জাতীয় পরিচয় পত্র এবং গেজেট জালিয়াতি করে দীর্ঘদিন থেকে ফাইজুল ইসলাম নামের এক মুক্তিযোদ্ধা একইসঙ্গে দিনাজপুরের বিরামপুর এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলা থেকে ভাতা তুলছেন। বিরামপুর উপজেলা প্রশাসন ও সমাজসেবা কার্যালয়ের তদন্তে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে।
বিরামপুর এবং শিবগঞ্জ সমাজসেবা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ফাইজুল ইসলাম বর্তমানে বিরামপুর উপজেলার খানপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ সাহাবাজপুর (পত্নীচান) গ্রামের বাসিন্দা। বিরামপুর সমাজসেবা কার্যালয়ে জমা দেওয়া তথ্যে গেজেট নাম্বার উল্লেখ রয়েছে ৯১৫। শিবগঞ্জ সমাজসেবা কার্যালয়ে জাতীয় পরিচয় পত্রে ঠিকানা হিসেবে ফাইজুল ইসলাম তার গ্রাম আটবশিয়া দামোদিয়ার, ডাকঘর-শিবগঞ্জ, উপজেলা-শিবগঞ্জ, জেলা-চাঁপাইনবাবগঞ্জ উল্লেখ করেছেন। মুক্তিযোদ্ধার গেজেট উল্লেখ করেছেন ১০৪। ফাইজুল ইসলামের জাতীয় পরিচয় পত্র নাম্বার ২৭১১০৭১৮২৪৭৬৯ এবং লাল মুক্তিবার্তা নাম্বার ০৩০৮১০০১৮৫। ২০১৪ সাল থেকে তিনি বিরামপুর থেকে মুক্তিযোদ্ধা ভাতা গ্রহন করে আসছেন। ২০২০ সালে সমাজসেবা কার্যালয়ে ভাতাভোগীর এমআইএস সফটওয়্যারের মাধ্যমে ডাটাবেজ তৈরির কার্যক্রম শুরু হয়। এর ফলে একই জাতীয় পরিচয় পত্রের নাম্বার দিয়ে একাধিকস্থান থেকে সরকারি ভাতা নেবার পথ বন্ধ হয়ে যায়। ফাইজুল ইসলাম চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের মাধ্যমে পূর্বেই ডাটাবেজে অন্তর্ভুক্ত হয়ে থাকায় বিরামপুর থেকে ভাতা প্রদান বন্ধ হয়ে যায়। এ নিয়ে তিনি প্রতিবাদ জানান। সে সময় সমাজসেবা কার্যালয় ফাইজুল ইসলামের প্রতারণার বিষয়টি ধরতে না পারায় মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের আইটি শাখা থেকে আবারো বিরামপুরে ভাতা চালু করা হয়। কিন্তু শিবগঞ্জে ভাতা বন্ধ হয়ে যায়। ফাইজুল ইসলাম আবারও শিবগঞ্জে ভাতা চালু করলে বিরামপুরে পুনরায় ভাতা বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় বিরামপুর সমাজসেবা কার্যালয় থেকে অনুসন্ধান শুরু করলে গতবছর ডিসেম্বর মাসে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের আইটি শাখা থেকে জানানো হয় যে, ফাইজুল ইসলাম একই সঙ্গে বিরামপুর এবং শিবগঞ্জ থেকে ভাতা উত্তোলন করছেন। বিরামপুর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. রাজুল ইসলাম জানান, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা পেয়ে এ বছর ফেব্রুয়ারি মাস থেকে ফাইজুলের ভাতা প্রদান বন্ধ করা হয়েছে। শিবগঞ্জ সমাজসেবা কর্মকর্তা কাঞ্চন কুমার দাস জানান, ফাইজুল ইসলাম জাতীয় পরিচয়পত্র এবং মুক্তিযোদ্ধাদের বেসরকারি গেজট জালিয়াতির মাধ্যমে দীর্ঘদিন থেকে ভাতা উত্তোলন করে আসার তথ্য পেয়েছেন। এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পরিমল কুমার সরকার জানান, ফাইজুল ইসলামের বিরামপুর কার্যালয় থেকে ভাতা উত্তোলন বন্ধ রয়েছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সকল নথিপত্র জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা ফাইজুল ইসলাম মুঠোফোনে বিরামপুর এবং শিবগঞ্জ থেকে ভাতা উত্তোলনের কথা স্বীকার করে জানান, বর্তমানে তিনি শুধুমাত্র শিবগঞ্জ হতে ভাতা গ্রহণ করছেন। বিরামপুর থেকে ভাতা তোলা বন্ধ রয়েছে।
শুক্রবার, ০৮ অক্টোবর ২০২১ , ২৩ আশ্বিন ১৪২৮ ৩০ সফর ১৪৪৩
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক, দিনাজপুর
জাতীয় পরিচয় পত্র এবং গেজেট জালিয়াতি করে দীর্ঘদিন থেকে ফাইজুল ইসলাম নামের এক মুক্তিযোদ্ধা একইসঙ্গে দিনাজপুরের বিরামপুর এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলা থেকে ভাতা তুলছেন। বিরামপুর উপজেলা প্রশাসন ও সমাজসেবা কার্যালয়ের তদন্তে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে।
বিরামপুর এবং শিবগঞ্জ সমাজসেবা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ফাইজুল ইসলাম বর্তমানে বিরামপুর উপজেলার খানপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ সাহাবাজপুর (পত্নীচান) গ্রামের বাসিন্দা। বিরামপুর সমাজসেবা কার্যালয়ে জমা দেওয়া তথ্যে গেজেট নাম্বার উল্লেখ রয়েছে ৯১৫। শিবগঞ্জ সমাজসেবা কার্যালয়ে জাতীয় পরিচয় পত্রে ঠিকানা হিসেবে ফাইজুল ইসলাম তার গ্রাম আটবশিয়া দামোদিয়ার, ডাকঘর-শিবগঞ্জ, উপজেলা-শিবগঞ্জ, জেলা-চাঁপাইনবাবগঞ্জ উল্লেখ করেছেন। মুক্তিযোদ্ধার গেজেট উল্লেখ করেছেন ১০৪। ফাইজুল ইসলামের জাতীয় পরিচয় পত্র নাম্বার ২৭১১০৭১৮২৪৭৬৯ এবং লাল মুক্তিবার্তা নাম্বার ০৩০৮১০০১৮৫। ২০১৪ সাল থেকে তিনি বিরামপুর থেকে মুক্তিযোদ্ধা ভাতা গ্রহন করে আসছেন। ২০২০ সালে সমাজসেবা কার্যালয়ে ভাতাভোগীর এমআইএস সফটওয়্যারের মাধ্যমে ডাটাবেজ তৈরির কার্যক্রম শুরু হয়। এর ফলে একই জাতীয় পরিচয় পত্রের নাম্বার দিয়ে একাধিকস্থান থেকে সরকারি ভাতা নেবার পথ বন্ধ হয়ে যায়। ফাইজুল ইসলাম চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের মাধ্যমে পূর্বেই ডাটাবেজে অন্তর্ভুক্ত হয়ে থাকায় বিরামপুর থেকে ভাতা প্রদান বন্ধ হয়ে যায়। এ নিয়ে তিনি প্রতিবাদ জানান। সে সময় সমাজসেবা কার্যালয় ফাইজুল ইসলামের প্রতারণার বিষয়টি ধরতে না পারায় মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের আইটি শাখা থেকে আবারো বিরামপুরে ভাতা চালু করা হয়। কিন্তু শিবগঞ্জে ভাতা বন্ধ হয়ে যায়। ফাইজুল ইসলাম আবারও শিবগঞ্জে ভাতা চালু করলে বিরামপুরে পুনরায় ভাতা বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় বিরামপুর সমাজসেবা কার্যালয় থেকে অনুসন্ধান শুরু করলে গতবছর ডিসেম্বর মাসে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের আইটি শাখা থেকে জানানো হয় যে, ফাইজুল ইসলাম একই সঙ্গে বিরামপুর এবং শিবগঞ্জ থেকে ভাতা উত্তোলন করছেন। বিরামপুর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. রাজুল ইসলাম জানান, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা পেয়ে এ বছর ফেব্রুয়ারি মাস থেকে ফাইজুলের ভাতা প্রদান বন্ধ করা হয়েছে। শিবগঞ্জ সমাজসেবা কর্মকর্তা কাঞ্চন কুমার দাস জানান, ফাইজুল ইসলাম জাতীয় পরিচয়পত্র এবং মুক্তিযোদ্ধাদের বেসরকারি গেজট জালিয়াতির মাধ্যমে দীর্ঘদিন থেকে ভাতা উত্তোলন করে আসার তথ্য পেয়েছেন। এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পরিমল কুমার সরকার জানান, ফাইজুল ইসলামের বিরামপুর কার্যালয় থেকে ভাতা উত্তোলন বন্ধ রয়েছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সকল নথিপত্র জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা ফাইজুল ইসলাম মুঠোফোনে বিরামপুর এবং শিবগঞ্জ থেকে ভাতা উত্তোলনের কথা স্বীকার করে জানান, বর্তমানে তিনি শুধুমাত্র শিবগঞ্জ হতে ভাতা গ্রহণ করছেন। বিরামপুর থেকে ভাতা তোলা বন্ধ রয়েছে।