এক হাজার ৬২০ কোটি টাকার প্রকল্প, তিন বছরে কাজের অগ্রগতি ১০ শতাংশ

২০১৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি ‘চট্টগ্রাম মহানগরীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ, জলাবদ্ধতা নিরসন ও নিষ্কাশন উন্নয়ন প্রকল্প’ একনেক সভায় অনুমোদন হয়। প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে এক হাজার ৬২০ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। আগামী বছরের জুন মাসে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। পৌনে তিন বছরে কাজের অগ্রগতি মাত্র ১০ শতাংশ। প্রকল্পের সময় আছে আর মাত্র ৮ মাস। যার ফলে বিপাকে পড়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী তয়ন কুমার ত্রিপুরা বলেন, আগামীকাল এ বিষয়ে ভার্চুয়াল সভা রয়েছে। স্থানীয় সরকারমন্ত্রী ও পানিসম্পদমন্ত্রী মহোদয়সহ সরকারের ঊর্ধ্বতন ব্যক্তিরা উপস্থিত থাকবেন। আশা করছি, ওই সভা থেকে এ বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা আসতে পারে। তিনি বলেন, প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সকলের মতামত নিয়েই আমরা প্রকল্প নিয়েছি। প্রকল্প অনুমোদনের পরও বন্দর, নৌবাহিনী, সেনাবাহিনী, সিডিএ, সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করেছি। সব সংস্থার সমন্বয়ে প্রকল্পের কাজ এগোতে চাই।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, প্রকল্পে নেভাল একাডেমি গেট থেকে বিমানবন্দর ১৫নং খাল পর্যন্ত ৭ কিমি রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণ, ১৮ দশমিক ৯৬৫ কিলোমিটার ফ্লাড ওয়াল (বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ) নিমাণ করা হবে। এরমধ্যে ১৫নং খাল থেকে ড্রাইডক সীমানা পর্যন্ত চার দশমিক ৮৬৫ কিলোমিটার এবং ড্রাইডক থেকে বন্দর সীমানা প্রাচীর পর্যন্ত তিন দশমিক দুই কিলোমিটার। মূলত এই অংশটি হচ্ছে বন্দর কর্তৃপক্ষের আওতাধীন।

এদিকে পতেঙ্গা এলাকায় পাইলট প্রকল্প হিসেবে একটি অংশে রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণের কাজ শুরু করা হয়েছিল। বন্দরের পরামর্শে তা করা হয়। পরবর্তীতে তাও বন্ধ হয়ে যায়। বন্দর সীমানা ছাড়াও কালুরঘাট সেতু থেকে হাটহাজারির মদুনাঘাটের কাটাখালী খাল পর্যন্ত ছয় দশমিক ৫০ কিলোমিটার প্রতিরক্ষা বাঁধ নির্মাণ করা হবে।

প্রকল্প পরিচালক সেনাবাহিনীর কর্নেল কবিরুল ইসলাম বলেন, তিনটি খালে রেগুলেটর নির্মাণের কাজ চলছে। আরও ৫টি খালে রেগুলেটর নির্মাণের কাজ শুরু হবে। বন্দরের অনুমতি ছাড়া বন্দর এলাকায় কাজ করা যাচ্ছে না। এ বিষয়ে আলোচনা চলছে। তাই ওই অংশটি বাদ দিয়ে কালুরঘাট থেকে মদুনাঘাট পর্যন্ত অংশে ফ্লাডওয়াল নির্মাণের কাজ শুরু করেছি।

বন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, ১৫নং জেটি ঘাট থেকে নেভাল একাডেমি ঘাট পর্যন্ত বন্দরের অনেক গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা রয়েছে। বন্দরের সেবার মান বাড়ানো ও সহজ করার লক্ষ্যে নতুন নতুন প্রকল্প নেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে বন্দরের। এসব চিন্তা করে পানি উন্নয়ন বোর্ডের রিটেইনিং ওয়ালের নকশার পরিবর্তন আনার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। বন্দর সীমানা এলাকায় বাঁধ নির্মাণে যাতে জাহাজ থেকে পণ্য খালাসে বিঘœ সৃষ্টি যাতে না হয়, সেজন্য বিকল্প উপায় খুঁজে বের করার সুপারিশ করা হয়েছে।

নির্বাহী প্রকৌশলী তয়ন কুমার ত্রিপুরা আরও বলেন, স্থানীয় কাউন্সিলর, সেনাবাহিনী ও প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা ইতিমধ্যেই প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করেছেন। কাজও শুরু হবে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্মকর্তারা জানান, ৬টি খালের মুখে রেগুলেটর স্থাপনের কাজ শুরু হয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে ১৫নং খাল, নিজাম মার্কেট খাল, গুপ্ত খাল, নয়া রাস্তা খাল, সদরঘাট খাল, স্ট্যান্ড রোড খাল। এসব খালের মুখে সøুইস গেট স্থাপনের কাজ ছাড়া কর্ণফুলী নদীর পতেঙ্গা ও বন্দর এলাকায় রিটেইনিং ও ফ্লাড ওয়াল নির্মাণের কাজ শুরু করা যায়নি। 

বৃহস্পতিবার, ১৪ অক্টোবর ২০২১ , ২৯ আশ্বিন ১৪২৮ ০৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৩

চট্টগ্রামে জলাবদ্ধতা নিরসনে

এক হাজার ৬২০ কোটি টাকার প্রকল্প, তিন বছরে কাজের অগ্রগতি ১০ শতাংশ

নিরুপম দাশগুপ্ত, চট্টগ্রাম ব্যুরো

২০১৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি ‘চট্টগ্রাম মহানগরীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ, জলাবদ্ধতা নিরসন ও নিষ্কাশন উন্নয়ন প্রকল্প’ একনেক সভায় অনুমোদন হয়। প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে এক হাজার ৬২০ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। আগামী বছরের জুন মাসে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। পৌনে তিন বছরে কাজের অগ্রগতি মাত্র ১০ শতাংশ। প্রকল্পের সময় আছে আর মাত্র ৮ মাস। যার ফলে বিপাকে পড়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী তয়ন কুমার ত্রিপুরা বলেন, আগামীকাল এ বিষয়ে ভার্চুয়াল সভা রয়েছে। স্থানীয় সরকারমন্ত্রী ও পানিসম্পদমন্ত্রী মহোদয়সহ সরকারের ঊর্ধ্বতন ব্যক্তিরা উপস্থিত থাকবেন। আশা করছি, ওই সভা থেকে এ বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা আসতে পারে। তিনি বলেন, প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সকলের মতামত নিয়েই আমরা প্রকল্প নিয়েছি। প্রকল্প অনুমোদনের পরও বন্দর, নৌবাহিনী, সেনাবাহিনী, সিডিএ, সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করেছি। সব সংস্থার সমন্বয়ে প্রকল্পের কাজ এগোতে চাই।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, প্রকল্পে নেভাল একাডেমি গেট থেকে বিমানবন্দর ১৫নং খাল পর্যন্ত ৭ কিমি রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণ, ১৮ দশমিক ৯৬৫ কিলোমিটার ফ্লাড ওয়াল (বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ) নিমাণ করা হবে। এরমধ্যে ১৫নং খাল থেকে ড্রাইডক সীমানা পর্যন্ত চার দশমিক ৮৬৫ কিলোমিটার এবং ড্রাইডক থেকে বন্দর সীমানা প্রাচীর পর্যন্ত তিন দশমিক দুই কিলোমিটার। মূলত এই অংশটি হচ্ছে বন্দর কর্তৃপক্ষের আওতাধীন।

এদিকে পতেঙ্গা এলাকায় পাইলট প্রকল্প হিসেবে একটি অংশে রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণের কাজ শুরু করা হয়েছিল। বন্দরের পরামর্শে তা করা হয়। পরবর্তীতে তাও বন্ধ হয়ে যায়। বন্দর সীমানা ছাড়াও কালুরঘাট সেতু থেকে হাটহাজারির মদুনাঘাটের কাটাখালী খাল পর্যন্ত ছয় দশমিক ৫০ কিলোমিটার প্রতিরক্ষা বাঁধ নির্মাণ করা হবে।

প্রকল্প পরিচালক সেনাবাহিনীর কর্নেল কবিরুল ইসলাম বলেন, তিনটি খালে রেগুলেটর নির্মাণের কাজ চলছে। আরও ৫টি খালে রেগুলেটর নির্মাণের কাজ শুরু হবে। বন্দরের অনুমতি ছাড়া বন্দর এলাকায় কাজ করা যাচ্ছে না। এ বিষয়ে আলোচনা চলছে। তাই ওই অংশটি বাদ দিয়ে কালুরঘাট থেকে মদুনাঘাট পর্যন্ত অংশে ফ্লাডওয়াল নির্মাণের কাজ শুরু করেছি।

বন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, ১৫নং জেটি ঘাট থেকে নেভাল একাডেমি ঘাট পর্যন্ত বন্দরের অনেক গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা রয়েছে। বন্দরের সেবার মান বাড়ানো ও সহজ করার লক্ষ্যে নতুন নতুন প্রকল্প নেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে বন্দরের। এসব চিন্তা করে পানি উন্নয়ন বোর্ডের রিটেইনিং ওয়ালের নকশার পরিবর্তন আনার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। বন্দর সীমানা এলাকায় বাঁধ নির্মাণে যাতে জাহাজ থেকে পণ্য খালাসে বিঘœ সৃষ্টি যাতে না হয়, সেজন্য বিকল্প উপায় খুঁজে বের করার সুপারিশ করা হয়েছে।

নির্বাহী প্রকৌশলী তয়ন কুমার ত্রিপুরা আরও বলেন, স্থানীয় কাউন্সিলর, সেনাবাহিনী ও প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা ইতিমধ্যেই প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করেছেন। কাজও শুরু হবে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্মকর্তারা জানান, ৬টি খালের মুখে রেগুলেটর স্থাপনের কাজ শুরু হয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে ১৫নং খাল, নিজাম মার্কেট খাল, গুপ্ত খাল, নয়া রাস্তা খাল, সদরঘাট খাল, স্ট্যান্ড রোড খাল। এসব খালের মুখে সøুইস গেট স্থাপনের কাজ ছাড়া কর্ণফুলী নদীর পতেঙ্গা ও বন্দর এলাকায় রিটেইনিং ও ফ্লাড ওয়াল নির্মাণের কাজ শুরু করা যায়নি।