চলতি বছরেই ইরাক অভিযান শেষ করবে যুক্তরাষ্ট্র

চলতি বছর শেষের আগেই ইরাকে সামরিক মিশন সম্পন্ন করবে যুক্তরাষ্ট্র। ইরাকের প্রতিরক্ষামন্ত্রী জুমাহ ইনাদের সঙ্গে বৈঠকে এই তথ্য জানিয়েছেন মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন। এর আগে চলতি বছরের জুলাইয়ে ২০২১ সালের মধ্যেই ইরাকে সামরিক অভিযান সমাপ্তির ঘোষণা দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র।

হোয়াইট হাউজে ইরাকের প্রধানমন্ত্রী মুস্তফা আল-খাদেমির সঙ্গে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের বৈঠকের পর সেসময় জানানো হয়, চলতি বছরের শেষ নাগাদ যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী ইরাক থেকে দেশে ফিরে আসবে। অবশ্য এরপরও ইরাকের সামরিক বাহিনীকে প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দেয়া অব্যহত রাখবে ওয়াশিংটন। ইরাকে বর্তমানে আড়াই হাজার মার্কিন সেনা অবস্থান করছে এবং তাদের মূল কাজ হচ্ছে জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) বিরুদ্ধে ইরাকি নিরাপত্তা বাহিনীকে সহায়তা করা। এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় বার্তাসংস্থা এএনআই।

এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগনের মুখপাত্র জন কিরবি বলেন, ‘চলতি বছরের মধ্যেই ইরাকে মার্কিন বাহিনীর সামরিক ভূমিকা শেষ করাসহ ২০২১ সালের জুলাইয়ে অনুষ্ঠিত যুক্তরাষ্ট্র-ইরাক কৌশলগত সংলাপের সব প্রতিশ্রুতি রক্ষায় কাজ করছে ওয়াশিংটন।’

এএনআই জানিয়েছে, বাহরাইনের মানামায় বার্ষিক মানামা সংলাপের সাইডলাইনে ইরাকের প্রতিরক্ষামন্ত্রী জুমাহ ইনাদ সুদান আল-জাবুরির সঙ্গে শনিবার বৈঠক করেন মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন। বৈঠকের পরই দেয়া এক বিবৃতিতে চলতি বছরের মধ্যেই ইরাকে সামরিক মিশন সম্পন্নের কথা জানায় পেন্টাগন।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশটিতে সামরিক মিশন সম্পন্নের পরও ইরাকি সামরিক বাহিনীকে প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দেয়া অব্যহত রাখবে মার্কিন সামরিক বাহিনী। তবে ইরাক সরকারের আমন্ত্রণ পেলেই শুধু যুক্তরাষ্ট্র এই কাজে যুক্ত হবে বলেই ইরাকি প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে জানিয়েছেন লয়েড অস্টিন।

গত বছরের শুরুতে বাগদাদে ইরানের সামরিক বাহিনীর শীর্ষ কমান্ডার জেনারেল কাসেম সোলাইমানি এবং ইরান-সমর্থিত শিয়া মিলিশিয়া বাহিনীর কমান্ডারকে ড্রোন হামলার মাধ্যমে হত্যা করে মার্কিন বাহিনী। এরপর থেকে ইরাকে মার্কিন বাহিনীর উপস্থিতি একটি বড় ইস্যুতে পরিণত হয়েছে। ইরান-ঘনিষ্ঠ ইরাকি রাজনৈতিক দলগুলো এরপর থেকেই মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সকল সেনা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে আসছে। যদিও জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটকে ইরাকের জন্য এখনও হুমকি বিবেচনা করছেন অনেকে। এর আগে গত বছরের শেষের দিকে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরাক থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সৈন্য কমানোর ঘোষণা দিয়েছিলেন। তার এই ঘোষণার পর প্রায় ৫০০ সৈন্যকে যুক্তরাষ্ট্রে ফিরিয়ে নেওয়া হয়। বর্তমানে ইরাকে অন্তত আড়াই হাজার মার্কিন সেনা অবস্থান করছে বলে গত জুলাই মাসে বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছিল।

অবশ্য ২০১১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ইরাক থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন। পরিবির্তিত পরিস্থিতিতে দেশটিতে নিরাপত্তা শূন্যতা তৈরি হয় এবং জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের উত্থান ঘটে। পরে ২০১৪ সালে আবারও দেশটিতে সেনা মোতায়েন করে যুক্তরাষ্ট্র।

সোমবার, ২২ নভেম্বর ২০২১ , ৭ অগ্রহায়ণ ১৪২৮ ১৬ রবিউস সানি ১৪৪৩

চলতি বছরেই ইরাক অভিযান শেষ করবে যুক্তরাষ্ট্র

image

চলতি বছর শেষের আগেই ইরাকে সামরিক মিশন সম্পন্ন করবে যুক্তরাষ্ট্র। ইরাকের প্রতিরক্ষামন্ত্রী জুমাহ ইনাদের সঙ্গে বৈঠকে এই তথ্য জানিয়েছেন মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন। এর আগে চলতি বছরের জুলাইয়ে ২০২১ সালের মধ্যেই ইরাকে সামরিক অভিযান সমাপ্তির ঘোষণা দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র।

হোয়াইট হাউজে ইরাকের প্রধানমন্ত্রী মুস্তফা আল-খাদেমির সঙ্গে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের বৈঠকের পর সেসময় জানানো হয়, চলতি বছরের শেষ নাগাদ যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী ইরাক থেকে দেশে ফিরে আসবে। অবশ্য এরপরও ইরাকের সামরিক বাহিনীকে প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দেয়া অব্যহত রাখবে ওয়াশিংটন। ইরাকে বর্তমানে আড়াই হাজার মার্কিন সেনা অবস্থান করছে এবং তাদের মূল কাজ হচ্ছে জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) বিরুদ্ধে ইরাকি নিরাপত্তা বাহিনীকে সহায়তা করা। এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় বার্তাসংস্থা এএনআই।

এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগনের মুখপাত্র জন কিরবি বলেন, ‘চলতি বছরের মধ্যেই ইরাকে মার্কিন বাহিনীর সামরিক ভূমিকা শেষ করাসহ ২০২১ সালের জুলাইয়ে অনুষ্ঠিত যুক্তরাষ্ট্র-ইরাক কৌশলগত সংলাপের সব প্রতিশ্রুতি রক্ষায় কাজ করছে ওয়াশিংটন।’

এএনআই জানিয়েছে, বাহরাইনের মানামায় বার্ষিক মানামা সংলাপের সাইডলাইনে ইরাকের প্রতিরক্ষামন্ত্রী জুমাহ ইনাদ সুদান আল-জাবুরির সঙ্গে শনিবার বৈঠক করেন মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন। বৈঠকের পরই দেয়া এক বিবৃতিতে চলতি বছরের মধ্যেই ইরাকে সামরিক মিশন সম্পন্নের কথা জানায় পেন্টাগন।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশটিতে সামরিক মিশন সম্পন্নের পরও ইরাকি সামরিক বাহিনীকে প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দেয়া অব্যহত রাখবে মার্কিন সামরিক বাহিনী। তবে ইরাক সরকারের আমন্ত্রণ পেলেই শুধু যুক্তরাষ্ট্র এই কাজে যুক্ত হবে বলেই ইরাকি প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে জানিয়েছেন লয়েড অস্টিন।

গত বছরের শুরুতে বাগদাদে ইরানের সামরিক বাহিনীর শীর্ষ কমান্ডার জেনারেল কাসেম সোলাইমানি এবং ইরান-সমর্থিত শিয়া মিলিশিয়া বাহিনীর কমান্ডারকে ড্রোন হামলার মাধ্যমে হত্যা করে মার্কিন বাহিনী। এরপর থেকে ইরাকে মার্কিন বাহিনীর উপস্থিতি একটি বড় ইস্যুতে পরিণত হয়েছে। ইরান-ঘনিষ্ঠ ইরাকি রাজনৈতিক দলগুলো এরপর থেকেই মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সকল সেনা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে আসছে। যদিও জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটকে ইরাকের জন্য এখনও হুমকি বিবেচনা করছেন অনেকে। এর আগে গত বছরের শেষের দিকে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরাক থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সৈন্য কমানোর ঘোষণা দিয়েছিলেন। তার এই ঘোষণার পর প্রায় ৫০০ সৈন্যকে যুক্তরাষ্ট্রে ফিরিয়ে নেওয়া হয়। বর্তমানে ইরাকে অন্তত আড়াই হাজার মার্কিন সেনা অবস্থান করছে বলে গত জুলাই মাসে বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছিল।

অবশ্য ২০১১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ইরাক থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন। পরিবির্তিত পরিস্থিতিতে দেশটিতে নিরাপত্তা শূন্যতা তৈরি হয় এবং জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের উত্থান ঘটে। পরে ২০১৪ সালে আবারও দেশটিতে সেনা মোতায়েন করে যুক্তরাষ্ট্র।