একযুগ ধরে প্রতারণা, হাতিয়ে নিয়েছে কোটি কোটি টাকা

রাজধানীর গুলশানে একটি ভবনে সিকিউরিটি গার্ডের চাকরি করতেন ফরহাদ হোসেন। ওই ভবনে একটি ফ্ল্যাট কেনার জন্য আসেন সাহাদাত নামে এক ব্যক্তি। সাহাদাত নিজেকে জমি কেনা-বেচার মধ্যস্থতাকারী (দালাল) পরিচয় দেন ফরহাদ হোসেনের কাছে। কথায় কথায় খাতির জমিয়ে একপর্যায়ে বলেন, সেনাবাহিনী, পুলিশসহ যেকোন প্রতিষ্ঠানে চাকরি দেয়ার ক্ষমতা আছে তার। সংশ্লিষ্ট দপ্তরের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে তার যোগাযোগ রয়েছে। শাহাদতের কথায় বিশ্বাস করে ফরহাদ তার ভাতিজার জন্য সেনাবাহিনীতে চাকরির প্রলোভনে পড়েন। কথা অনুযায়ী কাগজপত্র নিয়ে নিয়োগপত্র দেখিয়ে ফরহাদের কাছ থেকে ৭ লাখ টাকাও নেন শাহাদত। এরপর ফরহাদের ভাতিজা নিয়োগপত্র নিয়ে ক্যান্টনমেন্টে গেলে জানতে পারেন ওই নিয়োগপত্র জাল। মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে ফরহাদ হোসেনের। শুধু ফরহাদ হোসেনই নয়, চাকরি দেয়ার নামে এ রকম বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে শাহাদত।

সিআইডি বলছে, শাহাদত একটি প্রতারক গ্রুপের দলনেতা। এ রকম অন্য একটি প্রতারক চক্রের দলনেতা মো. আবদুস সাত্তারও নিজেকে পরিচয় দেন মেজর, কর্নেলসহ বিভিন্ন র‌্যাঙ্কের কর্মকর্তা হিসেবে। এ চক্রও চাকরি দেয়ার নামে হাতিয়ে নেয় কোটি টাকা।

সিআইডির অভিযানে প্রতারক চক্রের দুই গ্রুপের মূল হোতাসহ ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার হওয়া একটি গ্রুপের মূল হোতা মো. শাহাদত হোসেন, তার সহযোগী মো. মোস্তফা ও মো. জামাল হোসেন। অন্য চক্রের মূলত হোতা আবদুস সাত্তার, তার সহযোগী আলী হোসেন। এদের বিরুদ্ধে প্রতারণার শিকার ফরহাদের ভাই অনোয়ার হোসেন এবং একটি কলেজের প্রিন্সিপাল বজলুর রহমান বাদী হয়ে পৃথক দুটি মামলা করেছেন।

সংবাদ সম্মেলনে প্রতারক চক্রকে গ্রেপ্তারের তথ্য জানিয়ে সিআইডির ঢাকা মেট্রোর অতি: ডিআইজি ইমাম হোসেন বলেন, এ প্রতারক চক্র সেনাবাহিনী, পুলিশসহ বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি দেয়ার নামে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এ চক্রের প্রতারণার শিকার ১১ ব্যক্তি ইতোমধ্যে সিআইডির সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। প্রতারক সাহাদাত গ্রুপের বিরুদ্ধে ১১ জনের কাছ থেকে ১ কোটি টাকারও বেশি হাতিয়ে নেয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। এছাড়া প্রতারক আবদুস সাত্তার গ্রুপের সদস্যরা বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে অর্ধ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।

অতিরিক্ত ডিআইজি ইমাম হোসেন জানান, একটি চক্রের মূল হোতা আবদুস সাত্তার নিজেকে কখনও কর্নেল, কখনও মেজর হিসেবে পরিচয় দিত। গত এক যুগ ধরে তারা দেশব্যাপী প্রতারণা করে এলেও কখনও ধরা পড়েনি। স্কুলের পিওনের চাকরি পাইয়ে দেয়া, শিক্ষকদের এমপিওভুক্ত করে দেয়া থেকে শুরু এমন কোন কাজ নেই যে তারা তা করে দেয়ার নামে প্রতারণা করেনি। অন্যদিকে প্রতারক সাহাদাত হোসেন বিভিন্ন ব্যক্তিকে টার্গেট করে। তার গ্রুপের মোস্তফাকে মেজর বা কর্নেল পরিচয় দিয়ে ভুক্তভোগীদের নিয়ে আসে। সহযোগী জামাল হোসেনের দোকানে বসে প্রতারণার টাকা লেনদেন করে।

ভুক্তভোগী বজলুর রহমান বলেন, নাটোরের বড়াইগ্রামের বিএম কলেজের প্রিন্সিপাল তিনি। ঢাকায় আসার পথে প্রতারক আবদুস সাত্তারের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। তখন আবদুস সাত্তার নিজেকে প্রধানমন্ত্রীর সাবেক উপদেষ্টা প্রয়াত এইচটি ইমামের ভাতিজা বলে পরিচয় দেয়। শিক্ষা অফিসেও তার লোকজন আছে বলে জানায়। তার কলেজের ৮ শিক্ষকের এমপিও করে দেয়ার কথা বলে ৪ লাখ টাকা নেয়। এরপর তিনি বুঝতে পারেন তিনি প্রতারণার শিকার হয়েছেন। নাটোরের সিংড়া উপজেলার একটি স্কুলের পিওন হিসেবে গত ৮ বছর ধরে বিনা বেতনে কাজ করেন হায়দার আলী। প্রতারক আবদুস সাত্তার তার পাশের গ্রামের বাসিন্দা। তার এমপিওভুক্ত করে দেয়ার কথা বলে ৪ লাখ ২০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে প্রতারক আবদুস সাত্তার।

ভুত্তভোগী আনোয়ার হোসেন জানান, প্রতারক সাহাদাত তার ছেলেকে সেনাবাহিনীতে চাকরি দেয়ার কথা বলে ৭ লাখ টাকা নিয়েছে। টাকা নেয়ার পর তাদের সেনাবাহিনী চাকরির নিয়োগপত্রও দেখিয়েছে। পরে তারা বুঝতে পারেন তারা প্রতারণার শিকার হয়েছেন।

সিআইডির পুলিশ সুপার সামছুন্নাহার জানান, একটি অভিযোগ তদন্ত করতে গিয়ে তারা পৃথক দুটি প্রতারক চক্রের সন্ধান পান। প্রতারক আবদুস সাত্তার নিজেকে কর্নেল মেজর, পুলিশ কর্মকর্তা, বিভিন্ন মন্ত্রীদের ঘনিষ্ট বলে পরিচয় দেয়। তার গ্রুপের দুজনকে গ্রেপ্তার করেছি। আরও কয়েকজন সহযোগীকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। অন্যদিকে সাহাদাত গ্রুপের ৩ জনকে গ্রেপ্তার করলেও আরও কিছু সহযোগী আছে। তাদের মতো আরও একাধিক প্রতারক চক্র ধরতে আমাদের অভিযান চলছে।

পুলিশ সুপার সামছুন্নাহার জানান, দুই প্রতারক গ্রুপের প্রতারণার ধরন একই। দুই গ্রুপই ১ যুগের বেশি সময় ধরে প্রতারণা করে আসছে। সাহাদাত গ্রুপের সদস্যদের হাতে প্রতারণার শিকার ১১ ব্যক্তি আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। আবদুস সাত্তার গ্রুপের সদস্যদের হাতে প্রতারণার শিকার কিছু ব্যক্তিও আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। দুই গ্রুপ এ পর্যন্ত প্রায় দেড় থেকে দুই কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার তথ্য পেয়েছি। তদন্তে আরও ভুক্তভোগী পাওয়া যাবে। তখন হয়তো এরা কত ব্যক্তির কাছ থেকে কি পরিমাণ অর্থ হাতিয়েছে তা বেরিয়ে আসবে।

সিআইডি বলছে, এ প্রতারক চক্র সিআইডির পুলিশ সুপারের (প্রশাসনের) স্বাক্ষর জাল করে ভুয়া নিয়োগপত্র দিয়ে সিআইডিতে দুজন লোক পাঠিয়েছে। সিআইডিতে নিয়োগের কথা বলে তাদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে। সিআইডির নিয়োগপত্র নিয়ে ওই দুই ব্যক্তি সিআইডিতে আসে চাকরিতে যোগদান করতে। তখন বিষয়টি ধরা পড়ে।

সিআইডি বলছে, প্রতারণার টাকায় প্রতারক চক্র বিপুল পরিমাণ সম্পদ গড়েছেন। প্রতারক আবদুস সাত্তার, সাহাদাতের ব্যাংক হিসাবে বিপুল পরিমাণ অর্থের খোঁজ পাওয়া গেছে। এছাড়া তাদের নামে বিপুল পরিমাণ স্থাবর সম্পদ থাকারও তথ্য মিলেছে।

সিআইডি জানিয়েছে, প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে গতকাল পর্যন্ত প্রতারণার শিকার দুই ব্যক্তি মামলা করেছে। আরও ভুক্তভোগী মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এসব মামলায় প্রতারক চক্রকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড হেফাজতে আনা হবে। এ চক্রের সঙ্গে আরও কারা জড়িত তা খুঁজে বের করা হচ্ছে।

মঙ্গলবার, ১২ অক্টোবর ২০২১ , ২৭ আশ্বিন ১৪২৮ ০৪ রবিউল আউয়াল ১৪৪৩

সেনাবাহিনী, পুলিশ কর্মকর্তাসহ নানা পরিচয়ে

একযুগ ধরে প্রতারণা, হাতিয়ে নিয়েছে কোটি কোটি টাকা

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

রাজধানীর গুলশানে একটি ভবনে সিকিউরিটি গার্ডের চাকরি করতেন ফরহাদ হোসেন। ওই ভবনে একটি ফ্ল্যাট কেনার জন্য আসেন সাহাদাত নামে এক ব্যক্তি। সাহাদাত নিজেকে জমি কেনা-বেচার মধ্যস্থতাকারী (দালাল) পরিচয় দেন ফরহাদ হোসেনের কাছে। কথায় কথায় খাতির জমিয়ে একপর্যায়ে বলেন, সেনাবাহিনী, পুলিশসহ যেকোন প্রতিষ্ঠানে চাকরি দেয়ার ক্ষমতা আছে তার। সংশ্লিষ্ট দপ্তরের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে তার যোগাযোগ রয়েছে। শাহাদতের কথায় বিশ্বাস করে ফরহাদ তার ভাতিজার জন্য সেনাবাহিনীতে চাকরির প্রলোভনে পড়েন। কথা অনুযায়ী কাগজপত্র নিয়ে নিয়োগপত্র দেখিয়ে ফরহাদের কাছ থেকে ৭ লাখ টাকাও নেন শাহাদত। এরপর ফরহাদের ভাতিজা নিয়োগপত্র নিয়ে ক্যান্টনমেন্টে গেলে জানতে পারেন ওই নিয়োগপত্র জাল। মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে ফরহাদ হোসেনের। শুধু ফরহাদ হোসেনই নয়, চাকরি দেয়ার নামে এ রকম বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে শাহাদত।

সিআইডি বলছে, শাহাদত একটি প্রতারক গ্রুপের দলনেতা। এ রকম অন্য একটি প্রতারক চক্রের দলনেতা মো. আবদুস সাত্তারও নিজেকে পরিচয় দেন মেজর, কর্নেলসহ বিভিন্ন র‌্যাঙ্কের কর্মকর্তা হিসেবে। এ চক্রও চাকরি দেয়ার নামে হাতিয়ে নেয় কোটি টাকা।

সিআইডির অভিযানে প্রতারক চক্রের দুই গ্রুপের মূল হোতাসহ ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার হওয়া একটি গ্রুপের মূল হোতা মো. শাহাদত হোসেন, তার সহযোগী মো. মোস্তফা ও মো. জামাল হোসেন। অন্য চক্রের মূলত হোতা আবদুস সাত্তার, তার সহযোগী আলী হোসেন। এদের বিরুদ্ধে প্রতারণার শিকার ফরহাদের ভাই অনোয়ার হোসেন এবং একটি কলেজের প্রিন্সিপাল বজলুর রহমান বাদী হয়ে পৃথক দুটি মামলা করেছেন।

সংবাদ সম্মেলনে প্রতারক চক্রকে গ্রেপ্তারের তথ্য জানিয়ে সিআইডির ঢাকা মেট্রোর অতি: ডিআইজি ইমাম হোসেন বলেন, এ প্রতারক চক্র সেনাবাহিনী, পুলিশসহ বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি দেয়ার নামে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এ চক্রের প্রতারণার শিকার ১১ ব্যক্তি ইতোমধ্যে সিআইডির সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। প্রতারক সাহাদাত গ্রুপের বিরুদ্ধে ১১ জনের কাছ থেকে ১ কোটি টাকারও বেশি হাতিয়ে নেয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। এছাড়া প্রতারক আবদুস সাত্তার গ্রুপের সদস্যরা বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে অর্ধ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।

অতিরিক্ত ডিআইজি ইমাম হোসেন জানান, একটি চক্রের মূল হোতা আবদুস সাত্তার নিজেকে কখনও কর্নেল, কখনও মেজর হিসেবে পরিচয় দিত। গত এক যুগ ধরে তারা দেশব্যাপী প্রতারণা করে এলেও কখনও ধরা পড়েনি। স্কুলের পিওনের চাকরি পাইয়ে দেয়া, শিক্ষকদের এমপিওভুক্ত করে দেয়া থেকে শুরু এমন কোন কাজ নেই যে তারা তা করে দেয়ার নামে প্রতারণা করেনি। অন্যদিকে প্রতারক সাহাদাত হোসেন বিভিন্ন ব্যক্তিকে টার্গেট করে। তার গ্রুপের মোস্তফাকে মেজর বা কর্নেল পরিচয় দিয়ে ভুক্তভোগীদের নিয়ে আসে। সহযোগী জামাল হোসেনের দোকানে বসে প্রতারণার টাকা লেনদেন করে।

ভুক্তভোগী বজলুর রহমান বলেন, নাটোরের বড়াইগ্রামের বিএম কলেজের প্রিন্সিপাল তিনি। ঢাকায় আসার পথে প্রতারক আবদুস সাত্তারের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। তখন আবদুস সাত্তার নিজেকে প্রধানমন্ত্রীর সাবেক উপদেষ্টা প্রয়াত এইচটি ইমামের ভাতিজা বলে পরিচয় দেয়। শিক্ষা অফিসেও তার লোকজন আছে বলে জানায়। তার কলেজের ৮ শিক্ষকের এমপিও করে দেয়ার কথা বলে ৪ লাখ টাকা নেয়। এরপর তিনি বুঝতে পারেন তিনি প্রতারণার শিকার হয়েছেন। নাটোরের সিংড়া উপজেলার একটি স্কুলের পিওন হিসেবে গত ৮ বছর ধরে বিনা বেতনে কাজ করেন হায়দার আলী। প্রতারক আবদুস সাত্তার তার পাশের গ্রামের বাসিন্দা। তার এমপিওভুক্ত করে দেয়ার কথা বলে ৪ লাখ ২০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে প্রতারক আবদুস সাত্তার।

ভুত্তভোগী আনোয়ার হোসেন জানান, প্রতারক সাহাদাত তার ছেলেকে সেনাবাহিনীতে চাকরি দেয়ার কথা বলে ৭ লাখ টাকা নিয়েছে। টাকা নেয়ার পর তাদের সেনাবাহিনী চাকরির নিয়োগপত্রও দেখিয়েছে। পরে তারা বুঝতে পারেন তারা প্রতারণার শিকার হয়েছেন।

সিআইডির পুলিশ সুপার সামছুন্নাহার জানান, একটি অভিযোগ তদন্ত করতে গিয়ে তারা পৃথক দুটি প্রতারক চক্রের সন্ধান পান। প্রতারক আবদুস সাত্তার নিজেকে কর্নেল মেজর, পুলিশ কর্মকর্তা, বিভিন্ন মন্ত্রীদের ঘনিষ্ট বলে পরিচয় দেয়। তার গ্রুপের দুজনকে গ্রেপ্তার করেছি। আরও কয়েকজন সহযোগীকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। অন্যদিকে সাহাদাত গ্রুপের ৩ জনকে গ্রেপ্তার করলেও আরও কিছু সহযোগী আছে। তাদের মতো আরও একাধিক প্রতারক চক্র ধরতে আমাদের অভিযান চলছে।

পুলিশ সুপার সামছুন্নাহার জানান, দুই প্রতারক গ্রুপের প্রতারণার ধরন একই। দুই গ্রুপই ১ যুগের বেশি সময় ধরে প্রতারণা করে আসছে। সাহাদাত গ্রুপের সদস্যদের হাতে প্রতারণার শিকার ১১ ব্যক্তি আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। আবদুস সাত্তার গ্রুপের সদস্যদের হাতে প্রতারণার শিকার কিছু ব্যক্তিও আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। দুই গ্রুপ এ পর্যন্ত প্রায় দেড় থেকে দুই কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার তথ্য পেয়েছি। তদন্তে আরও ভুক্তভোগী পাওয়া যাবে। তখন হয়তো এরা কত ব্যক্তির কাছ থেকে কি পরিমাণ অর্থ হাতিয়েছে তা বেরিয়ে আসবে।

সিআইডি বলছে, এ প্রতারক চক্র সিআইডির পুলিশ সুপারের (প্রশাসনের) স্বাক্ষর জাল করে ভুয়া নিয়োগপত্র দিয়ে সিআইডিতে দুজন লোক পাঠিয়েছে। সিআইডিতে নিয়োগের কথা বলে তাদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে। সিআইডির নিয়োগপত্র নিয়ে ওই দুই ব্যক্তি সিআইডিতে আসে চাকরিতে যোগদান করতে। তখন বিষয়টি ধরা পড়ে।

সিআইডি বলছে, প্রতারণার টাকায় প্রতারক চক্র বিপুল পরিমাণ সম্পদ গড়েছেন। প্রতারক আবদুস সাত্তার, সাহাদাতের ব্যাংক হিসাবে বিপুল পরিমাণ অর্থের খোঁজ পাওয়া গেছে। এছাড়া তাদের নামে বিপুল পরিমাণ স্থাবর সম্পদ থাকারও তথ্য মিলেছে।

সিআইডি জানিয়েছে, প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে গতকাল পর্যন্ত প্রতারণার শিকার দুই ব্যক্তি মামলা করেছে। আরও ভুক্তভোগী মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এসব মামলায় প্রতারক চক্রকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড হেফাজতে আনা হবে। এ চক্রের সঙ্গে আরও কারা জড়িত তা খুঁজে বের করা হচ্ছে।