সিটিং সার্ভিসের ভাড়া নৈরাজ্য বন্ধের দাবি যাত্রী কল্যাণ সমিতির

গণপরিবহনে ভাড়া নৈরাজ্য বন্ধে ১৩ দফা দাবি জানিয়েছেন যাত্রী কল্যাণ সমিতি। গতকাল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য বন্ধ ও যাত্রীদের অপমান, অপদস্থ করার প্রতিবাদে এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানান সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী। সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন, অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আনু মোহাম্মদ, ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মোশাহিদা ও সুলতানা, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি আবু জাফর সূর্য প্রমুখ।

সংবাদ সম্মেলনে অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আনু মোহাম্মদ বলেন, ‘সরকার জ¦ালানি তেলে ৭ বছরে মুনাফা করেছে ৪৩ হাজার কোটি টাকা। সেটা টাকা দিয়ে ২০ বছর জ¦ালানি তেলে ভর্তুকি দেয়া যেত। পৃথিবীর সব দেশের চেয়ে বহুগুণ বেশি দামে সড়ক, সেতু নির্মাণ ও বেশি দামে কেনাকাটার অর্থ যোগান দিতে তেলের দাম বাড়িয়ে গণপরিবহনে নৈরাজ্যের সুযোগ করে দিয়েছে সরকার। তেলের দামের চেয়ে বেশি ভাড়া দিতে গিয়ে যাত্রীদের নাভিশ^াস উঠছে।’

সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ‘ঢাকার পরিবহন মালিক সমিতির নেতারা বার বার ঘোষণা দিয়েও কথিত সিটিং সার্ভিস বন্ধ-চালুর ইঁদুর-বিড়াল খেলায় মেতে উঠেছে। এতে বলির পাঁঠায় পিষ্ট হচ্ছে যাত্রীসাধারণ। নানা অনিয়ম ও অযৌক্তিক, ভুয়া হিসাব দেখিয়ে তেলের দামের চেয়েও কয়েকগুণ বাড়তি ভাড়া বাড়িয়ে নিয়ে এখন রুটে রুটে বাস বন্ধ করে যাত্রীদের জিম্মি করে আরও ৩ থেকে ৪ গুণ বাড়তি ভাড়া আদায়ের পাঁয়তারা করছে বলে অভিযোগ করেন যাত্রী সমিতির নেতারা।’

তাদের দাবিগুলো হলো- বিআরটিএ’র বাস ভাড়ার তালিকা প্রতিটি বাসে স্থায়ীভাবে লাগানো, সরকার নির্ধারিত ভাড়া আদায়ের বিষয় নিশ্চিত করা, যাত্রীকে যাতে কোনভাবে অপমান অপদস্থ হতে না হয়, তার জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা জারি, সিটিং সার্ভিসের নামে ভাড়া-ডাকাতি বন্ধে শুধু মৌখিক ঘোষণা নয়, কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে, ৭০ শতাংশ গড় বোঝাই যাত্রী নিয়ে সরকার নির্ধারিত ভাড়ায় বাস চলাচল নিশ্চিত করা ও ছাত্রছাত্রীদের হাফ ভাড়া নিশ্চিত করতে হবে। আর সিটিং সার্ভিসবিহীন বাসে দাঁড়ানো যাত্রীদের হাফ ভাড়া নিতে হবে।

হিউম্যান হলার, লেগুনা, টেম্পু, অটোরিকশায় ভাড়া হার গ্রহণ করা, ভাড়া নির্ধারণ কমিটিতে যাত্রী প্রতিনিধি রাখা, সর্বনিম্ন বাস ভাড়া ২ কিলোমিটার পর্যন্ত ৫ টাকা নির্ধারণ করে ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীর জন্য আলাদা আলাদা ভাড়া পুনর্নির্ধারণ করা, অতিরিক্ত ভাড়া নেয়ায় বাস কোম্পানির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া, দূরপাল্লার রুটে ভাড়া নৈরাজ্য বন্ধে কিলোমিটার চুরি ও ভাড়ার তালিকা জালিয়াতি বন্ধে ব্যবস্থা, দৈনিক চুক্তিতে চালক-হেলপারের কাছে বাস ইজারা দেয়া সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করা, গণপরিবহনে চাঁদাবাজি, পুলিশের হয়রানি বন্ধ করা ও গণপরিবহন বন্ধ করে দিয়ে যাত্রীদের জিম্মি করার মতো আইনবিরোধী কর্মকা- বন্ধ করতে হবে এবং সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।

শুক্রবার, ১৯ নভেম্বর ২০২১ , ৪ অগ্রহায়ণ ১৪২৮ ১৩ রবিউস সানি ১৪৪৩

সিটিং সার্ভিসের ভাড়া নৈরাজ্য বন্ধের দাবি যাত্রী কল্যাণ সমিতির

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

গণপরিবহনে ভাড়া নৈরাজ্য বন্ধে ১৩ দফা দাবি জানিয়েছেন যাত্রী কল্যাণ সমিতি। গতকাল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য বন্ধ ও যাত্রীদের অপমান, অপদস্থ করার প্রতিবাদে এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানান সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী। সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন, অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আনু মোহাম্মদ, ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মোশাহিদা ও সুলতানা, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি আবু জাফর সূর্য প্রমুখ।

সংবাদ সম্মেলনে অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আনু মোহাম্মদ বলেন, ‘সরকার জ¦ালানি তেলে ৭ বছরে মুনাফা করেছে ৪৩ হাজার কোটি টাকা। সেটা টাকা দিয়ে ২০ বছর জ¦ালানি তেলে ভর্তুকি দেয়া যেত। পৃথিবীর সব দেশের চেয়ে বহুগুণ বেশি দামে সড়ক, সেতু নির্মাণ ও বেশি দামে কেনাকাটার অর্থ যোগান দিতে তেলের দাম বাড়িয়ে গণপরিবহনে নৈরাজ্যের সুযোগ করে দিয়েছে সরকার। তেলের দামের চেয়ে বেশি ভাড়া দিতে গিয়ে যাত্রীদের নাভিশ^াস উঠছে।’

সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ‘ঢাকার পরিবহন মালিক সমিতির নেতারা বার বার ঘোষণা দিয়েও কথিত সিটিং সার্ভিস বন্ধ-চালুর ইঁদুর-বিড়াল খেলায় মেতে উঠেছে। এতে বলির পাঁঠায় পিষ্ট হচ্ছে যাত্রীসাধারণ। নানা অনিয়ম ও অযৌক্তিক, ভুয়া হিসাব দেখিয়ে তেলের দামের চেয়েও কয়েকগুণ বাড়তি ভাড়া বাড়িয়ে নিয়ে এখন রুটে রুটে বাস বন্ধ করে যাত্রীদের জিম্মি করে আরও ৩ থেকে ৪ গুণ বাড়তি ভাড়া আদায়ের পাঁয়তারা করছে বলে অভিযোগ করেন যাত্রী সমিতির নেতারা।’

তাদের দাবিগুলো হলো- বিআরটিএ’র বাস ভাড়ার তালিকা প্রতিটি বাসে স্থায়ীভাবে লাগানো, সরকার নির্ধারিত ভাড়া আদায়ের বিষয় নিশ্চিত করা, যাত্রীকে যাতে কোনভাবে অপমান অপদস্থ হতে না হয়, তার জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা জারি, সিটিং সার্ভিসের নামে ভাড়া-ডাকাতি বন্ধে শুধু মৌখিক ঘোষণা নয়, কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে, ৭০ শতাংশ গড় বোঝাই যাত্রী নিয়ে সরকার নির্ধারিত ভাড়ায় বাস চলাচল নিশ্চিত করা ও ছাত্রছাত্রীদের হাফ ভাড়া নিশ্চিত করতে হবে। আর সিটিং সার্ভিসবিহীন বাসে দাঁড়ানো যাত্রীদের হাফ ভাড়া নিতে হবে।

হিউম্যান হলার, লেগুনা, টেম্পু, অটোরিকশায় ভাড়া হার গ্রহণ করা, ভাড়া নির্ধারণ কমিটিতে যাত্রী প্রতিনিধি রাখা, সর্বনিম্ন বাস ভাড়া ২ কিলোমিটার পর্যন্ত ৫ টাকা নির্ধারণ করে ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীর জন্য আলাদা আলাদা ভাড়া পুনর্নির্ধারণ করা, অতিরিক্ত ভাড়া নেয়ায় বাস কোম্পানির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া, দূরপাল্লার রুটে ভাড়া নৈরাজ্য বন্ধে কিলোমিটার চুরি ও ভাড়ার তালিকা জালিয়াতি বন্ধে ব্যবস্থা, দৈনিক চুক্তিতে চালক-হেলপারের কাছে বাস ইজারা দেয়া সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করা, গণপরিবহনে চাঁদাবাজি, পুলিশের হয়রানি বন্ধ করা ও গণপরিবহন বন্ধ করে দিয়ে যাত্রীদের জিম্মি করার মতো আইনবিরোধী কর্মকা- বন্ধ করতে হবে এবং সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।