বিদ্যালয়গামী শিক্ষার্থীদের ডেঙ্গু থেকে রক্ষা করতে হবে

করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে না এলেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলেছে। কোভিড-১৯ সংক্রমণের ঝুঁকির মধ্যেও শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে যাচ্ছে। এর পাশাপাশি যোগ হয়েছে ডেঙ্গু রোগে সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি।

রাজধানীর অধিকাংশ বিদ্যালয়েই এডিস মশার লার্ভা আছে বলে জানা গেছে। এডিস মশার লার্ভা ধ্বংস ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার ক্ষেত্রে অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষ চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। এ নিয়ে গণমাধ্যমে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, রাজধানীর বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শ্রেণীকক্ষ, ছাদ, টয়লেট ও আশপাশে এডিস মশার লার্ভা রয়েছে। বিদ্যালয়ের সামনের মাঠে ও নির্মাণাধীন ভবনেও পানি জমে আছে। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দেড় বছর স্কুল বন্ধ ছিল। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ এখনও চলছে, দ্রুতই এ কাজ সম্পন্ন হবে।

অনেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ করেছে, অনেকে এখনও করছে। তারপরও ঝুঁকি থেকেই যায়। কারণ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা আসলে এক-দুদিনের বিষয় নয়। একদিন পরিষ্কার করলেই যে বিদ্যালয় ঝুঁকিমুক্ত হয়ে যাবে, এডিস মশা বংশবিস্তার করবে নাÑ এমনটা বলা যায় না। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন জায়গায়ও এডিস মশা বংশবিস্তার করতে পারে। এখনও মাঝে মাঝে বৃষ্টি হচ্ছে। কাজেই বৃষ্টির পানি জমে যাওয়ার আশঙ্কা আছেই।

বিশেষজ্ঞরা এই বলে সতর্ক করেছেন যে, এখন ডেঙ্গু রোগের নির্দিষ্ট কোন মৌসুম নেই। সারা বছরই মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছে বা হতে পারে। শিশুদের ডেঙ্গু আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি তুলনামূলকভাবে বেশি বলে জানা গেছে। ঢাকা শিশু হাসপাতালের পরিচালক গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে চলতি বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত শিশু হাসপাতালেই ১০টি শিশু মারা গেছে। বর্তমানে ডেঙ্গু আক্রান্ত ১০ শিশু আইসিইউতে আছে। এছাড়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে ৬৭ জন। অতীতে কখনও এত শিশু ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়নি বলেও জানান তিনি।

আমরা বলতে চাই, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো যেন এডিশ মশার প্রজনন ক্ষেত্রে পরিণত না হয়। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি নগর কর্তৃপক্ষও যেন বিদ্যালয়ভিত্তিক মশক নিধন এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম চালায় সেটা আমরা দেখতে চাই।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে শিশুরা যাতে করোনায় আক্রান্ত না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। হাত ধোয়া, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে। পাশাপাশি ডেঙ্গু প্রতিরোধেও শিক্ষক-অভিভাবকদের সচেতন হবে। সংশ্লিষ্ট এলাকার জনপ্রতিনিধিসহ সবাই দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে শিশুদের জন্য নিরাপদ করা সম্ভব হবে।

সোমবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২১ , ৫ আশ্বিন ১৪২৮ ১১ সফর ১৪৪৩

বিদ্যালয়গামী শিক্ষার্থীদের ডেঙ্গু থেকে রক্ষা করতে হবে

করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে না এলেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলেছে। কোভিড-১৯ সংক্রমণের ঝুঁকির মধ্যেও শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে যাচ্ছে। এর পাশাপাশি যোগ হয়েছে ডেঙ্গু রোগে সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি।

রাজধানীর অধিকাংশ বিদ্যালয়েই এডিস মশার লার্ভা আছে বলে জানা গেছে। এডিস মশার লার্ভা ধ্বংস ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার ক্ষেত্রে অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষ চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। এ নিয়ে গণমাধ্যমে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, রাজধানীর বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শ্রেণীকক্ষ, ছাদ, টয়লেট ও আশপাশে এডিস মশার লার্ভা রয়েছে। বিদ্যালয়ের সামনের মাঠে ও নির্মাণাধীন ভবনেও পানি জমে আছে। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দেড় বছর স্কুল বন্ধ ছিল। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ এখনও চলছে, দ্রুতই এ কাজ সম্পন্ন হবে।

অনেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ করেছে, অনেকে এখনও করছে। তারপরও ঝুঁকি থেকেই যায়। কারণ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা আসলে এক-দুদিনের বিষয় নয়। একদিন পরিষ্কার করলেই যে বিদ্যালয় ঝুঁকিমুক্ত হয়ে যাবে, এডিস মশা বংশবিস্তার করবে নাÑ এমনটা বলা যায় না। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন জায়গায়ও এডিস মশা বংশবিস্তার করতে পারে। এখনও মাঝে মাঝে বৃষ্টি হচ্ছে। কাজেই বৃষ্টির পানি জমে যাওয়ার আশঙ্কা আছেই।

বিশেষজ্ঞরা এই বলে সতর্ক করেছেন যে, এখন ডেঙ্গু রোগের নির্দিষ্ট কোন মৌসুম নেই। সারা বছরই মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছে বা হতে পারে। শিশুদের ডেঙ্গু আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি তুলনামূলকভাবে বেশি বলে জানা গেছে। ঢাকা শিশু হাসপাতালের পরিচালক গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে চলতি বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত শিশু হাসপাতালেই ১০টি শিশু মারা গেছে। বর্তমানে ডেঙ্গু আক্রান্ত ১০ শিশু আইসিইউতে আছে। এছাড়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে ৬৭ জন। অতীতে কখনও এত শিশু ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়নি বলেও জানান তিনি।

আমরা বলতে চাই, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো যেন এডিশ মশার প্রজনন ক্ষেত্রে পরিণত না হয়। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি নগর কর্তৃপক্ষও যেন বিদ্যালয়ভিত্তিক মশক নিধন এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম চালায় সেটা আমরা দেখতে চাই।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে শিশুরা যাতে করোনায় আক্রান্ত না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। হাত ধোয়া, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে। পাশাপাশি ডেঙ্গু প্রতিরোধেও শিক্ষক-অভিভাবকদের সচেতন হবে। সংশ্লিষ্ট এলাকার জনপ্রতিনিধিসহ সবাই দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে শিশুদের জন্য নিরাপদ করা সম্ভব হবে।