মহাদেবপুরে ছাগলহাটে দেড়শ’ টাকার টোল ৮শ’ আদায়

গত শনিবার দুপুর আড়াইটা। নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলা সদরের ছাগলহাটের টোল আদায় পয়েন্টে হট্টগোল দেখে এগিয়ে গেলেন কয়েকজন সাংবাদিক। দেখা গেল একজন ক্রেতা ছাগল কেনার ছাপা রশিদ হাতে নিয়ে আদায়কারীকে টোলের পরিমাণের জায়গায় ৮০০ টাকা লিখতে বলছেন। কিন্তু আদায়কারী তা লিখতে নারাজ! ক্রেতার প্রশ্ন, ‘ছাগলের মূল্যের জায়গায় ১৩,৫০০/- টাকা লেখা হলো, কিন্তু টোলের জায়গা ফাঁকা রাখা হলো কেন? আমি সরকারি রশিদে খাজনা দেব। সেটা লেখে দেন, না হলে ৮০০ টাকা ফেরত দেন।’ বিষয়টি ভিডিও করছিলেন এক সাংবাদিক। সেদিকে তাকিয়ে থমকে গেলেন ইজারাদারের লোকেরা। ‘ভাই আপনাদের ম্যানুয়ালে কি আছে?’ সাংবাদিকের এ প্রশ্নের কোন জবাব না দিয়ে তড়িঘড়ি করে ৩০০ টাকা ফেরত দিয়ে রফা করলেন আদায়কারী।

ওই ক্রেতা উপজেলা সদরের লিচুবাগান এলাকার রবিউল ইসলাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একাউন্টেন্ডেন্ট জানালেন, বকাপুর গ্রামের ময়েন উদ্দিনের কাছ থেকে খাসি ছাগলটি কিনে টোল দেয়ার জন্য ইজারাদারের পয়েন্টে গেলে তারা ১ হাজার ৩০০ টাকা খাজনা দাবি করেন। উভয়ের মধ্যে বাগ্বিত-ার এক পর্যায়ে ৮০০ টাকা নিতে রাজি হন। কিন্তু টাকা নেয়ার পর রশিদে সে টাকার পরিমাণ লিখতে অস্বীকার করেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, উপজেলার হাটবাজারে টোল আদায়ের রেট হলো প্রতিটি ছাগলের দামের শতকরা ৫ ভাগ, তবে ১৫০ টাকার বেশি নয়। টোল আদায়ের এ রেটের সাইনবোর্ড হাটের দর্শনীয় স্থানে টানানোর বিধান থাকলেও হাটের কোথাও তা দেখা গেল না। রবিউল ইসলামের মতো আরও অনেক ক্রেতাই একই অভিযোগ করলেন। ছাগল ভেদে খাজনা নেয়া হয় ৩০০ টাকা থেকে ১ হাজার টাকা।

জানতে চাইলে হাটের ইজারাদার এমদাদুল হক বলেন, খোঁজ নিয়ে দেখেন অন্য হাটেও এভাবে বেশি খাজনা নেয়া হচ্ছে। তাই আমরাও নিচ্ছি। তিনি জানান, করোনায় দীর্ঘদিন হাট বন্ধ থাকায় তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। সেই ক্ষতি পুষিয়ে নিতেই এই বেশি নেয়া।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিজানুর রহমান মিলন জানান, অতিরিক্ত খাজনা আদায়ের দায়ে ইতোপূর্বে দুবার এই হাটে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ইজাদারের জরিমানা করা হয়েছে। প্রয়োজনে আবারও তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

স্থানীয়রা সরকার নির্ধারিত রেটে খাজনা আদায়ের ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।

সোমবার, ২২ নভেম্বর ২০২১ , ৭ অগ্রহায়ণ ১৪২৮ ১৬ রবিউস সানি ১৪৪৩

মহাদেবপুরে ছাগলহাটে দেড়শ’ টাকার টোল ৮শ’ আদায়

প্রতিনিধি, মহাদেবপুর (নওগাঁ)

গত শনিবার দুপুর আড়াইটা। নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলা সদরের ছাগলহাটের টোল আদায় পয়েন্টে হট্টগোল দেখে এগিয়ে গেলেন কয়েকজন সাংবাদিক। দেখা গেল একজন ক্রেতা ছাগল কেনার ছাপা রশিদ হাতে নিয়ে আদায়কারীকে টোলের পরিমাণের জায়গায় ৮০০ টাকা লিখতে বলছেন। কিন্তু আদায়কারী তা লিখতে নারাজ! ক্রেতার প্রশ্ন, ‘ছাগলের মূল্যের জায়গায় ১৩,৫০০/- টাকা লেখা হলো, কিন্তু টোলের জায়গা ফাঁকা রাখা হলো কেন? আমি সরকারি রশিদে খাজনা দেব। সেটা লেখে দেন, না হলে ৮০০ টাকা ফেরত দেন।’ বিষয়টি ভিডিও করছিলেন এক সাংবাদিক। সেদিকে তাকিয়ে থমকে গেলেন ইজারাদারের লোকেরা। ‘ভাই আপনাদের ম্যানুয়ালে কি আছে?’ সাংবাদিকের এ প্রশ্নের কোন জবাব না দিয়ে তড়িঘড়ি করে ৩০০ টাকা ফেরত দিয়ে রফা করলেন আদায়কারী।

ওই ক্রেতা উপজেলা সদরের লিচুবাগান এলাকার রবিউল ইসলাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একাউন্টেন্ডেন্ট জানালেন, বকাপুর গ্রামের ময়েন উদ্দিনের কাছ থেকে খাসি ছাগলটি কিনে টোল দেয়ার জন্য ইজারাদারের পয়েন্টে গেলে তারা ১ হাজার ৩০০ টাকা খাজনা দাবি করেন। উভয়ের মধ্যে বাগ্বিত-ার এক পর্যায়ে ৮০০ টাকা নিতে রাজি হন। কিন্তু টাকা নেয়ার পর রশিদে সে টাকার পরিমাণ লিখতে অস্বীকার করেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, উপজেলার হাটবাজারে টোল আদায়ের রেট হলো প্রতিটি ছাগলের দামের শতকরা ৫ ভাগ, তবে ১৫০ টাকার বেশি নয়। টোল আদায়ের এ রেটের সাইনবোর্ড হাটের দর্শনীয় স্থানে টানানোর বিধান থাকলেও হাটের কোথাও তা দেখা গেল না। রবিউল ইসলামের মতো আরও অনেক ক্রেতাই একই অভিযোগ করলেন। ছাগল ভেদে খাজনা নেয়া হয় ৩০০ টাকা থেকে ১ হাজার টাকা।

জানতে চাইলে হাটের ইজারাদার এমদাদুল হক বলেন, খোঁজ নিয়ে দেখেন অন্য হাটেও এভাবে বেশি খাজনা নেয়া হচ্ছে। তাই আমরাও নিচ্ছি। তিনি জানান, করোনায় দীর্ঘদিন হাট বন্ধ থাকায় তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। সেই ক্ষতি পুষিয়ে নিতেই এই বেশি নেয়া।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিজানুর রহমান মিলন জানান, অতিরিক্ত খাজনা আদায়ের দায়ে ইতোপূর্বে দুবার এই হাটে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ইজাদারের জরিমানা করা হয়েছে। প্রয়োজনে আবারও তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

স্থানীয়রা সরকার নির্ধারিত রেটে খাজনা আদায়ের ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।