রাজারবাগের পীরসহ ৪ জনকে বিবাদী করার আবেদন

রাজধানীর শান্তিবাগ এলাকার বাসিন্দা একরামুল আহসান কাঞ্চনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগে দায়ের করা ৪৯টি ‘গায়েবি’ মামলার বাদীদের খুঁজতে দায়ের করা রিটে রাজারবাগ দরবার শরীফের পীর দিল্লুর রহমানসহ চারজনকে যুক্ত করতে একটি সম্পূরক আবেদন করা হয়েছে। সেখানে ওই রিটে আগে বিবাদীর সংখ্যা ছিল ৪০ জন। এখন এ চারজনকে বিবাদী করা হলে মোট বিবাদী হবে ৪৪ জন।

গতকাল সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আবেদনটি দায়ের করেন কাঞ্চনের আইনজীবী এমাদুল হক বশির। আইনজীবী বলেন, আবেদনটি সকালে এফিডেভিট করে কোর্টে জমা দিয়েছি। মঙ্গলবার এ বিষয়ে শুনানি হতে পারে। আবেদনে বিবাদীদের তালিকায় পীর দিল্লুর রহমান ছাড়াও শাকিরুল কবির, ফারুকুর রহমান ও মফিজুল ইসলামকে যুক্ত করার অনুরোধ করা হয়েছে।

চারজনকে বিবাদীদের তালিকায় যুক্ত করার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে এমাদুল হক বশির বলেন, তারা সবাই পীরকে মামলায় সহযোগিতা করেছেন। গত ৩১ আগস্ট দেয়া সিআইডির তদন্ত প্রতিবেদনে বিষয়টি উঠে এসেছে।

এর আগে ১৭ নভেম্বর রাজারবাগ পীর সিন্ডিকেটের দায়ের করা ৪৯ মামলার বাদীদের খুঁজতে দেয়া আদেশের বিষয়ে ৩০ নভেম্বর শুনানির জন্যে ঠিক করে হাইকোর্ট। এ সংক্রান্ত বিষয়ে শুনানি করতে গেলে ওইদিন হাইকোর্টের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।

আদালতে ওইদিন রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট এমাদুল হক বশির। অন্যদিকে, রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার। অ্যাডভোকেট এমাদুল হক বশির ওইদিন জানিয়েছিলেন, রাজারবাগ পীর সিন্ডিকেটের দায়ের করা ৪৯ মামলার বাদীদের খুঁজতে হাইকোর্টে জারি করা রুল ও আদেশের বিষয়ে মামলাটি চলতে আর কোন বাধা নেই। এ সংক্রান্ত আপিল বিভাগের আদেশের লিখিত অনুলিপি উপস্থাপনের পর আদালত প্রশ্ন তোলেন।

এ সময় আদালত বলেন, আপনারা কী চান? জবাবে আমরা আদালতকে বলেছি, হাইকোর্টের ক্ষমতা আছে, চাইলে পীরকে গ্রেপ্তার ও তার আস্তানা বন্ধের ব্যবস্থা করার জন্য আদেশ দিতে পারেন। পরে আদালত জানান, এ বিষয়ে অন্যান্য রিটের সঙ্গে নির্ধারিত দিন আগামী ৩০ নভেম্বর বিষয়গুলো শুনানি করা হবে।

গত ১৪ জুন গায়েবি মামলার সঙ্গে জড়িতদের খুঁজে বের করতে সিআইডিকে নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট। তারই আলোকে সিআইডির অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার রতন কৃষ্ণ নাথ এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রদান জমা দেয়। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শাখারুল একটি মামলার বাদী ও তিনটি মামলার সাক্ষী। ফারুকুর রহমান একটি মামলার বাদী ও সাতটি মামলার সাক্ষী। এছাড়া মফিজুল দুটি মামলার বাদী ও একটি মামলার সাক্ষী। এছাড়া আরও অন্তত ২০ জন ব্যক্তি গায়েবি এসব মামলার সঙ্গে জড়িত বলেও উল্লেখ করেছে সিআইডি।

হাইকোর্টে দেয়া প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রিট আবেদনকারীর বিরুদ্ধে ঢাকার ভেতরে ও বাইরের বিভিন্ন জেলায় ৪৯টি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে ২৩টি জিআর মামলা ও ২৬টি সিআর মামলা। এর মধ্যে ৩৫টি মামলা থেকে আসামি একরামুল আহসান কাঞ্চন খালাস পেয়েছেন। খালাস পাওয়া মামলাগুলোর মধ্যে ১৫টি জিআর ও ২০টি সিআর। বাকি ১৪টি মামলা বিচারাধীন।

মঙ্গলবার, ৩০ নভেম্বর ২০২১ , ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪২৮ ২৪ রবিউস সানি ১৪৪৩

৪৯ গায়েবি মামলা

রাজারবাগের পীরসহ ৪ জনকে বিবাদী করার আবেদন

আদালত বার্তা পরিবেশক

রাজধানীর শান্তিবাগ এলাকার বাসিন্দা একরামুল আহসান কাঞ্চনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগে দায়ের করা ৪৯টি ‘গায়েবি’ মামলার বাদীদের খুঁজতে দায়ের করা রিটে রাজারবাগ দরবার শরীফের পীর দিল্লুর রহমানসহ চারজনকে যুক্ত করতে একটি সম্পূরক আবেদন করা হয়েছে। সেখানে ওই রিটে আগে বিবাদীর সংখ্যা ছিল ৪০ জন। এখন এ চারজনকে বিবাদী করা হলে মোট বিবাদী হবে ৪৪ জন।

গতকাল সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আবেদনটি দায়ের করেন কাঞ্চনের আইনজীবী এমাদুল হক বশির। আইনজীবী বলেন, আবেদনটি সকালে এফিডেভিট করে কোর্টে জমা দিয়েছি। মঙ্গলবার এ বিষয়ে শুনানি হতে পারে। আবেদনে বিবাদীদের তালিকায় পীর দিল্লুর রহমান ছাড়াও শাকিরুল কবির, ফারুকুর রহমান ও মফিজুল ইসলামকে যুক্ত করার অনুরোধ করা হয়েছে।

চারজনকে বিবাদীদের তালিকায় যুক্ত করার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে এমাদুল হক বশির বলেন, তারা সবাই পীরকে মামলায় সহযোগিতা করেছেন। গত ৩১ আগস্ট দেয়া সিআইডির তদন্ত প্রতিবেদনে বিষয়টি উঠে এসেছে।

এর আগে ১৭ নভেম্বর রাজারবাগ পীর সিন্ডিকেটের দায়ের করা ৪৯ মামলার বাদীদের খুঁজতে দেয়া আদেশের বিষয়ে ৩০ নভেম্বর শুনানির জন্যে ঠিক করে হাইকোর্ট। এ সংক্রান্ত বিষয়ে শুনানি করতে গেলে ওইদিন হাইকোর্টের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।

আদালতে ওইদিন রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট এমাদুল হক বশির। অন্যদিকে, রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার। অ্যাডভোকেট এমাদুল হক বশির ওইদিন জানিয়েছিলেন, রাজারবাগ পীর সিন্ডিকেটের দায়ের করা ৪৯ মামলার বাদীদের খুঁজতে হাইকোর্টে জারি করা রুল ও আদেশের বিষয়ে মামলাটি চলতে আর কোন বাধা নেই। এ সংক্রান্ত আপিল বিভাগের আদেশের লিখিত অনুলিপি উপস্থাপনের পর আদালত প্রশ্ন তোলেন।

এ সময় আদালত বলেন, আপনারা কী চান? জবাবে আমরা আদালতকে বলেছি, হাইকোর্টের ক্ষমতা আছে, চাইলে পীরকে গ্রেপ্তার ও তার আস্তানা বন্ধের ব্যবস্থা করার জন্য আদেশ দিতে পারেন। পরে আদালত জানান, এ বিষয়ে অন্যান্য রিটের সঙ্গে নির্ধারিত দিন আগামী ৩০ নভেম্বর বিষয়গুলো শুনানি করা হবে।

গত ১৪ জুন গায়েবি মামলার সঙ্গে জড়িতদের খুঁজে বের করতে সিআইডিকে নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট। তারই আলোকে সিআইডির অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার রতন কৃষ্ণ নাথ এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রদান জমা দেয়। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শাখারুল একটি মামলার বাদী ও তিনটি মামলার সাক্ষী। ফারুকুর রহমান একটি মামলার বাদী ও সাতটি মামলার সাক্ষী। এছাড়া মফিজুল দুটি মামলার বাদী ও একটি মামলার সাক্ষী। এছাড়া আরও অন্তত ২০ জন ব্যক্তি গায়েবি এসব মামলার সঙ্গে জড়িত বলেও উল্লেখ করেছে সিআইডি।

হাইকোর্টে দেয়া প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রিট আবেদনকারীর বিরুদ্ধে ঢাকার ভেতরে ও বাইরের বিভিন্ন জেলায় ৪৯টি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে ২৩টি জিআর মামলা ও ২৬টি সিআর মামলা। এর মধ্যে ৩৫টি মামলা থেকে আসামি একরামুল আহসান কাঞ্চন খালাস পেয়েছেন। খালাস পাওয়া মামলাগুলোর মধ্যে ১৫টি জিআর ও ২০টি সিআর। বাকি ১৪টি মামলা বিচারাধীন।