বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। বেশ কিছুদিন ধরেই থেমে থেমে জ্বর আসছে। এ কারণে খাবারে তার তেমন কোন রুচি নেই। গত কয়েক দিন ধরে তিনি খুবই অল্প পরিমাণে খাবার খাচ্ছেন বলে জানা গেছে।

পরিবার ও চিকিৎসক সূত্রে জানা গেছে, গত ১২ অক্টোবর জ্বর নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন খালেদা জিয়া। এরপর তার আল্ট্রাসনোগ্রামসহ বেশ কিছু পরীক্ষা করা হয়েছে। মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা পরীক্ষার রিপোর্টগুলো পর্যালোচনা করে সে অনুযায়ী ওষুধ দিয়েছেন। কিন্তু, তারপরও মাঝে মাঝে তার শরীরে তাপমাত্রা ওঠা-নামা করছে বলে জানান তার চিকিৎসক। এ কারণে খাবারের তেমন কোন রুচি নেই তার।

গতকাল খালেদা জিয়ার বোন সেলিমা ইসলাম বলেন, তার সঙ্গে দেখা করতে যাইনি। বয়সের কারণে আমাদের হাসপাতালে যেতে নিষেধ করছে। গতকাল আমার ভাইয়ের স্ত্রী দেখা করে এসেছে। এখনও তার (খালেদা জিয়া) শরীরে জ্বর আছে। খাবারের রুচি একদমই নেই।’

চিকিৎসকদের নির্দেশ অনুযায়ী খালেদা জিয়া তার নিজ বাসার বাবুর্চির রান্না করা খাবারই খাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন সেলিমা। তিনি বলেন, এমনিতে তিনি খুব কম খাবার খান। জ্বরের কারণে গত কয়েকদিন একবারেই কম খাবার খাচ্ছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক খালেদা জিয়ার এক ব্যক্তিগত চিকিৎসক বলেন, আমি গতকাল ম্যাডামকে দেখে এসেছি। ধীরে ধীরে জ্বর কমে আসলেও তিনি অন্য অনেক রোগে আক্রান্ত। এ জন্য গত দুই দিনে তার বেশ কিছু পরীক্ষা করানো হয়েছে। কিছু পরীক্ষার রিপোর্ট হাতেও পেয়েছি। সেই অনুযায়ী ওষুধও দেয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, খালেদা জিয়ার বয়স এবং শারীরিক অসুস্থতা বিবেচনায় নিলে দেশে নয়, এখন তার বিদেশে চিকিৎসা প্রয়োজন। একসঙ্গে অনেকগুলো রোগের চিকিৎসার জন্য যে ধরনের আধুনিক মেডিকেল সেন্টার দরকার, আমাদের সেটা নেই।

এক প্রশ্নের জবাবে এই চিকিৎসক বলেন, আমাদের কাজ হচ্ছে চিকিৎসা দেয়া। তাকে চিকিৎসার জন্য বিদেশ পাঠানো হবে কি না- সেটা তার পরিবার ও সরকারের বিষয়। এখানে চিকিৎসক হিসেবে আমাদের কিছু করার নেই।

খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য পাঠাতে নতুন করে সরকারের কাছে আবেদন করা হবে কি না জানতে চাইলে বোন সেলিমা ইসলাম বলেন, ‘আমরা দুই দুইবার সরকারের কাছে আবেদন করেছি। একবার আমার ভাই শামীম ইস্কান্দার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর অফিসে গিয়ে দেখা করেও এসেছেন। তারপরও তো অনুমতি দেয়নি।

তিনি আরও বলেন, ‘এখন তো তার (খালেদা জিয়া) সঙ্গে আমার কথা হয়নি। তার কী মতামত, সেটা না নিয়ে তো কিছু করা যাবে না। মতামত নেয়ার পর এ বিষয়ে চিন্তা করা যেতে পারে।

এদিকে, গত ১২ অক্টোবর দ্বিতীয় দফায় চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বর্তমানে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।