হামাস এবার যুক্তরাজ্যের নিষিদ্ধ সংগঠনের তালিকায়

ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্রের পর এবার ফিলিস্তিনের রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাসকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করল যুক্তরাজ্যও। দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রীতি প্যাটেল এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছেন।

বিবৃতিতে যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘হামাসের সন্ত্রাসী তৎপরতা চালানোর ক্ষমতা ও অতীত রেকর্ড- দুটোই আছে। তাছাড়া, সন্ত্রাসী তৎপরতাবিষয়ক প্রশিক্ষণ দেয়ার অভিযোগ আছে এই গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে। ‘এ কারণকে বিবেচনায় রেখে এবং যুক্তরাজ্যের সন্ত্রাসবিরোধী আইনের প্রতি পূর্ণ সম্মান জানিয়ে সরকার হামাসকে ব্রিটেনে নিষিদ্ধ সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করছে।’ ‘এখন থেকে, ব্রিটেনে বসবাসরত কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠী যদি যুক্তরাজ্যে হামাসের প্রতি তাদের সমর্থন প্রচার করে, এই দলের পতাকা ওড়ায় কিংবা তাদের সমর্থনে সভা-সমিতির আয়োজন করে, সেক্ষেত্রে দেশের আইন অনুযায়ী এসব কর্মকা- অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হবে।’ ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসের পূর্ণ নাম ইসলামিক রেসিসট্যান্স মুভমেন্ট। রাজনৈতিক ও সামরিক- দুই শাখাই রয়েছে এই সংগঠনের।

১৯৮৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হামাস আদর্শগতভাবে আলাপ-আলোচনা ও বৈঠকের ভিত্তিতে ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংকট সমাধানের বিরোধী। তার পরিবর্তে এই গোষ্ঠী বিশ্বাস করে, সশস্ত্র সংগ্রামের মধ্যেই লুকিয়ে আছে ফিলিস্তিনের জনগণের মুক্তি ও স্বাধীন-সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের সম্ভাবনা।

এতদিন পর্যন্ত হামাসের সামরিক বাহিনী ইজ্জ আল দিন আল কাসাম ব্রিগেড নিষিদ্ধ ছিল যুক্তরাজ্যে। এবার পুরো গোষ্ঠীকেই নিষিদ্ধ ঘোষণা করল দেশটি।

হামাসের রাজনৈতিক শাখার অন্যতম নেতা সামি আবু জুহরি বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এ সম্পর্কিত প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘ইসরায়েলের ব্ল্যাকমেইল ও কলকাঠি নাড়ানোর কারণেই যুক্তরাজ্য এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং এর মাধ্যমে দেশটি গাজায় ইসরায়েলি দখলদারিত্বের প্রতি পূর্ণ পক্ষপাতিত্ব দেখিয়েছে।’

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেত বিৃটেনের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ‘হামাস একটি সন্ত্রাসী সংগঠন। তারা জঙ্গি তৎপরতা চালানো ছাড়া আর কিছু জানে না।’

দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়ার লাপিদও ব্রিটেনের এই সিদ্ধান্তে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেছেন, ‘যুক্তরাজ্যের এই সিদ্ধান্ত দুই দেশের সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করবে।’

যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হওয়ার আগে দেশটির আন্তর্জাতিক উন্নয়নবিষয়ক মন্ত্রী ছিলেন প্রীতি প্যাটেল; কিন্তু ২০১৭ সালে এক ব্যক্তিগত অবকাশের সময়ে যুক্তরাজ্যে কয়েকজন জ্যেষ্ঠ ইসরায়েলি নেতার সঙ্গে গোপন বৈঠক করার কারণে তাকে সেসময় পদত্যাগ করতে হয়েছিল। ওই বৈঠকে ইসরায়েলের তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা ইয়ার লাপিদও ছিলেন।

ব্রিটিশ সরকারের পক্ষপাতমূলক আচরণের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ফিলিস্তিনের ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস। খবর আল-জাজিরার।

এক বিবৃতিতে সংগঠনটি বলেছে, এ ধরনের কাজ না করে ব্রিটিশ সরকারের উচিত অবৈধ রাষ্ট্র সইসরাইল প্রতিষ্ঠায় নিজেদের ভূমিকার কথা স্মরণ করে লজ্জিত হওয়া।

রবিবার, ২১ নভেম্বর ২০২১ , ৬ অগ্রহায়ণ ১৪২৮ ১৫ রবিউস সানি ১৪৪৩

হামাস এবার যুক্তরাজ্যের নিষিদ্ধ সংগঠনের তালিকায়

ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্রের পর এবার ফিলিস্তিনের রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাসকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করল যুক্তরাজ্যও। দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রীতি প্যাটেল এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছেন।

বিবৃতিতে যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘হামাসের সন্ত্রাসী তৎপরতা চালানোর ক্ষমতা ও অতীত রেকর্ড- দুটোই আছে। তাছাড়া, সন্ত্রাসী তৎপরতাবিষয়ক প্রশিক্ষণ দেয়ার অভিযোগ আছে এই গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে। ‘এ কারণকে বিবেচনায় রেখে এবং যুক্তরাজ্যের সন্ত্রাসবিরোধী আইনের প্রতি পূর্ণ সম্মান জানিয়ে সরকার হামাসকে ব্রিটেনে নিষিদ্ধ সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করছে।’ ‘এখন থেকে, ব্রিটেনে বসবাসরত কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠী যদি যুক্তরাজ্যে হামাসের প্রতি তাদের সমর্থন প্রচার করে, এই দলের পতাকা ওড়ায় কিংবা তাদের সমর্থনে সভা-সমিতির আয়োজন করে, সেক্ষেত্রে দেশের আইন অনুযায়ী এসব কর্মকা- অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হবে।’ ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসের পূর্ণ নাম ইসলামিক রেসিসট্যান্স মুভমেন্ট। রাজনৈতিক ও সামরিক- দুই শাখাই রয়েছে এই সংগঠনের।

১৯৮৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হামাস আদর্শগতভাবে আলাপ-আলোচনা ও বৈঠকের ভিত্তিতে ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংকট সমাধানের বিরোধী। তার পরিবর্তে এই গোষ্ঠী বিশ্বাস করে, সশস্ত্র সংগ্রামের মধ্যেই লুকিয়ে আছে ফিলিস্তিনের জনগণের মুক্তি ও স্বাধীন-সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের সম্ভাবনা।

এতদিন পর্যন্ত হামাসের সামরিক বাহিনী ইজ্জ আল দিন আল কাসাম ব্রিগেড নিষিদ্ধ ছিল যুক্তরাজ্যে। এবার পুরো গোষ্ঠীকেই নিষিদ্ধ ঘোষণা করল দেশটি।

হামাসের রাজনৈতিক শাখার অন্যতম নেতা সামি আবু জুহরি বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এ সম্পর্কিত প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘ইসরায়েলের ব্ল্যাকমেইল ও কলকাঠি নাড়ানোর কারণেই যুক্তরাজ্য এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং এর মাধ্যমে দেশটি গাজায় ইসরায়েলি দখলদারিত্বের প্রতি পূর্ণ পক্ষপাতিত্ব দেখিয়েছে।’

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেত বিৃটেনের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ‘হামাস একটি সন্ত্রাসী সংগঠন। তারা জঙ্গি তৎপরতা চালানো ছাড়া আর কিছু জানে না।’

দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়ার লাপিদও ব্রিটেনের এই সিদ্ধান্তে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেছেন, ‘যুক্তরাজ্যের এই সিদ্ধান্ত দুই দেশের সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করবে।’

যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হওয়ার আগে দেশটির আন্তর্জাতিক উন্নয়নবিষয়ক মন্ত্রী ছিলেন প্রীতি প্যাটেল; কিন্তু ২০১৭ সালে এক ব্যক্তিগত অবকাশের সময়ে যুক্তরাজ্যে কয়েকজন জ্যেষ্ঠ ইসরায়েলি নেতার সঙ্গে গোপন বৈঠক করার কারণে তাকে সেসময় পদত্যাগ করতে হয়েছিল। ওই বৈঠকে ইসরায়েলের তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা ইয়ার লাপিদও ছিলেন।

ব্রিটিশ সরকারের পক্ষপাতমূলক আচরণের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ফিলিস্তিনের ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস। খবর আল-জাজিরার।

এক বিবৃতিতে সংগঠনটি বলেছে, এ ধরনের কাজ না করে ব্রিটিশ সরকারের উচিত অবৈধ রাষ্ট্র সইসরাইল প্রতিষ্ঠায় নিজেদের ভূমিকার কথা স্মরণ করে লজ্জিত হওয়া।