বাগাতিপাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

জেনারেটর নেই দীর্ঘদিন : বিদ্যুৎ চলে গেলে ভরসা টর্চের আলো!

বিদ্যুৎ চলে গেলে অন্ধকারে ডুবে থাকে বাগাতিপাড়া উপজেলার ৩১ শয্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। হাসপাতালে জেনারেটর না থাকায় আগে বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহার করা হতো। সেই সোলার প্যানেলটিও এখন নষ্ট। তাই রাতে বিদ্যুৎ চলে গেলে হাসপাতালের পুরুষ ও মহিলা ওয়াড দুটি অন্ধকারে ডুবে থাকে। চিকিৎসক ও নার্সদের টর্চলাইটের আলো দিয়েই চিকিৎসাসেবার কাজ চালিয়ে যেতে হয়। ফলে দীর্ঘ দিন ধরেই এই ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে ভর্তি রোগীদের।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, জেনারেটর না থাকায় বিদ্যুৎ চলে গেলে হাসপাতালে আলোর জন্য বিকল্প হিসেবে সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহার করা হতো। কিন্তু তিন মাস আগে সেটিও নষ্ট হয়ে যাওয়ায় এখন আর ব্যবহার করা যাচ্ছে না। তাই অন্ধকারেই থাকতে হচ্ছে রোগীদের। তবে রোগীর আতœীয়-স্বজনরা মোবাইলের আলো জ্বালিয়ে বা টর্চ লাইটের আলো ব্যবহার করে থাকেন। আর নার্স ও চিকিৎসকরা টর্চ লাইটের আলো দিয়ে কাজ চালিয়ে নেন। তবে ৩১ শয্যার এই হাসপাতাল ৫০ শয্যায় উন্নীতকরনে নতুন ভবনের কাজ শেষের দিকে। ভবনটি হস্তান্তর হলে হয়তো এই সমস্যা আর থাকবেনা। সম্প্রতি এক রাতে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার পরে হাসপাতালের দুটি ওয়ার্ডের কোনোটিতেই আলোর ব্যবস্থা নেই। সৌরবিদ্যুতের লাইটগুলোও জ্বলছেনা। অন্ধকারের মধ্যেই রোগী ও তাদের স্বজনরা বসে আছেন। পার্শ্ববর্তী উপজেলা লালপুর থেকে এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা ষাটোর্ধ্ব বয়সী নূর মহাম্মদ বলেন, শ্বাসকষ্ট জনিত কারণে ৫ দিন আগে এই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। প্রথম দিন থেকেই দেখেছি, রাতে বিদ্যুৎ চলে গেলে হাসপাতালে আলোর কোনো ব্যবস্থা থাকেনা। অন্ধকারেই থাকতে হয়।

উপজেলার মুরাদপুর গ্রামের রাজিয়া বেগম জানান, ৬ দিন ধরে তিনি তার মাকে নিয়ে এই হাসপাতালে আছেন। দিনের বেলা বিদ্যুৎ না থাকলে গরমে অস্থির হয়ে পড়তে হয়। আবার রাতের বেলায় অন্ধকারে মোবাইলের আলো জ্বালিয়ে থাকতে হয়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে হাসপাতালের একজন স্টাফ বলেন, জেনারেটর না থাকায় আগে বিদ্যুত চলে গেলে বিকল্প হিসেবে সৌরবিদ্যুতের আলো জ্বালানো হতো। তাও গত তিন মাস ধরে নষ্ট হয়ে যাওয়ায় এখন অন্ধকারেই থাকতে হয়। কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েও কোনো লাভ হয়না।

স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা রতন কুমার সাহা বলেন, আমি এই হাসপাতালে আসার আগেই এই অবস্থা ছিল। আর হাসপাতালটির নতুন ভবনের কাজ চলমান থাকায় পুরাতন ভবনে কিছুটা ত্রুটি রয়েছে। নতুন ভবনটি হস্তান্তর হয়ে গেলে হয়তো এই সমস্যা আর থাকবেনা।

এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রিয়াংকা দেবী পাল বলেন, আমার জানা মতে বর্তমানে হাসপাতালটিতে জেনারেটরের কোনো বরাদ্দ নাই। তবে নতুন ভবনটির কাজ প্রায় শেষ, অল্পদিনের মধ্যেই হাতে পাওয়া যাবে। তখন আর কোনো সমস্যা থাকবেনা।

শনিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২১ , ৩১ আশ্বিন ১৪২৮ ০৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৩

বাগাতিপাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

জেনারেটর নেই দীর্ঘদিন : বিদ্যুৎ চলে গেলে ভরসা টর্চের আলো!

প্রতিনিধি, বাগাতিপাড়া (নাটোর)

image

বিদ্যুৎ চলে গেলে অন্ধকারে ডুবে থাকে বাগাতিপাড়া উপজেলার ৩১ শয্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। হাসপাতালে জেনারেটর না থাকায় আগে বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহার করা হতো। সেই সোলার প্যানেলটিও এখন নষ্ট। তাই রাতে বিদ্যুৎ চলে গেলে হাসপাতালের পুরুষ ও মহিলা ওয়াড দুটি অন্ধকারে ডুবে থাকে। চিকিৎসক ও নার্সদের টর্চলাইটের আলো দিয়েই চিকিৎসাসেবার কাজ চালিয়ে যেতে হয়। ফলে দীর্ঘ দিন ধরেই এই ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে ভর্তি রোগীদের।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, জেনারেটর না থাকায় বিদ্যুৎ চলে গেলে হাসপাতালে আলোর জন্য বিকল্প হিসেবে সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহার করা হতো। কিন্তু তিন মাস আগে সেটিও নষ্ট হয়ে যাওয়ায় এখন আর ব্যবহার করা যাচ্ছে না। তাই অন্ধকারেই থাকতে হচ্ছে রোগীদের। তবে রোগীর আতœীয়-স্বজনরা মোবাইলের আলো জ্বালিয়ে বা টর্চ লাইটের আলো ব্যবহার করে থাকেন। আর নার্স ও চিকিৎসকরা টর্চ লাইটের আলো দিয়ে কাজ চালিয়ে নেন। তবে ৩১ শয্যার এই হাসপাতাল ৫০ শয্যায় উন্নীতকরনে নতুন ভবনের কাজ শেষের দিকে। ভবনটি হস্তান্তর হলে হয়তো এই সমস্যা আর থাকবেনা। সম্প্রতি এক রাতে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার পরে হাসপাতালের দুটি ওয়ার্ডের কোনোটিতেই আলোর ব্যবস্থা নেই। সৌরবিদ্যুতের লাইটগুলোও জ্বলছেনা। অন্ধকারের মধ্যেই রোগী ও তাদের স্বজনরা বসে আছেন। পার্শ্ববর্তী উপজেলা লালপুর থেকে এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা ষাটোর্ধ্ব বয়সী নূর মহাম্মদ বলেন, শ্বাসকষ্ট জনিত কারণে ৫ দিন আগে এই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। প্রথম দিন থেকেই দেখেছি, রাতে বিদ্যুৎ চলে গেলে হাসপাতালে আলোর কোনো ব্যবস্থা থাকেনা। অন্ধকারেই থাকতে হয়।

উপজেলার মুরাদপুর গ্রামের রাজিয়া বেগম জানান, ৬ দিন ধরে তিনি তার মাকে নিয়ে এই হাসপাতালে আছেন। দিনের বেলা বিদ্যুৎ না থাকলে গরমে অস্থির হয়ে পড়তে হয়। আবার রাতের বেলায় অন্ধকারে মোবাইলের আলো জ্বালিয়ে থাকতে হয়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে হাসপাতালের একজন স্টাফ বলেন, জেনারেটর না থাকায় আগে বিদ্যুত চলে গেলে বিকল্প হিসেবে সৌরবিদ্যুতের আলো জ্বালানো হতো। তাও গত তিন মাস ধরে নষ্ট হয়ে যাওয়ায় এখন অন্ধকারেই থাকতে হয়। কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েও কোনো লাভ হয়না।

স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা রতন কুমার সাহা বলেন, আমি এই হাসপাতালে আসার আগেই এই অবস্থা ছিল। আর হাসপাতালটির নতুন ভবনের কাজ চলমান থাকায় পুরাতন ভবনে কিছুটা ত্রুটি রয়েছে। নতুন ভবনটি হস্তান্তর হয়ে গেলে হয়তো এই সমস্যা আর থাকবেনা।

এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রিয়াংকা দেবী পাল বলেন, আমার জানা মতে বর্তমানে হাসপাতালটিতে জেনারেটরের কোনো বরাদ্দ নাই। তবে নতুন ভবনটির কাজ প্রায় শেষ, অল্পদিনের মধ্যেই হাতে পাওয়া যাবে। তখন আর কোনো সমস্যা থাকবেনা।