জিডিপি প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৬.৪ শতাংশ : বিশ্বব্যাংক

বিশ্বে ভোগ্যপণ্যের চাহিদা বাড়ায় বাংলাদেশের রপ্তানি বাড়ছে। আর তাই এ বছর দেশের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি বাড়বে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক।

চলতি বছর বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি ৬.৪ শতাংশ বলে জানিয়েছে এই সংস্থা। গতকাল প্রকাশিত বিশ্ব ব্যাংকের ষান্মাষিক প্রতিবেদনে গত ২০২০-২১ অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ৫ শতাংশ। যদিও বাংলাদেশ পরিসংখ্যা ব্যুরোর হিসাবে তা ৫ দশমিক ৪৭ শতাংশ হওয়ার কথা।

আর অর্থনীতির পুনরুদ্ধারের বর্তমান গতি যদি অব্যাহত থাকে তাহলে আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি বেড়ে ৬ দশমিক ৯ শতাংশ হতে পারে বলেছে বিশ্ব ব্যাংক।

‘শিফটিং গিয়ার্স : ডিজিটাইজেশন অ্যান্ড সার্ভিস লেড ডেভেলপমেন্ট’ শীর্ষক বিশ্ব ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাস সংক্রমণের সর্বশেষ ঢেউয়ের মধ্যে এলাকাভিত্তিক বিধিনিষেধ আরোপ করায় দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়াও অব্যাহত রয়েছে।

তারা বলেছে যে, ঘুরে দাঁড়ানোর এই গতি সব দেশে সমান বা টেকসই নয়। দক্ষিণ এশিয়ার বেশিরভাগ দেশেরেই মহামারীপূর্ব অর্থনৈতিক অবস্থায় ফিরে যেতে আরও অনেক সময় লাগবে।

সংস্থাটি বলছে, ২০২১ ও ২০২২ সালে এ অঞ্চলের অর্থনীতি ৭ দশমিক ১ শতাংশ বাড়তে পারে। তবে দেশভেদে এই প্রবৃদ্ধি সমান হবে না।

আরও জানানো হয় যে, ভারতের অর্থনীতি এ বছরে মহামারীর ধাক্কায় ৭ দশমিক ৩ শতাংশ সঙ্কুচিত হয়ে পড়েছিল। সরকারি বিনিয়োগ ও প্রণোদনার সুবিধা নিয়ে সেই অবস্থান থেকে এবার ৮ দশমিক ৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হতে পারে বলে প্রাক্কলন করেছে বিশ্ব ব্যাংক।

মহামারীর মধ্যে মালদ্বীপও বড় ধরনের দুর্বিপাকে পড়েছিল, গত বছর তাদের অর্থনীতি সঙ্কুচিত হয়েছিল ৩৩ দশমিক ৩ শতাংশ। সংক্রমণ কমে পর্যটনে গতি আসায় মালদ্বীপ এ বছর ২২ দশমিক ৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি পেতে পারে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়।

সেই তুলনায় এ অঞ্চলের অন্যান্য দেশের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের গতি অনেকটা ধীর। ভুটান এ অর্থবছরে ৩ দশমিক ৬ শতাংশ, নেপাল ৩ দশমিক ৯ শতাংশ এবং পাকিস্তান ৩ দশমিক ৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি পেতে পারে।

দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে বিশ্ব ব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট হার্টভিগ শেফার বলেন, ‘মহামারী এ অঞ্চলের অর্থনীতিতে বড় ধরনের প্রভাব ফেলেছে। পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া চলছে, তবে এর সাফল্য অনেকাংশে নির্ভর করছে টিকাদানের গতি, করোনাভাইরাসের নতুন ধরনের আবির্ভাব হলে তা সামাল দেয়া এবং বিশ্ব অর্থনীতির গতিধারার ওপর।’

গত ২০১৯-২০ অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি) প্রবৃদ্ধি নেমে গিয়েছিল ৩ দশমিক ৫১ শতাংশে, যা তিন দশকের মধ্যে সবচেয়ে কম। সে সময় সরকার অর্থবছরের বাজেটে ৮ দশমিক ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ধরলেও মহামারী পরিস্থিতি জটিল আকার ধারণ করায় তা সংশোধন করে ৬ দশমিক ১ শতাংশ প্রবৃদ্ধির প্রাক্কলন করা হয়েছিল। অর্থবছর শেষে গত অগাস্টে পরিসংখ্যার ব্যুরোর প্রাক্কলনে তা ৫ দশমিক ৪৭ শতাংশে নেমে আসে।

চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরে সরকার ৭ দশমিক ২ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরেছে। তবে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক এডিবির হিসাবে এই প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৬ দশমিক ৮ শতাংশ।

শুক্রবার, ০৮ অক্টোবর ২০২১ , ২৩ আশ্বিন ১৪২৮ ৩০ সফর ১৪৪৩

জিডিপি প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৬.৪ শতাংশ : বিশ্বব্যাংক

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

image

বিশ্বে ভোগ্যপণ্যের চাহিদা বাড়ায় বাংলাদেশের রপ্তানি বাড়ছে। আর তাই এ বছর দেশের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি বাড়বে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক।

চলতি বছর বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি ৬.৪ শতাংশ বলে জানিয়েছে এই সংস্থা। গতকাল প্রকাশিত বিশ্ব ব্যাংকের ষান্মাষিক প্রতিবেদনে গত ২০২০-২১ অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ৫ শতাংশ। যদিও বাংলাদেশ পরিসংখ্যা ব্যুরোর হিসাবে তা ৫ দশমিক ৪৭ শতাংশ হওয়ার কথা।

আর অর্থনীতির পুনরুদ্ধারের বর্তমান গতি যদি অব্যাহত থাকে তাহলে আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি বেড়ে ৬ দশমিক ৯ শতাংশ হতে পারে বলেছে বিশ্ব ব্যাংক।

‘শিফটিং গিয়ার্স : ডিজিটাইজেশন অ্যান্ড সার্ভিস লেড ডেভেলপমেন্ট’ শীর্ষক বিশ্ব ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাস সংক্রমণের সর্বশেষ ঢেউয়ের মধ্যে এলাকাভিত্তিক বিধিনিষেধ আরোপ করায় দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়াও অব্যাহত রয়েছে।

তারা বলেছে যে, ঘুরে দাঁড়ানোর এই গতি সব দেশে সমান বা টেকসই নয়। দক্ষিণ এশিয়ার বেশিরভাগ দেশেরেই মহামারীপূর্ব অর্থনৈতিক অবস্থায় ফিরে যেতে আরও অনেক সময় লাগবে।

সংস্থাটি বলছে, ২০২১ ও ২০২২ সালে এ অঞ্চলের অর্থনীতি ৭ দশমিক ১ শতাংশ বাড়তে পারে। তবে দেশভেদে এই প্রবৃদ্ধি সমান হবে না।

আরও জানানো হয় যে, ভারতের অর্থনীতি এ বছরে মহামারীর ধাক্কায় ৭ দশমিক ৩ শতাংশ সঙ্কুচিত হয়ে পড়েছিল। সরকারি বিনিয়োগ ও প্রণোদনার সুবিধা নিয়ে সেই অবস্থান থেকে এবার ৮ দশমিক ৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হতে পারে বলে প্রাক্কলন করেছে বিশ্ব ব্যাংক।

মহামারীর মধ্যে মালদ্বীপও বড় ধরনের দুর্বিপাকে পড়েছিল, গত বছর তাদের অর্থনীতি সঙ্কুচিত হয়েছিল ৩৩ দশমিক ৩ শতাংশ। সংক্রমণ কমে পর্যটনে গতি আসায় মালদ্বীপ এ বছর ২২ দশমিক ৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি পেতে পারে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়।

সেই তুলনায় এ অঞ্চলের অন্যান্য দেশের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের গতি অনেকটা ধীর। ভুটান এ অর্থবছরে ৩ দশমিক ৬ শতাংশ, নেপাল ৩ দশমিক ৯ শতাংশ এবং পাকিস্তান ৩ দশমিক ৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি পেতে পারে।

দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে বিশ্ব ব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট হার্টভিগ শেফার বলেন, ‘মহামারী এ অঞ্চলের অর্থনীতিতে বড় ধরনের প্রভাব ফেলেছে। পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া চলছে, তবে এর সাফল্য অনেকাংশে নির্ভর করছে টিকাদানের গতি, করোনাভাইরাসের নতুন ধরনের আবির্ভাব হলে তা সামাল দেয়া এবং বিশ্ব অর্থনীতির গতিধারার ওপর।’

গত ২০১৯-২০ অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি) প্রবৃদ্ধি নেমে গিয়েছিল ৩ দশমিক ৫১ শতাংশে, যা তিন দশকের মধ্যে সবচেয়ে কম। সে সময় সরকার অর্থবছরের বাজেটে ৮ দশমিক ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ধরলেও মহামারী পরিস্থিতি জটিল আকার ধারণ করায় তা সংশোধন করে ৬ দশমিক ১ শতাংশ প্রবৃদ্ধির প্রাক্কলন করা হয়েছিল। অর্থবছর শেষে গত অগাস্টে পরিসংখ্যার ব্যুরোর প্রাক্কলনে তা ৫ দশমিক ৪৭ শতাংশে নেমে আসে।

চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরে সরকার ৭ দশমিক ২ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরেছে। তবে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক এডিবির হিসাবে এই প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৬ দশমিক ৮ শতাংশ।