মঙ্গল গ্রহে ডেল্টার অস্তিত্ব পেল নাসার অধ্যবসায়

বিলিয়ন বিলিয়ন বছর আগে মঙ্গল গ্রহের প্রকৃতি সৃষ্টিতে পানির কী অবদান ছিল, তা নাসার রোভার থেকে পাওয়া ছবিতে প্রকাশিত হয়েছে। এ থেকে লাল গ্রহটিতে প্রাণ থাকার প্রমাণ পাওয়া যেতে পারে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।

নতুন এক গবেষণায় এসব তথ্য উঠে আসে বলে বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে নাসার রোভার অধ্যবসায় মঙ্গল গ্রহের জেজেরো ক্রেটারে অবতরণ করে। বিজ্ঞানীদের ধারণা, জেজেরো ক্রেটারে কোনো একসময় বিলুপ্ত এক নদী মহাকাশ থেকে দৃশ্যমান ফ্যান আকৃতির ডেল্টা বা বদ্বীপে পলি জমা করে।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বিজ্ঞান সাময়িকী সায়েন্সে প্রকাশিত নতুন গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, নাসার রোভার অধ্যবসায়ের তোলা হাই রেজল্যুশনের ছবি বিশ্লেষণ করেন বিজ্ঞানীরা। ছবিতে জেজেরো ক্রেটারে থাকা খাড়া পাথরের পাহাড়ের ছবি রয়েছে, যেগুলো একসময় ডেল্টার পাড় ছিল বলে ধারণা তাদের। কীভাবে ডেল্টার গঠন হয়েছে, তা খাড়া পাহাড়ের গায়ে থাকা স্তরগুলো থেকে বোঝা যায়।

নাসার অ্যাস্ট্রোবায়োলজিস্ট অ্যামি উইলিয়ামস ও তার দল জেজেরো ক্রেটারের পাহাড়ের ছবি ও পৃথিবীর রিভার ডেল্টার মধ্যে মিল খুঁজে পান। গবেষণায় বলা হয়, পাহাড়গুলোর নিচের তিনটি স্তরের আকৃতি একসময় যে সেখানে অনবরত পানি প্রবাহ হয়, তার ইঙ্গিত দেয়।

প্রায় ৩.৭ বিলিয়ন বছর আগে হাইড্রোলজিক সাইকেল সহায়তায় পর্যাপ্ত উষ্ণ ও আর্দ্র ছিল মঙ্গল গ্রহ।

পাহাড়গুলোর শীর্ষ স্তরের এক মিটারের বেশি ব্যাসের পাথরের ছবি দেখে বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, ভয়াবহ বন্যা সম্ভবত সেগুলো সেখানে নিয়ে গেছে। গবেষণা থেকে উঠে আসা তথ্য গবেষকদের মঙ্গল গ্রহে মাটি ও পাথরের সন্ধানে রোভার অধ্যবসায় কোন কোন জায়গায় পাঠানো যেতে পারে, তা বুঝতে সহায়তা করবে। ওই সব মাটি ও পাথর মঙ্গল গ্রহের প্রাণ সম্পর্কে মূল্যবান ধারণা দিতে পারে।

নাসার অ্যাস্ট্রোবায়োলজিস্ট উইলিয়ামস এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, ‘অধ্যবসায়ের পাঠানো ছবি থেকে আমরা বুঝতে পেরেছি, পানিই মঙ্গল গ্রহের ডেল্টা সৃষ্টি করেছিল। এসব ছবি আমাদের কাছে বইয়ের প্রচ্ছদ দেখার চেয়ে বইটি পড়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ।’

মঙ্গল গ্রহে প্রাণ ছিল কি না, তা বের করাই অধ্যবসায়ের মূল মিশন। লাল গ্রহে এ রোভার পাঠাতে কয়েক দশক সময় লাগে নাসার। খরচ হয় বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার অর্থ।

শনিবার, ০৯ অক্টোবর ২০২১ , ২৪ আশ্বিন ১৪২৮ ০১ রবিউল আউয়াল ১৪৪৩

মঙ্গল গ্রহে ডেল্টার অস্তিত্ব পেল নাসার অধ্যবসায়

image

বিলিয়ন বিলিয়ন বছর আগে মঙ্গল গ্রহের প্রকৃতি সৃষ্টিতে পানির কী অবদান ছিল, তা নাসার রোভার থেকে পাওয়া ছবিতে প্রকাশিত হয়েছে। এ থেকে লাল গ্রহটিতে প্রাণ থাকার প্রমাণ পাওয়া যেতে পারে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।

নতুন এক গবেষণায় এসব তথ্য উঠে আসে বলে বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে নাসার রোভার অধ্যবসায় মঙ্গল গ্রহের জেজেরো ক্রেটারে অবতরণ করে। বিজ্ঞানীদের ধারণা, জেজেরো ক্রেটারে কোনো একসময় বিলুপ্ত এক নদী মহাকাশ থেকে দৃশ্যমান ফ্যান আকৃতির ডেল্টা বা বদ্বীপে পলি জমা করে।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বিজ্ঞান সাময়িকী সায়েন্সে প্রকাশিত নতুন গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, নাসার রোভার অধ্যবসায়ের তোলা হাই রেজল্যুশনের ছবি বিশ্লেষণ করেন বিজ্ঞানীরা। ছবিতে জেজেরো ক্রেটারে থাকা খাড়া পাথরের পাহাড়ের ছবি রয়েছে, যেগুলো একসময় ডেল্টার পাড় ছিল বলে ধারণা তাদের। কীভাবে ডেল্টার গঠন হয়েছে, তা খাড়া পাহাড়ের গায়ে থাকা স্তরগুলো থেকে বোঝা যায়।

নাসার অ্যাস্ট্রোবায়োলজিস্ট অ্যামি উইলিয়ামস ও তার দল জেজেরো ক্রেটারের পাহাড়ের ছবি ও পৃথিবীর রিভার ডেল্টার মধ্যে মিল খুঁজে পান। গবেষণায় বলা হয়, পাহাড়গুলোর নিচের তিনটি স্তরের আকৃতি একসময় যে সেখানে অনবরত পানি প্রবাহ হয়, তার ইঙ্গিত দেয়।

প্রায় ৩.৭ বিলিয়ন বছর আগে হাইড্রোলজিক সাইকেল সহায়তায় পর্যাপ্ত উষ্ণ ও আর্দ্র ছিল মঙ্গল গ্রহ।

পাহাড়গুলোর শীর্ষ স্তরের এক মিটারের বেশি ব্যাসের পাথরের ছবি দেখে বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, ভয়াবহ বন্যা সম্ভবত সেগুলো সেখানে নিয়ে গেছে। গবেষণা থেকে উঠে আসা তথ্য গবেষকদের মঙ্গল গ্রহে মাটি ও পাথরের সন্ধানে রোভার অধ্যবসায় কোন কোন জায়গায় পাঠানো যেতে পারে, তা বুঝতে সহায়তা করবে। ওই সব মাটি ও পাথর মঙ্গল গ্রহের প্রাণ সম্পর্কে মূল্যবান ধারণা দিতে পারে।

নাসার অ্যাস্ট্রোবায়োলজিস্ট উইলিয়ামস এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, ‘অধ্যবসায়ের পাঠানো ছবি থেকে আমরা বুঝতে পেরেছি, পানিই মঙ্গল গ্রহের ডেল্টা সৃষ্টি করেছিল। এসব ছবি আমাদের কাছে বইয়ের প্রচ্ছদ দেখার চেয়ে বইটি পড়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ।’

মঙ্গল গ্রহে প্রাণ ছিল কি না, তা বের করাই অধ্যবসায়ের মূল মিশন। লাল গ্রহে এ রোভার পাঠাতে কয়েক দশক সময় লাগে নাসার। খরচ হয় বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার অর্থ।