ঢাকাকে পুঁজি করে বিভিন্ন সংস্থার সাংঘর্ষিক পরিকল্পনার কারণে নগরবাসীর দুর্ভোগ দিনে দিনে বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ঢাদসিক) মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস।
তিনি বলেন, ‘এটা খুবই অনাকাক্সিক্ষত এবং দুঃখজনক। কমলাপুরে জলাবদ্ধতা নিরসনে যে কার্যক্রম পরিদর্শনে এসেছি এখানেও নতুন করে এমআরটি-৬ বা মেট্রোরেল লাইন স্থাপনের জন্য তারা আবেদন করেছে। এখানে দেখা যাচ্ছে যে, আমাদের পরিকল্পনার সঙ্গে তাদের পরিকল্পনা সাংঘর্ষিক হচ্ছে।’
গতকাল রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে টিটিপাড়া পর্যন্ত জলাবদ্ধতা নিরসনে চলমান উন্নয়ন কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ সব কথা বলেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমডোর সিতওয়াত নাঈম, প্রধান প্রকৌশলী সালেহ আহম্মেদ, সচিব আকরামুজ্জামান, প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা রাসেল সাবরিন, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা আরিফুল হকসহ সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত আসনের মহিলা কাউন্সিলররা।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ঢাদসিক মেয়র বলেন, ‘শ্যামপুর শিল্পাঞ্চলের জন্য আমরা বৃহৎ কার্যক্রম হাতে নিয়েছি। কিন্তু অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক যে, পদ্মা রেলসেতুর যে কার্যক্রম, সেই কার্যক্রমের আওতায় যেখান থেকে পানি নিষ্কাশন হতো, সেই পানি নিষ্কাশনের মুখগুলো বন্ধ করে দিয়েছে, যার কারণে এখন পুরো শ্যামপুর শিল্পাঞ্চল এই সময়েও জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। তাহলে বর্ষা মৌসুমে কী হতে পারে। সেটা চিন্তা করলেই আতঙ্ক পেয়ে বসে।’
ঢাদসিক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, ‘আমরা তাদেরকে বার বার বলেছি, তাদের অনুরোধ করেছি। আমাদের কার্যক্রম শেষ না হওয়া পর্যন্ত তারা যেন অন্ততঃপক্ষে সেখানে কালভার্ট করে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করে। কিন্তু তারা কোণ নজর দিচ্ছে না।’
‘এভাবে বিভিন্ন সংস্থা ঢাকাকে পুঁজি করে অপরিকল্পিতভাবে আমাদের সঙ্গে কোন সমন্বয় ছাড়া কাজ করছে। এতে ঢাকাবাসীর দুর্ভোগ দিনে দিনে শুধু বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমি আবারও সবাইকে অনুরোধ করব, তাদের পরিকল্পনা প্রণয়নের আগেই যেন আমাদের সঙ্গে সমন্বয় করেন। আমাদের মহাপরিকল্পনায় আওতায় আমাদের কার্যক্রমের সঙ্গে সমন্বয় করেই যেন তারা প্রকল্প নেয়।’
‘না হলে এই সংঘর্ষ হবে এবং ঢাকাবাসী এতে ভুক্তভোগী হচ্ছে। এরই মাঝে আমরা প্রায় নিজস্ব অর্থায়নে ৫০ কোটি টাকার প্রকল্প নিয়েছি, যাতে করে আমরা সেই পানি নিষ্কাশনে বুড়ীগঙ্গা পর্যন্ত নিয়ে যেতে পারি। এটা সময় সাপেক্ষ। আমাদের দরপত্র চলমান আছে। আবারও তাদের অনুরোধ করব। আগামী ছয় মাসের জন্য অন্তত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করে দেয় খুলে দেয়, যাতে করে ভুক্তভোগীরা কিছুটা হলেও স্বস্তি পায়।’
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে ঢাদসিক মেয়র শেখ তাপস বলেন, ‘মেট্রোরেল মতিঝিল শাপলা চত্বর পর্যন্ত যেটা এসেছে, সেটা এখন বর্ধিত করে কমলাপুর স্টেশন পর্যন্ত আসবে। এটা নতুন পরিকল্পনা নিয়েছে। কিন্তু সেটা যে আনবে, তারা যে পিয়ার দেবে বা কলাম দেবে, সেগুলো আমাদের যে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা, সেটার সঙ্গে কোনভাবেই যাতে সাংঘর্ষিক না হয়, সেটা আমরা বলেছি। কারণ, ঢাকাবাসীকে জলাবদ্ধতায় রেখে আমরা ওপর দিয়ে শুধু কাজ করলে তো আর হবে না।’
‘এটা নিয়ে সবার সঙ্গে সমন্বয় করে সামষ্টিকভাবে কাজ করতে হবে। উনারা বলেছিল, আমরা যে নর্দমা করছি সেই নদর্মায় তাদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হবে না। কিন্তু, আজকে যখন তারা সরেজমিনে আসলো, তখন দেখল যে, এটা সাংঘর্ষিক হচ্ছে। সুতরাং ঘরে বসে তারা পরামর্শক দিয়ে তারা যে নকশা করে, এগুলো আসলে কিন্তু কার্যকর না। সরেজমিনে এসে প্রত্যেকটা সংস্থা বিশেষ করে আমাদের সঙ্গে সমন্বয় করা ছাড়া যদি ঘরে বসে নকশা করে, তাহলে তা কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য হবে না।’
বৃহস্পতিবার, ১৪ অক্টোবর ২০২১ , ২৯ আশ্বিন ১৪২৮ ০৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৩
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক
ঢাকাকে পুঁজি করে বিভিন্ন সংস্থার সাংঘর্ষিক পরিকল্পনার কারণে নগরবাসীর দুর্ভোগ দিনে দিনে বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ঢাদসিক) মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস।
তিনি বলেন, ‘এটা খুবই অনাকাক্সিক্ষত এবং দুঃখজনক। কমলাপুরে জলাবদ্ধতা নিরসনে যে কার্যক্রম পরিদর্শনে এসেছি এখানেও নতুন করে এমআরটি-৬ বা মেট্রোরেল লাইন স্থাপনের জন্য তারা আবেদন করেছে। এখানে দেখা যাচ্ছে যে, আমাদের পরিকল্পনার সঙ্গে তাদের পরিকল্পনা সাংঘর্ষিক হচ্ছে।’
গতকাল রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে টিটিপাড়া পর্যন্ত জলাবদ্ধতা নিরসনে চলমান উন্নয়ন কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ সব কথা বলেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমডোর সিতওয়াত নাঈম, প্রধান প্রকৌশলী সালেহ আহম্মেদ, সচিব আকরামুজ্জামান, প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা রাসেল সাবরিন, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা আরিফুল হকসহ সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত আসনের মহিলা কাউন্সিলররা।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ঢাদসিক মেয়র বলেন, ‘শ্যামপুর শিল্পাঞ্চলের জন্য আমরা বৃহৎ কার্যক্রম হাতে নিয়েছি। কিন্তু অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক যে, পদ্মা রেলসেতুর যে কার্যক্রম, সেই কার্যক্রমের আওতায় যেখান থেকে পানি নিষ্কাশন হতো, সেই পানি নিষ্কাশনের মুখগুলো বন্ধ করে দিয়েছে, যার কারণে এখন পুরো শ্যামপুর শিল্পাঞ্চল এই সময়েও জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। তাহলে বর্ষা মৌসুমে কী হতে পারে। সেটা চিন্তা করলেই আতঙ্ক পেয়ে বসে।’
ঢাদসিক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, ‘আমরা তাদেরকে বার বার বলেছি, তাদের অনুরোধ করেছি। আমাদের কার্যক্রম শেষ না হওয়া পর্যন্ত তারা যেন অন্ততঃপক্ষে সেখানে কালভার্ট করে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করে। কিন্তু তারা কোণ নজর দিচ্ছে না।’
‘এভাবে বিভিন্ন সংস্থা ঢাকাকে পুঁজি করে অপরিকল্পিতভাবে আমাদের সঙ্গে কোন সমন্বয় ছাড়া কাজ করছে। এতে ঢাকাবাসীর দুর্ভোগ দিনে দিনে শুধু বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমি আবারও সবাইকে অনুরোধ করব, তাদের পরিকল্পনা প্রণয়নের আগেই যেন আমাদের সঙ্গে সমন্বয় করেন। আমাদের মহাপরিকল্পনায় আওতায় আমাদের কার্যক্রমের সঙ্গে সমন্বয় করেই যেন তারা প্রকল্প নেয়।’
‘না হলে এই সংঘর্ষ হবে এবং ঢাকাবাসী এতে ভুক্তভোগী হচ্ছে। এরই মাঝে আমরা প্রায় নিজস্ব অর্থায়নে ৫০ কোটি টাকার প্রকল্প নিয়েছি, যাতে করে আমরা সেই পানি নিষ্কাশনে বুড়ীগঙ্গা পর্যন্ত নিয়ে যেতে পারি। এটা সময় সাপেক্ষ। আমাদের দরপত্র চলমান আছে। আবারও তাদের অনুরোধ করব। আগামী ছয় মাসের জন্য অন্তত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করে দেয় খুলে দেয়, যাতে করে ভুক্তভোগীরা কিছুটা হলেও স্বস্তি পায়।’
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে ঢাদসিক মেয়র শেখ তাপস বলেন, ‘মেট্রোরেল মতিঝিল শাপলা চত্বর পর্যন্ত যেটা এসেছে, সেটা এখন বর্ধিত করে কমলাপুর স্টেশন পর্যন্ত আসবে। এটা নতুন পরিকল্পনা নিয়েছে। কিন্তু সেটা যে আনবে, তারা যে পিয়ার দেবে বা কলাম দেবে, সেগুলো আমাদের যে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা, সেটার সঙ্গে কোনভাবেই যাতে সাংঘর্ষিক না হয়, সেটা আমরা বলেছি। কারণ, ঢাকাবাসীকে জলাবদ্ধতায় রেখে আমরা ওপর দিয়ে শুধু কাজ করলে তো আর হবে না।’
‘এটা নিয়ে সবার সঙ্গে সমন্বয় করে সামষ্টিকভাবে কাজ করতে হবে। উনারা বলেছিল, আমরা যে নর্দমা করছি সেই নদর্মায় তাদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হবে না। কিন্তু, আজকে যখন তারা সরেজমিনে আসলো, তখন দেখল যে, এটা সাংঘর্ষিক হচ্ছে। সুতরাং ঘরে বসে তারা পরামর্শক দিয়ে তারা যে নকশা করে, এগুলো আসলে কিন্তু কার্যকর না। সরেজমিনে এসে প্রত্যেকটা সংস্থা বিশেষ করে আমাদের সঙ্গে সমন্বয় করা ছাড়া যদি ঘরে বসে নকশা করে, তাহলে তা কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য হবে না।’