ডেল্টার চেয়েও বেশি রূপবদল করেছে ওমিক্রন

নতুন ধরন ঠেকাতে ভ্যাকসিন আনছে মডার্না

দক্ষিণ আফ্রিকাসহ আফ্রিকার বেশ কয়েকটি দেশে শনাক্ত হয়েছে করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট। এরপরই বিশ্বজুড়ে ছড়িয়েছে আতঙ্ক। এর মাঝেই এবার করোনার এই ভ্যারিয়েন্টের প্রথম ছবি প্রকাশিত হয়েছে। ইতালির রাজধানী রোমের বিখ্যাত ব্যামবিনো গেসু হাসপাতাল এই ছবি সামনে আনে।

এতে দেখা যাচ্ছে- ভারতে প্রথম শনাক্ত করোনার ডেল্টা ধরনের তুলনায় অনেক বেশি রূপবদল করেছে দক্ষিণ আফ্রিকার শনাক্ত হওয়া ভাইরাসের সর্বশেষ ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন। এক প্রতিবেদনে এই জানিয়েছে এএফপি। ব্যামবিনো গেসু হাসপাতালের প্রকাশিত করোনার ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের জিনগত গঠন সম্পর্কে গবেষকরা জানিয়েছেন, ‘ছবিতে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে, করোনার ডেল্টা ভ্যারিয়ান্টের তুলনায় ওমিক্রন বহুবার মিউটেশন ঘটিয়েছে এবং জিনটির একটি জায়গাতেই সকল প্রোটিন ঘনীভূত হয়েছে, যেটি মানবদেহের কোষের সঙ্গে মিথস্ক্রিয়া করে।’

গবেষকরা আরও জানিয়েছেন, করোনাভাইরাসের বারবার নতুন রূপে ফিরে আসার অর্থ এটা নয় যে, এই ভ্যারিয়েন্টটি আরও ভয়ঙ্কর। তবে এই ভাইরাস অন্য রূপ বদল করে মানবদেহের সঙ্গে আরও অভিযোজিত হয়ে গেছে। করোনার নতুন অভিযোজিত রূপ ওমিক্রন কতটা ভয়ঙ্কর, সে বিষয়ে এখনই নিশ্চিত নন গবেষকরা। তাদের মতে, ‘এই অভিযোজন যদি নিরপেক্ষ হয়, তাহলে সেটা কম বিপজ্জনক নাকি বেশি বিপজ্জনক তা অন্য গবেষণায় জানা যাবে।’

এদিকে, করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রন নিয়ে যখন গোটা বিশ্ব উদ্বিগ্ন তখন এটির প্রতিরোধে ভ্যাকসিন আনার কথা বলছে যুক্তরাষ্ট্রের ওষুধ কোম্পানি মডার্না। ২০২২ সালের শুরুতেই কোভিডের নতুন এই ধরন মোকাবিলায় টিকা তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

মডার্না ইনকরপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা পল বার্টন বলেন, বিদ্যমান ভ্যাকসিনগুলোকে ফাঁকি দিতে পারে করোনার এই নতুন ধরন। সেকারণে ২০২২ সালের শুরুতে নতুন করে ভ্যাকসিন আনবে প্রতিষ্ঠানটি। নতুন ভ্যাকসিন নিয়ে আসার আগে বর্তমানের ভ্যাকসিনগুলো ওমিক্রনের বিরুদ্ধে কতটা কার্যকর তাও খতিয়ে দেখার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন তিনি। তিনি মানুষকে ভ্যাকসিন নেওয়ারও আহ্বান জানান। করোনার নতুন এই ধরনকে বিপজ্জনক উল্লেখ করে তিনি বলেন, তবে আমাদের মোকাবিলা করার অস্ত্রও রয়েছে।

গত ২৪ নভেম্বর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) দক্ষিণ আফ্রিকায় শনাক্ত হওয়া নতুন ধরনের তথ্য জানায়। চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা বলছেন, তারা ভাইরাসের নতুন ধরনটির বিষয়ে আরও জানার চেষ্টা করছেন। এর বৈজ্ঞানিক নাম দেওয়া হয়েছে বি.১.১.৫২৯। স্থানীয় সময় শুক্রবার (২৬ নভেম্বর) এক জরুরি বৈঠক ডাকে ডব্লিউএইচও। পরে করোনার নতুন এ ধরন উদ্বেগজনক বলে জানানো হয়। নতুন এ ধরনের নামকরণ করা হয় ওমিক্রন। ডব্লিউএইচওর তরফ থেকে আরও বলা হচ্ছে, ওমিক্রনের তীব্রতার মাত্রা বুঝতে, কয়েক দিন থেকে কয়েক সপ্তাহ সময় লেগে যেতে পারে। এক বিবৃতিতে ডব্লিউওএইচও জানিয়েছে, সংস্থাটি বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কাজ করছে নতুন এ ধরনটি নিয়ে। এটির সক্ষমতা ও কতদিন স্থায়ী হতে পারে এসব বিশ্লেষণ করে দেখা হচ্ছে। একই সঙ্গে ভ্যাকসিন নিয়েও আলোচনা করছেন সংস্থাটির কর্মকর্তারা।

মঙ্গলবার, ৩০ নভেম্বর ২০২১ , ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪২৮ ২৪ রবিউস সানি ১৪৪৩

ডেল্টার চেয়েও বেশি রূপবদল করেছে ওমিক্রন

নতুন ধরন ঠেকাতে ভ্যাকসিন আনছে মডার্না

image

দক্ষিণ আফ্রিকাসহ আফ্রিকার বেশ কয়েকটি দেশে শনাক্ত হয়েছে করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট। এরপরই বিশ্বজুড়ে ছড়িয়েছে আতঙ্ক। এর মাঝেই এবার করোনার এই ভ্যারিয়েন্টের প্রথম ছবি প্রকাশিত হয়েছে। ইতালির রাজধানী রোমের বিখ্যাত ব্যামবিনো গেসু হাসপাতাল এই ছবি সামনে আনে।

এতে দেখা যাচ্ছে- ভারতে প্রথম শনাক্ত করোনার ডেল্টা ধরনের তুলনায় অনেক বেশি রূপবদল করেছে দক্ষিণ আফ্রিকার শনাক্ত হওয়া ভাইরাসের সর্বশেষ ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন। এক প্রতিবেদনে এই জানিয়েছে এএফপি। ব্যামবিনো গেসু হাসপাতালের প্রকাশিত করোনার ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের জিনগত গঠন সম্পর্কে গবেষকরা জানিয়েছেন, ‘ছবিতে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে, করোনার ডেল্টা ভ্যারিয়ান্টের তুলনায় ওমিক্রন বহুবার মিউটেশন ঘটিয়েছে এবং জিনটির একটি জায়গাতেই সকল প্রোটিন ঘনীভূত হয়েছে, যেটি মানবদেহের কোষের সঙ্গে মিথস্ক্রিয়া করে।’

গবেষকরা আরও জানিয়েছেন, করোনাভাইরাসের বারবার নতুন রূপে ফিরে আসার অর্থ এটা নয় যে, এই ভ্যারিয়েন্টটি আরও ভয়ঙ্কর। তবে এই ভাইরাস অন্য রূপ বদল করে মানবদেহের সঙ্গে আরও অভিযোজিত হয়ে গেছে। করোনার নতুন অভিযোজিত রূপ ওমিক্রন কতটা ভয়ঙ্কর, সে বিষয়ে এখনই নিশ্চিত নন গবেষকরা। তাদের মতে, ‘এই অভিযোজন যদি নিরপেক্ষ হয়, তাহলে সেটা কম বিপজ্জনক নাকি বেশি বিপজ্জনক তা অন্য গবেষণায় জানা যাবে।’

এদিকে, করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রন নিয়ে যখন গোটা বিশ্ব উদ্বিগ্ন তখন এটির প্রতিরোধে ভ্যাকসিন আনার কথা বলছে যুক্তরাষ্ট্রের ওষুধ কোম্পানি মডার্না। ২০২২ সালের শুরুতেই কোভিডের নতুন এই ধরন মোকাবিলায় টিকা তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

মডার্না ইনকরপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা পল বার্টন বলেন, বিদ্যমান ভ্যাকসিনগুলোকে ফাঁকি দিতে পারে করোনার এই নতুন ধরন। সেকারণে ২০২২ সালের শুরুতে নতুন করে ভ্যাকসিন আনবে প্রতিষ্ঠানটি। নতুন ভ্যাকসিন নিয়ে আসার আগে বর্তমানের ভ্যাকসিনগুলো ওমিক্রনের বিরুদ্ধে কতটা কার্যকর তাও খতিয়ে দেখার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন তিনি। তিনি মানুষকে ভ্যাকসিন নেওয়ারও আহ্বান জানান। করোনার নতুন এই ধরনকে বিপজ্জনক উল্লেখ করে তিনি বলেন, তবে আমাদের মোকাবিলা করার অস্ত্রও রয়েছে।

গত ২৪ নভেম্বর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) দক্ষিণ আফ্রিকায় শনাক্ত হওয়া নতুন ধরনের তথ্য জানায়। চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা বলছেন, তারা ভাইরাসের নতুন ধরনটির বিষয়ে আরও জানার চেষ্টা করছেন। এর বৈজ্ঞানিক নাম দেওয়া হয়েছে বি.১.১.৫২৯। স্থানীয় সময় শুক্রবার (২৬ নভেম্বর) এক জরুরি বৈঠক ডাকে ডব্লিউএইচও। পরে করোনার নতুন এ ধরন উদ্বেগজনক বলে জানানো হয়। নতুন এ ধরনের নামকরণ করা হয় ওমিক্রন। ডব্লিউএইচওর তরফ থেকে আরও বলা হচ্ছে, ওমিক্রনের তীব্রতার মাত্রা বুঝতে, কয়েক দিন থেকে কয়েক সপ্তাহ সময় লেগে যেতে পারে। এক বিবৃতিতে ডব্লিউওএইচও জানিয়েছে, সংস্থাটি বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কাজ করছে নতুন এ ধরনটি নিয়ে। এটির সক্ষমতা ও কতদিন স্থায়ী হতে পারে এসব বিশ্লেষণ করে দেখা হচ্ছে। একই সঙ্গে ভ্যাকসিন নিয়েও আলোচনা করছেন সংস্থাটির কর্মকর্তারা।