্ঞানিক বার্তা দেয়ার অভিযোগে বিভিন্ন সংগঠন, অভিভাবক ও দর্শকদের প্রতিবাদের মধ্যে তোপের মুখে রোববার দুঃখপ্রকাশ করে ইউটিউব থেকে নাটকটি সরিয়ে নিয়েছে সিএমভি।

নাটকে বিলকিছ নামে একজন গৃহপরিচারিকার চরিত্রে মেহজাবীন চৌধুরী ও মুকুল নামে একজন গাড়ি চালকের চরিত্রে অভিনয় করেছেন আফরান নিশো। বিয়ের পর তাদের সংসারে একটি বিশেষ শিশুর জন্ম হয়। নাটকের শেষভাগে সেই সন্তানের জন্মের কারণ হিসেবে তাদের অতীত জীবনের পাপকে দায়ী করে বার্তা দেয়া হয়। বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যে ক্ষমা চেয়েছেন আফরান নিশো, মেহজাবীন চৌধুরী, রুবেল হাসান ও সিএমভি।

‘ঘটনা সত্য’ নাটকে বিশেষ শিশুদের নিয়ে ‘আপত্তিকর বার্তা’ ছড়িয়ে ‘দায়িত্বহীনতার পরিচয়’ দিয়েছে বলে উল্লেখ্য করেছে ছোটপর্দার ১৪ সংগঠনের মোর্চা ফেডারেশন অব টেলিভিশন প্রফেশনালস অর্গানাইজেশন (এফটিপিও)। তারা বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্টদের সতর্ক করবে বলে জানিয়েছে।

অপর দিকে, অভিনয়শিল্পী সংঘ এক বিবৃতিতে বলে, ‘সম্প্রতি ঈদের এ নাটকটির শেষ দৃশ্যের ধারা বর্ণনা নিয়ে যে তীব্র সমালোচনা হচ্ছে তা আমরাও সমর্থন করি। বিশেষ শিশুর জন্মের জন্য পিতা-মাতার অনৈতিক কর্মকা- দায়ী- এটা অযৌক্তিক, অবৈজ্ঞানিক ও সামাজিক রীতিবিরুদ্ধ। বিষয়টি নিয়ে আমরা অভিনয়শিল্পীদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলাম। তারা জানিয়েছেন, এ ধরনের সংলাপ নিজেরা উচ্চারণ করেননি। ভয়েস ওভারের মাধ্যমে এটি ব্যবহার করা হয়েছে। যা পা-ুলিপিতে ছিল না’। তবে অভিনয় শিল্পী সংঘ এর এই বিবৃতিতে সন্তুষ্ট নন অনেকেই। সবার প্রশ্ন - প্রতিটা নাটকেরইতো একটা মূল বক্তব্য থাকে; সেই বক্তব্য না জেনেই তারা এই নাটকে অভিনয় করেছেন?

বিষয়টি নিয়ে অভিনয় শিল্পী সংঘ এর সভাপতি অভিনেতা শহীদুজ্জামান সেলিমের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ‘এর আগে তাদের সঙ্গে ম্যাসেঞ্জারে কথা হয়েছিল, তারা যা বলেছিল তাই জানানো হয়েছে অভিনয় শিল্পী সংঘের পক্ষ থেকে। তবে আজকে(২৭-০৭-২০২১) আফরান নিশো, মেহজাবীন চৌধুরীসহ নাটক সংশ্লিষ্ট সবাইকে ডাকা হয়েছে। আরো অনেকের উপস্থিতিতে এসব বিষয়ে বিস্তারিত কথা হবে তাদের সঙ্গে।’

বিষয়টি নিয়ে এফটিপিওর চেয়ারম্যান অভিনেতা-নাট্যকার-পরিচালক মামুনুর রশীদ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এটি খুব দায়িত্বহীন কাজ হয়েছে। নাট্যকাররা না জেনে-শুনেই স্বাস্থ্য সম্পর্কিত, মেডিকেলের বিষয়টিকে যে এভাবে তুলে ধরেছে তা ঘোরতর অন্যায়।’